পরশুরামে দশ স্কুলে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন—শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবক ও স্থানীয় মহল
- আপডেট সময় : ০৭:০৪:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ৪৩ বার পড়া হয়েছে

মোহাম্মদ হানিফ,স্টাফ রিপোর্টার ফেনী:শিক্ষার্থীদের ক্লাস থেকে বের করে আন্দোলনে যাওয়া শিক্ষকদের শাস্তির দাবিতে জেলা প্রশাসকসহ শিক্ষা কর্তৃপক্ষের দোরগোড়ায় অভিভাবকরা
ফেনীর পরশুরাম উপজেলার সাতকুচিয়া মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ মোট দশটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেইটে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয় অভিভাবক, এলাকাবাসী ও রাজনৈতিক মহলে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বন্ধ রেখে শিক্ষকরা সরকারবিরোধী অবস্থানে মাঠে নেমে চাকরিবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ক্লাস চলাকালে বিদ্যালয় ফাঁকা—শিক্ষকরা আন্দোলনে
স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, আন্দোলনের দিনগুলোতে শিক্ষকরা ক্লাস থেকে শিক্ষার্থী বের করে হঠাৎ স্কুল বন্ধ রেখে উপজেলা সদরে সমবেত হন। সেখানে তারা উসকানিমূলক বক্তব্য ও বিভিন্ন দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করেন। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যত বন্ধ হয়ে যায় এবং শিক্ষাজীবনে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
একজন ক্ষুব্ধ অভিভাবক জানান,
“আমাদের বাচ্চারা কোন দোষে শিক্ষাবঞ্চিত হবে? শিক্ষকরা যদি রাজনীতি বা আন্দোলন করতে চান—তা ক্লাসরুমে তালা ঝুলিয়ে কেন?”
অভিভাবকদের দাবি—দোষী শিক্ষকদের ব্যবস্থার আওতায় আনতে হবে
এই ঘটনাকে শিক্ষা নীতিমালা ও সরকারি চাকরিবিধির সরাসরি লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে অভিভাবকরা জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিস ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের দাবি—
ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক বিভাগীয় তদন্ত
চাকরিবিধি লঙ্ঘনের দায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ
ভবিষ্যতে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে ক্লাস বন্ধের মতো কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ
শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়—সে বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা
রাজনৈতিক মহলের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা জানান, সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে শিক্ষকদের এ ধরনের কার্যক্রম প্রশাসনের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া। একজন স্থানীয় নেতা বলেন—
“এটি শুধু শিক্ষা বিঘ্ন নয়, প্রশাসনিক অবাধ্যতার স্পষ্ট উদাহরণ। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটবে।”
প্রশাসনের অবস্থান
এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন—
“বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষার্থী বঞ্চিত করার বিষয়টি গুরুতর। অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করেছি।”
শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে
এদিকে, ধারাবাহিক শিক্ষাব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। অভিভাবকদের আশঙ্কা—এভাবে শিক্ষাদান বাধাগ্রস্ত হলে তাদের সন্তানদের পাঠদক্ষতা, পরীক্ষার প্রস্তুতি ও ভবিষ্যৎ শিক্ষা অগ্রগতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অভিভাবকরা জোরালোভাবে দাবি করেছেন—
শিক্ষকদের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডের শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে আন্দোলন আরও বিস্তৃত করা হবে।


















