দেশি প্রজাতির মাছে সমৃদ্ধ ঝিনাইদহের হাট বাজার

- আপডেট সময় : ০৪:১৫:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫ ২৯ বার পড়া হয়েছে

রাসেল হোসেন,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহ অঞ্চলে টানা বর্ষণে খাল-বিল, মাঠ-ঘাট পানিতে টইটম্বুর হয়ে উঠেছে। ডোবা-নালা ও জলাশয়ে জমে থাকা পানিতে অবলীলায় বংশবিস্তার করছে দেশি প্রজাতির মাছ।
ফলে গ্রামের হাটবাজারগুলোতে দেশি মাছের ভান্ডার গড়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষ আগের চেয়ে তুলনামূলক কম দামে মাছ কিনতে পারলেও মাছের বংশ বিস্তারে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চায়না দুয়াড়ি
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলায় ১২টি নদী ও ২৯৪টি ছোট বড় খাল রয়েছে। আছে অসংখ্য বিল, ডোবা, বাওড় ও উন্মুক্ত জলাশয়। এসব জলাশয়ে শত শত চায়না দুয়াড়ি পেতে ছোট ও ডিমওয়ালা মাছ ধরা হচ্ছে। এতে মাছের বংশ বিস্তার বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। মৎস্য ও উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করলেও চায়না দুয়াড়ি ভয়াবহতা কমছে না।
ঝিনাইদহ জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ অঞ্চলে টানা বর্ষণে খাল, বিল, নদী, নালা ও এঁদো ডোবা ভরে গেছে। জেলার নিম্নাঞ্চল এখন পানিতে ভরপুর। এই পানিতে দেশীয় প্রজাতির মাছ বংশবিস্তার করছে।
পেশাদার ও সৌখিন মাছ শিকারিরা জানান, খালে বিলে এখন শোল, মাগুর, শিং, চ্যাং, টাকি, ঝাঢ়া, মায়া, পুটি, গরগতেল, খলিশা, ট্যাংরা, কৈ, পাবদা, গুঁই মাছসহ নানা প্রজাতির মাছ ধরা পড়ছে। গ্রামের মানুষ রাবানি, বেনে, দুয়াড়ি, জাল, খাঁচা, ছিপ কিংবা খুন্তি দিয়ে মাছ শিকার করে বাজারে নিয়ে আসছে। ফলে গ্রামীণ বাজার ঘাটে সব ধরণের মাছে সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে।
মৌসুমি মাছ শিকারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের রজ কুমার ঘোষ জানান, গ্রামের হাটবাজারগুলো এখন দেশি মাছের ভান্ডারে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি বাজারে সকাল থেকেই ভিড় জমছে ক্রেতাদের। একসময় যেসব মাছ পাওয়া যেত অল্প বা দুষ্প্রাপ্য হিসেবে, এখন তা সহজলভ্য। বিশেষ করে এখন চুনো মাছ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। সহজলভ্য হওয়ায় গ্রামের মানুষ খুশি, কারণ দামও হাতের নাগালে।
গোন্দিপুর গ্রামের মুকুল হোসেন জানান, বর্তমানে গ্রামে এক কেজি খলিশা মাছ মাত্র দুই’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হরিণাকুন্ডু উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের হাফিজুর রহমান তাদের গ্রামের চ্যাং বা টাকি মাছ মাত্র ২০০ টাকা কেঁচি বিক্রি হচ্ছে। অন্য সময় এসব মাছের দাম দ্বিগুণ থাকলেও এখন বর্ষার কারণে দাম তুলনামূলক কম। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষও সহজে পুষ্টিকর দেশি মাছ কিনে খেতে পারছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার পরাগ জানান, বর্ষার পানিতে দেশি মাছের প্রাচুর্য খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এতে প্রোটিন ঘাটতি পূরণ হচ্ছে, পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিতেও প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিচ্ছে। মাছ ধরে বিক্রি করে অনেক পরিবার আয় বাড়াতে পারছে।