ঢাকা ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
শার্শায় সাংবাদিক মনি’র মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কাউখালি বেকুটিয়ায় বিশ্ব নদী দিবস ২০২৫ইং পালিত শাল্লায় বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম’র উপজেলা শাখায় কমিটি গঠন করা হয় বিশ্ব নদী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে গ্রীন ভয়েসের মানববন্ধন কুলিয়া চরবালিথা মুনষ্টার তরুণ সংঘের নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যদের সংবর্ধনা উজিরপুরে বিএনপি নেতা বহিষ্কার: ধর্মীয় সম্প্রীতি ভাঙা ও কুকীর্তির গল্প শ্যামনগরে বিশ্ব নদী দিবসে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত পবিপ্রবিতে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ-সুবিধা চালু সদস্য পরিচিতি সভা ও নারী শিশু নির্যাতন দমন এবং মাদক নির্মূলে আমাদের করণীয় আলোচনা সভা চুয়াডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালন

শৈলকুপায় আ’লীগ নেতার হাতে তিন সাংবাদিক হেনস্থার শিকার

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৮:২৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৯৯ বার পড়া হয়েছে

রাসেল হোসেন,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:স্কুলের অনিয়মের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ঝিনাইদহের শৈলকূপায় লাঞ্ছিত হয়েছেন তিন সাংবাদিক। এসময় ওই তিন সাংবাদিককে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে শাসিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের স্বামী এনায়েত হোসেন।

অভিযুক্ত এনায়েত হোসেন শৈলকূপা পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহারের স্বামী। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল বেলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস প্রাঙ্গনে এ ঘটনা ঘটে।

লঞ্চিত সাংবাদিকরা হলেন বাংলাদেশ পোস্টের রোভিং করেসপন্ডেন্ট দেলোয়ার কবীর, বাংলাদেশের খবর পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি এম বুরহান উদ্দীন ও ভোরের আকাশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সুজন বিপ্লব।

ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী জানান, শৈলকূপা ১৮নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরিচ্ছন্নতার কাজ বাবদ টাকা আদায় করার খবর পেয়ে ওই তিন বিদ্যালয়ে যান। তারা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার ও সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ থেকে বের হচ্ছিলেন। এ সময় ঘটনাস্থলে পৌছান বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের স্বামী আ’লীগ নেতা এনায়েত হোসেন।

তিনি ওই তিন সংবাদিক কেন বিদ্যালয়ে এসে তথ্য নিচ্ছেন এমন কথা বলে প্রথমে গালিগালাজ ও পরে মারতে উদ্যত হন। আ’লীগ নেতা এনায়েত হোসেনের এমন উদ্ধ্যত আচরণে সাংবাদিকরা কিংকর্তব্যবিমূড় হয়ে ঘটনাস্থ্য ত্যাগ করতে চাইলে আবারো আ’লীগ নেতা এনায়েত হোসেন তাদের গতিরোধ করে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, শৈলকূপা পৌর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি থাকাকালীন এনায়েত হোসেন টেন্ডারবাজি, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মে জড়িত ছিলেন। রাজনৈতিক ভাবেও বহু মানুষকে তিনি হয়রানি করেছেন। তিনি ছিলেন শৈলকুপার আতংক।

জেলার সিনিয়র সাংবাদিক দেলোয়ার কবীর বলেন, ‘সংবাদ সংগ্রহের জন্য তথ্যগ্রহণ শেষে বিদ্যালয়টির অফিসকক্ষ থেকে বের হওয়ার সময় হঠাৎ আওয়ামী লীগ নেতা এনায়েত হোসেন এসে আমাদের উপর চড়াও হন। এসময় তিনি হুমকি দিয়ে ‘কেনো সংবাদ সংগ্রহের জন্য তার স্ত্রীর স্কুলে গিয়েছি’ তার জবাব চান। এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে ‘দেখে নেয়া হবে’ বলে হুমকি দেন।’

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিপুল চক্রবর্তী জানান, ‘তিন সাংবাদিক বিদ্যালয়ে এসে তথ্য নিয়ে বেরিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। সেসময় প্রধান শিক্ষকের স্বামী এনায়েত হোসেন এসে তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন।’

কথা বলতে আ’লীগ নেতা এনায়েত হোসেনের মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করননি। তবে তার স্ত্রী ওই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘তিন সাংবাদিক বিদ্যালয়ে এসে তথ্য নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন অনাকাংক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে। তারা সকলেই একে অপরের পূর্ব পরিচিত। তার স্বামী সম্পর্কের খাতিরে এমন ব্যবহার করেছে হয়তো।

