ঢাকা ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নতুন কুঁড়ি ও মার্কস অলরাউন্ডার কৃতিত্বে ফেনীর দুই শিক্ষার্থী কুতুবদিয়া কালী মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মতবিনিময় সভা রাজাপুরে ধানের শীষের পক্ষে গোলাম আজম সৈকতের গণসংযোগ শার্শায় সাংবাদিক মনি’র মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কাউখালি বেকুটিয়ায় বিশ্ব নদী দিবস ২০২৫ইং পালিত শাল্লায় বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম’র উপজেলা শাখায় কমিটি গঠন করা হয় বিশ্ব নদী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে গ্রীন ভয়েসের মানববন্ধন কুলিয়া চরবালিথা মুনষ্টার তরুণ সংঘের নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যদের সংবর্ধনা উজিরপুরে বিএনপি নেতা বহিষ্কার: ধর্মীয় সম্প্রীতি ভাঙা ও কুকীর্তির গল্প শ্যামনগরে বিশ্ব নদী দিবসে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

দিনে ভয় হিটস্ট্রোকের, চাঁদের আলোয় ধান কাটছেন চাষিরা

নিজেস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:১৮:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১০৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আশরাফ

সারাদেশে চলছে তীব্র দাবদাহ। এতে প্রভাব পড়েছে জনজীবনে।

আর এই দাবদাহের ফলে বেশ বিপাকে পড়েছেন শরীয়তপুরের ধানচাষিরা। অতিরিক্ত গরমে দিনের বেলা হিটস্ট্রোকের ভয়ে পাকা ধান কাটতে পারছেন না চাষিরা। তাই বাধ্য হয়ে ধান কাটার সময় হিসেবে রাতের বেলাকে বেছে নিয়েছেন অনেক চাষি।

দিনে তীব্র তাপদাহর কারণে বাসায় থাকছেন, আর রাতে চাঁদের আলোয় ধান কাটছেন চাষিরা। এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চর কাশাভোগ এলাকায়।

এদিকে, এই সমস্যা সমাধানে সরকারের দেওয়া কম্বাইন হার্ভেস্টার ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন জেলা কৃষি বিভাগ।ধানচাষিরা জানান, অধিকাংশ জমিতে গত একসপ্তাহ ধরে জেলার বোরো ধান পাকা শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত গরমে দিনের বেলা হিটস্ট্রোকসহ বিভিন্ন অসুস্থতার ভয়ে ধান কাটতে পারছেন না চাষিরা।

তাই রাতের বেলায় চাঁদের আলোয় ধান কাটতে দেখা গেছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চর কাশাভোগ এলাকার ধানচাষিদের। এই অতিরিক্ত গরমে শ্রমিক না পেয়ে নিজেরাই নিজেদের জমির ধান কাটছেন। যতদিন চাঁদের আলো থাকবে, ততদিন এই ধান কাটবেন বলছেন তারা।

সরেজমিনে বেশ কয়েকটি ধানের জমিতে গিয়ে দেখা যায়, মাঠজুড়ে দুলছে সোনালি ধান। অধিকাংশ জমির ধান এখন পেকে গেছে। দিনের বেলা প্রখর রোদের তাপ থাকায় রাতের বেলা চাঁদের আলোয় ধান কাটছেন চাষিরা।জেলা কৃষিবিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ২৫ হাজার ৫২৬ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ করা হয়েছে।

যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৬২৭ মেট্রিক টন। আর গত বছর জেলায় বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল ২৫ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে।

যার উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৯০৬ মেট্রিক টন। গত বছরের তুলনায় এ বছর বোরো ধানের উৎপাদন বেড়েছে এক হাজার ৭২১ মেট্রিক টন। তবে চলতি বছরে একটানা চলা তীব্র দাবদাহে ধানের উৎপাদনে কিছুটা ব্যাঘাত

চাষি মিজান শিকদার বলেন, ৮০ শতাংশ জমিতে আমি বোরো ধানের চাষ করেছি। ধানের ফলন ভালো হওয়ায় অনেকটা খুশি এ চাষি।

তবে বিপাকে পড়েছেন ধান পাকার পর। তীব্র দাবদাহে দিনের বেলা ধান কাটতে রাজি হচ্ছে না শ্রমিকরা। পরে সিদ্ধান্ত নেই নিজেরাই রাতে চাঁদের আলোয় ধান কাটব। তাই আমরা চারজন চাষি ধান কাটা শুরু করি। রাত ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোর ৫টা পর্যন্ত আমরা ধান কাটি।স্থানীয় সাইফুল ইসলাম বলেন, তীব্র গরমের কারণে জেলায় এই প্রথম রাতে চাঁদের আলোয় চাষিদের ধান কাটতে দেখা গেছে। কৃষি বিভাগ চাষিদের সহযোগিতায় এগিয়ে আশা উচিত।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মোহাম্মদ রিয়াজুর রহমান বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহে কৃষকদের দিনের বেলা ধান কাটা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ অতিরিক্ত গরমে কাজ করলে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। যারা এই গরমে মাঠে কাজ করবেন তাদের প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করার পাশাপাশি গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, তীব্র তাপদাহর কারণে কিছু কিছু কৃষক রাতে চাঁদের আলোয় ধান কাটছে। সেক্ষেত্রে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি। সরকারের পক্ষ থেকে অনেকগুলো কম্বাইন হার্ভেস্টার দেওয়া হয়েছে।

