ঝাঁপা বাওড়ের ভাসমান সেতু বৃষ্টির পানিতে নাজেহাল হাজারো মানুষের দুর্ভোগ

- আপডেট সময় : ০৯:৫৩:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫ ১০২ বার পড়া হয়েছে

এমদাদুল হক,ক্রাইম রিপোর্টার মনিরামপুর:যশোরের মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকার ঝাঁপা বাওড়ের ওপর নির্মিত বহুল আলোচিত ভাসমান সেতুটি টানা বৃষ্টিপাত ও স্রোতের ধাক্কায় প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। বর্ষার প্রবল বৃষ্টি এবং দমকা বাতাসে সেতুর অনেকাংশ স্থানচ্যুত হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও ড্রাম ভেঙে বা সরে গিয়ে অংশবিশেষ দেবে গিয়েছে পানির সমান। ফলে সেতুর ওপর দিয়ে পারাপার কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয়দের উদ্যোগে প্রায় পাঁচ বছর আগে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। আগে এই বাওড় পার হতে নৌকাই একমাত্র উপায় ছিল। বিশেষ করে বর্ষায় নৌকা চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রায়ই রোগী, শিশু ও বয়স্ক মানুষকে বিপাকে পড়তে হতো। সেই দুর্ভোগ লাঘব করতে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রম এবং চাঁদা তুলে অভিনব এই ভাসমান সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
সেতু তৈরিতে প্রায় শতাধিক বড় আকারের নীল তেলের ড্রাম, লোহার রড, কাঠ, প্লেট এবং রশি ব্যবহার করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে এই সেতুর মাধ্যমে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত শুরু করে। এছাড়া দেশজুড়ে বিভিন্ন জেলা থেকে অসংখ্য পর্যটক এই সেতু দেখতে আসতেন। সেতুর উপর দিয়ে হাঁটার জন্য নির্ধারিত ছিল জনপ্রতি ২০ টাকার টিকিট।
সাম্প্রতিক টানা ভারি বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে সেতুর দুর্বল অংশগুলোকে একেবারে স্থানচ্যুত করে ফেলেছে। সেতুর উপরের লোহার পাত এবং লোহার ফ্লোর অনেক অংশেই দেবে গিয়ে পানির সঙ্গে মিশে গেছে। বেশ কিছু স্থানে রেলিংও সরে গেছে বা ভেঙে পড়েছে।
বর্তমানে সেতুতে হাঁটা চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে যারা সেতু ব্যবহার করতে চাইছেন, তাদেরও নৌকায় ফিরে যেতে হচ্ছে। আবার নতুন করে নৌকায় পারাপারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। ফলে বর্ষার মৌসুমে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, রোগী ও কর্মজীবী মানুষকে চরম দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে।
পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই ভাসমান সেতু এখন পরিত্যক্তের মতো পড়ে আছে। প্রতিদিন যে পর্যটকরা এখানে ভিড় করতেন, সেতুর দুরবস্থায় তাদের আনাগোনাও বন্ধ হয়ে গেছে। এতে স্থানীয় অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, দ্রুত মেরামত না হলে পুরো বর্ষা মৌসুমে সেতু ব্যবহার অসম্ভব হয়ে যাবে। এতে রাজগঞ্জ, ঝাঁপা, সহ আশপাশের গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হবে।