ঢাকা ০২:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নোয়াপাড়া পথেরহাট থেকে মাওলা আলী জামে মসজিদ সড়ক সংস্কারের আহ্বান এলাকাবাসীর শ্যামনগর জলবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্মারকলিপি প্রদান ৩১ দফা ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে প্রশংসিত হলো বাকৃবি ছাত্রদল আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণের দ্বারে দ্বারে যেতে হবে — আলতাফ হোসেন চৌধুরী দুমকিতে গণছুটির কারণে বিদ্যুৎ অফিস অচল, ভোগান্তিতে সাধারণ জনগণ কবর জিয়ারত ও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত পরিবারের খোঁজখবর নিলেন দুমকি  উপজেলা বিএনপি ১২ই রবিউল আউয়াল আসলে আশেকদের মন উৎফুল্লতায় ভরে উঠে- মাওলানা মনসুর পটুয়াখালীতে জিপিএ-৫ কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ঝিনাইদহে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবককে কু পি য়ে জ-খ-ম চট্টগ্রামে ‘উত্তম বাবুর্চি ক্যাটারিং সার্ভিস’ মানসম্মত খাবার পরিবেশের অঙ্গীকার

সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ী সবুর মার্কেটে জ্বালানি তেলের গোডাউনে আগুন

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৯:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫ ৩৬ বার পড়া হয়েছে

মোঃ মোকাররাম বিল্লাহ ইমন,সাতক্ষীরা:সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ী বাজারে সরকারি বিধি-নিষেধকে তোয়াক্কা না করেই খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে জ্বালানি তেল। জেলার পৌর শহরসহ বিভিন্ন ইউপির হাট-বাজারে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই যত্রতত্র পেট্রোল, ডিজেল ও অকটেনের মতো দাহ্য পদার্থ বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।

উল্লেখ্য গত ২৬ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুর আনুমানিক বারোটার দিকে সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ী বাজারে সবুর মার্কেটে মেসার্স অরুপ ষ্টোরের একটি তেলের গোডাউনে আকস্মিক আগুনের ধোঁয়ায় ফিংড়ী ইউনিয়নের বিশ্বনাথ হালদারের ছেলে শান্তি ঠাকুর এবং আনারুল সরদারের ছেলে হাফিজুল সরদার আগুনে দগ্ধ হন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সাতক্ষীরা সদর হসপিটালে ভর্তি করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায় ফিংড়ী বাজারে সরকারি খাস জায়গা দখল করে অবৈধভাবে কোন নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে মুছা খানের ছেলে সবুর খান এই মার্কেটটি তৈরি করে। সবুর খান নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করলেও সরকার পট পরিবর্তন এর আগে আ’লীগ বলে নিজেকে জাহির করতেন। অনেকের মনে প্রশ্ন সাইকেল মিস্ত্রি হতে রাতারাতি বিশাল মার্কেটের মালিকানা অর্থাৎ আলাদিনের চেরাগ কিভাবে পেলো সাধারণ জনমনে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন মেসার্স অরুপ ষ্টোরে জ্বালানি তেল বিক্রির বৈধ লাইসেন্সের অনুমোদন নেই অথচ সব নিয়মনীতি উপেক্ষা করে জ্বালানি তেল বা পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ বিক্রির মিনি পেট্রোল পাম্প গড়ে তুলেছে। এসব দোকান যেমন অবৈধ, তেমনি এদের তেল সংগ্রহ পদ্ধতিও অবৈধ। এ ছাড়াও ইউনিয়ন গুলোতে রয়েছে অসংখ্য অবৈধ দোকান। আর এসব দোকান থেকে নাশকতাকারীরা জ্বালানি তেল ক্রয় করে বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালাতে পারবে খুব সহজেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পেট্রোলিয়ামসংক্রান্ত আইন অনুসারে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া কোনো দোকানে জ্বালানি তেল বিক্রি করা যাবে না। জ্বালানি তেল বিক্রির জন্য আধাপাকা ঘর, অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার, মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্র এবং ট্রেড লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব লাইসেন্সের তোয়াক্কা না করে শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে জ্বালানি তেলের ব্যবসা পরিচালনা করছেন।

সাতক্ষীরা সদর সহ ফিংড়ী সর্বত্র ছোটবড় বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে দাহ্য পদার্থ। আর এভাবে জ্বালানি তেল বিক্রিতে সাধারণ মানুষ থাকে প্রতিটি মুহূর্তে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায়। রাসায়নিক সারের দোকান, এলপিজি’র দোকানে ও চলছে অকটেন, ডিজেল, পেট্রোল ও কেরোসিন বিক্রি। বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প থেকে সংগৃহীত এবং চোরাইপথে আসা গ্যাস কনডেনসেট বা তলানিসহ অন্যান্য নিম্নমানের পদার্থ মিশিয়ে তেল বিক্রি করা হয়। মাপে কম দেওয়াও অবৈধ তেল ব্যবসায়ীদের আরেকটি প্রবণতা।

