ঢাকা ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কুতুবদিয়া কালী মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মতবিনিময় সভা রাজাপুরে ধানের শীষের পক্ষে গোলাম আজম সৈকতের গণসংযোগ শার্শায় সাংবাদিক মনি’র মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কাউখালি বেকুটিয়ায় বিশ্ব নদী দিবস ২০২৫ইং পালিত শাল্লায় বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম’র উপজেলা শাখায় কমিটি গঠন করা হয় বিশ্ব নদী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে গ্রীন ভয়েসের মানববন্ধন কুলিয়া চরবালিথা মুনষ্টার তরুণ সংঘের নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যদের সংবর্ধনা উজিরপুরে বিএনপি নেতা বহিষ্কার: ধর্মীয় সম্প্রীতি ভাঙা ও কুকীর্তির গল্প শ্যামনগরে বিশ্ব নদী দিবসে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত পবিপ্রবিতে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ-সুবিধা চালু

কষ্ট দেয়ার ভয়াবহ শাস্তি কি?

নিজেস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৭:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪ ১০৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া:-
মহান আল্লাহর সেরা সৃষ্টি মানুষ। সবচেয়ে সুন্দর অবয়বে সৃষ্টি করেছেন। এদের সেবার জন্যই সব কিছু বানিয়েছেন। মহান আল্লাহ বলেন, আর অবশ্যই আমি আদম-সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি; স্থলে ও সাগরে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি; তাদেরকে উত্তম রিজিক দান করেছি এবং আমি যাদেরকে সৃষ্টি করেছি তাদের অনেকের উপর তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। (সুরা ইসরা, আয়াত: ৭০)

মানুষ একে অপরের কল্যাণ ও উপকার করবে। কেউ কাউকে শারীরিক ও আত্মিক কোনোভাবেই কষ্ট দিতে পারে না। আমাদের সবার আদি পিতামাতা আদম ও হাওয়া। তাদের থেকেই মানুষের বিস্তার হয়েছে। এ হিসেবে পৃথিবীর সকল মানুষ ভাই ভাই। তাই একে অপরকে কষ্ট দিতে পারে না। কষ্ট দেয়ার পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ।

কাউকে কষ্ট দিতে মহান আল্লাহ নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন,

وَالَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوْا فَقَدِ احْتَمَلُوْا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُبِيْنًا অর্থ: অপরাধ না করা সত্ত্বেও যারা মুমিন পুরুষ ও নারীদের কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। (সুরা আহজাব, আয়াত: ৫৮)

কষ্ট দিতে নিষেধ করে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

يَا مَعْشَرَ مَنْ قَدْ أَسْلَمَ بِلِسَانِهِ وَلَمْ يُفْضِ الإِيْمَانُ إِلَى قَلْبِهِ لاَ تُؤْذُوْا الْمُسْلِمِينَ وَلاَ تُعَيِّرُوهُمْ وَلاَ تَتَّبِعُوْا عَوْرَاتِهِمْ فَإِنَّهُ مَنْ تَتَبَّعَ عَوْرَةَ أَخِيهِ الْمُسْلِمِ تَتَبَّعَ اللهُ عَوْرَتَهُ وَمَنْ تَتَبَّعَ اللهُ عَوْرَتَهُ يَفْضَحْهُ وَلَوْ فِى جَوْفِ رَحْلِهِ অর্থ: হে ওই জামাত! যারা মুখে ইসলাম গ্রহণ করেছ, কিন্তু অন্তরে এখনো ঈমান মজবুত হয়নি। তোমরা মুসলমানদের কষ্ট দিবে না, তাদের লজ্জা দিবে না এবং তাদের গোপন দোষ অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হবে না। কেন না যে লোক তার মুসলমান ভাইয়ের গোপন দোষ অনুসন্ধানে নিয়োজিত হবে আল্লাহ তার গোপন দোষ প্রকাশ করে দেবেন। আর যে ব্যক্তির দোষ আল্লাহ প্রকাশ করে দেবেন তাকে অপমান করে ছাড়বেন, সে তার উটের হাওদার ভেতরে অবস্থান করে থাকলেও। (তিরমিজি: ২০৩২)

