ঢাকা ০২:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মুন্ডুমালা বাজারে অব্যবস্হাপনায় ও যানজটে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেই সংযোগ সড়ক,২৭ লাখ টাকার সেতুতে উঠতে হয় মই বেয়ে নোয়াখালী সংগঠকদের নিয়ে এবি পাটির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় দুমকীতে গাঁজা সেবনে বৃদ্ধকে এক মাসের কারাদণ্ড দুমকীতে ডেঙ্গুর ছোবলে প্রাণ হারালেন ছাত্র হিজবুল্লাহ নেতা জাকারিয়া র‌্যাবের অভিযানে নীলফামারীর চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার পলাতক অভিযুক্ত গ্রেফতার চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে হাজতির মৃত্যু মা ইলিশ সংরক্ষন অভিযান/২৫ উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির প্রস্তুতি সভা বিশ্ব নদী দিবসে সাতক্ষীরায় নৌকায় মানববন্ধন শৈলকূপায় হচ্ছে প্রবাসী কর্মীদের বিশাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র! ৮০টি কেন্দ্রের মেগা প্রকল্পে ভিআইপি অগ্রাধিকার ঝিনাইদহে

কাল ঈদ, কি করবে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসী?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৫:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪ ১০০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আশরাফ

দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর লাগাতার বিমান থেকে বোমা হামলায় মাটির সাথে মিশে গেছে অবরুদ্ধ গাজা। সেখানে নেই কোনো স্থাপনা। মারা গেছেন হাজার হাজার নিরিহ ফিলিস্তিনি। যারা ভাগ্যক্রমে বেঁচে আছেন তারা ক্ষুদা-তৃষ্ণায় কাতর। আর যারা আহত তারা পাচ্ছেন না চিকিৎসা সেবা। এই অবস্থায় ফিরে এলো ঈদুল ফিতর। দিনটি তাদের কাছে আনন্দের নয়, কষ্টের। এমন কোনো মানুষ নেই গাজায় যারা স্বজন হারাননি।এদিকে ঈদ মানে আনন্দ। বছর ঘুরে ঘরে ঘরে খুশির বার্তা নিয়ে হাজির হয় এই ঈদ। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদের আমেজ শুধু মুসলিমদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং জাতি-ধর্ম ভুলে সবাই এই উৎসবের অবগাহনে গা ভেজায়। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম পালনের পর সামনে আসে এ উৎসব। ছড়িয়ে পড়ে আনন্দ-উল্লাস। সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা যখন ঈদের আনন্দে মাতোয়ারা হওয়ার প্রহর গুনছে, তখনও বিশ্বের কিছু জায়গায় চলছে স্বজন হারানোর কান্না। ফিলিস্তিন অধিকৃত গাজা তেমনই এক অঞ্চল। যেখানে বাতাসে ভাসে লাশের গন্ধ। যেখানে কংক্রিটের ফাঁকে ফাঁকে রক্তের ছোপ। যেখানে ক্ষুধার জ্বালায় আর্তনাদ করে গোটা উপত্যকা।