ভুক্তভোগীরা জানান, এসব নিম্নমানের ভেজাল তেল ব্যবহার করায় গাড়ির ইঞ্জিনের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি এর কালো ধোঁয়ায় পরিবেশও দূষিত হচ্ছে। এ তেলে যাত্রীদের চোখ জ্বলে এবং ইঞ্জিন থেকেও বেশি শব্দ হয়। এসব ভেজাল চোরাই তেলে গাড়ির মাইলেজ কমে যায়।

পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে অনেকে জ্বালানি তেল বিক্রি করছেন। যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ তাদের কারো কাছেই পরিবেশের ছাড়পত্র কিংবা বিস্ফোরক লাইসেন্স ও অগ্নি নির্বাপক অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোয়াইব আহমেদ বলেন, খুব দ্রুতই অবৈধ জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ী সবুর মার্কেটে জ্বালানি তেলের গোডাউনে আগুন

আপডেট সময় : ০৭:৩৯:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫

মোঃ মোকাররাম বিল্লাহ ইমন,সাতক্ষীরা:সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ী বাজারে সরকারি বিধি-নিষেধকে তোয়াক্কা না করেই খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে জ্বালানি তেল। জেলার পৌর শহরসহ বিভিন্ন ইউপির হাট-বাজারে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই যত্রতত্র পেট্রোল, ডিজেল ও অকটেনের মতো দাহ্য পদার্থ বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।

উল্লেখ্য গত ২৬ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুর আনুমানিক বারোটার দিকে সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ী বাজারে সবুর মার্কেটে মেসার্স অরুপ ষ্টোরের একটি তেলের গোডাউনে আকস্মিক আগুনের ধোঁয়ায় ফিংড়ী ইউনিয়নের বিশ্বনাথ হালদারের ছেলে শান্তি ঠাকুর এবং আনারুল সরদারের ছেলে হাফিজুল সরদার আগুনে দগ্ধ হন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সাতক্ষীরা সদর হসপিটালে ভর্তি করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায় ফিংড়ী বাজারে সরকারি খাস জায়গা দখল করে অবৈধভাবে কোন নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে মুছা খানের ছেলে সবুর খান এই মার্কেটটি তৈরি করে। সবুর খান নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করলেও সরকার পট পরিবর্তন এর আগে আ’লীগ বলে নিজেকে জাহির করতেন। অনেকের মনে প্রশ্ন সাইকেল মিস্ত্রি হতে রাতারাতি বিশাল মার্কেটের মালিকানা অর্থাৎ আলাদিনের চেরাগ কিভাবে পেলো সাধারণ জনমনে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন মেসার্স অরুপ ষ্টোরে জ্বালানি তেল বিক্রির বৈধ লাইসেন্সের অনুমোদন নেই অথচ সব নিয়মনীতি উপেক্ষা করে জ্বালানি তেল বা পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ বিক্রির মিনি পেট্রোল পাম্প গড়ে তুলেছে। এসব দোকান যেমন অবৈধ, তেমনি এদের তেল সংগ্রহ পদ্ধতিও অবৈধ। এ ছাড়াও ইউনিয়ন গুলোতে রয়েছে অসংখ্য অবৈধ দোকান। আর এসব দোকান থেকে নাশকতাকারীরা জ্বালানি তেল ক্রয় করে বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালাতে পারবে খুব সহজেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পেট্রোলিয়ামসংক্রান্ত আইন অনুসারে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া কোনো দোকানে জ্বালানি তেল বিক্রি করা যাবে না। জ্বালানি তেল বিক্রির জন্য আধাপাকা ঘর, অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার, মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্র এবং ট্রেড লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব লাইসেন্সের তোয়াক্কা না করে শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে জ্বালানি তেলের ব্যবসা পরিচালনা করছেন।

সাতক্ষীরা সদর সহ ফিংড়ী সর্বত্র ছোটবড় বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে দাহ্য পদার্থ। আর এভাবে জ্বালানি তেল বিক্রিতে সাধারণ মানুষ থাকে প্রতিটি মুহূর্তে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায়। রাসায়নিক সারের দোকান, এলপিজি’র দোকানে ও চলছে অকটেন, ডিজেল, পেট্রোল ও কেরোসিন বিক্রি। বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প থেকে সংগৃহীত এবং চোরাইপথে আসা গ্যাস কনডেনসেট বা তলানিসহ অন্যান্য নিম্নমানের পদার্থ মিশিয়ে তেল বিক্রি করা হয়। মাপে কম দেওয়াও অবৈধ তেল ব্যবসায়ীদের আরেকটি প্রবণতা।

ভুক্তভোগীরা জানান, এসব নিম্নমানের ভেজাল তেল ব্যবহার করায় গাড়ির ইঞ্জিনের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি এর কালো ধোঁয়ায় পরিবেশও দূষিত হচ্ছে। এ তেলে যাত্রীদের চোখ জ্বলে এবং ইঞ্জিন থেকেও বেশি শব্দ হয়। এসব ভেজাল চোরাই তেলে গাড়ির মাইলেজ কমে যায়।

পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে অনেকে জ্বালানি তেল বিক্রি করছেন। যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ তাদের কারো কাছেই পরিবেশের ছাড়পত্র কিংবা বিস্ফোরক লাইসেন্স ও অগ্নি নির্বাপক অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোয়াইব আহমেদ বলেন, খুব দ্রুতই অবৈধ জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।