ঢাকা ১২:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বলুর মেলা থেকে ভুয়া হিজড়া আটক ৪ বৃহৎ জনস্বার্থে চট্টগ্রাম জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত ফেনীতে মাদ্রাসা বোর্ড প্রধানের সাথে মাদ্রাসা প্রধানদের মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল, সোনাগাজী পৌর শাখার উদ্যোগে কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত জুলাই সনদ নিয়ে সমঝোতায় আসতেই হবে : প্রধান উপদেষ্টা সূফীকথা’র ব্যবস্থাপনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ভূমিকম্পে কাঁপল বাংলাদেশসহ ৬ দেশ রাণীশংকৈলে নারী ও কন্যাশিশুদের মানবাধিকার রক্ষার্থে গণ শুনানি শ্যামনগরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনি খাতুনের বদলি প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন আগৈলঝাড়ায় ৭শ পিচ ইয়াবা ও ১ কেজি ৮শ গ্রাম গাঁজা ব্যবসায়ীসহ ৩ জন আটক

এমনিতেই খরা তার উপরে মরার চোর খেজুরের রস সংগ্রহ অনিচ্ছুক গাছিরা

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:১৯:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫ ৮৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আশরাফ
কমে যাচ্ছে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে খেজুরের গাছ।ফলে কমে যাচ্ছে খেজুরের রস সংগ্রহ। এমন পরিস্থিতিতেও কেউ কেউ ঐতিহ্য ধরে রাখতে বেঁচে থাকা গাছগুলো থেকে রস সংগ্রহ করেন।কিন্তু তাতেও আছে বিপত্তি, প্রতিদিনই কোনো না কোনো গাছ থেকে রস চুরি হয়। এতে কমছে সংগ্রহ।সরবরাহেও হচ্ছে সমস্যা।বরিশালে খেজুরের গাছ কমে যাওয়ার কারণ ইটভাটা।গাছিরা বলছেন, ইটভাটা বেড়ে যাওয়ায় তাদের খেজুরের রস সংগ্রহ করার পরিমাণও কমে গেছে। তা ছাড়া আরেক কারণ হচ্ছে হাড়িসহ বিভিন্ন অনুষঙ্গের দাম বেড়ে যাওয়া।বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার সুজন কাঠি এলাকরা বাসিন্দা ডা:মো: মাসুম মোল্লা (৩৫)।যিনি এক যুগের বেশি সময় ধরে শীতকালে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ করছেন। তিনি জানান, আগে খেজুরের রস সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি, অথবা গুড় বানানোর কাজ বেশি করতেন। এখন গাছ কমে যাওয়ায় রস সংগ্রহ হয় অল্প। তাই গুর তৈরি না করে এলাকায় বিক্রি করে দেন। এলাকার লোকজনেরা তার বাড়ি থেকেই কিনে নিয়ে আসেন। ডা:মো: মাসুম মোল্লা বলেন,একযুগ আগেও গ্রামের বড় বড় বাড়িগুলোয় প্রচুর খেজুর গাছ ছিল। এক বাড়ি থেকেই ২০-৩০ লিটার খেজুর রস সংগ্রহ করা যেত। তখন একদিন গাছ মালিককে রস দিয়ে একদিন গাছি নিতো। এখন পাঁচ বাড়ি ঘুরেও ২০টি খেজুর গাছের দেখা মেলে না। গাছ মালিককেও তিনভাগের একভাগ দিয়েও শ্রমের মজুরি তোলা যায় না। শুধু ইটভাটার জ্বালানির জন্য খেজুর গাছসহ গ্রামের বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সংখ্যা কমেছে। নতুন করে আম, কাঁঠাল, নারিকেলসহ অন্যান্য ফলের গাছ লাগালেও এখন কেউ খেজুর গাছ রোপণ করতে চায় না। ফলে এ অঞ্চলে খেজুর গাছের সংখ্যা দিন দিন কমেই যাচ্ছে।তবে শুধু গাছ কমে যাওয়া নয়, চুরি ও হাড়িসহ প্রয়োজনীয় মালামালের দাম বৃদ্ধির কারণেও শীতে রস সংগ্রহে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্ন রস বিক্রেতারা। ডা:মো: মাসুম মোল্লা তিনি বলেন ডেন্টাল চেম্বারে পাশাপাশি শীতকালীন সময় রস সংগ্রহ কাজে ব্যস্ত থাকি। শুরুতে খেজুর গাছ বাছাইয়ের কাজটি শুরু করেন। এরপর গাছের বাকল ছিলে রস সংগ্রহ শুরু করেন। তবে আগের মতো এখন খেজুর গাছ নেই। গাছ না থাকার পাশাপাশি রস চুরি, হাড়িসহ প্রয়োজনীয় মালামালের দাম বৃদ্ধির কারণে এখন তেমন কেউ এ কাজে আগ্রহ প্রকাশ করেন না। আগে প্রচুর গাছ থাকলেও এখনকার মতো রস চুরি হতো না। এখন রাস্তার পাশের গাছে হাঁড়ি ঝোলালেই সেটি রসসহ চুরি হয়ে যায়।এতে করে আর্থিক লোকসান হচ্ছে। তবে সেই রস সংগ্রহেও গাছের নিচে কাটা দিয়ে রাখতে হয়। আবার রসের হাঁড়িতে যাতে বাদুড় মুখ না দেয় সেজন্য নেট বা মশারির কাপড় দিয়ে দিতে হয়।আগে হাড়ি প্রতি রস বিক্রি হলেও এখন লিটার প্রতি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, রসের মূল্য আর সরবরাহ কমের কারণে এখন গুড় তৈরি কমে গেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাঁচা রস খোলা বাজারে লিটার প্রতি বিক্রি হয়। তবে সেই রসেরও চাহিদা অনেক। কারণ, কাঁচা রস খাওয়ার চেয়ে এই সময়য়ে রসে ভেজানো পিঠার কদর থাকে বেশি। এতো কিছু করার পড়ো রস রাখতে পারি না গাছে। মরার চোর সব খেয়ে যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

এমনিতেই খরা তার উপরে মরার চোর খেজুরের রস সংগ্রহ অনিচ্ছুক গাছিরা

আপডেট সময় : ০৪:১৯:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : আশরাফ
কমে যাচ্ছে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে খেজুরের গাছ।ফলে কমে যাচ্ছে খেজুরের রস সংগ্রহ। এমন পরিস্থিতিতেও কেউ কেউ ঐতিহ্য ধরে রাখতে বেঁচে থাকা গাছগুলো থেকে রস সংগ্রহ করেন।কিন্তু তাতেও আছে বিপত্তি, প্রতিদিনই কোনো না কোনো গাছ থেকে রস চুরি হয়। এতে কমছে সংগ্রহ।সরবরাহেও হচ্ছে সমস্যা।বরিশালে খেজুরের গাছ কমে যাওয়ার কারণ ইটভাটা।গাছিরা বলছেন, ইটভাটা বেড়ে যাওয়ায় তাদের খেজুরের রস সংগ্রহ করার পরিমাণও কমে গেছে। তা ছাড়া আরেক কারণ হচ্ছে হাড়িসহ বিভিন্ন অনুষঙ্গের দাম বেড়ে যাওয়া।বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার সুজন কাঠি এলাকরা বাসিন্দা ডা:মো: মাসুম মোল্লা (৩৫)।যিনি এক যুগের বেশি সময় ধরে শীতকালে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ করছেন। তিনি জানান, আগে খেজুরের রস সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি, অথবা গুড় বানানোর কাজ বেশি করতেন। এখন গাছ কমে যাওয়ায় রস সংগ্রহ হয় অল্প। তাই গুর তৈরি না করে এলাকায় বিক্রি করে দেন। এলাকার লোকজনেরা তার বাড়ি থেকেই কিনে নিয়ে আসেন। ডা:মো: মাসুম মোল্লা বলেন,একযুগ আগেও গ্রামের বড় বড় বাড়িগুলোয় প্রচুর খেজুর গাছ ছিল। এক বাড়ি থেকেই ২০-৩০ লিটার খেজুর রস সংগ্রহ করা যেত। তখন একদিন গাছ মালিককে রস দিয়ে একদিন গাছি নিতো। এখন পাঁচ বাড়ি ঘুরেও ২০টি খেজুর গাছের দেখা মেলে না। গাছ মালিককেও তিনভাগের একভাগ দিয়েও শ্রমের মজুরি তোলা যায় না। শুধু ইটভাটার জ্বালানির জন্য খেজুর গাছসহ গ্রামের বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সংখ্যা কমেছে। নতুন করে আম, কাঁঠাল, নারিকেলসহ অন্যান্য ফলের গাছ লাগালেও এখন কেউ খেজুর গাছ রোপণ করতে চায় না। ফলে এ অঞ্চলে খেজুর গাছের সংখ্যা দিন দিন কমেই যাচ্ছে।তবে শুধু গাছ কমে যাওয়া নয়, চুরি ও হাড়িসহ প্রয়োজনীয় মালামালের দাম বৃদ্ধির কারণেও শীতে রস সংগ্রহে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্ন রস বিক্রেতারা। ডা:মো: মাসুম মোল্লা তিনি বলেন ডেন্টাল চেম্বারে পাশাপাশি শীতকালীন সময় রস সংগ্রহ কাজে ব্যস্ত থাকি। শুরুতে খেজুর গাছ বাছাইয়ের কাজটি শুরু করেন। এরপর গাছের বাকল ছিলে রস সংগ্রহ শুরু করেন। তবে আগের মতো এখন খেজুর গাছ নেই। গাছ না থাকার পাশাপাশি রস চুরি, হাড়িসহ প্রয়োজনীয় মালামালের দাম বৃদ্ধির কারণে এখন তেমন কেউ এ কাজে আগ্রহ প্রকাশ করেন না। আগে প্রচুর গাছ থাকলেও এখনকার মতো রস চুরি হতো না। এখন রাস্তার পাশের গাছে হাঁড়ি ঝোলালেই সেটি রসসহ চুরি হয়ে যায়।এতে করে আর্থিক লোকসান হচ্ছে। তবে সেই রস সংগ্রহেও গাছের নিচে কাটা দিয়ে রাখতে হয়। আবার রসের হাঁড়িতে যাতে বাদুড় মুখ না দেয় সেজন্য নেট বা মশারির কাপড় দিয়ে দিতে হয়।আগে হাড়ি প্রতি রস বিক্রি হলেও এখন লিটার প্রতি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, রসের মূল্য আর সরবরাহ কমের কারণে এখন গুড় তৈরি কমে গেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাঁচা রস খোলা বাজারে লিটার প্রতি বিক্রি হয়। তবে সেই রসেরও চাহিদা অনেক। কারণ, কাঁচা রস খাওয়ার চেয়ে এই সময়য়ে রসে ভেজানো পিঠার কদর থাকে বেশি। এতো কিছু করার পড়ো রস রাখতে পারি না গাছে। মরার চোর সব খেয়ে যায়।