Canlı Maç İzle

SBOBET88

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

casino kurulum

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Eros Maç Tv

hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Marsbahis

Marsbahis

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink Panel

Hacklink

extrabet

Hacklink

Hacklink

olaycasino giriş

Hacklink

hacklink

Hacklink

bbo303

Hacklink

Hacklink

slot dana

Hacklink

บาคาร่า

xgo88

Marsbahis

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Buy Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

slot gacor

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

หวยออนไลน์

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink satın al

Hacklink

casibom

7mmbet, 7mmbet live chat, Agen Sbobet

holiganbet

dizipal güncel

onwin

sahabet giriş

sekabet giriş

vaycasino

vaycasino giriş

casibom güncel giriş

vaycasino

kralbet

padişahbet

padişahbet

betasus

enbet

bahisfair

Hacklink panel

antalya dedektör

teknoloji ekibi tm2

tm2 dedektör

dedektör

dedektor

slot online

pasacasino

toz toplama sistemleri

conrad gr4 dedektör

conrad gr4

conrad gr4 dual

conrad gr4 dedektör

conrad gr4

conrad gr4 dual

conrad gr4 yeraltı görüntüleme

antalya dedektör

antalya ikinci el dedektör

antalya xp dedektör

tipobet

sekabet

padişahbet

galabet

aresbet

aresbet giriş

bahiscasino giriş

bahiscasino

galabet giriş

slot gacor

minelab dedektör

dedektör

altın dedektörü

conrad gr4 dual

mobilbahis

dedektör

dedektör fiyatları

altın dedektörü

define dedektörü

dedektör

dedektör

dedektör

via gold dedektör

minelab dedektör

model 15 alan tarama

escort johor

minelab gpx 6000

gpx 6000 dedektör

tlcasino

tlcasino.win

tlcasino giriş

wbahis

wbahis giriş

casinowon

casinowon giriş

casinowonadresgiris.com

bahiscasino

bahiscasino giriş

https://bahiscasino.pro/

Streameast

Betpas

onwin

Marsbahis

Marsbahis

Marsbahis

Marsbahis

Marsbahis

inan dedektör

antalya inan dedektör

conrad gr4

casinobet giriş

antalya dedektör

Drunk porn

Drunk porn

livebahis

kralbet giriş

dizibox

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Holiganbet güncel giriş

casibom

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Drunk porn

casibom güncel adres

casibom güncel adres

https://dizin.org.tr/

padişahbet

beyoğlu escort

beyoğlu escort

fatih escort

Holiganbet

casibom güncel adres

dizipal

bakırköy escort

başakşehir escort

beylikdüzü escort

büyükçekmece escort

halkalı escort

kağıthane escort

pendik escort

esenler escort

esenyurt escort

casibom

galabet

matbet

türk ifşa

dizipal

casibom güncel giriş

xslot

casibom yeni adres

beşiktaş escort

padişahbet giriş

casibom

casibom giriş

casibom

tipobet

güneşli escort

bets10

sevgilitadinda

avrupa yakası escort

bağcılar escort

hititbet

hititbet giriş

pusulabet

hadımköy escort

deneme bonusu veren siteler

hititbet giriş

hititbet

galabet güncel giriş

betorder giriş

güneşli escort

istanbul jigolo

kadıköy escort

kumburgaz escort

maltepe escort

maslak escort

osmanbey escort

türk escort

şişli escort

sultangazi escort

üsküdar escort

istanbul escort

bahiscasino

bahiscasino giriş

bahiscasino

bahiscasino giriş

matbet

holiganbet

grandpashabet

bahiscasino

bahiscasino

antalya dedektör

antalya dedektör

Drunk porn

Drunk porn

Drunk porn

Drunk porn

Drunk porn

Drunk porn

türk porno

türk porno

casino weeds drugs porn casinoper casibom canabis türk ifşa türk porno uyuşturucu

weeds

türk ifşa porno izle

türk sarhoş porno

livebahis

dizipal

casibom

üsküdar escort

sarıyer escort

casibom giriş güncel

Betpas giriş

Bahispal Giriş

casibom giriş

pusulabet giriş

betkolik

grandpashabet

taksim escort

kayaşehir escort

Betorder

Betorder güncel giriş

casibom giriş

google hit botu

padişahbet

grandpashabet giriş

grandpashabet güncel

grandpashabet güncel giriş

grandpashabet giriş güncel

bomonti escort

Jojobet giriş

Marsbahis

özbek escort

pusulabet

pusulabet giriş

deneme bonusu veren siteler

masterbetting giriş

galabet

holiganbet

galabet

royalbet

jojobet

Grandpashabet

Grandpashabet Giriş

grandpashabet güncel giriş

vdcasino

vdcasino

massage near me

pusulabet

jojobet

matbet

pusulabet

holiganbet

giftcardmall/mygift

ptt kargo

marsbahis

holiganbet

casibom

Streameast

onwin

Kartal Escort

casibom giriş

betasus

betasus

bahiscasino

betasus

betcio giriş

casibom giriş

casibom

paşacasino

casibom giriş

betvole giriş

vaycasino

casibom

betvole

betvole

ataköy escort

padişahbet

galabet

betzula

betsmove

padişahbet

galabet giriş

bahiscasino

galabet

casibom

holiganbet

marsbahis

Matbet

bets10

Matbet

bahiscom giriş

Hacklink Panel

grandpashabet

holiganbet

betnano

restbet

sekabet

dinamobet

imajbet

casibom giriş

grandpashabet

meritking giriş

bahislion

imajbet

matbet

sekabet

matadorbet

artemisbet

betturkey

sahabet

celtabet

atlasbet

meritbet

holiganbet

ibizabet

pusulabet

betasus

casibom

Hacklink

padişahbet

meritking

Holiganbet

matbet

casival

matbet

holiganbet

sekabet

marsbahis

tempobet

megabahis

galabet giriş

galabet

padişahbet

holiganbet

Crackstreams

mavibet

matbet

betsmove

vaycasino

galabet

vaycasino

onwin

meritking

megabahis

betmoon

tempobet

olabahis

betboo

betcio giriş

pendik escort

Vegabet

ঢাকা ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত চীনের দৃষ্টি পার্বত্য চট্টগ্রামের দিকে : (উপজাতিয় উগ্রবাদীদের মদত পৃষ্ঠপোষকতার নাটের গুরু ইউনিসেফ)

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৫১:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫ ১৯১ বার পড়া হয়েছে

