দাগনভুঁইয়ার আলমপুরে গৃহবধূকে মারধর ও স্বর্ণ চুরির অভিযোগ, পুলিশ–মানবাধিকার সংস্থার যৌথ তদন্ত
- আপডেট সময় : ০৪:১৭:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ৭০ বার পড়া হয়েছে

মোহাম্মদ হানিফ,স্টাফ রিপোর্টার ফেনী:স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বাইরে গেলে ভেঙে ফেলা হয় আলমারি—৫ ভরি স্বর্ণসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল নিখোঁজের অভিযোগ; পরে মারধর ও হত্যাচেষ্টার আশঙ্কায় পুলিশে খবর দেন ভুক্তভোগীর বাবা
পুরো সংবাদ প্রতিবেদন
ফেনীর দাগনভুঁইয়া উপজেলার উত্তর আলমপুর গ্রামের বরন্দাজ বাড়িতে গৃহবধূ নাজমা আক্তার স্মৃতিকে মারধর ও স্বর্ণ চুরির একটি গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার তারিখ ২৩ অক্টোবর ২০২৫। ঘটনাটি এখন দাগনভুঁইয়া থানা পুলিশ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার পর্যবেক্ষণে তদন্তাধীন রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী জানা যায়, ওইদিন কুয়েত প্রবাসী শাহজাহান তার স্ত্রী নাজমা আক্তারকে ফোন করেন। স্বামীর সঙ্গে কথা বলতে তিনি বাড়ির বাইরে গেলে—এই সুযোগে তার দেবর মোহাম্মদ কিরণ ও তার স্ত্রী রোজী ঘরে প্রবেশ করে আলমারির তালা ভেঙে ফেলে বলে অভিযোগ। এতে আলমারিতে থাকা প্রায় ৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিখোঁজ হয়।
প্রায় ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট স্বামীর সঙ্গে কথা বলে নাজমা আক্তার ঘরে ফিরে এসে আলমারির তালা ভাঙা দেখতে পান। এ বিষয়ে দেবর ও জ্যা–দের কাছে জানতে চাইলে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগে জানা যায়। মারধরের একপর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
হুঁশ ফিরলে নাজমা আক্তার দেখতে পান—তার বড় জ্যা, ছোট জ্যা ও ননদ তাকে গালিগালাজসহ বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা তাকে পূর্বের বউয়ের মতো বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেবে বলেও হুমকি দেন।
এ সময় দেবর মোহাম্মদ কিরণ মোবাইল ফোনে কাউকে ফোন করে ‘৮–১০ জন মানুষ নিয়ে আসতে হবে’ এবং ‘নাজমাকে জানে মেরে লাশ গুম করতে হবে’—এমন কথোপকথন চালান বলে ভুক্তভোগীর দাবি। এরপর ঘর থেকে বের হতে না দেওয়ার জন্য বাইরে থেকে দরজায় হুক লাগানো হয়।
জীবন–নাশের আশঙ্কায় নাজমা আক্তার তার বাবাকে ফোনে পুরো বিষয়টি জানান। নাজমার বাবা তাৎক্ষণিক দাগনভুঁইয়া থানায় যোগাযোগ করলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।
পরবর্তীতে নাজমা আক্তার দাগনভুঁইয়া কোর্টে বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে দাগনভুঁইয়া থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
এদিকে ভুক্তভোগী আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার দাগনভুঁইয়া সভাপতি জনাব সাইফুল ইসলাম–এর কাছে লিখিত আবেদন করলে বিষয়টি চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক জনাব আবুল কাশেম–কে অবহিত করা হয়। তার নেতৃত্বে ফেনী জেলা আঞ্চলিক জোনের পরিচালক মোহাম্মদ হানিফ, মানবাধিকার কর্মী শহিদুল ইসলাম, সবুজ, নারী ও শিশু নির্যাতন শাখার কর্মকর্তা সুমি, মোহাম্মদ ইব্রাহিম এবং দাগনভুঁইয়া থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে যান।
তদন্তের সময় অভিযোগের বিভিন্ন দিকের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে মানবাধিকার সংস্থার কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন। তবে চূড়ান্ত রিপোর্ট এখনো প্রকাশিত হয়নি।
দাগনভুঁইয়া থানা পুলিশ জানিয়েছে—এটি একটি সংবেদনশীল মামলা এবং আইনগত প্রক্রিয়া অনুসারে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



