এ বিষয়ে শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্নিগ্ধা দাস বলেন, সাংবাদিকদের কাজে বাঁধা ও লাঞ্ছিতের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে।

এদিকে সাংবাদিকদের কাজে বাধা ও লাঞ্ছিতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি আসিফ কাজল ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লিটন। তারা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে উল্লেখ করেছেন এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রওহন করা না হলে অবাধ তথ্য প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

শৈলকুপায় আ’লীগ নেতার হাতে তিন সাংবাদিক হেনস্থার শিকার

আপডেট সময় : ০৮:২৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাসেল হোসেন,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:স্কুলের অনিয়মের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ঝিনাইদহের শৈলকূপায় লাঞ্ছিত হয়েছেন তিন সাংবাদিক। এসময় ওই তিন সাংবাদিককে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে শাসিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের স্বামী এনায়েত হোসেন।

অভিযুক্ত এনায়েত হোসেন শৈলকূপা পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহারের স্বামী। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল বেলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস প্রাঙ্গনে এ ঘটনা ঘটে।

লঞ্চিত সাংবাদিকরা হলেন বাংলাদেশ পোস্টের রোভিং করেসপন্ডেন্ট দেলোয়ার কবীর, বাংলাদেশের খবর পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি এম বুরহান উদ্দীন ও ভোরের আকাশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সুজন বিপ্লব।

ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী জানান, শৈলকূপা ১৮নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরিচ্ছন্নতার কাজ বাবদ টাকা আদায় করার খবর পেয়ে ওই তিন বিদ্যালয়ে যান। তারা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার ও সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ থেকে বের হচ্ছিলেন। এ সময় ঘটনাস্থলে পৌছান বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের স্বামী আ’লীগ নেতা এনায়েত হোসেন।

তিনি ওই তিন সংবাদিক কেন বিদ্যালয়ে এসে তথ্য নিচ্ছেন এমন কথা বলে প্রথমে গালিগালাজ ও পরে মারতে উদ্যত হন। আ’লীগ নেতা এনায়েত হোসেনের এমন উদ্ধ্যত আচরণে সাংবাদিকরা কিংকর্তব্যবিমূড় হয়ে ঘটনাস্থ্য ত্যাগ করতে চাইলে আবারো আ’লীগ নেতা এনায়েত হোসেন তাদের গতিরোধ করে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, শৈলকূপা পৌর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি থাকাকালীন এনায়েত হোসেন টেন্ডারবাজি, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মে জড়িত ছিলেন। রাজনৈতিক ভাবেও বহু মানুষকে তিনি হয়রানি করেছেন। তিনি ছিলেন শৈলকুপার আতংক।

জেলার সিনিয়র সাংবাদিক দেলোয়ার কবীর বলেন, ‘সংবাদ সংগ্রহের জন্য তথ্যগ্রহণ শেষে বিদ্যালয়টির অফিসকক্ষ থেকে বের হওয়ার সময় হঠাৎ আওয়ামী লীগ নেতা এনায়েত হোসেন এসে আমাদের উপর চড়াও হন। এসময় তিনি হুমকি দিয়ে ‘কেনো সংবাদ সংগ্রহের জন্য তার স্ত্রীর স্কুলে গিয়েছি’ তার জবাব চান। এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে ‘দেখে নেয়া হবে’ বলে হুমকি দেন।’

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিপুল চক্রবর্তী জানান, ‘তিন সাংবাদিক বিদ্যালয়ে এসে তথ্য নিয়ে বেরিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। সেসময় প্রধান শিক্ষকের স্বামী এনায়েত হোসেন এসে তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন।’

কথা বলতে আ’লীগ নেতা এনায়েত হোসেনের মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করননি। তবে তার স্ত্রী ওই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘তিন সাংবাদিক বিদ্যালয়ে এসে তথ্য নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন অনাকাংক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে। তারা সকলেই একে অপরের পূর্ব পরিচিত। তার স্বামী সম্পর্কের খাতিরে এমন ব্যবহার করেছে হয়তো।

এ বিষয়ে শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্নিগ্ধা দাস বলেন, সাংবাদিকদের কাজে বাঁধা ও লাঞ্ছিতের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে।

এদিকে সাংবাদিকদের কাজে বাধা ও লাঞ্ছিতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি আসিফ কাজল ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লিটন। তারা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে উল্লেখ করেছেন এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রওহন করা না হলে অবাধ তথ্য প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হবে।