এই কম্বাইন হার্ভেস্টার যদি ব্যবহার করে তাহলে অল্প সময়ের মধ্যে তারা ধান কাটতে পারবেন। ধান কর্তনের যে ক্ষতি হয়, সেই ক্ষতি থেকেও বাঁচবেন। পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকি মুক্ত থাকবেন কৃষকরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

দিনে ভয় হিটস্ট্রোকের, চাঁদের আলোয় ধান কাটছেন চাষিরা

আপডেট সময় : ০৪:১৮:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : আশরাফ

সারাদেশে চলছে তীব্র দাবদাহ। এতে প্রভাব পড়েছে জনজীবনে।

আর এই দাবদাহের ফলে বেশ বিপাকে পড়েছেন শরীয়তপুরের ধানচাষিরা। অতিরিক্ত গরমে দিনের বেলা হিটস্ট্রোকের ভয়ে পাকা ধান কাটতে পারছেন না চাষিরা। তাই বাধ্য হয়ে ধান কাটার সময় হিসেবে রাতের বেলাকে বেছে নিয়েছেন অনেক চাষি।

দিনে তীব্র তাপদাহর কারণে বাসায় থাকছেন, আর রাতে চাঁদের আলোয় ধান কাটছেন চাষিরা। এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চর কাশাভোগ এলাকায়।

এদিকে, এই সমস্যা সমাধানে সরকারের দেওয়া কম্বাইন হার্ভেস্টার ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন জেলা কৃষি বিভাগ।ধানচাষিরা জানান, অধিকাংশ জমিতে গত একসপ্তাহ ধরে জেলার বোরো ধান পাকা শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত গরমে দিনের বেলা হিটস্ট্রোকসহ বিভিন্ন অসুস্থতার ভয়ে ধান কাটতে পারছেন না চাষিরা।

তাই রাতের বেলায় চাঁদের আলোয় ধান কাটতে দেখা গেছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চর কাশাভোগ এলাকার ধানচাষিদের। এই অতিরিক্ত গরমে শ্রমিক না পেয়ে নিজেরাই নিজেদের জমির ধান কাটছেন। যতদিন চাঁদের আলো থাকবে, ততদিন এই ধান কাটবেন বলছেন তারা।

সরেজমিনে বেশ কয়েকটি ধানের জমিতে গিয়ে দেখা যায়, মাঠজুড়ে দুলছে সোনালি ধান। অধিকাংশ জমির ধান এখন পেকে গেছে। দিনের বেলা প্রখর রোদের তাপ থাকায় রাতের বেলা চাঁদের আলোয় ধান কাটছেন চাষিরা।জেলা কৃষিবিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ২৫ হাজার ৫২৬ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ করা হয়েছে।

যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৬২৭ মেট্রিক টন। আর গত বছর জেলায় বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল ২৫ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে।

যার উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৯০৬ মেট্রিক টন। গত বছরের তুলনায় এ বছর বোরো ধানের উৎপাদন বেড়েছে এক হাজার ৭২১ মেট্রিক টন। তবে চলতি বছরে একটানা চলা তীব্র দাবদাহে ধানের উৎপাদনে কিছুটা ব্যাঘাত

চাষি মিজান শিকদার বলেন, ৮০ শতাংশ জমিতে আমি বোরো ধানের চাষ করেছি। ধানের ফলন ভালো হওয়ায় অনেকটা খুশি এ চাষি।

তবে বিপাকে পড়েছেন ধান পাকার পর। তীব্র দাবদাহে দিনের বেলা ধান কাটতে রাজি হচ্ছে না শ্রমিকরা। পরে সিদ্ধান্ত নেই নিজেরাই রাতে চাঁদের আলোয় ধান কাটব। তাই আমরা চারজন চাষি ধান কাটা শুরু করি। রাত ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোর ৫টা পর্যন্ত আমরা ধান কাটি।স্থানীয় সাইফুল ইসলাম বলেন, তীব্র গরমের কারণে জেলায় এই প্রথম রাতে চাঁদের আলোয় চাষিদের ধান কাটতে দেখা গেছে। কৃষি বিভাগ চাষিদের সহযোগিতায় এগিয়ে আশা উচিত।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মোহাম্মদ রিয়াজুর রহমান বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহে কৃষকদের দিনের বেলা ধান কাটা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ অতিরিক্ত গরমে কাজ করলে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। যারা এই গরমে মাঠে কাজ করবেন তাদের প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করার পাশাপাশি গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, তীব্র তাপদাহর কারণে কিছু কিছু কৃষক রাতে চাঁদের আলোয় ধান কাটছে। সেক্ষেত্রে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি। সরকারের পক্ষ থেকে অনেকগুলো কম্বাইন হার্ভেস্টার দেওয়া হয়েছে।

এই কম্বাইন হার্ভেস্টার যদি ব্যবহার করে তাহলে অল্প সময়ের মধ্যে তারা ধান কাটতে পারবেন। ধান কর্তনের যে ক্ষতি হয়, সেই ক্ষতি থেকেও বাঁচবেন। পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকি মুক্ত থাকবেন কৃষকরা।