যে দুনিয়াতে মানুষকে কষ্ট দিবে, আতঙ্কে রাখবে, মহান আল্লাহ তাকে দুনিয়াতেও অশান্তি দেবেন, আখেরাতেও শাস্তির আওতায় আনবেন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে শ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে পৃথিবীর বুকে পাঠিয়েছেন। সেই শ্রেষ্ঠত্বের দাবি অনুযায়ী একজন মুসলমান অপর মুসলমানই শুধু নয় সমাজের অন্য মানুষের বিপদে তার পাশে দাঁড়াবে, এটাই ইসলামের অনন্য শিক্ষা।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, তিনি বলেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহ দয়ালুদের ওপর দয়া ও অনুগ্রহ করেন। যারা জমিনে বসবাস করছে তাদের প্রতি তোমরা দয়া কর, তাহলে যিনি আকাশে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। দয়া রহমান হতে উদ্‌গত, যে লোক দয়ার সম্পর্ক বজায় রাখেন আল্লাহও তার সঙ্গে নিজ সম্পর্ক বজায় রাখেন। যে লোক দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করেন, আল্লাহও তার সঙ্গে দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করেন। (তিরমিজি: ১৯২৪)

কোনো মাধ্যমেই মানুষকে কষ্ট দেয়া জায়েজ নেই। কারণ নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হযরত আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, তিনি বলেন, আমি নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রসুল! সর্বোত্তম মুসলমান কে? তিনি বললেন, যার মুখ ও হাত থেকে মুসলমানরা নিরাপদ থাকে। (বুখারি ও মুসলিম)

কাউকে তুচ্ছজ্ঞান করলে, হেয় ভাবলে খুবই কষ্ট পায়। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা পরস্পর হিংসা কর না, পরস্পর ধোঁকাবাজি কর না, পরস্পর বিদ্বেষ পোষণ কর না, একে অপরের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে অগোচরে শত্রুতা কর না এবং একে অন্যের ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর ক্রয়-বিক্রয়ের চেষ্টা করবে না। তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে থাকো। এক মুসলমান অন্য মুসলমানের ভাই। সে তার ওপর অত্যাচার করবে না, তাকে অপদস্থ করবে না এবং হেয় করবে না…।’ (মুসলিম)

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

কষ্ট দেয়ার ভয়াবহ শাস্তি কি?

আপডেট সময় : ০৫:৪৭:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া:-
মহান আল্লাহর সেরা সৃষ্টি মানুষ। সবচেয়ে সুন্দর অবয়বে সৃষ্টি করেছেন। এদের সেবার জন্যই সব কিছু বানিয়েছেন। মহান আল্লাহ বলেন, আর অবশ্যই আমি আদম-সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি; স্থলে ও সাগরে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি; তাদেরকে উত্তম রিজিক দান করেছি এবং আমি যাদেরকে সৃষ্টি করেছি তাদের অনেকের উপর তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। (সুরা ইসরা, আয়াত: ৭০)

মানুষ একে অপরের কল্যাণ ও উপকার করবে। কেউ কাউকে শারীরিক ও আত্মিক কোনোভাবেই কষ্ট দিতে পারে না। আমাদের সবার আদি পিতামাতা আদম ও হাওয়া। তাদের থেকেই মানুষের বিস্তার হয়েছে। এ হিসেবে পৃথিবীর সকল মানুষ ভাই ভাই। তাই একে অপরকে কষ্ট দিতে পারে না। কষ্ট দেয়ার পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ।

কাউকে কষ্ট দিতে মহান আল্লাহ নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন,

وَالَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوْا فَقَدِ احْتَمَلُوْا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُبِيْنًا অর্থ: অপরাধ না করা সত্ত্বেও যারা মুমিন পুরুষ ও নারীদের কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। (সুরা আহজাব, আয়াত: ৫৮)

