নীলফামারী উত্তরা ইপিজেড ট্রাজেডি: মৃত হাবিবুর রহমানের পরিবারকে আরও ৫ লক্ষ টাকা দিল এভারগ্রীণ চেয়ারম্যান

- আপডেট সময় : ০৩:২৯:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৫৬ বার পড়া হয়েছে

নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে সংঘর্ষে নিহত হাবিবুর রহমানের পরিবারকে আবারও ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করা করেছে ইপিজেডের হংকং ভিত্তিক চীনা কোম্পানি এভারগ্রিন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরি (বিডি) লিমিটেড। এ নিয়ে এভারগ্রীন কোম্পানীর পক্ষ থেকে মোট ৭ লক্ষ টাকা পেয়েছেন নিহত হাবিবুর রহমানের পরিবার।
এভারগ্রিন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরি (বিডি) লিমিটেডের চেয়ারম্যান মি.ফেলিক্স ওয়াই.সি. চ্যাং দ্বিতীয়বারের মতো হাবিবুর রহমানের পরিবারের কাছে এই অর্থ প্রদান করেন।
এসময় বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এর নির্বাহী পরিচালক (ইডি) মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার, এভারগ্রিন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরি (বিডি) লিমিটেডের প্রশাসন ও সহায়তা ইনচার্জ মি. লি তাই পেং ও জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের এভারগ্রিন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরি (বিডি) লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন বলেন, “এভারগ্রিন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরি ২০১০ সালে উত্তরা ইপিজেডে যাত্রা শুরু করে। এটি হংকং ভিত্তিক একটি কোম্পানি। এখানে প্রায় ১০,০০০ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে, যার মধ্যে ৮০ শতাংশই নারী। এভারগ্রিন উন্নত মানের উইগ, চুলের টুকরো, জাম্বো ব্রেইড এবং মানুষের চুলের উইগ পিস পণ্য এবং এক্সটেনশন তৈরি করে বিশ্ব জয় করেছে”।
“নীলফামারীর রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) শ্রমিক এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মীদের মধ্যে অপ্রত্যাশিত সংঘর্ষে ইকু ইন্টারন্যাশনাল নিটিং ফ্যাক্টরির কর্মচারী হাবিবুর রহমানের মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত। আমরা দ্বিতীয়বারের মতো আমাদের কোম্পানীর পক্ষ থেকে নিহত হাবিবুর রহমানের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করেছি এবং আহত অন্যান্য শ্রমিকদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ খরচও আমাদের নিজস্ব তহবিল থেকে বহন করছি।”
বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা), উত্তরা ইপিজেড, নীলফামারীর নির্বাহী পরিচালক (ইডি) মোহাম্মদ আব্দুল জব্বারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “উত্তরা ইপিজেড-এ চীন, হংকং এবং যুক্তরাজ্য সহ মোট ৩৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে ২৬টি চালু রয়েছে। ১৭ জন বিদেশী বিনিয়োগকারী ২২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছেন। এছাড়াও সর্বমোট বিনিয়োগের পরিমাণ ২৭৫.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে এই অঞ্চলে প্রায় ৩৫,০০০ কর্মী নিযুক্ত আছেন, যার মধ্যে ৭৫ শতাংশই নারী”।
তিনি আরও বলেন, “উত্তরাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে উত্তরা ইপিজেডের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের এই অঞ্চল সম্পর্কে ইতিবাচক উদ্বেগ রয়েছে এবং তাদের আরও বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে”।
তবে, হাবিবুর রহমান নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেড-এর ইকু ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি বুনন কারখানার কর্মচারী ছিলেন। সম্প্রতি নীলফামারীর রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) কারখানা বন্ধ এবং শ্রমিক ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে শ্রমিক ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে অপ্রত্যাশিত সংঘর্ষে তিনি নিহত হন।
স্থানীয়রা বলছেন, উত্তরা ইপিজেড এর যেসকল কোম্পানী রয়েছে এর মধ্যে এভারগ্রীণ সবচে বড়। একসময় রংপুর অঞ্চলের মঙ্গাপ্রবণ জেলা হিসেবে পরিচিত ছিল নীলফামারী। উত্তরা ইপিজেড স্থাপিত হবার পর থেকেই উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে এ অঞ্চলটিতে। খড়ের ঘর এবং চরম দারিদ্র্যের দৃশ্যে এখন বিলীন। সেখানে কাজ করে জীবন-জীবিকা পরিবর্তন করছে প্রায় ৫০হাজার নারী-পুরুষ। এর মধ্যে এভারগ্রীণ ফ্যাক্টরীর ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ।