ঢাকা ০৮:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কালিগঞ্জে ধর্ষন চেষ্টা মামলার আসামি গৌরপদ মন্ডলকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার কৃষিগুচ্ছ ভর্তিচ্ছুদের সহায়তায় বাকৃবির বিশেষ বাস সার্ভিস এলাকার প্রভাবশালী নেতার কারণে বলি হতে যাচ্ছে নবদম্পতির নতুন জীবন মাদারগঞ্জে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন বাতিলের দাবীতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল  সাতক্ষীরায় এক নারীকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ, আদালতের নির্দেশে সদর থানায় মামলা জীবননগর থানাধীন শাহাপুর পুলিশ ক্যাম্প কর্তৃক মাদক বিরোধী অভিযানে ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার গ্রেফতার-০১জন চাঞ্চল্যকর অপহরণ পলাতক আসামী গ্রেফতার: ভিকটিম উদ্ধার রাণীশংকৈলে বৈরী আবহাওয়ার কারণে শাপলা রানীর পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে দেরী হয়ায় পরীক্ষা দেওয়া হলো না ঝিনাইদহে বিনামূল্যে পাট বীজ ও সার পেলেন ৮’শত কৃষক জাতীয়তাবাদী তরুণদল রংপুর বিভাগীয় পূর্ব কমিটি বিলুপ্তি ও নতুন কমিটির অনুমোদন

অপরিপক্ব মৌসুমি ফলে সয়লাব বরিশালের বাজার

দৈবাচি'র প্রতিবেদন:
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৩:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪ ৫৯ বার পড়া হয়েছে

 

বাংলা বারো মাসের মধ্যে জ্যৈষ্ঠ মাসে সবচেয়ে বেশি মিষ্টি মিষ্টি ফল পাওয়া যায়। তাই জ্যৈষ্ঠ মাসকে মধু মাস বলা হয়। জ্যৈষ্ঠ মাসের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও গাছে গাছে ঝুলছে অপরিপক্ব আম, কাঁঠাল, লিচুসহ অন্যান্য মৌসুমি ফল।

পরিপক্ব হওয়ার আগেই অপরিপক্ব মৌসুমি ফলে ভরে গেছে বরিশালের বাজার। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় আগেভাগেই বাজারজাত করছে অপরিপক্ব ফল। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ইতোমধ্যে বরিশালের বাজারে এসেছে আম, কাঁঠাল, লিচুসহ অন্যান্য মৌসুমি ফল।

প্রতারণার শিকার হচ্ছেন ক্রেতারা। তাদের দাবি, ফলের মৌসুমেও ভোক্তা অধিকারের বাজার মনিটরিং চালানো দরকার। আর চিকিৎসকদের মতে, এসব অপরিপক্ব ফল খেয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে মানুষ। এদিকে বরিশালের বাজারগুলোতে প্রকাশ্যে অপরিপক্ব ফল বিক্রি করলেও সেদিকে প্রশাসনের দৃষ্টি নেই বলে অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার সরেজমিনে বরিশালের পাইকারি ফলের আড়ৎসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অপরিপক্ব আম, কাঁঠাল, লিচু, তালসহ বিভিন্ন ধরনের ফল বিক্রি হচ্ছে। দামও বেশ চড়া। তবে দাম বেশি হলেও বছরের প্রথম ফল বলে অনেকেই কিনছেন শখ করে। পরিপক্ব আর অপরিপক্ব যাই হোক এখন সব ফলের চাহিদা বেশি। বিশেষ করে লিচু, আম ও কাঁঠাল বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারি বাজারে ১শ’ লিচু বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৭০ টাকা দরে যা খুচরা বিক্রেতারা ৩০০ টাকা বা তারও বেশি দরে বিক্রি করছে। অন্যদিকে গোপালভোগ পাইকারি বাজারে ৬০ টাকা হলেও খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা দরে। আর হিমসাগর পাইকারি আমের কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও খুচরা বিক্রেতারা দাম হাঁকছেন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। এছাড়া সাইজ অনুসারে কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে।