দখলদার ইসরায়েলি বোমায় সেখানে তাসের ঘরের মতো ধ্বংস হয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ভেঙে গেছে মসজিদ, গির্জা, শরণার্থী শিবির, পার্ক, হাসপাতাল, ঐতিহাসিক ভবন। বুলেট-বোমার আঘাত আর ক্ষুধায় এবার ঈদ ‘উদযাপিত’ হবে বিষাদগ্রস্ত গাজায়।অবরুদ্ধ গাজায় খাদ্যাভাব চরম। বাড়িতে নেই খাবার, নেই পানি। নতুন পোশাক কেনার সামর্থ্য নেই। অনাহারে থাকা লোকজন অপুষ্টি ও পানি শুন্যতার শিকার হয়ে হাসপাতালের দ্বারস্থ। কিন্তু সেখানেও পরিত্রাণের পর্যাপ্ত রসদ নেই। কারও কারও মাথার ওপর ছাদ নেই, শুধুই আকাশ। জীবনের নিশ্চয়তা তো সেখানে দূরের মিনার!পুরো ফিলিস্তিনি দখল করে ইসরায়েলী বাহিনী মুহুর্মুহু হামলায় এবার আনন্দহীন ঈদ কাটাবে গাজাবাসী। হাজার হাজার মানুষ নিহত হওয়ার পর এটিই হবে গাজা উপত্যকাবাসীর জন্য প্রথম মুসলিম ধর্মীয় ছুটি। কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলা ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৩ হাজার ২০৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এই দাবি ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের।আজ ঈদুল ফিতর অথচ গাজা উপত্যকা যেন এখন এক বিরানভূমি। গত রোববার হঠাৎ গাজার দক্ষিণ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সেনা তুলে নেয় ইসরায়েল। যদিও গাজার আগ্রাসন থেকে পরিপূর্ণভাবে সরে আসেনি তারা। ঈদে অন্যান্য মুসলিমের মতো ফিলিস্তিনিরাও উৎসবে মেতে থাকে। কিন্তু এবার সেই গল্পের নজরানা অনুপস্থিত। স্বজন হারানোর বেদনা বুকে নিয়েই তাদের ঈদের দিন শেষ হবে। ধ্বংস হওয়া বাড়িঘর যেন অদৃশ্য মেমোয়ারের মতো মাথাচাড়া দেবে। তবুও ঈদ সামনে রেখে হয়তো তারা আনন্দে মাতার চেষ্টা করবে।
কাল বুধবার গাজায় ঈদ উল-ফিতর পালিত হওয়ার কথা। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের মধ্যে উৎসবের কোনো আমেজ নেই। তারা কী করবে ঈদের দিন? কেউ কেউ ঠায় দাঁড়িয়ে অন্য দেশগুলোর পাঠানো ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করবে। পরিচয়পত্র হাতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াবে, বিতরণ কেন্দ্রগুলো থেকে দেয়া ত্রাণ পেয়ে হয়তো ক্ষণিক মুহূর্ত ভুলে যাবে স্বজন হারানোর শোক। কেউ কেউ হামলায় ধ্বংস হওয়া ভবনের সামনে তাজা সবজি বিক্রি করবে, কেউ রাস্তার ধারে জিলাপি। সেখান থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে হয়তো ছোট্ট বোনের জন্য ওড়না বা খেলার পুতুল কিনে ঘরে ফিরবে।কালকের ঈদ সামনে রেখে হাতেই বিস্কিট বানাচ্ছেন দেইল আল বালা শহরের বাস্তুচ্যুত নারীরা। ছিঁড়ে যাওয়া পুরোনো কাপড় সেলাই করে নিচ্ছেন সেখানকার অনেকে। ঈদের দিন পরবেন বলে। কারও কারও বেলায় সেটাও করার সামর্থ্য নেই। ধুলোয় ধূসরিত দৃষ্টি নিয়ে বসে থাকে নির্জীব বকের মতো। তাদের ঈদ বলতে কিছু নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