কষ্ট দিতে নিষেধ করে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

يَا مَعْشَرَ مَنْ قَدْ أَسْلَمَ بِلِسَانِهِ وَلَمْ يُفْضِ الإِيْمَانُ إِلَى قَلْبِهِ لاَ تُؤْذُوْا الْمُسْلِمِينَ وَلاَ تُعَيِّرُوهُمْ وَلاَ تَتَّبِعُوْا عَوْرَاتِهِمْ فَإِنَّهُ مَنْ تَتَبَّعَ عَوْرَةَ أَخِيهِ الْمُسْلِمِ تَتَبَّعَ اللهُ عَوْرَتَهُ وَمَنْ تَتَبَّعَ اللهُ عَوْرَتَهُ يَفْضَحْهُ وَلَوْ فِى جَوْفِ رَحْلِهِ অর্থ: হে ওই জামাত! যারা মুখে ইসলাম গ্রহণ করেছ, কিন্তু অন্তরে এখনো ঈমান মজবুত হয়নি। তোমরা মুসলমানদের কষ্ট দিবে না, তাদের লজ্জা দিবে না এবং তাদের গোপন দোষ অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হবে না। কেন না যে লোক তার মুসলমান ভাইয়ের গোপন দোষ অনুসন্ধানে নিয়োজিত হবে আল্লাহ তার গোপন দোষ প্রকাশ করে দেবেন। আর যে ব্যক্তির দোষ আল্লাহ প্রকাশ করে দেবেন তাকে অপমান করে ছাড়বেন, সে তার উটের হাওদার ভেতরে অবস্থান করে থাকলেও। (তিরমিজি: ২০৩২)

যে দুনিয়াতে মানুষকে কষ্ট দিবে, আতঙ্কে রাখবে, মহান আল্লাহ তাকে দুনিয়াতেও অশান্তি দেবেন, আখেরাতেও শাস্তির আওতায় আনবেন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে শ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে পৃথিবীর বুকে পাঠিয়েছেন। সেই শ্রেষ্ঠত্বের দাবি অনুযায়ী একজন মুসলমান অপর মুসলমানই শুধু নয় সমাজের অন্য মানুষের বিপদে তার পাশে দাঁড়াবে, এটাই ইসলামের অনন্য শিক্ষা।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, তিনি বলেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহ দয়ালুদের ওপর দয়া ও অনুগ্রহ করেন। যারা জমিনে বসবাস করছে তাদের প্রতি তোমরা দয়া কর, তাহলে যিনি আকাশে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। দয়া রহমান হতে উদ্‌গত, যে লোক দয়ার সম্পর্ক বজায় রাখেন আল্লাহও তার সঙ্গে নিজ সম্পর্ক বজায় রাখেন। যে লোক দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করেন, আল্লাহও তার সঙ্গে দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করেন। (তিরমিজি: ১৯২৪)

কোনো মাধ্যমেই মানুষকে কষ্ট দেয়া জায়েজ নেই। কারণ নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হযরত আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, তিনি বলেন, আমি নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রসুল! সর্বোত্তম মুসলমান কে? তিনি বললেন, যার মুখ ও হাত থেকে মুসলমানরা নিরাপদ থাকে। (বুখারি ও মুসলিম)

কাউকে তুচ্ছজ্ঞান করলে, হেয় ভাবলে খুবই কষ্ট পায়। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা পরস্পর হিংসা কর না, পরস্পর ধোঁকাবাজি কর না, পরস্পর বিদ্বেষ পোষণ কর না, একে অপরের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে অগোচরে শত্রুতা কর না এবং একে অন্যের ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর ক্রয়-বিক্রয়ের চেষ্টা করবে না। তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে থাকো। এক মুসলমান অন্য মুসলমানের ভাই। সে তার ওপর অত্যাচার করবে না, তাকে অপদস্থ করবে না এবং হেয় করবে না…।’ (মুসলিম)