নতুনবাজার এলাকার খুচরা ফল বিক্রেতা মিন্টু বলেন, জ্যৈষ্ঠ মাস শুরু হয়েছে, এখনো মধুমাসের ফল আসবে না? তিনি দাবি করেন, তার দোকানে পরিপক্ব ছাড়া কোনো ফল নেই।

নগরীর ফলপট্টি এলাকার ফল ব্যবসায়ী নজরুল বলেন, এই গরমে রসালো ফল বিক্রি বেশ ভালোই হচ্ছে। তার দাবি, পাইকারি বাজারে ফলের দাম বেশি হওয়ায় তারা খুচরা একটু বেশি দামেই বিক্রি করছেন। তবে এ দামেও ক্রেতারা খুশি বলেন তিনি।

নগরীর কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা শফিক বলেন, গ্রাম থেকে আত্মীয়-স্বজন এসেছে। তাই শখ করে তিন কেজি পাকা আম আর একটি কাঁঠাল কিনেছিলাম। কিন্তু আম এবং কাঁঠাল কোনোটাতেই স্বাদ পাইনি।

ব্যাংকার নাজমা বেগম বেগম এসেছেন লিচু কিনতে, তবে দোকানদারের দেয়া লিচু খেয়ে ফল কেনার আগ্রহ হারিয়েছেন। ফলে না কিনেই ফিরে গেছেন তিনি। তিনি বলেন, জ্যৈষ্ঠ মাস মধুর মাস। কারণ এই মাসে বিভিন্ন ধরনের রসালো, মিষ্টি ও সুগন্ধি ফল উঠতে শুরু করে। কিন্তু এখনকার বাজারের ফলগুলো তেমন রসালো না, মিষ্টিও না। কারণ এসব ফল অপরিপক্ব থাকতেই গাছ থেকে নিয়ে বাজারজাত করা হয়েছে। যার কারণে এখনকার ফলে অরজিনাল যে স্বাদ সেটা নেই।

স্কুল শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, ভোক্তা অধিকারের উচিত নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করা। এখন ফলের মৌসুম। বাজারে ফল আসবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোন ফলগুলো পরিপক্ব আর কোনগুলো অপরিপক্ব এই বিষয়টা দেখা প্রয়োজন। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী লাভের আশায় পাকার আগেই অপরিপক্ব ফল বাজারে ছেড়েছে। ফলে এসব ফল খেয়ে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে।

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আশীষ কুমার বলেন, অপরিপক্ব ফল অবশ্যই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অপরিপক্ব ফল সংরক্ষণ করার জন্য যে মেডিসিন ব্যবহার করা হয় সেটা আরও বেশি ক্ষতিকর। বিশেষ করে শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ওই মেডিসিন ব্যবহার করা ফল শিশুদের স্বাস্থ্যহানি, কিডনি ও লিভারের সমস্যা, এমনকি শিশুর বেড়ে উঠাতেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

অপরিপক্ব মৌসুমি ফলে সয়লাব বরিশালের বাজার

আপডেট সময় : ০৯:৩৩:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪

 

বাংলা বারো মাসের মধ্যে জ্যৈষ্ঠ মাসে সবচেয়ে বেশি মিষ্টি মিষ্টি ফল পাওয়া যায়। তাই জ্যৈষ্ঠ মাসকে মধু মাস বলা হয়। জ্যৈষ্ঠ মাসের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও গাছে গাছে ঝুলছে অপরিপক্ব আম, কাঁঠাল, লিচুসহ অন্যান্য মৌসুমি ফল।

পরিপক্ব হওয়ার আগেই অপরিপক্ব মৌসুমি ফলে ভরে গেছে বরিশালের বাজার। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় আগেভাগেই বাজারজাত করছে অপরিপক্ব ফল। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ইতোমধ্যে বরিশালের বাজারে এসেছে আম, কাঁঠাল, লিচুসহ অন্যান্য মৌসুমি ফল।