কাল ঈদ, কি করবে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসী?

আপডেট সময় : ০৫:৫৫:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : আশরাফ

দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর লাগাতার বিমান থেকে বোমা হামলায় মাটির সাথে মিশে গেছে অবরুদ্ধ গাজা। সেখানে নেই কোনো স্থাপনা। মারা গেছেন হাজার হাজার নিরিহ ফিলিস্তিনি। যারা ভাগ্যক্রমে বেঁচে আছেন তারা ক্ষুদা-তৃষ্ণায় কাতর। আর যারা আহত তারা পাচ্ছেন না চিকিৎসা সেবা। এই অবস্থায় ফিরে এলো ঈদুল ফিতর। দিনটি তাদের কাছে আনন্দের নয়, কষ্টের। এমন কোনো মানুষ নেই গাজায় যারা স্বজন হারাননি।এদিকে ঈদ মানে আনন্দ। বছর ঘুরে ঘরে ঘরে খুশির বার্তা নিয়ে হাজির হয় এই ঈদ। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদের আমেজ শুধু মুসলিমদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং জাতি-ধর্ম ভুলে সবাই এই উৎসবের অবগাহনে গা ভেজায়। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম পালনের পর সামনে আসে এ উৎসব। ছড়িয়ে পড়ে আনন্দ-উল্লাস। সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা যখন ঈদের আনন্দে মাতোয়ারা হওয়ার প্রহর গুনছে, তখনও বিশ্বের কিছু জায়গায় চলছে স্বজন হারানোর কান্না। ফিলিস্তিন অধিকৃত গাজা তেমনই এক অঞ্চল। যেখানে বাতাসে ভাসে লাশের গন্ধ। যেখানে কংক্রিটের ফাঁকে ফাঁকে রক্তের ছোপ। যেখানে ক্ষুধার জ্বালায় আর্তনাদ করে গোটা উপত্যকা।দখলদার ইসরায়েলি বোমায় সেখানে তাসের ঘরের মতো ধ্বংস হয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ভেঙে গেছে মসজিদ, গির্জা, শরণার্থী শিবির, পার্ক, হাসপাতাল, ঐতিহাসিক ভবন। বুলেট-বোমার আঘাত আর ক্ষুধায় এবার ঈদ ‘উদযাপিত’ হবে বিষাদগ্রস্ত গাজায়।অবরুদ্ধ গাজায় খাদ্যাভাব চরম। বাড়িতে নেই খাবার, নেই পানি। নতুন পোশাক কেনার সামর্থ্য নেই। অনাহারে থাকা লোকজন অপুষ্টি ও পানি শুন্যতার শিকার হয়ে হাসপাতালের দ্বারস্থ। কিন্তু সেখানেও পরিত্রাণের পর্যাপ্ত রসদ নেই। কারও কারও মাথার ওপর ছাদ নেই, শুধুই আকাশ। জীবনের নিশ্চয়তা তো সেখানে দূরের মিনার!পুরো ফিলিস্তিনি দখল করে ইসরায়েলী বাহিনী মুহুর্মুহু হামলায় এবার আনন্দহীন ঈদ কাটাবে গাজাবাসী। হাজার হাজার মানুষ নিহত হওয়ার পর এটিই হবে গাজা উপত্যকাবাসীর জন্য প্রথম মুসলিম ধর্মীয় ছুটি। কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলা ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৩ হাজার ২০৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এই দাবি ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের।আজ ঈদুল ফিতর অথচ গাজা উপত্যকা যেন এখন এক বিরানভূমি। গত রোববার হঠাৎ গাজার দক্ষিণ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সেনা তুলে নেয় ইসরায়েল। যদিও গাজার আগ্রাসন থেকে পরিপূর্ণভাবে সরে আসেনি তারা। ঈদে অন্যান্য মুসলিমের মতো ফিলিস্তিনিরাও উৎসবে মেতে থাকে। কিন্তু এবার সেই গল্পের নজরানা অনুপস্থিত। স্বজন হারানোর বেদনা বুকে নিয়েই তাদের ঈদের দিন শেষ হবে। ধ্বংস হওয়া বাড়িঘর যেন অদৃশ্য মেমোয়ারের মতো মাথাচাড়া দেবে। তবুও ঈদ সামনে রেখে হয়তো তারা আনন্দে মাতার চেষ্টা করবে।
কাল বুধবার গাজায় ঈদ উল-ফিতর পালিত হওয়ার কথা। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের মধ্যে উৎসবের কোনো আমেজ নেই। তারা কী করবে ঈদের দিন? কেউ কেউ ঠায় দাঁড়িয়ে অন্য দেশগুলোর পাঠানো ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করবে। পরিচয়পত্র হাতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াবে, বিতরণ কেন্দ্রগুলো থেকে দেয়া ত্রাণ পেয়ে হয়তো ক্ষণিক মুহূর্ত ভুলে যাবে স্বজন হারানোর শোক। কেউ কেউ হামলায় ধ্বংস হওয়া ভবনের সামনে তাজা সবজি বিক্রি করবে, কেউ রাস্তার ধারে জিলাপি। সেখান থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে হয়তো ছোট্ট বোনের জন্য ওড়না বা খেলার পুতুল কিনে ঘরে ফিরবে।কালকের ঈদ সামনে রেখে হাতেই বিস্কিট বানাচ্ছেন দেইল আল বালা শহরের বাস্তুচ্যুত নারীরা। ছিঁড়ে যাওয়া পুরোনো কাপড় সেলাই করে নিচ্ছেন সেখানকার অনেকে। ঈদের দিন পরবেন বলে। কারও কারও বেলায় সেটাও করার সামর্থ্য নেই। ধুলোয় ধূসরিত দৃষ্টি নিয়ে বসে থাকে নির্জীব বকের মতো। তাদের ঈদ বলতে কিছু নেই।