বাকৃবির শিক্ষার্থীরা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত

- আপডেট সময় : ০২:২৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০২৪ ৮৫ বার পড়া হয়েছে

বাকৃবি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নেই কোন ব্যবস্থা । বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য মতে, বর্তমানে বাকৃবিতে ৬ হাজার ১৯৯জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত এবং প্রতিবছর স্নাতক পর্যায়ে ১হাজার ১১৬জন শিক্ষার্থী যুক্ত হচ্ছে । তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা বা কাউন্সেলিংয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হেল্থ কেয়ার সেন্টারে নেই আলাদা কোনো ইউনিট বা স্থায়ী মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। এতে করে এখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা হতাশা, মানসিক অবসাদ, বিষণ্ণতার মতো অবস্থার পরিত্রাণে উপযুক্ত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমনকি এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন থেকে কর্তৃপক্ষেরও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই। বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকদের কাউন্সিলিং করার নির্দেশনা দেয়া থাকলেও তা নিয়মিত হয় না বলে জানা যায়।
ফলে পড়াশোনা ও পরীক্ষার মানসিক চাপ, সামান্য ঘটনায় অসহিষ্ণু আচরণ, রাগ-ক্ষোভের জেরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা, ছোট খাটো বিষয় থেকে ঝগড়া, মারামারি, জুনিয়র কর্তৃক সিনিয়রকে অসদাচারণের মতো একাধিক ঘটনার স্বাক্ষী বিশ্ববিদ্যালয়। হতাশা থেকে মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে পড়াদের সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। এদের অনেকেই ভুগছেন মানসিক সমস্যায়। দেখা যায়, উন্নত দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য় রয়েছে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ । এ দিকে বাকৃবিতে এতো শিক্ষার্থী থাকা সত্ত্বেও নেই কোন ব্যবস্থা।
আঁচল ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, ২০২৩ সালে মোট আত্মহত্যাকারী ৫১৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ৯৮ জন অর্থাৎ মোট সংথ্যার ১৯.১ শতাংশ। এর মধ্যে প্রেমঘটিত কারণে ১৬ দশমিক ৫ শকাংশ, মানসিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ২২ দশমিক ৭ শতাংশ ও অভিমানের কারে ৩২ দশমিক ২ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।
ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য একটি কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকলেও নিয়মিত কার্যক্রম নেই।
রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ মো. অলিউল্লাহ বলেন, বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের কোনো কমিটি বা কার্যক্রম নেই। তবে কোনো সংগঠন এ ব্যাপারে এগিয়ে আসলে সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে অতি দ্রুত তা বাস্তবায়ন করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হেল্থ কেয়ার সেন্টারে মানসিক স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা নিয়ে চীফ মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো সাইদুর রহমান বলেন, হেল্থ কেয়ারে কোন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নেই। মানসিক রোগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৫০ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বললে ৩৭ জন জানান, এই সেবার বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানেন না। ছয়জন জানান, তাঁরা কিছুটা জানেন। বাকিরা জানান, তাঁরা এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন কার্যক্রম দেখেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ খান বলেন, ‘ বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউন্সেলিং করার ব্যবস্থা আছে বলে শুনেছি। কিন্তু কোথায় করায়, তাদের সাথে কিভাবে যোগাযোগ করবো, এসব তথ্য জানা নেই।