ঢাকা ০৩:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
রাউজান প্রেস ক্লাবের সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক সরওয়ার উদ্দিন আহমেদ’র জানাজা সম্পন্ন চট্টগ্রামে বেঙ্গল ইসলামী লাইফ ইনসুরেন্সের বার্ষিক সম্মেলন-২৫ অনুষ্ঠিত দুমকীতে মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে বাহেরচর, চোখের জলে ভাসছে মানুষ ঝিনাইদহে তালাবদ্ধ ফার্নিচার দোকানের ভিতর থেকে উদ্ধার হলো গৃহবধূর মৃতদেহ সমাজিক পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা উদ্যোগে দুস্থ অসহায়দের মাঝে চাউল বিতরণের আয়োজন করা হয় বকশীগঞ্জে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী পরিবারের মাঝে ছাগল বিতরণ চুয়াডাঙ্গায় বিষাক্ত মদ খেয়ে ৬ জনের মৃত্যু রাণীশংকৈলে মাদকবিরোধী জনসচেতনতায় একতার ডাক সাতক্ষীরায় যৌতুক ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে গণসচেতনতা দেবহাটায় ব্যতিক্রমী নাটিকা ও লোকসংগীত কুতুবদিয়ায় ডেইল ইউনিয়ন শ্রমিক দলের দ্বি বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত

দুমকীতে মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে বাহেরচর, চোখের জলে ভাসছে মানুষ

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১১:২৫:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫ ৩৮ বার পড়া হয়েছে

‎মোঃ সজিব সরদার,স্টাফ রিপোর্টারঃ পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের বাহেরচর ও আঙ্গারিয়া গ্রাম এখন পায়রা নদীর ভয়াল ভাঙনে প্রায় নিশ্চিহ্ন। গত কয়েক বছরে নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে শতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, বাগান, কবরস্থান, এমনকি মসজিদ–মন্দিরও। প্রতিদিন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ২০/৩০টি পরিবার—কবে তাদের ঘরটিও গিলে খাবে পায়রা।

‎স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) একটি মেইনটেনেন্স প্রকল্প হাতে নিয়েছে—তবে সেটি আছে কেবল কাগজে–কলমে। নদীতে জিও ব্যাগ ফেলার কথা থাকলেও ঠিকাদার সেগুলো নদীর পাড়েই ফেলে রেখে চলে গেছেন।

‎সোমবার(১৩ অক্টোবর)সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,পায়রা নদীর স্রোত আরও তীব্র হয়েছে। পাউবোর ভেড়িবাঁধের পাশে খোলা আকাশের নিচে মালপত্র গুটিয়ে বসে আছেন ভাঙনে সর্বস্ব হারানো পরিবারগুলো। চোখেমুখে ভয়, অনিশ্চয়তা আর ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর হতাশা।

‎স্থানীয় বাসিন্দা কবির শিকদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সরকার বরাদ্দ দেয় ঠিকই, কিন্তু কিছু অসাধু ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে কাজ হয় না। গত সপ্তাহেও পটুয়াখালী পাউবো অফিসে গিয়ে বলেছি যেন দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলা হয়, কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি।”

‎রুহুল আমিন হাওলাদার, আরেক ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা বলেন, “বাহেরচর তো শেষ, এখন আঙ্গারিয়া গ্রামও ভাঙনের মুখে। জমি কেনার মতো সামর্থ্য নেই, তাই উদ্বাস্তু হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছি।”

‎পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. রাকিব বাংলাদেশের চিত্র কে বলেন, “দ্রুত মেইনটেনেন্স প্রকল্প বাস্তবায়নে ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু না করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

‎এ বিষয়ে জানতে পাউবোর ওই প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সহিদ–খুশি এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

‎আঙ্গারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান বলেন, “বাহেরচর প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, এখন আঙ্গারিয়াও ভাঙছে।” তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য সহায়তা ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার পরিকল্পনা আছে, “তবে তা সময়সাপেক্ষ।”

‎দুমকী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর মো. এজাজুল হক বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। “তালিকা শেষ হলে সহায়তা দেওয়া হবে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

দুমকীতে মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে বাহেরচর, চোখের জলে ভাসছে মানুষ

আপডেট সময় : ১১:২৫:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

‎মোঃ সজিব সরদার,স্টাফ রিপোর্টারঃ পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের বাহেরচর ও আঙ্গারিয়া গ্রাম এখন পায়রা নদীর ভয়াল ভাঙনে প্রায় নিশ্চিহ্ন। গত কয়েক বছরে নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে শতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, বাগান, কবরস্থান, এমনকি মসজিদ–মন্দিরও। প্রতিদিন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ২০/৩০টি পরিবার—কবে তাদের ঘরটিও গিলে খাবে পায়রা।

‎স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) একটি মেইনটেনেন্স প্রকল্প হাতে নিয়েছে—তবে সেটি আছে কেবল কাগজে–কলমে। নদীতে জিও ব্যাগ ফেলার কথা থাকলেও ঠিকাদার সেগুলো নদীর পাড়েই ফেলে রেখে চলে গেছেন।

‎সোমবার(১৩ অক্টোবর)সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,পায়রা নদীর স্রোত আরও তীব্র হয়েছে। পাউবোর ভেড়িবাঁধের পাশে খোলা আকাশের নিচে মালপত্র গুটিয়ে বসে আছেন ভাঙনে সর্বস্ব হারানো পরিবারগুলো। চোখেমুখে ভয়, অনিশ্চয়তা আর ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর হতাশা।

‎স্থানীয় বাসিন্দা কবির শিকদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সরকার বরাদ্দ দেয় ঠিকই, কিন্তু কিছু অসাধু ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে কাজ হয় না। গত সপ্তাহেও পটুয়াখালী পাউবো অফিসে গিয়ে বলেছি যেন দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলা হয়, কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি।”

‎রুহুল আমিন হাওলাদার, আরেক ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা বলেন, “বাহেরচর তো শেষ, এখন আঙ্গারিয়া গ্রামও ভাঙনের মুখে। জমি কেনার মতো সামর্থ্য নেই, তাই উদ্বাস্তু হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছি।”

‎পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. রাকিব বাংলাদেশের চিত্র কে বলেন, “দ্রুত মেইনটেনেন্স প্রকল্প বাস্তবায়নে ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু না করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

‎এ বিষয়ে জানতে পাউবোর ওই প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সহিদ–খুশি এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

‎আঙ্গারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান বলেন, “বাহেরচর প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, এখন আঙ্গারিয়াও ভাঙছে।” তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য সহায়তা ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার পরিকল্পনা আছে, “তবে তা সময়সাপেক্ষ।”

‎দুমকী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর মো. এজাজুল হক বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। “তালিকা শেষ হলে সহায়তা দেওয়া হবে।”