কামাল পারভেজ:-

একটা গ্রামের প্রবাদ আছে গরীবের বউ সবার ভাবী এবং গরীবের সুন্দর মেয়ে অথবা বউদের প্রতি বেশি কু-দৃষ্টি দেয় গ্রাম্য মোড়ল, জমিদার ও বড়লোকের কুলাঙ্গার ছেলেরা। ঠিক তদরুপ আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে চলছে একটা আন্তর্জাতিক চক্রের ষড়যন্ত্র। পার্বত্য চট্টগ্রামের আয়তন ৫০৯৩ বর্গমাইল বা ১৩২৯৫ বর্গকিলোমিটার এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ -পূর্বাঞ্চলের বিস্তৃত জায়গায় জুড়ে গড়ে উঠেছে পার্বত্য অঞ্চল। এক কথা বলা যায় আমাদের পার্বত্য অঞ্চল খ্যাত অপরূপ দৃশ্যের মধ্যে সেখানে কি নেই। স্রষ্টার অপরিসীম কল্পনাশক্তিতে অজস্র সম্পদের ও বাংলাদেশ নামক মানুষের জীবন চাহিদার ৬০% যোগান দাতা হিসেবে উৎপাদন হয় এই পাহাড়ি অঞ্চলে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সাথে ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল একটা অভিন্নতায় রুপ ধারন করে আসছে এবং রাজনৈতিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণের সুরলাপ আচরণ বাংলাদেশ দেখালেও সার্বিকভাবে বন্ধু প্রীতম শব্দটা তারা হিংসাত্মক ভাবেই দেখেন। যেহেতু ভারতের বিগত একশত বছরের পূর্ব-পরিকল্পনা অখণ্ড- ভারত অংশ বিশেষ বাংলাদেশকে গিলতে পারেনি এবং অখণ্ড -ভারত মানচিত্র থেকে ছিটকে পড়েছে, সেই মাকড়শারজাল বুনতেই তারা সহজেই পিছুপা হবেন না। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বাঙালিয়ানা বাংলাদেশের অংশ বিশেষ বলে ইতিহাসের মানচিত্র থেকে দেশ স্বাধীনের পর দেশ ভাগের নামে সুকৌশলেই বাঙালিয়ানা দু-ভাগে বিভক্ত করে পশ্চিমবঙ্গের নতুন মানচিত্র ভারতের লিপিবদ্ধ করে নিয়ে বাংলাদেশের অনেক সম্পত্তি ভারতের মানচিত্রে অংশ বিশেষ হয়ে গেছে। বাংলাদেশর উত্তর পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চল ঘেঁষে ভারতের সীমানা, দক্ষিণ পূর্ব নাফ নদী ঘেঁষে প্রায় ২৬০ কিলোমিটার জুড়ে মিয়ানমার সীমানা অবস্থিত এবং মিয়ানমারের উত্তর পশ্চিম বাংলাদেশ ঘেঁষে রাখাইন রাজ্য। একটা তৃমুখী পয়েন্ট রয়েছে বাংলাদেশ রাঙামাটি জেলা বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি ইউনিয়ন এর ধোপানিছড়ি পাড়া সীমান্ত ঘেষে মিজোরাম ও মিয়ানমার সীমান্ত (শূন্য রেখা বলা হয় এবং ইংলিশে বলে ট্রাই জংশন) । উপজেলা সদর থেকে এই দূর্গম এলাকা বড়থলি ইউনিয়নে যেতে হলে নৌকা / ইঞ্জিন চালিত নৌকায় অথবা পাহাড় দিয়ে পায়ে হেঁটে যাওয়া যায়। এছাড়া বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলা দিয়ে হেঁটে বড়থলি ইউনিয়ন আসা যায়।মিয়ানমারের উত্তর -পশ্চিমেে বাংলাদেশ ও ভারত, উত্তর – পূর্বে চীন, পূর্ব ও দক্ষিণ -পূর্বে লাওস থাইল্যান্ড এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ -পশ্চিমেে আন্দামান সাগর ও বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। তবে উত্তর আরাকান (রাখাইন রাজ্য) শেষ সীমান্ত ও ভারত দক্ষিণ সীমান্ত এবং বাংলাদেশ দক্ষিণ পূর্ব সীমান্ত হচ্ছে তৃমুখী পয়েন্ট। ভারতের একটা প্রদেশকে সেভেন সিস্টার বলা হয় আর এই ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের সাতটি রাজ্য—নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয় ও অরুণাচল নিয়ে অবস্থিত। এই তিনটি স্বাধীন রাষ্ট্রের বিষয় পিছনের দিকে একটু ফিরে তাকানো যেতে পারে যেমন ১৯৩৭ সালে যখন এই বিশাল কলোনি বা উপনিবেশ ব্রিটিশ মিয়ানমার ও ব্রিটিশ ভারতে বিভক্ত হয়, তখন এই সীমান্ত আধা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান এবং ১৯৪৮ সালে মিয়ানমার ছেড়ে যায় ব্রিটিশরা তখন সম্পূর্ণ আন্তর্জাতিক হয় কিন্তু বাংলাদেশ পাকিস্তান শাসিত হয়ে পড়লে ১৯৭১ সালে যুদ্ধের ফলাফল হিসেবে বাংলাদেশ নামে নতুন রাষ্ট্রের সূত্রপাত ঘটে। এর ফলে মিয়ানমার-পাকিস্তান সীমান্ত মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে পরিণত হয়।কিন্তু ওই সময়ের পূর্বে দৃশ্যপট ভিন্ন ছিল। মিয়ানমার ও বাংলাদেশ পূর্বে একটি রাষ্ট্র দ্বারা শাসিত হতো, তা হলো ব্রিটিশ ভারত। আন্তর্জাতিক সীমানা হিসেবে মিয়ানমার ও বাংলাদেশকে পৃথককারী লাইন তুলনামূলকভাবে নতুন। এটি ব্রিটিশ ভারতের জেলাসমূহের পৃথককারী লাইন হিসেবে এসেছে। উপনিবেশ মতে মিয়ানমার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানের বিষয় স্বীকার করে যে ১৯৩৭ সালে মিয়ানমারের পৃথককরণের পর নাফ নদীসহ চট্টগ্রাম ও আরাকান জেলাসমূহের সীমানা চিহ্নিত হয়নি। এ সম্পর্কে সাম্প্রতিক রেকর্ড হলো রাজস্ব নিষ্পত্তি মানচিত্র, যা ১৯২৯ সালের তৈরি। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন যে একমাত্র সীমান্ত, যা ১৯৬৬, ১৯৮০ ও ১৯৯৮-এর ভূমি সীমান্ত চুক্তিতে চিহ্নিত নেই।স্বাভাবিকভাবেই সীমানা চিহ্নিত না থাকার কারণে সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। শুধু সাগরে মিয়ানমার এলাকা চিহ্নিত করার জন্য এবং বঙ্গোপসাগর থেকে আগত জাহাজগুলোকে দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য নাফ নদীর মুখে বয়াগুলো অবস্থিত। আশ্চর্যজনকভাবে এসব বিন্যাসের পরও এখন পর্যন্ত সীমান্ত কোথায় অবস্থিত অথবা কতটুকু, সে ব্যাপারে কোনো চুক্তি নেই। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও বাংলাদেশ সরকারের মতে, এটি ১৯৩ কিলোমিটার, কিন্তু মিয়ানমার জরীপ মতে এটি ২৭২ কিলোমিটার।
দুই রাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রভাব ও বাণিজ্যিক নজর : আমাদের পার্শ্ববর্তী সীমান্ত ঘেঁষা দেশ ভারতকে আমরা সবসময় বন্ধুপ্রতীম দেশ বলে আতীয়তা গড়ে তুলার চেষ্টা করি। রাজনৈতিক ভাবে সুসম্পর্ক একটা সহায়ক ভূমিকা থাকবে বলে আশাবাদী করলেও সেটা কাজকর্মের মধ্যেই দেখা যায় সুবিধা ভোগের জন্য রাজনৈতিক ভাবে ফয়দা লুটে নেওয়ার বেলায় সুসম্পর্কটা নাটকীয়তা সীমাবদ্ধ, আর পাশে দাঁড়ানো একটা ডিপ্লোম্যাসি চলে। রাজনৈতিক ভাবেও প্রভাব বিস্তারের ভূমিকাটা দেশ স্বাধীনের পর সুকৌশলে আটকে নিয়েছে এখন পর্যন্ত সেই মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকাকে পুঁজিবাদী হিসেবে মাতব্বরের চেয়ারটা দখলে নিয়েছে। বাণিজ্যিক ভাবেও ভারত তার দিকটা চুক্তিতে স্বার্থ সিদ্ধিতে অটুট রেখে একটা বৈরী আচরণের বাণিজ্য করে যাচ্ছে। যেমন ভারত ট্রানজিট পয়েন্ট ব্যবহারে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সাথে রাজনৈতিক মনঃতত্ত্ব প্রভাব বিস্তার করে তা সফল হয়েছে। নৌ পরিবহন ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর ও মংলা বন্দর ব্যবহারের ফলে সমান্তরালে স্থলবন্দর গুলো অনায়াসে মুখ খুলে গেছে এবং বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে ভারত বাণিজ্যিক আমদানি – রপ্তানি বৃদ্ধি করণ করে অপর তিনটি দেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানে পণ্যপরিবহনে সুফল পাচ্ছে। বাংলাদেশ কি লাভবান হলো তা শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব স্বার্থ সিদ্ধ হাসিল ও ক্ষমতায় টিকে থাকার যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা ছাড়া আর কি হয়েছে। বাংলাদেশে ২৫ টির মতো স্থলবন্দর রয়েছে এবং মুজিব নগরকে ২৬তম স্থলবন্দর ঘোষণা দিয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিটি স্থলবন্দরের সাথে ভারতের স্থলবন্দরের কম বেশি ট্রানজিট পয়েন্ট রয়েছে।পণ্য পরিবহন লোড-আনলোড ব্যবহারে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে ভারত এবং গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে বেনাপোল, তেতুলিয়া, তামাবিল, পাটুরিয়া, ভোমরা, বুড়িমারী-চ্যাংরাবান্দা, আখাউড়া- আগরতলা ও সর্বশেষ রামগড় ট্রানজিট দিয়ে ত্রিপুরা সাবরুম গ্রাম হয়ে নেপাল ও ভুটানে পণ্য পরিবহনের জাতীয় সড়ক সুবিধা করে নিলো। আমরা ধরে নিতে পারি অবশেষে ভারতের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হলো৷ চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোয় নিয়মিতভাবে পণ্য আনা-নেয়ার দ্বার পুরোপুরি খুলে দিয়েছে বাংলাদেশ৷এখন পর্যন্ত ভারতকে দেয়া ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার বিনিময়ে বাংলাদেশের প্রাপ্তির বিষয়টি সেভাবে দৃশ্যমান নয়৷