প্রতারণার শিকার হচ্ছেন ক্রেতারা। তাদের দাবি, ফলের মৌসুমেও ভোক্তা অধিকারের বাজার মনিটরিং চালানো দরকার। আর চিকিৎসকদের মতে, এসব অপরিপক্ব ফল খেয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে মানুষ। এদিকে বরিশালের বাজারগুলোতে প্রকাশ্যে অপরিপক্ব ফল বিক্রি করলেও সেদিকে প্রশাসনের দৃষ্টি নেই বলে অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার সরেজমিনে বরিশালের পাইকারি ফলের আড়ৎসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অপরিপক্ব আম, কাঁঠাল, লিচু, তালসহ বিভিন্ন ধরনের ফল বিক্রি হচ্ছে। দামও বেশ চড়া। তবে দাম বেশি হলেও বছরের প্রথম ফল বলে অনেকেই কিনছেন শখ করে। পরিপক্ব আর অপরিপক্ব যাই হোক এখন সব ফলের চাহিদা বেশি। বিশেষ করে লিচু, আম ও কাঁঠাল বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারি বাজারে ১শ’ লিচু বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৭০ টাকা দরে যা খুচরা বিক্রেতারা ৩০০ টাকা বা তারও বেশি দরে বিক্রি করছে। অন্যদিকে গোপালভোগ পাইকারি বাজারে ৬০ টাকা হলেও খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা দরে। আর হিমসাগর পাইকারি আমের কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও খুচরা বিক্রেতারা দাম হাঁকছেন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। এছাড়া সাইজ অনুসারে কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে।

নতুনবাজার এলাকার খুচরা ফল বিক্রেতা মিন্টু বলেন, জ্যৈষ্ঠ মাস শুরু হয়েছে, এখনো মধুমাসের ফল আসবে না? তিনি দাবি করেন, তার দোকানে পরিপক্ব ছাড়া কোনো ফল নেই।

নগরীর ফলপট্টি এলাকার ফল ব্যবসায়ী নজরুল বলেন, এই গরমে রসালো ফল বিক্রি বেশ ভালোই হচ্ছে। তার দাবি, পাইকারি বাজারে ফলের দাম বেশি হওয়ায় তারা খুচরা একটু বেশি দামেই বিক্রি করছেন। তবে এ দামেও ক্রেতারা খুশি বলেন তিনি।

নগরীর কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা শফিক বলেন, গ্রাম থেকে আত্মীয়-স্বজন এসেছে। তাই শখ করে তিন কেজি পাকা আম আর একটি কাঁঠাল কিনেছিলাম। কিন্তু আম এবং কাঁঠাল কোনোটাতেই স্বাদ পাইনি।

ব্যাংকার নাজমা বেগম বেগম এসেছেন লিচু কিনতে, তবে দোকানদারের দেয়া লিচু খেয়ে ফল কেনার আগ্রহ হারিয়েছেন। ফলে না কিনেই ফিরে গেছেন তিনি। তিনি বলেন, জ্যৈষ্ঠ মাস মধুর মাস। কারণ এই মাসে বিভিন্ন ধরনের রসালো, মিষ্টি ও সুগন্ধি ফল উঠতে শুরু করে। কিন্তু এখনকার বাজারের ফলগুলো তেমন রসালো না, মিষ্টিও না। কারণ এসব ফল অপরিপক্ব থাকতেই গাছ থেকে নিয়ে বাজারজাত করা হয়েছে। যার কারণে এখনকার ফলে অরজিনাল যে স্বাদ সেটা নেই।

স্কুল শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, ভোক্তা অধিকারের উচিত নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করা। এখন ফলের মৌসুম। বাজারে ফল আসবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোন ফলগুলো পরিপক্ব আর কোনগুলো অপরিপক্ব এই বিষয়টা দেখা প্রয়োজন। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী লাভের আশায় পাকার আগেই অপরিপক্ব ফল বাজারে ছেড়েছে। ফলে এসব ফল খেয়ে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে।

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আশীষ কুমার বলেন, অপরিপক্ব ফল অবশ্যই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অপরিপক্ব ফল সংরক্ষণ করার জন্য যে মেডিসিন ব্যবহার করা হয় সেটা আরও বেশি ক্ষতিকর। বিশেষ করে শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ওই মেডিসিন ব্যবহার করা ফল শিশুদের স্বাস্থ্যহানি, কিডনি ও লিভারের সমস্যা, এমনকি শিশুর বেড়ে উঠাতেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।