ঢাকা ০৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
রাজাপুরে জমি দখল করতে গিয়ে গাছ কেটে তিন লাখ টাকার ক্ষতির অভিযোগ তানোরে নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে বিএনপির নেতা কর্মীদের সৌজন্য সাক্ষাৎ হরিপুরে স্বপ্নসারথী গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠান ২০২৫ সর্বস্তরের জনগণ প্রথম আলো ও ইনকিলাব পত্রিকায় সাতক্ষীরার উন্নয়নের বিভ্রান্তিকর সংবাদের প্রতিবাদে মানববন্ধন মুন্ডুমালা বাজারে অব্যবস্হাপনায় ও যানজটে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেই সংযোগ সড়ক,২৭ লাখ টাকার সেতুতে উঠতে হয় মই বেয়ে নোয়াখালী সংগঠকদের নিয়ে এবি পাটির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় দুমকীতে গাঁজা সেবনে বৃদ্ধকে এক মাসের কারাদণ্ড দুমকীতে ডেঙ্গুর ছোবলে প্রাণ হারালেন ছাত্র হিজবুল্লাহ নেতা জাকারিয়া র‌্যাবের অভিযানে নীলফামারীর চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার পলাতক অভিযুক্ত গ্রেফতার

রাসেলস ভাইপার সাপে কাটলে যা করবেন

নিজেস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০১:২০:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জুন ২০২৪ ৮৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া
বিষধর ভয়ংকর রাসেলস ভাইপার সাপ ছড়িয়ে পরেছে দেশে ২৭ জেলায়। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। কিন্তু আতঙ্ক দিয়ে তো আর নিষ্কৃতি মেলে না। শুধু রাসেলস ভাইপার কেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে আছে গোখরা, কেউটেসহ নানা জাতের বিষধর সাপ। প্রায়শই মানুষ এসব সাপ দ্বারা আক্রান্ত হয়। সাপ কামড়ালেই মানুষ এক রকম আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। ফলে চিকিৎসা ব্যাহত হয়। ভুক্তভোগীদের একটি বড় অংশই আবার চিকিৎসক বা হাসপাতালের শরণ না নিয়ে ওঝা বা সাপুড়েদের শরণাপন্ন হন। ফলে নিষ্কৃতি তো দূর, সংকট বাড়ে।

এ জন্য জানা প্রয়োজন যে, সাপ কামড়ালে আসলে কী করা উচিত। আর কী করা উচিত নয়। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের অধীনে একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও গবেষণা হয়। এতে সাপের কামড়ের পর করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে।

সাপে কামড়ালে করণীয়

সাপে কামড়ালে রোগীকে প্রথমেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে। সাপের কামড়ে যত মানুষ মারা যায়, তার চেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় কামড় খেয়ে আতঙ্কিত হওয়ার ফলে। তাই রোগীকে একেবারেই আতঙ্কিত হতে দেওয়া যাবে না, শান্ত রাখতে হবে। সাপের কামড়ের স্থানটি যথাসম্ভব নড়াচড়া না করানোর চেষ্টা করতে হবে।

সাপে কামড়ানো জায়গা তৎক্ষণাৎ পরিষ্কার ব্যান্ডেজ বা সুতি কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে হবে, যাতে ধুলাবালি না লাগে। হাতের কোনো অংশে সাপে কাটলে সঙ্গে সঙ্গে ঘড়ি, ব্রেসলেট, আংটি ইত্যাদি খুলে ফেলতে হবে। কাপড় ঢিলেঢালা করে দিতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে শুইয়ে দিতে হবে। তবে সাপে কামড়ানো ব্যক্তিকে কখনোই কাত করে শোয়ানো যাবে না। সব সময় সোজা করে শোয়াতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির বুকের নিচে কিছু একটা দিয়ে বুকটা উঁচু করে রাখতে হবে, যাতে আক্রান্ত স্থানটি হার্ট লেভেলের নিচে থাকে।

