ঢাকা ১১:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নতুন কুঁড়ি ও মার্কস অলরাউন্ডার কৃতিত্বে ফেনীর দুই শিক্ষার্থী কুতুবদিয়া কালী মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মতবিনিময় সভা রাজাপুরে ধানের শীষের পক্ষে গোলাম আজম সৈকতের গণসংযোগ শার্শায় সাংবাদিক মনি’র মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কাউখালি বেকুটিয়ায় বিশ্ব নদী দিবস ২০২৫ইং পালিত শাল্লায় বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম’র উপজেলা শাখায় কমিটি গঠন করা হয় বিশ্ব নদী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে গ্রীন ভয়েসের মানববন্ধন কুলিয়া চরবালিথা মুনষ্টার তরুণ সংঘের নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যদের সংবর্ধনা উজিরপুরে বিএনপি নেতা বহিষ্কার: ধর্মীয় সম্প্রীতি ভাঙা ও কুকীর্তির গল্প শ্যামনগরে বিশ্ব নদী দিবসে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা পূর্ব শত্রুতার জেরে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৮:২৩:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৪০ বার পড়া হয়েছে

মো:আসাদুজ্জামান আছাদ,চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি :-চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামে পূর্ব বিরোধের জেরে আপন দুই ভাইকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের একদল দুর্বৃত্ত। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় উপজেলার উথলী গ্রামের ব্রিজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুই ভাই আনোয়ার হোসেন মিন্টা (৬৫) ও মো. হামজা (৪৫)। তারা ওই গ্রামের বড় মসজিদপাড়ার মৃত ক্ষুদে মন্ডলের ছেলে। এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জীভননগর থানা পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সকালে নিজেদের কৃষি কাজের উদ্দেশ্যে ব্রিজ মাঠে যান মিন্টা ও হামজা। সেসময় পূর্ব থেকে ওঁত পেতে থাকা ৮—১০ জন দুর্বৃত্ত তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসেঁাটা নিয়ে হামলাকারীরা দুই ভাইকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান মো. হামজা। এসময় স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় মিন্টাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১০টার দিকে তারও মৃত্যু হয়।নিহতদের সেজ ভাই তোতা মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘গত এপ্রিল মাসে নিজামুদ্দিন খোকা নামের এক ব্যক্তি আমাদের একটি গরু মুখে বায়না করে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা না দেওয়ায় আমরা গরুটি বিক্রি করে দিই। এরপর থেকেই খোকা ও তার লোকজন আমাদের হুমকি দিতে থাকে। এর আগেও একবার হামজা ভাইকে কোপানো হয়েছিল, তখন যশোরে ভর্তি করতে হয়েছিল। সে ঘটনায় কোর্টে মামলা চলছে।তিনি আরও বলেন, ‘এবার সেই বিরোধের জেরেই ওরা আমার দুই ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মেরে ফেলল। আমরা আগেই পুলিশের কাছে জানিয়েছিলাম, কিন্তু কিছু হয়নি। আজ আমার ভাইরা আর বেঁচে নেই।নিহত মিন্টার স্ত্রী আকলিমা খাতুন বলেন, ‘নিজামুদ্দিন খোকা ও তার দুই ছেলে বড় বড় দা হাতে নিয়ে বাড়ির সামনে এসে বলে— ‘দুই ভাইকে মেরে রেখেছি, গিয়ে তোদের লাশ নিয়ে আয়।’ তারা প্রকাশ্যেই খুন করে বাড়ির সামনে এসে ভয় দেখিয়েছে, এবং বড়াই করে হত্যার কথা আমাদেরকে জানিয়ে গেছে।
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন বলেন, ‘রক্তাক্ত ও শঙ্কাজনক অবস্থায় আনোয়ার হোসেন মিন্টা জররি বিভাগে আসে। তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ভর্তি করা হয়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে তার মৃত্যু হয়। এছাড়া মো. হামজাকে জরুরি বিভাগে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে নেয়ার পূর্বে তার মৃত্যু হয়েছে। হামজার শারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে।এ বিষয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মানুন হোসেন বলেন, ‘খবর পাওয়ার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। হামলাকারীরা ঘটনার পরপরই পালিয়ে গেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে। নিহত দুই ভাইয়ের মরদেহ বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।এদিকে, দুই ভাইয়ের নির্মম হত্যাকাণ্ডে উথলী গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। প্রতিপক্ষের প্রকাশ্য হামলায় আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকায় যেন আর কোনো সহিংসতা না ঘটে, সে বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও দ্রুত বিচার দাবি করছেন তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

