চট্টগ্রামে বিএনপি’র ১০ প্রার্থী ঘোষণা কোন্দল শংকায় ৬টি বাকি: মহাসড়ক অবরোধ
																
								
							
                                - আপডেট সময় : ০৮:৫২:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫ ৪০ বার পড়া হয়েছে
 

মোহাম্মদ মাসুদ:
ত্রয়োদশ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে ১৬ আসনের মধ্যে বিএনপি’র ১০টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা, অভ্যন্তরীণ কোন্দল শংকায় ৬টি আসন এখোনো বাকি। একাধিক স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করা হয় প্রার্থী ঘোষণার পরে সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। বিএনপির প্রার্থী ঘোষণায় এতে বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী বাদ পড়েছেন, ফলে বেশ কিছু নতুন মুখ এসেছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আজ সোমবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেন।
একাধিক আসনের নতুন মুখের মনোনয়ন দেওয়ায় বিশেষ করে আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন না দেওয়ায় সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের। সীতাকুণ্ড আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা হয়নি দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আসলাম চৌধুরীর। এই আসনে আসলাম চৌধুরীর পরিবর্তে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী সালাউদ্দিনকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এরপর আসলাম চৌধুরীর সোমবার সন্ধ্যায় রাস্তায় নেমে পড়েছেন। তাঁরা সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন।
সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারি শহীদ মিনার এলাকায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে মহাসড়ক অবরোধ করেন আসলামে সমর্থকেরা। তাঁরা টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে স্লোগান দেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে।
যারা মনোনয়ন পেলেন এর মধ্যে চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন (চেয়ারম্যান); চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার আলমগীর; চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড)-এ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী সালাউদ্দিন, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে চট্টগ্রাম বিভাগে বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়।
চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী; চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও চান্দগাঁও) আসনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ; চট্টগ্রাম-১০ (পাহাড়তলী-হালিশহর) আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী; চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ এনামুল হক; চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য সরওয়ার জামাল নিজাম; চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
নতুন মুখ এদের মধ্যে নতুন মুখ হিসেবে রয়েছেন একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী; সাবেক মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের ছেলে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন; সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী ছেলে মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী এবং দলীয় নেতা নুরুল আমিন ও সরওয়ার আলমগীর।
ছয়টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়নি
দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ৬ (রাউজান) আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও উওর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। দুই নেতার বিরোধে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে রাউজানে ১৪ টি খুনের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটে ছয়টি। দুজনের কাউকে প্রার্থী ঘোষণা করা হলে দলে বিরোধ আরও চাঙা হয়ে উঠতে পারে সে আশঙ্কায় আপাতত ঘোষণা করা হয়নি।
একই অবস্থা চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসনে। সেখানে প্রকাশ্যে বিরোধ দেখা না দিলেও আসনটিতে বিএনপির একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন, নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম, নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও বিএনপি নেতা শামসুল আলম এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী। তাঁদের একজনকে প্রার্থী ঘোষণা করা হলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল বেড়ে যেতে পারে। তাই পরে এই আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে দলের নীতি নির্ধারকেরা। আজ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনে এই আসনে আবু সুফিয়ানের নাম ঘোষণা করে পরে বলেন, এটি স্থগিত রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) ও চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-
লোহাগাড়া) আসনে বিএনপির হেভিওয়েট কোনো মনোনয়ন প্রত্যাশী নেই। এই কারণে এই দুটি আসন জোটের জন্য হাতে রাখা হয়েছে। এলডিপির সঙ্গে জোট হলে অলি আহমদ ও তাঁর ছেলেকে এ দুটি আসন দেওয়া হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। আবার শেষ পর্যন্ত সমঝোতা হলে জামায়াতে ইসলামী সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসন পেতে পারে।
চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছেলে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা ইস্রাফিল খসরু দীর্ঘদিন ধরে মাঠে আছেন। আমীর খসরুকে একটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করায় তাঁর ছেলেকে প্রার্থী করা হবে কিনা সে হিসাব-নিকাশ চলছে। এই আসনে একজন ব্যবসায়ী নেতার নামও আলোচনায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনের মনোনয়ন চাইছেন সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা কামাল পাশা, উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক বেলায়েত হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ও দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তরিকুল আলম। তাঁরা আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করে আসছেন। একাধিক প্রার্থী থাকায় কোন্দল ঠেকাতে এই আসনের প্রার্থী হিসেবে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন আজ রাতে বলেন, ‘যেসব আসনে আমাদের একাধিক মনোনয়ন প্রার্থী আছেন, সেখানে এই মুহূর্তে নাম ঘোষণা করা হলে ঝামেলা হতে পারে বলে দলের নীতিনির্ধারকেরা একটু সময় নিচ্ছেন। এ ছাড়া কয়েকটি আসন জোটের জন্য রাখা হয়েছে যদি জোট হয়।
																			
										





