বিষাক্ত সাপের কামড়ে দুটি দাঁত বসে গিয়ে ক্ষত তৈরি হয়। বিষহীন সাপের কামড়ে অনেকগুলো দাঁতের আঁচড় পড়তে পারে। তাই কামড় দেখে বুঝতে হবে যে এটি বিষাক্ত সাপে কামড়েছে নাকি বিষহীন সাপে কামড়েছে। তারপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। বিষাক্ত সাপের কামড়ে ক্ষতস্থান জ্বালাপোড়া করে। সম্ভব হলে সাপটি দেখতে কেমন তা লক্ষ্য করতে হবে। সাপের বর্ণনা পরবর্তী সময়ে চিকিৎসা পরিকল্পনায় সাহায্য করতে পারে। কামড় দেখে শনাক্ত করতে ক্ষতস্থান রক্তাক্ত থাকলে আগে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

সাপে কামড়ালে আক্রান্ত স্থান থেকে বিষ চুষে বের করার চেষ্টা করা মোটেও ঠিক নয়। আক্রান্ত জায়গায় কোনো ধরনের ওষুধ বা কেমিক্যাল ব্যবহার করা ঠিক নয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সাপ যেখানে কামড় দিয়েছে, সেখানে কেটে রক্ত বের করার চেষ্টা করা হয়। এতে আশপাশের রক্ত সংবহনতন্ত্র বা স্নায়ুতন্ত্র কেটে যেতে পারে।

সাপে কামড়ালে ওঝার কাছে না গিয়ে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে। বিষাক্ত সাপে কাটলে বাঁচার পথ একটাই। দ্রুত হাসপাতাল যাওয়া। দংশনের পর আত্মীয়ের পরামর্শ, ওঝা-ঝাড়ফুঁকের নামে এক সেকেন্ড সময় নষ্ট না করে সোজা রোগীকে নিয়ে বড় সরকারি হাসপাতালে যেতে হবে।

কৃষিজমিতে কাজের সময় অবশ্যই গামবুট পরতে হবে। সম্ভব হলে হাতে গ্লাভস পরতে হবে। সাপ হাত এবং পায়ে দংশন করে সবচেয়ে বেশি। রাতের বেলা লাইট নিয়ে চলাফেরা করতে হবে। রাতে জমিতে কাজ না করাই ভালো। জমির ধান, ভুট্টাসহ নানা ফসল কাটার জন্য যান্ত্রিক মেশিন ব্যবহার করা ভালো।

জমি এবং জমির ঝোপঝাড় দিয়ে হাঁটার সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। রাসেলস ভাইপার হিসহিস শব্দ করে। যা কানে বেশ জোরে শোনা যায়। এ কারণে হিসহিস শব্দ শুনলে সাবধান হতে হবে। কাজ করার সময় মাটিতে শব্দ করা যেতে পারে, যাতে সামান্য হলেও কম্পন সৃষ্টি হয়। রাসেলস ভাইপার কম্পন বুঝতে পারে। রাসেলস ভাইপার দ্রুত দংশন করতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

রাসেলস ভাইপার সাপে কাটলে যা করবেন

আপডেট সময় : ০১:২০:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া
বিষধর ভয়ংকর রাসেলস ভাইপার সাপ ছড়িয়ে পরেছে দেশে ২৭ জেলায়। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। কিন্তু আতঙ্ক দিয়ে তো আর নিষ্কৃতি মেলে না। শুধু রাসেলস ভাইপার কেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে আছে গোখরা, কেউটেসহ নানা জাতের বিষধর সাপ। প্রায়শই মানুষ এসব সাপ দ্বারা আক্রান্ত হয়। সাপ কামড়ালেই মানুষ এক রকম আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। ফলে চিকিৎসা ব্যাহত হয়। ভুক্তভোগীদের একটি বড় অংশই আবার চিকিৎসক বা হাসপাতালের শরণ না নিয়ে ওঝা বা সাপুড়েদের শরণাপন্ন হন। ফলে নিষ্কৃতি তো দূর, সংকট বাড়ে।

এ জন্য জানা প্রয়োজন যে, সাপ কামড়ালে আসলে কী করা উচিত। আর কী করা উচিত নয়। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের অধীনে একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও গবেষণা হয়। এতে সাপের কামড়ের পর করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে।