চুয়াডাঙ্গা পূর্ব শত্রুতার জেরে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা

আপডেট সময় : ০৮:২৩:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মো:আসাদুজ্জামান আছাদ,চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি :-চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামে পূর্ব বিরোধের জেরে আপন দুই ভাইকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের একদল দুর্বৃত্ত। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় উপজেলার উথলী গ্রামের ব্রিজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুই ভাই আনোয়ার হোসেন মিন্টা (৬৫) ও মো. হামজা (৪৫)। তারা ওই গ্রামের বড় মসজিদপাড়ার মৃত ক্ষুদে মন্ডলের ছেলে। এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জীভননগর থানা পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সকালে নিজেদের কৃষি কাজের উদ্দেশ্যে ব্রিজ মাঠে যান মিন্টা ও হামজা। সেসময় পূর্ব থেকে ওঁত পেতে থাকা ৮—১০ জন দুর্বৃত্ত তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসেঁাটা নিয়ে হামলাকারীরা দুই ভাইকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান মো. হামজা। এসময় স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় মিন্টাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১০টার দিকে তারও মৃত্যু হয়।নিহতদের সেজ ভাই তোতা মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘গত এপ্রিল মাসে নিজামুদ্দিন খোকা নামের এক ব্যক্তি আমাদের একটি গরু মুখে বায়না করে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা না দেওয়ায় আমরা গরুটি বিক্রি করে দিই। এরপর থেকেই খোকা ও তার লোকজন আমাদের হুমকি দিতে থাকে। এর আগেও একবার হামজা ভাইকে কোপানো হয়েছিল, তখন যশোরে ভর্তি করতে হয়েছিল। সে ঘটনায় কোর্টে মামলা চলছে।তিনি আরও বলেন, ‘এবার সেই বিরোধের জেরেই ওরা আমার দুই ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মেরে ফেলল। আমরা আগেই পুলিশের কাছে জানিয়েছিলাম, কিন্তু কিছু হয়নি। আজ আমার ভাইরা আর বেঁচে নেই।নিহত মিন্টার স্ত্রী আকলিমা খাতুন বলেন, ‘নিজামুদ্দিন খোকা ও তার দুই ছেলে বড় বড় দা হাতে নিয়ে বাড়ির সামনে এসে বলে— ‘দুই ভাইকে মেরে রেখেছি, গিয়ে তোদের লাশ নিয়ে আয়।’ তারা প্রকাশ্যেই খুন করে বাড়ির সামনে এসে ভয় দেখিয়েছে, এবং বড়াই করে হত্যার কথা আমাদেরকে জানিয়ে গেছে।
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন বলেন, ‘রক্তাক্ত ও শঙ্কাজনক অবস্থায় আনোয়ার হোসেন মিন্টা জররি বিভাগে আসে। তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ভর্তি করা হয়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে তার মৃত্যু হয়। এছাড়া মো. হামজাকে জরুরি বিভাগে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে নেয়ার পূর্বে তার মৃত্যু হয়েছে। হামজার শারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে।এ বিষয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মানুন হোসেন বলেন, ‘খবর পাওয়ার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। হামলাকারীরা ঘটনার পরপরই পালিয়ে গেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে। নিহত দুই ভাইয়ের মরদেহ বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।এদিকে, দুই ভাইয়ের নির্মম হত্যাকাণ্ডে উথলী গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। প্রতিপক্ষের প্রকাশ্য হামলায় আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকায় যেন আর কোনো সহিংসতা না ঘটে, সে বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও দ্রুত বিচার দাবি করছেন তারা।