ঢাকা ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বিশ্বের সেরা জুলুসে জনস্রোতে চট্টগ্রাম পৌনে ১কোটি জনতার রেকর্ড শ্যামনগরে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত রাণীশংকৈলে কৃষকদলের সভাপতি বহিষ্কৃত কৃষক দলের নেতার বিরুদ্ধে থানায়  জিডি  সোনাগাজীতে প্রবাসী পরিবারের উপর হামলা ও হত্যার হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ঝিনাইদহে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ১১ তম জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত নীলফামারীতে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত তানোরে জামায়াতের আয়োজনে সিরাতে রাসুল (স:) সেমিনার অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত জমি বিক্রির নামে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ঝিনাইদহে চিহ্নিত প্রতারক পরিবারের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত এক গৃহবধু রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলের লাশ কবর থেকে তুলে জ্বালিয়ে দিলো তৌহিদি জনতা

কুরিয়ারে জাল নোট যাচ্ছে মফস্বলের গরুর হাটেও

নিজেস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১০:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুন ২০২৪ ৯২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া
কোরবানির ঈদ আসন্ন। ঈদকে ঘিরে অন্যান্য বছরের মতো সক্রিয় জাল টাকার কারবারিরা। সুযোগ কাজে লাগাতে রাজধানীর কদমতলীতে তৈরি করা হচ্ছিল জাল টাকা। সুনির্দিষ্ট তথ্য ও গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেশি-বিদেশি জাল নোট তৈরি চক্রের প্রধান জাকিরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)

ডিবি লালবাগ বিভাগের একটি দল শনিবার (৮ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দুটি বাসায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তাররা হলেন, চক্রের প্রধান লিয়াকত হোসেন জাকির ওরফে মাজার জাকির ওরফে গুরু জাকির (৪০), তার দ্বিতীয় স্ত্রী মমতাজ বেগম (২৫), লিমা আক্তার রিনা (৪০) ও সাজেদা আক্তার (২৮)।

ডিবি পুলিশ বলছে, ঈদুল আজহা টার্গেট করে চক্রটি বিপুল পরিমাণ জাল নোট বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ঢাকায় তৈরি এই জাল নোট বিক্রির জন্য যোগাযোগ হতো অনলাইনে আর লেনদেন হতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। লেনদেনের পর কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো হয় জাল নোট। যার বেশিরভাগ এবার যাচ্ছে মফস্বলে। টার্গেট কোরবানির পশুর হাট।

অভিযান সম্পর্কে ডিবি লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মশিউর রহমান বলেন, অভিযানে দুটি বাসা থেকে প্রায় সোয়া এক কোটি টাকা এবং আরও প্রায় তিন কোটি জাল টাকা তৈরির মতো বিশেষ কাপড়/কাগজ, বিশেষ ধরনের কালি, ল্যাপটপ, চারটি প্রিন্টার, বিভিন্ন সাইজের কয়েক ডজন স্ক্রিন/ডাইস, সাদা কাগজ, হিটার মেশিন, নিরাপত্তা সুতাসহ জাল টাকার হরেক রকম মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। ২০০, ৫০০, এক হাজার টাকার জাল নোট ও ভারতীয় ৫০০ রুপির বিপুল পরিমাণ জাল নোট উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, ২৫ বছর ধরে জাল টাকার খুচরা ও পাইকারি কারবার করার পাশাপাশি বিভিন্ন মানের জাল টাকা ও জাল রুপি তৈরির অত্যন্ত দক্ষ লিয়াকত হোসেন জাকির। তিনি ২০১২ সাল থেকে ৫০০ ও এক হাজার টাকার জাল নোট তৈরি করলেও বর্তমানে সাধারণ মানুষ যেন সন্দেহ করতে না পারেন সেজন্য বড় নোটের পাশাপাশি ১০০ ও ২০০ টাকার জাল নোট তৈরি করতেন। বর্তমানে কাগজ, ল্যাপটপ, কম্পিউটারের কালি ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় জাকির এক হাজার টাকার ১০০টি নোটের বান্ডেল ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন।

গত ১২ বছরে জাকির কখনো জাল টাকা খুচরায় বিক্রি করেননি। নারী-পুরুষ মিলে তার প্রায় ১৫/২০ জন কর্মচারী আছেন, যাদের মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বেতন দিতেন। তারা ব্যক্তি পর্যায়ে জাল টাকা বিক্রি করলে ধরা পড়তে পারেন, সেই ঝুঁকি এড়াতে অনলাইনে (বিশেষত ফেসবুক ও মেসেঞ্জার) দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রেতাদের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে কুরিয়ারের মাধ্যমে জাল নোট বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিতেন তারা।

অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পাওয়া এ কর্মকর্তা আরও বলেন, জাল নোট তৈরির সময় জাকিরের সহযোগীরা গ্রেপ্তার হলে জাকির মাজারে মাজারে অবস্থান করতেন। মাজারের কচ্ছপ, মাছের খাবার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বলে তাকে মাজার জাকির বলা হয়। অপরদিকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় জাল নোটের ছোট ছোট ঘরোয়া কারখানা স্থাপনকারীরা জাকিরের কাছ থেকে কারিগর, সফট কপি, পরামর্শ এমনকি মডেল জাল রুপি নিয়ে থাকেন বলে জাকিরকে গুরু জাকির বলেও চেনেন অনেকে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

কুরিয়ারে জাল নোট যাচ্ছে মফস্বলের গরুর হাটেও

আপডেট সময় : ১০:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া
কোরবানির ঈদ আসন্ন। ঈদকে ঘিরে অন্যান্য বছরের মতো সক্রিয় জাল টাকার কারবারিরা। সুযোগ কাজে লাগাতে রাজধানীর কদমতলীতে তৈরি করা হচ্ছিল জাল টাকা। সুনির্দিষ্ট তথ্য ও গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেশি-বিদেশি জাল নোট তৈরি চক্রের প্রধান জাকিরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)

ডিবি লালবাগ বিভাগের একটি দল শনিবার (৮ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দুটি বাসায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তাররা হলেন, চক্রের প্রধান লিয়াকত হোসেন জাকির ওরফে মাজার জাকির ওরফে গুরু জাকির (৪০), তার দ্বিতীয় স্ত্রী মমতাজ বেগম (২৫), লিমা আক্তার রিনা (৪০) ও সাজেদা আক্তার (২৮)।

ডিবি পুলিশ বলছে, ঈদুল আজহা টার্গেট করে চক্রটি বিপুল পরিমাণ জাল নোট বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ঢাকায় তৈরি এই জাল নোট বিক্রির জন্য যোগাযোগ হতো অনলাইনে আর লেনদেন হতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। লেনদেনের পর কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো হয় জাল নোট। যার বেশিরভাগ এবার যাচ্ছে মফস্বলে। টার্গেট কোরবানির পশুর হাট।

অভিযান সম্পর্কে ডিবি লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মশিউর রহমান বলেন, অভিযানে দুটি বাসা থেকে প্রায় সোয়া এক কোটি টাকা এবং আরও প্রায় তিন কোটি জাল টাকা তৈরির মতো বিশেষ কাপড়/কাগজ, বিশেষ ধরনের কালি, ল্যাপটপ, চারটি প্রিন্টার, বিভিন্ন সাইজের কয়েক ডজন স্ক্রিন/ডাইস, সাদা কাগজ, হিটার মেশিন, নিরাপত্তা সুতাসহ জাল টাকার হরেক রকম মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। ২০০, ৫০০, এক হাজার টাকার জাল নোট ও ভারতীয় ৫০০ রুপির বিপুল পরিমাণ জাল নোট উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, ২৫ বছর ধরে জাল টাকার খুচরা ও পাইকারি কারবার করার পাশাপাশি বিভিন্ন মানের জাল টাকা ও জাল রুপি তৈরির অত্যন্ত দক্ষ লিয়াকত হোসেন জাকির। তিনি ২০১২ সাল থেকে ৫০০ ও এক হাজার টাকার জাল নোট তৈরি করলেও বর্তমানে সাধারণ মানুষ যেন সন্দেহ করতে না পারেন সেজন্য বড় নোটের পাশাপাশি ১০০ ও ২০০ টাকার জাল নোট তৈরি করতেন। বর্তমানে কাগজ, ল্যাপটপ, কম্পিউটারের কালি ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় জাকির এক হাজার টাকার ১০০টি নোটের বান্ডেল ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন।

গত ১২ বছরে জাকির কখনো জাল টাকা খুচরায় বিক্রি করেননি। নারী-পুরুষ মিলে তার প্রায় ১৫/২০ জন কর্মচারী আছেন, যাদের মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বেতন দিতেন। তারা ব্যক্তি পর্যায়ে জাল টাকা বিক্রি করলে ধরা পড়তে পারেন, সেই ঝুঁকি এড়াতে অনলাইনে (বিশেষত ফেসবুক ও মেসেঞ্জার) দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রেতাদের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে কুরিয়ারের মাধ্যমে জাল নোট বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিতেন তারা।

অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পাওয়া এ কর্মকর্তা আরও বলেন, জাল নোট তৈরির সময় জাকিরের সহযোগীরা গ্রেপ্তার হলে জাকির মাজারে মাজারে অবস্থান করতেন। মাজারের কচ্ছপ, মাছের খাবার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বলে তাকে মাজার জাকির বলা হয়। অপরদিকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় জাল নোটের ছোট ছোট ঘরোয়া কারখানা স্থাপনকারীরা জাকিরের কাছ থেকে কারিগর, সফট কপি, পরামর্শ এমনকি মডেল জাল রুপি নিয়ে থাকেন বলে জাকিরকে গুরু জাকির বলেও চেনেন অনেকে।