চীনের সাথে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রাজনৈতিক ভাবে দীর্ঘদিনের হলেও বাণিজ্যিক ভাবে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছে নব্বই দশকের পর থেকে। চীনও দীর্ঘদিন ধরে এই সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে সুকৌশলেই চেষ্টা চালিয়ে তারা সফল হয়েছে। তাই চীন বাণিজ্যিক সুত্র ধরে বাংলাদেশের রাজনীতির প্রভাব বিস্তারের জায়গাটাকে বাণিজ্যিক সুত্র হিসেবে প্রভাব বিস্তারে বিস্তৃত করে ফেলেছে। ভারতকে পিছনে ফেলে বাণিজ্যিক ভাবে এগিয়ে গেছে চীন। সেক্ষেত্রে চীন ইকোনমিক জোন তৈরি করতে বাংলাদেশ সরকারকে নতজানু করে নিয়ে সুকৌশলে চড়া সুদে ঋণদাতা হয়ে ভালো বন্ধু বলে দাবী করছে। বহিঃবিশ্বের অন্যান্য দেশ রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চাপ সৃষ্টি করলেও চীন সেসব বিষয় সুকৌশলে এরিয়ে যায়। কারণ চীন একসময়কার সাম্রাজ্য ও পুঁজিবাদীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার নীতিমালা থেকে স্বরে এখন পুরোদমে পুঁজিবাদ জিন্দাবাদে পরিনত হয়েছে। তাই তারা বাণিজ্যকে সফল করতে অর্থ বিনিয়োগ এবং বিনিময়ের বিকল্প নেই বলে মনে করেন। আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক সংলাপ একটা বাণিজ্যিক চুক্তি ছাড়া আর কিছু হতে পারেনা বলে তারা মনে করেন। দু-টানা সম্পর্ক গুলো অর্থনৈতিকই পরিবর্তন আনতে পারে। তার জন্য সুকৌশলে চীন মাষ্টার মাইন্ড নিয়ে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ঘাঁটি করতে পদ্মা সেতু থেকে শুরু মাতার বাড়ির গভীর সমুদ্র বন্দরের চলমান কাজগুলো তাদের কব্জায় দুইদেশের সুসম্পর্ক রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে ফয়দা লুটে নিয়ে যাচ্ছে। আসলেই কি তাই, নাকি বাণিজ্যিকের নামে দৃষ্টি অন্যখানে সেটাই নিয়ে আমরা আরেকটু গভীরে যেতে পারি।
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতিয় উগ্রবাদী কেনো :- প্রথম কথা হলো পার্বত্য চট্টগ্রাম কি বাংলাদেশ মানচিত্র ও ভূখণ্ডের বাহিরে থাকা আলাদা একটা রাষ্ট্র কিনা। দেশ স্বাধীনের পর বা আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম কখনোই বাংলাদেশ অংশ বিশেষ ছিলোনা অথবা ব্রিটিশ শাসনামলেও পার্বত্য চট্টগ্রাম আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে শাসন কার্য পরিচালনা হয়েছে কিনা সে বিষয় নিয়ে কারো কোনো ব্যাখ্যা নেই। আর ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন না কারণ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ২৫০ বছর শাসন শোষণের একটা চিত্র ও ইতিহাস থেকে ব্রিটিশ শাসনামলে এই অঞ্চলের নাম হয় বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি। এরপর ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সময় গোটা বাংলায় একটা প্রশাসনিক বিভাজন হয়। বাংলার পশ্চিম অংশ হয়ে যায় পশ্চিম বঙ্গ এবং পূর্ব অংশ হয়ে যায় পূর্ব বাংলা। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন অবসানের পর ১৯৪৭ সালে বঙ্গ-প্রদেশ ভারত ও পাকিস্তানে বিভক্ত হল। সে সময় পাকিস্তানিরা পূর্ব বাংলার নাম দিতে চাইলো পূর্ব পাকিস্তান। তবে তারও আগে মোগল আমল ও মুসলিম শাসন আমলের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস কি বলছে তা জানা যাক বাংলাদেশ নামকরণ করার পূর্বের দিকে একটু ফিরে যাওয়া যাক, বাংলাদেশ নামকরণের পেছনে রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস, কয়েকটি পরিক্রমায় ভাগ করে বিশ্লেষণের মাধ্যম পায় ইতিহাসবিদরা। ইতিহাসবিদ আবুল ফজল’র উদ্ধৃতি দিয়ে বলতে হয় “বঙ্গ” শব্দের সংস্কৃতি বাংলা এবং “বাংলা” শব্দের উৎপত্তিও সহজ সংস্কৃতি “বঙ্গ”। আর্যরা এই অঞ্চলকে ” বঙ্গ” বলে অভিহিত করতো বলে ইতিহাস তা প্রমাণ করে। “বঙ্গ” শব্দ আরও ব্যাখ্যা পাওয়া যায় যে, এই বঙ্গে বসবাসকারী মুসলমানরা “বঙ্গ” শব্দটির সঙ্গে ফার্সি “আল” প্রত্যয় যোগ করে, এতে করে নাম দাঁড়ায় “বাঙাল” বা “বাঙ্গালাহ্”। মুসলমান শাসনামলে বিশেষ করে ১৩৩৬ থেকে ১৫৭৬ সাল পর্যন্ত সুলতানি আমলে এবং ১৫৭৬ সালে মোঘলরা বাংলা দখল করার পরে এই অঞ্চলটি বাঙাল বা বাঙালাহ নামেই পরিচিতি পায়। শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলাও বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, আসামের মতো কয়েকটি প্রেসিডেন্সি নিয়ে নাম দিয়েছিলেন “বঙ্গ”। পর্যায়ক্রমে ইতিহাসবিদরা এই নাম দেয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন, ১৯৫২ সালে সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বাংলা ভাষা থেকে “বাংলা”এরপর স্বাধীন দেশের আন্দোলন সংগ্রাম থেকে দেশ। এই দুটো ইতিহাস ও সংগ্রামকে এক করে “বাংলাদেশ” নামকরণ করা হয়। এরপর ১৯৭২ এর চৌঠা নভেম্বর যখন প্রথম সংবিধান প্রণীত ও গৃহীত হয় সেই সময়ও দেশটির সাংবিধানিক নাম দেয়া হয় “বাংলাদেশ”। তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয় নিয়ে অন্য কিছু ভাববার নেই ও ভাবতে পারিনা এটা একটা আলাদা মানচিত্রের গুহ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্র ও শকুনের চোখ :
তবে দেশ স্বাধীনের পর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে একটা ষড়যন্ত্র লেগেই আছে। পুরো বাংলাদেশের মাটিকে একটা প্রকৃতি প্রাকৃতিক বিজ্ঞান প্রযুক্তিগত সম্পদ বলা হয়। সোনার ফসল ফলে বাংলাদেশে, তেমনি পার্বত্য চট্টগ্রাম একটা প্রকৃতির খনিজ সম্পদশালী হিসেবে অন্যন্যতায় রুপধারন করে আছে। এই সৌন্দর্যের লীলাময় ভূমিকে গ্রাস করতে ভারতের একটা আগ্রাসন ভূমিকা রয়েছে। পশ্চিম বঙ্গ ও পূর্ব বঙ্গকে সুকৌশলে মানচিত্র বিভক্ত করার পরও একটা শকুনের দৃষ্টি পড়ে-ই আছে তিন পার্বত্য চট্টগ্রামের দিকে। ১৯৭৩ সালে ৭ জানুয়ারী খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা (সাবেক মহালছড়ি থানার অন্তর্ভুক্ত) ইটছড়ি মৌজা থেকে গঠন হয় শান্তি বাহিনী নামক উপজাতিয় উগ্রবাদী সংগঠন। তৎকালীন তাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গঠন ও অস্ত্র দিয়ে প্রশিক্ষণ ব্যবস্হা করা হয় ভারতের ত্রিপুরায়। এবং পরবর্তী সময় সংগঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে অর্থ যোগানদাতা হিসেবে ভারত মূখ্য ভূমিকা রাখে তাদের স্বার্থে। একরকম বাঙালি নিধনের ভূমিকাটা পরিকল্পনা হতো ভারত থেকে, তবে সেখানেও একটা সাম্প্রদায়িকতার হিসেব কষতে থাকে। দেশ স্বাধীনের ৩০/৪০ বছর আগেও সেখানে বাঙালির আবাসস্থল গড়ে উঠেছিলো, সেই সময়ে কোনো উপজাতি ধারা বৈষম্য সৃষ্টি হয়নি। একটা পরিবারের মতো একে অপরের পাশে থেকে সহযোগিতা করেছে। বিভাজন সৃষ্টির পরিকল্পনাটা শুরু করে দেশ স্বাধীনের পর থেকে, এবং আদিবাসী বলে একক সত্ত্বা তৈরি করতে আলাদা জনগোষ্ঠীর বসবাস উপজাতিয় আলাদা শাসন ব্যবস্হা তৈরি করণের একটা কু-মন্ত্র চাপিয়ে দেয় তৎকালীন টগবগের তরুণ মানবেন্দ্র লারমা মাথায়। ১৩ টি বিভিন্ন ধর্মের জনগোষ্ঠীকে উপজাতির ছাতা তলে এনে আদিবাসী জনগোষ্ঠী বলে চালিয়ে দেওয়া হলো। ৭৩ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল শান্তি চুক্তি আগ পর্যন্ত সেনাবাহিনী, পুলিশ, সরকারের অন্যান্য দপ্তরের চাকুরীজীবী ও সাধারণ বাঙালি এবং উপজাতিয় কিছু নেতাসহ প্রায় ৩৬ হাজার লোক হত্যা করে এই শান্তিবাহিনী। এই গুম, খুন, অপহরণ, নির্যাতনের হুকুমদাতা ছিলো মানবেন্দ্র লারমার মৃত্যুর পর দায়িত্বে থাকা তার ছোট ভাই জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ডাক নাম সন্তু লারমা। অবশ্য তখন শান্তিবাহিনীকে পার্বত্য এলাকায় গেরিলা বাহিনী বলে জানতো। শান্তিবাহিনীর অর্থ জোগানোটা সুকৌশলে আদায় হতো ও পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করে নিতো এবং কোনো ব্যবসায়ী চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলেই তাকে গুম খুন করা হতো নথবা অপহরণ করে মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায়ের মাধ্যমে ছেড়ে দিতো। এরপর ভারতের স্বার্থসিদ্ধ হাসিলে উপজাতি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রতিষ্ঠা ও সায়ত্তশাসিত জনগোষ্ঠী হিসেবে তাদের পক্ষে বিভিন্ন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী চীন, ফিলিপাইন, ফ্রান্স, থাইল্যান্ড থেকে ফান্ডিং ব্যবস্হা করা হতো। ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর তৎকালীন ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে শান্তি চুক্তি হওয়ার পর সন্তু লারমা নিজের সুবিধা আদায় করে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ নামে একটা সংস্থা গঠন করে প্রতিমন্ত্রীর পদ মর্যাদায় চেয়ারম্যান হিসেবে মেয়াদহীন ভাবে আছে। এই পদের পরিবর্তন দায়িত্ব পালনের মেয়াদকাল কত বছরে শেষ হবে তার কোনো নিদিষ্ট সময়সীমা পার্বত্য সংবিধান ধারার কোথাও উল্লেখ নেই। তবে শান্তিচুক্তি শর্তানুযায়ী সকল ভারী অস্ত্র সশস্ত্র পর্যায়ক্রমে জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি থাকলেও তা কোনাটাই পূর্ণ না করে পুনোরায় পার্বত্য চট্টগ্রামকে আবারও অস্বাভাবিক হিংস্র জন্তুর মতো দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। এদিকে শান্তি চুক্তির পর পরই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) নামক সংগঠন হয়, যার নেতৃত্বটা হচ্ছে সন্তু লারমার হাতে। শান্তি চুক্তির এক বছর পর ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় কনফারেন্স মাধ্যমে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) নামক আরেকটা পার্বত্য চট্টগ্রাম ভিত্তিক আঞ্চলিক দল হিসেবে ঘোষণা করে। প্রসীত বিকাশ খীসা কে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান এবং এই আঞ্চলিক দল পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পথে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করবে। কিন্তু দেখা গেলো তাদের বক্তব্যের সাথে মাঠ পর্যায়ের কাজে কোনো মিল নেই। নতুনভাবে জন্ম নেওয়া দু’টি আঞ্চলিক দলের রাজনৈতিক ও পার্বত্য আধিবাসী নাগরিক অধিকার আদায়ে একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করে আসছে এবং মারমুখী উত্তাপত্ব পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে। তাদের এই দল পরিচালনা করতে ব্যবসায়ী ও বাঙালি উপজাতি সকল সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে নিচ্ছে। এভাবেই পার্বত্য চট্টগ্রামের যতগুলো উপজাতিয় সংগঠন আছে সেগুলো চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে চলছে।
নাটের গুরু ইউনিসেফ : পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিয় উগ্রবাদীদের মদত পৃষ্ঠপোষকতার নাটের গুরু ইউনিসেফ সংস্থাটিকে কেনো দায়ী করলাম তারও ব্যাখ্যা আছে। কারণ ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘ ২৫ বছরের অস্থিরতা নিরসনে এবং সেখানে টেকসই উন্নয়নের পথ তৈরি করতে প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের ঐতিহাসিক ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি এই অঞ্চলে ইউনিসেফের সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, সুরক্ষা, পানি ও স্যানিটেশনের মতো ন্যায়সঙ্গত সামাজিক সেবাসমূহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওয়ান স্টপ মৌলিক সামাজিক সেবা প্রদানে কাজ করবেন বলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত ইউনিসেফ’র সাথে চুক্তি হয়। তবে এখানে বলে রাখা ভালো জাতিসংঘের এই ইউনিসেফ (UNICEF) এনজিও চুক্তির আগেই সুকৌশলে ইউএনডিপি নামক এনজিও পার্বত্য চট্টগ্রামে কাজ করতো ওয়ার্ল্ডফুট অর্গানাইজেশনের নামে খ্রিষ্টান মিশনারিরা অর্গানাইজেশন করার জন্য। পরবর্তী জাতিসংঘের এই ইউনিসেফ চুক্তি করে সফলভাবেই এগিয়ে গেলো। চুক্তিতে যা লেখা তার বিপরীতে কাজ করে যাচ্ছে ইউনিসেফ / ইউএনডিপি। বৈষম্যহীন ভাবে কাজ করার কথা থাকলেও ইউনিসেফ তত্ত্বাবধানে ইউএনডিপি, কারিতাস বাংলাদেশ, ক্রিশ্চিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (সিসিডিবি), গ্রাম উন্নয়ন সংগঠন (গ্রাউস), অ্যাডভেন্টিস্ট চা্চ অব বাংলাদেশ, ইভেনজেলিক্যাল ক্রিশ্চিয়ান চার্চ (ইসিসি) এই সংস্থা গুলো মূলত খ্রিস্টান মিশনারী অর্গানাইজেশন হিসেবে কাজ করছে। ২০১১ সালের জরিপে তিন পার্বত্য জেলায় ১৯৪ টি গীর্জা ছিলো আর ২০২৫ সালের হিসেবে খাগড়াছড়ি জেলায় ৯০ রাঙামাটি ৯৫ বান্দরবান ১২৫ টি গীর্জা, মোট ৩১০ টির অধিক গীর্জা রয়েছে। ২০১০ সালের আগে খাগড়াছড়ি ৪.৫০০, বর্তমান ৮ হাজরের অধিক, রাঙামাটি ৫.২০০, বর্তমানে ১০.৩০০, বান্দরবান ৭.৪০০, বর্তমানে ১৮.৬০০ পরিবার কনভার্ট খ্রিস্টান রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চুক্তির আগেই তিন জেলা ৮টি খ্রিস্টান উপাসনালয় ছিলো, ২০১০ সালের দিকে ৩৩ টির মতো গীর্জার উন্নতি করণ হয়, আর ২০২৫ সালে এসে সেটা ৩১০ এর অধিক গীর্জা তৈরি করা হয়। বিগত ১৫ বছরে সেটা ১০ গুণের সমান হয়। বৌদ্ধধর্মাবলম্বী বৌদ্ধ বিহার ছাড়া উপজাতিদের মধ্যে অন্যান্য ধর্মালম্বীদের মন্দির, হিন্দুদের ধর্মীয় মন্দির ও মুসলিম মসজিদও এতগুলো নেই। যেখানে শুধু মাত্র পাঁচ পরিবার কর্নভাট (ধর্ম পরিবর্তন) খ্রিস্টান রয়েছে সেখানেও উপাসনালয় অথবা গীর্জা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ইউনিসেফ এনজিওর মূল টার্গেট হলো তিন পার্বত্য চট্টগ্রামকে খ্রিস্টান মিশনারী রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা, তার জন্য উপজাতিদের মধ্যে প্রথমে সংখ্যালঘু অন্যান্য ধর্মাবলম্বী সহজ সরল ও অসচ্ছলতা পরিবার গুলোর দিকে নজর দেয়। সেগুলোকে স্বাবলম্বী করার কৌশল হিসেবে ধীরে ধীরে খ্রিস্টান ধর্মের দিকে দাপিত করে। আরও একটি বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন সেটা হলো সীমান্ত এলাকায় যেসব উপজাতিদের মধ্যে বিভিন্ন ধর্মালম্বী পরিবার আছে সেগুলোকে পুরোদমে কনভার্ট করতে সক্ষম। এসব পরিবার গুলো এখন অনেক উন্নত লাইফস্টাইলেই চলাফেরা। এদিকে বিশেষ করে চাকমা সম্প্রদায়কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে আদিবাসী / জুম্মল্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করার জন্য আন্দোলন ও মিছিল মিটিংয়ের জন্য অর্থ যোগান দাতা হিসেবে কাজ করছে ইউনিসেফ। এখানেই শেষ নয় পাহাড়ের যেসব উপজাতিদের নিজস্ব এনজিও রয়েছে সেগুলোকেও বিভিন্ন খ্রিস্টান রাজ্য থেকে দাতাগোষ্ঠী হিসেবে অন্তরালে কাজ করছে ইউনিসেফ। পাহাড় থেকে মুসলিম ও হিন্দু খেদাও সোজাসাপটা বাঙালি বিতাড়িত করার মিশনে উগ্রবাদী সশস্ত্র বাহিনী তৈরির পিছনে অস্ত্র ও অর্থ যোগান দাতা হিসেবে কাজ করছে ইউনিসেফ। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম তিন জেলার প্রবেশ মুখে সর্বত্র সেনা- পুলিশ চেকপোস্ট রয়েছে যে কোনো গাড়ি প্রবেশের সময় দাঁড় করিয়ে তল্লাশি করা করা হয়, কিন্তু ইউনিসেফ UN নামক গাড়ি গুলোকে চেক (তল্লাশি) করা হয়না। UN নামক গাড়ি গুলোতে সাহায্যের নামে অস্ত্র চালান ঢুকে পড়ে দূর্গম পাহাড়ের ভিতর। এবিষয়ে ২০২৩ সালে দৈনিক দেশবাংলা পত্রিকায় আমার লেখা প্রতিবেদন ছাপানো হয়। জনসাধারণের মাঝে টনক নড়লেও তৎকালীন আওয়ামী সরকার লেভেল প্লেয়িং হিসেবে দায়সারা হয়ে পড়ে। বান্দরবান জেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট ( কেএনএফ) নামক যে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন তৈরি করা হয় তার পিছনেও রয়েছে ইউনিসেফ এর কলকাঠি। কেএনএফ এর প্রধান অসচ্ছলতা পরিবারের সন্তান নাথান বোম খ্রিস্টান মিশনারী স্কুলের ছাত্র। নাথান বোম ২০১৮ সালে বান্দরবান আসনে এমপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের পুরো অর্থ যোগান হিসেবে কাজ করে ইউনিসেফ। বর্তমান সময়ে পাহাড়কে অশান্ত সৃষ্টি করার মূল চালিকা শক্তি হলো ইউনিসেফ। তাহলে ইউনিসেফ কে নাটের গুরু বললে কি ভুল হবে।
তৃমুখী টার্গেট :- ভারত চায় তাদের দখলে নিয়ে সেভেন সিস্টার সাথে একটা অঙ্গরাজ্য করার পায়তারা। চীন চায় বৌদ্ধ ধর্মালম্বী হিসেবে গড়ে তুলে খনিজ সম্পদের দিকে বাণিজ্যিক ভাবে সফল হওয়া আর আমেরিকার তৈরি জাতিসংঘের ইউনিসেফ’র টার্গেট বাঙালি নিধন করে খ্রিস্টান রাজ্য হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পরিচালিত করা।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

