রাজগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা: নির্যাতনের অভিযোগ পরিবার ও স্থানীয়দের

- আপডেট সময় : ০৯:৩৯:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ৮৭ বার পড়া হয়েছে

এমদাদুল হক, নিজেস্ব প্রতিনিধিঃযশোরের মনিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি গ্রামে প্রবাসী স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে খাদিজা খাতুন (৩০) নামের এক নারী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ২৯ এপ্রিল সকালে নিজ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্র ও নিহতের পরিবারের বরাতে জানা গেছে, দশ বছর আগে গালদা গ্রামের আব্দুল মুমিনের মেয়ে খাদিজা খাতুনের সঙ্গে চালুয়াহাটি গ্রামের সিঙ্গাপুরপ্রবাসী আরিফ হোসেনের বিয়ে হয়। তাদের ছয় বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
বিয়ের পর প্রথমদিকে সংসার ভালো চললেও আরিফ প্রবাসে যাওয়ার পর থেকেই স্ত্রী খাদিজার উপর শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। শুধু স্বামী নয়, শ্বশুর মশিউর রহমানও একইভাবে নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগ। কয়েকবার বিষয়টি নিয়ে সালিশ হলেও সমস্যা মেটেনি।
গত বছর প্রবাসে থাকা অবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দেন আরিফ। তবে দেশে ফিরে আবারো তাকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং কিছুদিন পর পুনরায় বিদেশে চলে যান। প্রবাসে থেকেও স্ত্রীর উপর মানসিক নির্যাতন অব্যাহত রাখেন আরিফ।
পরিবারের দাবি, নির্যাতনের ফলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন খাদিজা। ২৯ এপ্রিল সকাল ৯টায় বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তিনি আত্মহত্যা করেন।
আরিফের বাবা মশিউর রহমান বলেন, “আমরা কেউ বাড়িতে ছিলাম না। সেই সুযোগে সে গলায় ওড়না দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এর বেশি কিছু জানি না।”
তবে নিহতের মামাতো ভাই শামীম বলেন, “খাদিজা নিজে আত্মহত্যা করতে পারে না। শারীরিক ও মানসিকভাবে এতটাই নির্যাতিত হয়েছে যে বাধ্য হয়ে এমন পথ বেছে নিতে হয়েছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।”
তিনি আরও জানান, উভয় পরিবারে পূর্বে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল এবং তারা মামাতো-ফুফাতো ভাইবোন। এই আত্মীয়তার কারণে অনেক বিষয় গোপন রাখা হয়েছিল।
চালুয়াহাটি তদন্ত কেন্দ্রের এসআই হেলাল উদ্দিন জানান, “লাশের গলায় ফাঁসের চিহ্ন এবং পিঠে জমাট রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। আমরা প্রাথমিক তদন্ত করেছি এবং ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।”