সাপে কামড়ালে করণীয়

সাপে কামড়ালে রোগীকে প্রথমেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে। সাপের কামড়ে যত মানুষ মারা যায়, তার চেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় কামড় খেয়ে আতঙ্কিত হওয়ার ফলে। তাই রোগীকে একেবারেই আতঙ্কিত হতে দেওয়া যাবে না, শান্ত রাখতে হবে। সাপের কামড়ের স্থানটি যথাসম্ভব নড়াচড়া না করানোর চেষ্টা করতে হবে।

সাপে কামড়ানো জায়গা তৎক্ষণাৎ পরিষ্কার ব্যান্ডেজ বা সুতি কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে হবে, যাতে ধুলাবালি না লাগে। হাতের কোনো অংশে সাপে কাটলে সঙ্গে সঙ্গে ঘড়ি, ব্রেসলেট, আংটি ইত্যাদি খুলে ফেলতে হবে। কাপড় ঢিলেঢালা করে দিতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে শুইয়ে দিতে হবে। তবে সাপে কামড়ানো ব্যক্তিকে কখনোই কাত করে শোয়ানো যাবে না। সব সময় সোজা করে শোয়াতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির বুকের নিচে কিছু একটা দিয়ে বুকটা উঁচু করে রাখতে হবে, যাতে আক্রান্ত স্থানটি হার্ট লেভেলের নিচে থাকে।

বিষাক্ত সাপের কামড়ে দুটি দাঁত বসে গিয়ে ক্ষত তৈরি হয়। বিষহীন সাপের কামড়ে অনেকগুলো দাঁতের আঁচড় পড়তে পারে। তাই কামড় দেখে বুঝতে হবে যে এটি বিষাক্ত সাপে কামড়েছে নাকি বিষহীন সাপে কামড়েছে। তারপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। বিষাক্ত সাপের কামড়ে ক্ষতস্থান জ্বালাপোড়া করে। সম্ভব হলে সাপটি দেখতে কেমন তা লক্ষ্য করতে হবে। সাপের বর্ণনা পরবর্তী সময়ে চিকিৎসা পরিকল্পনায় সাহায্য করতে পারে। কামড় দেখে শনাক্ত করতে ক্ষতস্থান রক্তাক্ত থাকলে আগে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

সাপে কামড়ালে আক্রান্ত স্থান থেকে বিষ চুষে বের করার চেষ্টা করা মোটেও ঠিক নয়। আক্রান্ত জায়গায় কোনো ধরনের ওষুধ বা কেমিক্যাল ব্যবহার করা ঠিক নয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সাপ যেখানে কামড় দিয়েছে, সেখানে কেটে রক্ত বের করার চেষ্টা করা হয়। এতে আশপাশের রক্ত সংবহনতন্ত্র বা স্নায়ুতন্ত্র কেটে যেতে পারে।

সাপে কামড়ালে ওঝার কাছে না গিয়ে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে। বিষাক্ত সাপে কাটলে বাঁচার পথ একটাই। দ্রুত হাসপাতাল যাওয়া। দংশনের পর আত্মীয়ের পরামর্শ, ওঝা-ঝাড়ফুঁকের নামে এক সেকেন্ড সময় নষ্ট না করে সোজা রোগীকে নিয়ে বড় সরকারি হাসপাতালে যেতে হবে।

কৃষিজমিতে কাজের সময় অবশ্যই গামবুট পরতে হবে। সম্ভব হলে হাতে গ্লাভস পরতে হবে। সাপ হাত এবং পায়ে দংশন করে সবচেয়ে বেশি। রাতের বেলা লাইট নিয়ে চলাফেরা করতে হবে। রাতে জমিতে কাজ না করাই ভালো। জমির ধান, ভুট্টাসহ নানা ফসল কাটার জন্য যান্ত্রিক মেশিন ব্যবহার করা ভালো।

জমি এবং জমির ঝোপঝাড় দিয়ে হাঁটার সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। রাসেলস ভাইপার হিসহিস শব্দ করে। যা কানে বেশ জোরে শোনা যায়। এ কারণে হিসহিস শব্দ শুনলে সাবধান হতে হবে। কাজ করার সময় মাটিতে শব্দ করা যেতে পারে, যাতে সামান্য হলেও কম্পন সৃষ্টি হয়। রাসেলস ভাইপার কম্পন বুঝতে পারে। রাসেলস ভাইপার দ্রুত দংশন করতে পারে।