ভারত চীনের দৃষ্টি পার্বত্য চট্টগ্রামের দিকে : (উপজাতিয় উগ্রবাদীদের মদত পৃষ্ঠপোষকতার নাটের গুরু ইউনিসেফ)

আপডেট সময় : ১২:৫১:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫

কামাল পারভেজ:-

একটা গ্রামের প্রবাদ আছে গরীবের বউ সবার ভাবী এবং গরীবের সুন্দর মেয়ে অথবা বউদের প্রতি বেশি কু-দৃষ্টি দেয় গ্রাম্য মোড়ল, জমিদার ও বড়লোকের কুলাঙ্গার ছেলেরা। ঠিক তদরুপ আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে চলছে একটা আন্তর্জাতিক চক্রের ষড়যন্ত্র। পার্বত্য চট্টগ্রামের আয়তন ৫০৯৩ বর্গমাইল বা ১৩২৯৫ বর্গকিলোমিটার এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ -পূর্বাঞ্চলের বিস্তৃত জায়গায় জুড়ে গড়ে উঠেছে পার্বত্য অঞ্চল। এক কথা বলা যায় আমাদের পার্বত্য অঞ্চল খ্যাত অপরূপ দৃশ্যের মধ্যে সেখানে কি নেই। স্রষ্টার অপরিসীম কল্পনাশক্তিতে অজস্র সম্পদের ও বাংলাদেশ নামক মানুষের জীবন চাহিদার ৬০% যোগান দাতা হিসেবে উৎপাদন হয় এই পাহাড়ি অঞ্চলে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সাথে ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল একটা অভিন্নতায় রুপ ধারন করে আসছে এবং রাজনৈতিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণের সুরলাপ আচরণ বাংলাদেশ দেখালেও সার্বিকভাবে বন্ধু প্রীতম শব্দটা তারা হিংসাত্মক ভাবেই দেখেন। যেহেতু ভারতের বিগত একশত বছরের পূর্ব-পরিকল্পনা অখণ্ড- ভারত অংশ বিশেষ বাংলাদেশকে গিলতে পারেনি এবং অখণ্ড -ভারত মানচিত্র থেকে ছিটকে পড়েছে, সেই মাকড়শারজাল বুনতেই তারা সহজেই পিছুপা হবেন না। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বাঙালিয়ানা বাংলাদেশের অংশ বিশেষ বলে ইতিহাসের মানচিত্র থেকে দেশ স্বাধীনের পর দেশ ভাগের নামে সুকৌশলেই বাঙালিয়ানা দু-ভাগে বিভক্ত করে পশ্চিমবঙ্গের নতুন মানচিত্র ভারতের লিপিবদ্ধ করে নিয়ে বাংলাদেশের অনেক সম্পত্তি ভারতের মানচিত্রে অংশ বিশেষ হয়ে গেছে। বাংলাদেশর উত্তর পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চল ঘেঁষে ভারতের সীমানা, দক্ষিণ পূর্ব নাফ নদী ঘেঁষে প্রায় ২৬০ কিলোমিটার জুড়ে মিয়ানমার সীমানা অবস্থিত এবং মিয়ানমারের উত্তর পশ্চিম বাংলাদেশ ঘেঁষে রাখাইন রাজ্য। একটা তৃমুখী পয়েন্ট রয়েছে বাংলাদেশ রাঙামাটি জেলা বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি ইউনিয়ন এর ধোপানিছড়ি পাড়া সীমান্ত ঘেষে মিজোরাম ও মিয়ানমার সীমান্ত (শূন্য রেখা বলা হয় এবং ইংলিশে বলে ট্রাই জংশন) । উপজেলা সদর থেকে এই দূর্গম এলাকা বড়থলি ইউনিয়নে যেতে হলে নৌকা / ইঞ্জিন চালিত নৌকায় অথবা পাহাড় দিয়ে পায়ে হেঁটে যাওয়া যায়। এছাড়া বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলা দিয়ে হেঁটে বড়থলি ইউনিয়ন আসা যায়।মিয়ানমারের উত্তর -পশ্চিমেে বাংলাদেশ ও ভারত, উত্তর – পূর্বে চীন, পূর্ব ও দক্ষিণ -পূর্বে লাওস থাইল্যান্ড এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ -পশ্চিমেে আন্দামান সাগর ও বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। তবে উত্তর আরাকান (রাখাইন রাজ্য) শেষ সীমান্ত ও ভারত দক্ষিণ সীমান্ত এবং বাংলাদেশ দক্ষিণ পূর্ব সীমান্ত হচ্ছে তৃমুখী পয়েন্ট। ভারতের একটা প্রদেশকে সেভেন সিস্টার বলা হয় আর এই ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের সাতটি রাজ্য—নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয় ও অরুণাচল নিয়ে অবস্থিত। এই তিনটি স্বাধীন রাষ্ট্রের বিষয় পিছনের দিকে একটু ফিরে তাকানো যেতে পারে যেমন ১৯৩৭ সালে যখন এই বিশাল কলোনি বা উপনিবেশ ব্রিটিশ মিয়ানমার ও ব্রিটিশ ভারতে বিভক্ত হয়, তখন এই সীমান্ত আধা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান এবং ১৯৪৮ সালে মিয়ানমার ছেড়ে যায় ব্রিটিশরা তখন সম্পূর্ণ আন্তর্জাতিক হয় কিন্তু বাংলাদেশ পাকিস্তান শাসিত হয়ে পড়লে ১৯৭১ সালে যুদ্ধের ফলাফল হিসেবে বাংলাদেশ নামে নতুন রাষ্ট্রের সূত্রপাত ঘটে। এর ফলে মিয়ানমার-পাকিস্তান সীমান্ত মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে পরিণত হয়।কিন্তু ওই সময়ের পূর্বে দৃশ্যপট ভিন্ন ছিল। মিয়ানমার ও বাংলাদেশ পূর্বে একটি রাষ্ট্র দ্বারা শাসিত হতো, তা হলো ব্রিটিশ ভারত। আন্তর্জাতিক সীমানা হিসেবে মিয়ানমার ও বাংলাদেশকে পৃথককারী লাইন তুলনামূলকভাবে নতুন। এটি ব্রিটিশ ভারতের জেলাসমূহের পৃথককারী লাইন হিসেবে এসেছে। উপনিবেশ মতে মিয়ানমার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানের বিষয় স্বীকার করে যে ১৯৩৭ সালে মিয়ানমারের পৃথককরণের পর নাফ নদীসহ চট্টগ্রাম ও আরাকান জেলাসমূহের সীমানা চিহ্নিত হয়নি। এ সম্পর্কে সাম্প্রতিক রেকর্ড হলো রাজস্ব নিষ্পত্তি মানচিত্র, যা ১৯২৯ সালের তৈরি। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন যে একমাত্র সীমান্ত, যা ১৯৬৬, ১৯৮০ ও ১৯৯৮-এর ভূমি সীমান্ত চুক্তিতে চিহ্নিত নেই।স্বাভাবিকভাবেই সীমানা চিহ্নিত না থাকার কারণে সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। শুধু সাগরে মিয়ানমার এলাকা চিহ্নিত করার জন্য এবং বঙ্গোপসাগর থেকে আগত জাহাজগুলোকে দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য নাফ নদীর মুখে বয়াগুলো অবস্থিত। আশ্চর্যজনকভাবে এসব বিন্যাসের পরও এখন পর্যন্ত সীমান্ত কোথায় অবস্থিত অথবা কতটুকু, সে ব্যাপারে কোনো চুক্তি নেই। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও বাংলাদেশ সরকারের মতে, এটি ১৯৩ কিলোমিটার, কিন্তু মিয়ানমার জরীপ মতে এটি ২৭২ কিলোমিটার।
