ঢাকা ০৯:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দক্ষিণ রাউজানে মহানবমী পূজা উদযাপন ফেনী পৌরসভার উদ্যোগে ১৯টি পূজা মন্ডপে অনুদানের চেক বিতরণ বিজয়া দশমী অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান এবং জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম পশ্চিম গুজরায় জ্বালা কুমারী তরুণ সংঘে উগ্যােগে দুর্গোৎসব উদযাপন না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক গাজীপুরে হাইওয়ে রোডে দেহ ব্যবসার আড়ালে চাঁদাবাজি, এলাকাবাসীর প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি ঝিনাইদহে বাসচাপায় শিশুসহ ২ জন নিহত রাণীশংকৈলে সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব দুমকীতে পূজা মন্ডপে এনসিপির শুভেচ্ছা বিনিময় বিদায়ের সুরে শ্যামনগরের পূজা মণ্ডপগুলো

প্রাণী উচ্ছেদের প্রতিবাদে বাকৃবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৫:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫ ৮৩ বার পড়া হয়েছে

বাকৃবি প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সুলতানা রাজিয়া হলে প্রাণী উচ্ছেদ অভিযান চালানোর বিষয়ে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অ্যানিমেল স্যাভিয়ার্স অব বাংলাদেশ’ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

সোমবার (৫ মে) বিকেল সাড়ে ৪টায় ‘ভয়েসলেস, নট ওয়ার্থলেস–সেভ ক্যাম্পাস অ্যানিম্যালস!’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের প্রধান ফটকে ওই বিক্ষোভ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ প্রাণিপ্রেমী সচেতন নাগরিকরা অংশ নেন।

জানা যায়, বিগত শনিবার (৪ মে) ‘হলের পরিবেশ দূষণ রোধ করার জন্য হিংস্র প্রাণী উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে’ এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুলতানা রাজিয়া হল কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, “এই মর্মে সুলতানা রাজিয়া হলে অবস্থানরত সকল আবাসিক ছাত্রীদের জানানো যাচ্ছে যে, হলে কুকুর, বিড়াল ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণী হলের পরিবেশ দূষিত করছে। হলের পরিবেশ দূষণ রোধ করার জন্য হলে হিংস্র প্রাণী উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। উক্ত অভিযানে সকল আবাসিক ছাত্রীদেরকে সহযোগিতা করার জন্য বলা হলো।”

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ এবং সমালোচনা শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বিক্ষোভ সমাবেশ করে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি।

বিক্ষোভ সমাবেশে ‘অ্যানিমেল স্যাভিয়ার্স অব বাংলাদেশ’ এর প্রস্তাবিত কমিটির আহবায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুব আলম বলেন, “প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯ অনুসারে প্রাণীকে অবৈধভাবে উচ্ছেদ করা যাবে না। যদি করে তবে তার জন্য ৬ মাসের জেল অথবা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে। পোষা প্রাণীরা মানুষের পরম বন্ধু। এমনকি বেওয়ারিশ কুকুরও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক। এভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালালে পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। প্রাণীর জন্ম নিয়ন্ত্রণ করে, ভ্যাকসিন দেওয়ার মাধ্যমে আমরা সমস্যার সমাধান করতে পারি। প্রাণী অধিকার যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখা উচিত।”

এসময় ‘অ্যানিমেল স্যাভিয়ার্স অব বাংলাদেশ’ এর প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য সচিব ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী আল ফারুক বলেন, “যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি অনুষদ, পশু পালন অনুষদের মতো দুটি অনুষদ রয়েছে যারা প্রাণীদের সুরক্ষা ও লালন পালন নিয়ে কাজ করে থাকে, সেখানে সুলতানা রাজিয়া হলের এমন বিজ্ঞপ্তি আমাদের জন্য লজ্জাজনক।”

এ বিষয়ে সুলতানা রাজিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন বলেন, “হলের অর্ডিন্যান্স অনুসারে কোন জীব জানোয়ার হলে রাখা যাবে না। ঘটনা হলো, হলের একটা মেয়ে বিড়ালকে লাথি দেয়, পরে বিড়ালটা মেয়েটাকে আঁচড় দেয়। তারপর মেয়েটা তার মাকে খবর দেয়। মেয়েটার মা অকথ্য ভাষায় গালাগলি করে মেয়ের চিকিৎসার জন্য হল প্রশাসনের কাছে টাকা দাবি করে। ঐ সময় মেয়েটাকে থামানোর জন্য আমার অনুপস্থিতিতে ডেপুটি রেজিস্ট্রার বা সুপারভাইজার কেউ একজন নোটিশ দিয়ে দেয়। এটা একটা সামান্য বিষয়। আমার সাথে কথা না বলে মানববন্ধন করতে হবে কেন? তারা তো ভেতরের খবরই জানে না। আমি প্রভোস্ট, এই নোটিশের ব্যাপারে আমি জানতামই না।”

উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে তিনি আরো বলেন, “মেয়েদের মধ্যেই গ্রুপিং। একদল বিড়ালকে আদর করে খাওয়ায়, আরেকদল বিড়ালকে আসতে দিবে না, এতেই সমস্যা হয়। বাহির থেকে বিড়াল ঢুকে, অনেক সময় কুকুরও দেয়াল টপকে ঢুকে। নোটিশ ওরা আমার অজান্তেই দিয়েছে। এইসব অভিযান এগুলো কিচ্ছুই হবে না।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

প্রাণী উচ্ছেদের প্রতিবাদে বাকৃবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

আপডেট সময় : ০৯:৫৫:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

বাকৃবি প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সুলতানা রাজিয়া হলে প্রাণী উচ্ছেদ অভিযান চালানোর বিষয়ে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অ্যানিমেল স্যাভিয়ার্স অব বাংলাদেশ’ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

সোমবার (৫ মে) বিকেল সাড়ে ৪টায় ‘ভয়েসলেস, নট ওয়ার্থলেস–সেভ ক্যাম্পাস অ্যানিম্যালস!’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের প্রধান ফটকে ওই বিক্ষোভ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ প্রাণিপ্রেমী সচেতন নাগরিকরা অংশ নেন।

জানা যায়, বিগত শনিবার (৪ মে) ‘হলের পরিবেশ দূষণ রোধ করার জন্য হিংস্র প্রাণী উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে’ এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুলতানা রাজিয়া হল কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, “এই মর্মে সুলতানা রাজিয়া হলে অবস্থানরত সকল আবাসিক ছাত্রীদের জানানো যাচ্ছে যে, হলে কুকুর, বিড়াল ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণী হলের পরিবেশ দূষিত করছে। হলের পরিবেশ দূষণ রোধ করার জন্য হলে হিংস্র প্রাণী উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। উক্ত অভিযানে সকল আবাসিক ছাত্রীদেরকে সহযোগিতা করার জন্য বলা হলো।”

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ এবং সমালোচনা শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বিক্ষোভ সমাবেশ করে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি।

বিক্ষোভ সমাবেশে ‘অ্যানিমেল স্যাভিয়ার্স অব বাংলাদেশ’ এর প্রস্তাবিত কমিটির আহবায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুব আলম বলেন, “প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯ অনুসারে প্রাণীকে অবৈধভাবে উচ্ছেদ করা যাবে না। যদি করে তবে তার জন্য ৬ মাসের জেল অথবা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে। পোষা প্রাণীরা মানুষের পরম বন্ধু। এমনকি বেওয়ারিশ কুকুরও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক। এভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালালে পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। প্রাণীর জন্ম নিয়ন্ত্রণ করে, ভ্যাকসিন দেওয়ার মাধ্যমে আমরা সমস্যার সমাধান করতে পারি। প্রাণী অধিকার যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখা উচিত।”

এসময় ‘অ্যানিমেল স্যাভিয়ার্স অব বাংলাদেশ’ এর প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য সচিব ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী আল ফারুক বলেন, “যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি অনুষদ, পশু পালন অনুষদের মতো দুটি অনুষদ রয়েছে যারা প্রাণীদের সুরক্ষা ও লালন পালন নিয়ে কাজ করে থাকে, সেখানে সুলতানা রাজিয়া হলের এমন বিজ্ঞপ্তি আমাদের জন্য লজ্জাজনক।”

এ বিষয়ে সুলতানা রাজিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন বলেন, “হলের অর্ডিন্যান্স অনুসারে কোন জীব জানোয়ার হলে রাখা যাবে না। ঘটনা হলো, হলের একটা মেয়ে বিড়ালকে লাথি দেয়, পরে বিড়ালটা মেয়েটাকে আঁচড় দেয়। তারপর মেয়েটা তার মাকে খবর দেয়। মেয়েটার মা অকথ্য ভাষায় গালাগলি করে মেয়ের চিকিৎসার জন্য হল প্রশাসনের কাছে টাকা দাবি করে। ঐ সময় মেয়েটাকে থামানোর জন্য আমার অনুপস্থিতিতে ডেপুটি রেজিস্ট্রার বা সুপারভাইজার কেউ একজন নোটিশ দিয়ে দেয়। এটা একটা সামান্য বিষয়। আমার সাথে কথা না বলে মানববন্ধন করতে হবে কেন? তারা তো ভেতরের খবরই জানে না। আমি প্রভোস্ট, এই নোটিশের ব্যাপারে আমি জানতামই না।”

উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে তিনি আরো বলেন, “মেয়েদের মধ্যেই গ্রুপিং। একদল বিড়ালকে আদর করে খাওয়ায়, আরেকদল বিড়ালকে আসতে দিবে না, এতেই সমস্যা হয়। বাহির থেকে বিড়াল ঢুকে, অনেক সময় কুকুরও দেয়াল টপকে ঢুকে। নোটিশ ওরা আমার অজান্তেই দিয়েছে। এইসব অভিযান এগুলো কিচ্ছুই হবে না।”