দুই রাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রভাব ও বাণিজ্যিক নজর : আমাদের পার্শ্ববর্তী সীমান্ত ঘেঁষা দেশ ভারতকে আমরা সবসময় বন্ধুপ্রতীম দেশ বলে আতীয়তা গড়ে তুলার চেষ্টা করি। রাজনৈতিক ভাবে সুসম্পর্ক একটা সহায়ক ভূমিকা থাকবে বলে আশাবাদী করলেও সেটা কাজকর্মের মধ্যেই দেখা যায় সুবিধা ভোগের জন্য রাজনৈতিক ভাবে ফয়দা লুটে নেওয়ার বেলায় সুসম্পর্কটা নাটকীয়তা সীমাবদ্ধ, আর পাশে দাঁড়ানো একটা ডিপ্লোম্যাসি চলে। রাজনৈতিক ভাবেও প্রভাব বিস্তারের ভূমিকাটা দেশ স্বাধীনের পর সুকৌশলে আটকে নিয়েছে এখন পর্যন্ত সেই মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকাকে পুঁজিবাদী হিসেবে মাতব্বরের চেয়ারটা দখলে নিয়েছে। বাণিজ্যিক ভাবেও ভারত তার দিকটা চুক্তিতে স্বার্থ সিদ্ধিতে অটুট রেখে একটা বৈরী আচরণের বাণিজ্য করে যাচ্ছে। যেমন ভারত ট্রানজিট পয়েন্ট ব্যবহারে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সাথে রাজনৈতিক মনঃতত্ত্ব প্রভাব বিস্তার করে তা সফল হয়েছে। নৌ পরিবহন ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর ও মংলা বন্দর ব্যবহারের ফলে সমান্তরালে স্থলবন্দর গুলো অনায়াসে মুখ খুলে গেছে এবং বাংলাদেশ ভূখণ্ডের উপর দিয়ে ভারত বাণিজ্যিক আমদানি – রপ্তানি বৃদ্ধি করণ করে অপর তিনটি দেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানে পণ্যপরিবহনে সুফল পাচ্ছে। বাংলাদেশ কি লাভবান হলো তা শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব স্বার্থ সিদ্ধ হাসিল ও ক্ষমতায় টিকে থাকার যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা ছাড়া আর কি হয়েছে। বাংলাদেশে ২৫ টির মতো স্থলবন্দর রয়েছে এবং মুজিব নগরকে ২৬তম স্থলবন্দর ঘোষণা দিয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিটি স্থলবন্দরের সাথে ভারতের স্থলবন্দরের কম বেশি ট্রানজিট পয়েন্ট রয়েছে।পণ্য পরিবহন লোড-আনলোড ব্যবহারে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে ভারত এবং গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে বেনাপোল, তেতুলিয়া, তামাবিল, পাটুরিয়া, ভোমরা, বুড়িমারী-চ্যাংরাবান্দা, আখাউড়া- আগরতলা ও সর্বশেষ রামগড় ট্রানজিট দিয়ে ত্রিপুরা সাবরুম গ্রাম হয়ে নেপাল ও ভুটানে পণ্য পরিবহনের জাতীয় সড়ক সুবিধা করে নিলো। আমরা ধরে নিতে পারি অবশেষে ভারতের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হলো৷ চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোয় নিয়মিতভাবে পণ্য আনা-নেয়ার দ্বার পুরোপুরি খুলে দিয়েছে বাংলাদেশ৷এখন পর্যন্ত ভারতকে দেয়া ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার বিনিময়ে বাংলাদেশের প্রাপ্তির বিষয়টি সেভাবে দৃশ্যমান নয়৷
চীনের সাথে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রাজনৈতিক ভাবে দীর্ঘদিনের হলেও বাণিজ্যিক ভাবে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছে নব্বই দশকের পর থেকে। চীনও দীর্ঘদিন ধরে এই সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে সুকৌশলেই চেষ্টা চালিয়ে তারা সফল হয়েছে। তাই চীন বাণিজ্যিক সুত্র ধরে বাংলাদেশের রাজনীতির প্রভাব বিস্তারের জায়গাটাকে বাণিজ্যিক সুত্র হিসেবে প্রভাব বিস্তারে বিস্তৃত করে ফেলেছে। ভারতকে পিছনে ফেলে বাণিজ্যিক ভাবে এগিয়ে গেছে চীন। সেক্ষেত্রে চীন ইকোনমিক জোন তৈরি করতে বাংলাদেশ সরকারকে নতজানু করে নিয়ে সুকৌশলে চড়া সুদে ঋণদাতা হয়ে ভালো বন্ধু বলে দাবী করছে। বহিঃবিশ্বের অন্যান্য দেশ রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চাপ সৃষ্টি করলেও চীন সেসব বিষয় সুকৌশলে এরিয়ে যায়। কারণ চীন একসময়কার সাম্রাজ্য ও পুঁজিবাদীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার নীতিমালা থেকে স্বরে এখন পুরোদমে পুঁজিবাদ জিন্দাবাদে পরিনত হয়েছে। তাই তারা বাণিজ্যকে সফল করতে অর্থ বিনিয়োগ এবং বিনিময়ের বিকল্প নেই বলে মনে করেন। আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক সংলাপ একটা বাণিজ্যিক চুক্তি ছাড়া আর কিছু হতে পারেনা বলে তারা মনে করেন। দু-টানা সম্পর্ক গুলো অর্থনৈতিকই পরিবর্তন আনতে পারে। তার জন্য সুকৌশলে চীন মাষ্টার মাইন্ড নিয়ে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ঘাঁটি করতে পদ্মা সেতু থেকে শুরু মাতার বাড়ির গভীর সমুদ্র বন্দরের চলমান কাজগুলো তাদের কব্জায় দুইদেশের সুসম্পর্ক রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে ফয়দা লুটে নিয়ে যাচ্ছে। আসলেই কি তাই, নাকি বাণিজ্যিকের নামে দৃষ্টি অন্যখানে সেটাই নিয়ে আমরা আরেকটু গভীরে যেতে পারি।
পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতিয় উগ্রবাদী কেনো :- প্রথম কথা হলো পার্বত্য চট্টগ্রাম কি বাংলাদেশ মানচিত্র ও ভূখণ্ডের বাহিরে থাকা আলাদা একটা রাষ্ট্র কিনা। দেশ স্বাধীনের পর বা আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম কখনোই বাংলাদেশ অংশ বিশেষ ছিলোনা অথবা ব্রিটিশ শাসনামলেও পার্বত্য চট্টগ্রাম আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে শাসন কার্য পরিচালনা হয়েছে কিনা সে বিষয় নিয়ে কারো কোনো ব্যাখ্যা নেই। আর ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন না কারণ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ২৫০ বছর শাসন শোষণের একটা চিত্র ও ইতিহাস থেকে ব্রিটিশ শাসনামলে এই অঞ্চলের নাম হয় বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি। এরপর ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সময় গোটা বাংলায় একটা প্রশাসনিক বিভাজন হয়। বাংলার পশ্চিম অংশ হয়ে যায় পশ্চিম বঙ্গ এবং পূর্ব অংশ হয়ে যায় পূর্ব বাংলা। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন অবসানের পর ১৯৪৭ সালে বঙ্গ-প্রদেশ ভারত ও পাকিস্তানে বিভক্ত হল। সে সময় পাকিস্তানিরা পূর্ব বাংলার নাম দিতে চাইলো পূর্ব পাকিস্তান। তবে তারও আগে মোগল আমল ও মুসলিম শাসন আমলের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস কি বলছে তা জানা যাক বাংলাদেশ নামকরণ করার পূর্বের দিকে একটু ফিরে যাওয়া যাক, বাংলাদেশ নামকরণের পেছনে রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস, কয়েকটি পরিক্রমায় ভাগ করে বিশ্লেষণের মাধ্যম পায় ইতিহাসবিদরা। ইতিহাসবিদ আবুল ফজল’র উদ্ধৃতি দিয়ে বলতে হয় “বঙ্গ” শব্দের সংস্কৃতি বাংলা এবং “বাংলা” শব্দের উৎপত্তিও সহজ সংস্কৃতি “বঙ্গ”। আর্যরা এই অঞ্চলকে ” বঙ্গ” বলে অভিহিত করতো বলে ইতিহাস তা প্রমাণ করে। “বঙ্গ” শব্দ আরও ব্যাখ্যা পাওয়া যায় যে, এই বঙ্গে বসবাসকারী মুসলমানরা “বঙ্গ” শব্দটির সঙ্গে ফার্সি “আল” প্রত্যয় যোগ করে, এতে করে নাম দাঁড়ায় “বাঙাল” বা “বাঙ্গালাহ্”। মুসলমান শাসনামলে বিশেষ করে ১৩৩৬ থেকে ১৫৭৬ সাল পর্যন্ত সুলতানি আমলে এবং ১৫৭৬ সালে মোঘলরা বাংলা দখল করার পরে এই অঞ্চলটি বাঙাল বা বাঙালাহ নামেই পরিচিতি পায়। শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলাও বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, আসামের মতো কয়েকটি প্রেসিডেন্সি নিয়ে নাম দিয়েছিলেন “বঙ্গ”। পর্যায়ক্রমে ইতিহাসবিদরা এই নাম দেয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন, ১৯৫২ সালে সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বাংলা ভাষা থেকে “বাংলা”এরপর স্বাধীন দেশের আন্দোলন সংগ্রাম থেকে দেশ। এই দুটো ইতিহাস ও সংগ্রামকে এক করে “বাংলাদেশ” নামকরণ করা হয়। এরপর ১৯৭২ এর চৌঠা নভেম্বর যখন প্রথম সংবিধান প্রণীত ও গৃহীত হয় সেই সময়ও দেশটির সাংবিধানিক নাম দেয়া হয় “বাংলাদেশ”। তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয় নিয়ে অন্য কিছু ভাববার নেই ও ভাবতে পারিনা এটা একটা আলাদা মানচিত্রের গুহ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্র ও শকুনের চোখ :
তবে দেশ স্বাধীনের পর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে একটা ষড়যন্ত্র লেগেই আছে। পুরো বাংলাদেশের মাটিকে একটা প্রকৃতি প্রাকৃতিক বিজ্ঞান প্রযুক্তিগত সম্পদ বলা হয়। সোনার ফসল ফলে বাংলাদেশে, তেমনি পার্বত্য চট্টগ্রাম একটা প্রকৃতির খনিজ সম্পদশালী হিসেবে অন্যন্যতায় রুপধারন করে আছে। এই সৌন্দর্যের লীলাময় ভূমিকে গ্রাস করতে ভারতের একটা আগ্রাসন ভূমিকা রয়েছে। পশ্চিম বঙ্গ ও পূর্ব বঙ্গকে সুকৌশলে মানচিত্র বিভক্ত করার পরও একটা শকুনের দৃষ্টি পড়ে-ই আছে তিন পার্বত্য চট্টগ্রামের দিকে। ১৯৭৩ সালে ৭ জানুয়ারী খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা (সাবেক মহালছড়ি থানার অন্তর্ভুক্ত) ইটছড়ি মৌজা থেকে গঠন হয় শান্তি বাহিনী নামক উপজাতিয় উগ্রবাদী সংগঠন। তৎকালীন তাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গঠন ও অস্ত্র দিয়ে প্রশিক্ষণ ব্যবস্হা করা হয় ভারতের ত্রিপুরায়। এবং পরবর্তী সময় সংগঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে অর্থ যোগানদাতা হিসেবে ভারত মূখ্য ভূমিকা রাখে তাদের স্বার্থে। একরকম বাঙালি নিধনের ভূমিকাটা পরিকল্পনা হতো ভারত থেকে, তবে সেখানেও একটা সাম্প্রদায়িকতার হিসেব কষতে থাকে। দেশ স্বাধীনের ৩০/৪০ বছর আগেও সেখানে বাঙালির আবাসস্থল গড়ে উঠেছিলো, সেই সময়ে কোনো উপজাতি ধারা বৈষম্য সৃষ্টি হয়নি। একটা পরিবারের মতো একে অপরের পাশে থেকে সহযোগিতা করেছে। বিভাজন সৃষ্টির পরিকল্পনাটা শুরু করে দেশ স্বাধীনের পর থেকে, এবং আদিবাসী বলে একক সত্ত্বা তৈরি করতে আলাদা জনগোষ্ঠীর বসবাস উপজাতিয় আলাদা শাসন ব্যবস্হা তৈরি করণের একটা কু-মন্ত্র চাপিয়ে দেয় তৎকালীন টগবগের তরুণ মানবেন্দ্র লারমা মাথায়। ১৩ টি বিভিন্ন ধর্মের জনগোষ্ঠীকে উপজাতির ছাতা তলে এনে আদিবাসী জনগোষ্ঠী বলে চালিয়ে দেওয়া হলো। ৭৩ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল শান্তি চুক্তি আগ পর্যন্ত সেনাবাহিনী, পুলিশ, সরকারের অন্যান্য দপ্তরের চাকুরীজীবী ও সাধারণ বাঙালি এবং উপজাতিয় কিছু নেতাসহ প্রায় ৩৬ হাজার লোক হত্যা করে এই শান্তিবাহিনী। এই গুম, খুন, অপহরণ, নির্যাতনের হুকুমদাতা ছিলো মানবেন্দ্র লারমার মৃত্যুর পর দায়িত্বে থাকা তার ছোট ভাই জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ডাক নাম সন্তু লারমা। অবশ্য তখন শান্তিবাহিনীকে পার্বত্য এলাকায় গেরিলা বাহিনী বলে জানতো। শান্তিবাহিনীর অর্থ জোগানোটা সুকৌশলে আদায় হতো ও পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসিক চাঁদা সংগ্রহ করে নিতো এবং কোনো ব্যবসায়ী চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলেই তাকে গুম খুন করা হতো নথবা অপহরণ করে মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায়ের মাধ্যমে ছেড়ে দিতো। এরপর ভারতের স্বার্থসিদ্ধ হাসিলে উপজাতি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রতিষ্ঠা ও সায়ত্তশাসিত জনগোষ্ঠী হিসেবে তাদের পক্ষে বিভিন্ন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী চীন, ফিলিপাইন, ফ্রান্স, থাইল্যান্ড থেকে ফান্ডিং ব্যবস্হা করা হতো। ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর তৎকালীন ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে শান্তি চুক্তি হওয়ার পর সন্তু লারমা নিজের সুবিধা আদায় করে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ নামে একটা সংস্থা গঠন করে প্রতিমন্ত্রীর পদ মর্যাদায় চেয়ারম্যান হিসেবে মেয়াদহীন ভাবে আছে। এই পদের পরিবর্তন দায়িত্ব পালনের মেয়াদকাল কত বছরে শেষ হবে তার কোনো নিদিষ্ট সময়সীমা পার্বত্য সংবিধান ধারার কোথাও উল্লেখ নেই। তবে শান্তিচুক্তি শর্তানুযায়ী সকল ভারী অস্ত্র সশস্ত্র পর্যায়ক্রমে জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি থাকলেও তা কোনাটাই পূর্ণ না করে পুনোরায় পার্বত্য চট্টগ্রামকে আবারও অস্বাভাবিক হিংস্র জন্তুর মতো দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। এদিকে শান্তি চুক্তির পর পরই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) নামক সংগঠন হয়, যার নেতৃত্বটা হচ্ছে সন্তু লারমার হাতে। শান্তি চুক্তির এক বছর পর ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় কনফারেন্স মাধ্যমে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) নামক আরেকটা পার্বত্য চট্টগ্রাম ভিত্তিক আঞ্চলিক দল হিসেবে ঘোষণা করে। প্রসীত বিকাশ খীসা কে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান এবং এই আঞ্চলিক দল পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পথে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করবে। কিন্তু দেখা গেলো তাদের বক্তব্যের সাথে মাঠ পর্যায়ের কাজে কোনো মিল নেই। নতুনভাবে জন্ম নেওয়া দু’টি আঞ্চলিক দলের রাজনৈতিক ও পার্বত্য আধিবাসী নাগরিক অধিকার আদায়ে একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করে আসছে এবং মারমুখী উত্তাপত্ব পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে। তাদের এই দল পরিচালনা করতে ব্যবসায়ী ও বাঙালি উপজাতি সকল সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে নিচ্ছে। এভাবেই পার্বত্য চট্টগ্রামের যতগুলো উপজাতিয় সংগঠন আছে সেগুলো চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে চলছে।
নাটের গুরু ইউনিসেফ : পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিয় উগ্রবাদীদের মদত পৃষ্ঠপোষকতার নাটের গুরু ইউনিসেফ সংস্থাটিকে কেনো দায়ী করলাম তারও ব্যাখ্যা আছে। কারণ ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘ ২৫ বছরের অস্থিরতা নিরসনে এবং সেখানে টেকসই উন্নয়নের পথ তৈরি করতে প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের ঐতিহাসিক ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি এই অঞ্চলে ইউনিসেফের সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, সুরক্ষা, পানি ও স্যানিটেশনের মতো ন্যায়সঙ্গত সামাজিক সেবাসমূহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওয়ান স্টপ মৌলিক সামাজিক সেবা প্রদানে কাজ করবেন বলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত ইউনিসেফ’র সাথে চুক্তি হয়। তবে এখানে বলে রাখা ভালো জাতিসংঘের এই ইউনিসেফ (UNICEF) এনজিও চুক্তির আগেই সুকৌশলে ইউএনডিপি নামক এনজিও পার্বত্য চট্টগ্রামে কাজ করতো ওয়ার্ল্ডফুট অর্গানাইজেশনের নামে খ্রিষ্টান মিশনারিরা অর্গানাইজেশন করার জন্য। পরবর্তী জাতিসংঘের এই ইউনিসেফ চুক্তি করে সফলভাবেই এগিয়ে গেলো। চুক্তিতে যা লেখা তার বিপরীতে কাজ করে যাচ্ছে ইউনিসেফ / ইউএনডিপি। বৈষম্যহীন ভাবে কাজ করার কথা থাকলেও ইউনিসেফ তত্ত্বাবধানে ইউএনডিপি, কারিতাস বাংলাদেশ, ক্রিশ্চিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (সিসিডিবি), গ্রাম উন্নয়ন সংগঠন (গ্রাউস), অ্যাডভেন্টিস্ট চা্চ অব বাংলাদেশ, ইভেনজেলিক্যাল ক্রিশ্চিয়ান চার্চ (ইসিসি) এই সংস্থা গুলো মূলত খ্রিস্টান মিশনারী অর্গানাইজেশন হিসেবে কাজ করছে। ২০১১ সালের জরিপে তিন পার্বত্য জেলায় ১৯৪ টি গীর্জা ছিলো আর ২০২৫ সালের হিসেবে খাগড়াছড়ি জেলায় ৯০ রাঙামাটি ৯৫ বান্দরবান ১২৫ টি গীর্জা, মোট ৩১০ টির অধিক গীর্জা রয়েছে। ২০১০ সালের আগে খাগড়াছড়ি ৪.৫০০, বর্তমান ৮ হাজরের অধিক, রাঙামাটি ৫.২০০, বর্তমানে ১০.৩০০, বান্দরবান ৭.৪০০, বর্তমানে ১৮.৬০০ পরিবার কনভার্ট খ্রিস্টান রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চুক্তির আগেই তিন জেলা ৮টি খ্রিস্টান উপাসনালয় ছিলো, ২০১০ সালের দিকে ৩৩ টির মতো গীর্জার উন্নতি করণ হয়, আর ২০২৫ সালে এসে সেটা ৩১০ এর অধিক গীর্জা তৈরি করা হয়। বিগত ১৫ বছরে সেটা ১০ গুণের সমান হয়। বৌদ্ধধর্মাবলম্বী বৌদ্ধ বিহার ছাড়া উপজাতিদের মধ্যে অন্যান্য ধর্মালম্বীদের মন্দির, হিন্দুদের ধর্মীয় মন্দির ও মুসলিম মসজিদও এতগুলো নেই। যেখানে শুধু মাত্র পাঁচ পরিবার কর্নভাট (ধর্ম পরিবর্তন) খ্রিস্টান রয়েছে সেখানেও উপাসনালয় অথবা গীর্জা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ইউনিসেফ এনজিওর মূল টার্গেট হলো তিন পার্বত্য চট্টগ্রামকে খ্রিস্টান মিশনারী রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা, তার জন্য উপজাতিদের মধ্যে প্রথমে সংখ্যালঘু অন্যান্য ধর্মাবলম্বী সহজ সরল ও অসচ্ছলতা পরিবার গুলোর দিকে নজর দেয়। সেগুলোকে স্বাবলম্বী করার কৌশল হিসেবে ধীরে ধীরে খ্রিস্টান ধর্মের দিকে দাপিত করে। আরও একটি বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন সেটা হলো সীমান্ত এলাকায় যেসব উপজাতিদের মধ্যে বিভিন্ন ধর্মালম্বী পরিবার আছে সেগুলোকে পুরোদমে কনভার্ট করতে সক্ষম। এসব পরিবার গুলো এখন অনেক উন্নত লাইফস্টাইলেই চলাফেরা। এদিকে বিশেষ করে চাকমা সম্প্রদায়কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে আদিবাসী / জুম্মল্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করার জন্য আন্দোলন ও মিছিল মিটিংয়ের জন্য অর্থ যোগান দাতা হিসেবে কাজ করছে ইউনিসেফ। এখানেই শেষ নয় পাহাড়ের যেসব উপজাতিদের নিজস্ব এনজিও রয়েছে সেগুলোকেও বিভিন্ন খ্রিস্টান রাজ্য থেকে দাতাগোষ্ঠী হিসেবে অন্তরালে কাজ করছে ইউনিসেফ। পাহাড় থেকে মুসলিম ও হিন্দু খেদাও সোজাসাপটা বাঙালি বিতাড়িত করার মিশনে উগ্রবাদী সশস্ত্র বাহিনী তৈরির পিছনে অস্ত্র ও অর্থ যোগান দাতা হিসেবে কাজ করছে ইউনিসেফ। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম তিন জেলার প্রবেশ মুখে সর্বত্র সেনা- পুলিশ চেকপোস্ট রয়েছে যে কোনো গাড়ি প্রবেশের সময় দাঁড় করিয়ে তল্লাশি করা করা হয়, কিন্তু ইউনিসেফ UN নামক গাড়ি গুলোকে চেক (তল্লাশি) করা হয়না। UN নামক গাড়ি গুলোতে সাহায্যের নামে অস্ত্র চালান ঢুকে পড়ে দূর্গম পাহাড়ের ভিতর। এবিষয়ে ২০২৩ সালে দৈনিক দেশবাংলা পত্রিকায় আমার লেখা প্রতিবেদন ছাপানো হয়। জনসাধারণের মাঝে টনক নড়লেও তৎকালীন আওয়ামী সরকার লেভেল প্লেয়িং হিসেবে দায়সারা হয়ে পড়ে। বান্দরবান জেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট ( কেএনএফ) নামক যে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন তৈরি করা হয় তার পিছনেও রয়েছে ইউনিসেফ এর কলকাঠি। কেএনএফ এর প্রধান অসচ্ছলতা পরিবারের সন্তান নাথান বোম খ্রিস্টান মিশনারী স্কুলের ছাত্র। নাথান বোম ২০১৮ সালে বান্দরবান আসনে এমপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের পুরো অর্থ যোগান হিসেবে কাজ করে ইউনিসেফ। বর্তমান সময়ে পাহাড়কে অশান্ত সৃষ্টি করার মূল চালিকা শক্তি হলো ইউনিসেফ। তাহলে ইউনিসেফ কে নাটের গুরু বললে কি ভুল হবে।
তৃমুখী টার্গেট :- ভারত চায় তাদের দখলে নিয়ে সেভেন সিস্টার সাথে একটা অঙ্গরাজ্য করার পায়তারা। চীন চায় বৌদ্ধ ধর্মালম্বী হিসেবে গড়ে তুলে খনিজ সম্পদের দিকে বাণিজ্যিক ভাবে সফল হওয়া আর আমেরিকার তৈরি জাতিসংঘের ইউনিসেফ’র টার্গেট বাঙালি নিধন করে খ্রিস্টান রাজ্য হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পরিচালিত করা।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।।