ঢাকা ১০:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
চুয়াডাঙ্গায় পুলিশ ফাঁড়ির বাইরে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের উপর হামলা কালিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় ১ গৃহবধু কৃষাণির মৃত্যু ট্রাফিক বিভাগের আয়োজনে জীবননগরে ট্রাফিক সচেতনামূলক সভা যশোরের ঝিকরগাছায় পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা ৩নং হোসেনগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার সমাদর ক্লাবের ২৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গুনীজন সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন জীবননগরে জমি নিয়ে সাংসারিক দ্বন্দ্ব; স্বামীর হাসুয়ার কোপে জখম স্ত্রীকে শঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী রেফার্ড ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করায় থানা ঘেরাও জীবননগর আসামিবিহীন ঔষধ উদ্ধার করেছে বিজিবি তুরস্কে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিএসপি চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী

ঠাকুরগাঁও এপার বাংলা ওপার বাংলা সীমান্তে এবারও মিলনমেলা হচ্ছে না

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৭:১৩:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ২৬ বার পড়া হয়েছে

একে আজাদ,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:- বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী উপজেলা হরিপুরে এবারও হচ্ছে না বাংলাদেশ-ভারত দুই বাংলার মিলনমেলা।

শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাণীশংকৈল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাফিউল মাজলুবিন রহমান। মিলন মেলায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় দুই দেশের আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে দেখা হবে না। এ নিয়ে অনেকের মনে চাপা কষ্ট বিরাজ করছে। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বসে এ মিলন মেলা। বাংলা নতুন বছরকে কেন্দ্র করে কাঁটাতার মাঝে রেখে দু’দেশের মানুষ মিলিত হতেন। এ বছরেও সেই মেলা হওয়ার কথা ছিল আগামী সোমবার। কিন্তু দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েন এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের জটিলতার কারণে ওই স্থানে বিশৃঙ্খলা, মারামারিসহ বিভিন্ন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে মর্মে বাংলাদেশ- ভারত সীমান্তবর্তী মিলনমেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন।

প্রতি বছরেই দুই দেশের সীমান্তের মধ্যবর্তী স্থানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হতো। সবাই একে অপরকে আলিঙ্গন করে সব ভেদাভেদ ভুলে যেত কিছু সময়ের জন্য কিন্তু এবার সেই অন্যরকম আনন্দ চোখে পড়বে না। স্থানীয় বাসিন্দা দিলীপ কুমার বলেন, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে প্রতি বছর এখানে একদিনের জন্য মেলা বসে আসছে। দেশ স্বাধীনের পর মেলাটি বাংলাদেশের অংশে পড়লেও মেলায় সীমান্তে উন্মুক্ত করে দেয় ভারত। কিন্তু দেশের অবস্থা ভালো না, তাই এবার মিলনমেলা হবে না। আমরা হতাশ।

প্রতিমা বালা ও রুপসী রাণী পাল নামে কয়েকজন বলেন, আমার বোন ও বোনজামাই ওপার বাংলায় (ভারত) থাকে। প্রতিবছর এই মেলায় আমরা তাদের দেখতে আসি। ভারত বাংলাদেরশের তারকাঁটার বেড়ার পাশে দাঁড়িয়ে শুরু হয় দুই দেশের মানুষের দেখা-সাক্ষাৎ। করি খাবার বিনিময়। দীর্ঘদিন পর স্বজনদের পেয়ে আমরা অনেক আনন্দিত হই। কিন্তু এবার তা হচ্ছে না। মুসলিম উদ্দিন নামে এক বৃদ্ধ বলেন, আমার ছোট ভাই ও মামার বাড়ি ভারতে। দেশ ভাগের পর বিভক্ত হয়ে পড়ি। আমরা তো ভারতে যেতে পারি না। তাই প্রতি বছর নববর্ষের দিনে আমরা কাঁটাতারে দেখা করতাম। কিন্তু এবারো নাকি মিলনমেলা বসবে না। কয়েক বছর ধরে তাদের সঙ্গে আমার দেখা হয় না।

একই কথা বলেন হরিপদ রায়। তিনি বলেন, ভারতে আমার মামার বাড়ি। আমার অনেক আত্মীয়-স্বজন সেখানে রয়েছে। নববর্ষ এলেই আমরা সীমান্তে এসে দেখা করতাম। কয়েক বছর ধর পহেলা বৈশাখে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত অভিমুখে এবারো বসবে না দুই বাংলার মিলনমেলা। ফলে কষ্ট হচ্ছে আমাদের।

এ বিষয়ে রাণীশংকৈল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাফিউল মাজলুবিন রহমান বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তা ও অপ্রীতীকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে মর্মে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী মিলনমেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

ঠাকুরগাঁও এপার বাংলা ওপার বাংলা সীমান্তে এবারও মিলনমেলা হচ্ছে না

আপডেট সময় : ০৭:১৩:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

একে আজাদ,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:- বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী উপজেলা হরিপুরে এবারও হচ্ছে না বাংলাদেশ-ভারত দুই বাংলার মিলনমেলা।

শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাণীশংকৈল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাফিউল মাজলুবিন রহমান। মিলন মেলায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় দুই দেশের আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে দেখা হবে না। এ নিয়ে অনেকের মনে চাপা কষ্ট বিরাজ করছে। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বসে এ মিলন মেলা। বাংলা নতুন বছরকে কেন্দ্র করে কাঁটাতার মাঝে রেখে দু’দেশের মানুষ মিলিত হতেন। এ বছরেও সেই মেলা হওয়ার কথা ছিল আগামী সোমবার। কিন্তু দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েন এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের জটিলতার কারণে ওই স্থানে বিশৃঙ্খলা, মারামারিসহ বিভিন্ন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে মর্মে বাংলাদেশ- ভারত সীমান্তবর্তী মিলনমেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন।

প্রতি বছরেই দুই দেশের সীমান্তের মধ্যবর্তী স্থানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হতো। সবাই একে অপরকে আলিঙ্গন করে সব ভেদাভেদ ভুলে যেত কিছু সময়ের জন্য কিন্তু এবার সেই অন্যরকম আনন্দ চোখে পড়বে না। স্থানীয় বাসিন্দা দিলীপ কুমার বলেন, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে প্রতি বছর এখানে একদিনের জন্য মেলা বসে আসছে। দেশ স্বাধীনের পর মেলাটি বাংলাদেশের অংশে পড়লেও মেলায় সীমান্তে উন্মুক্ত করে দেয় ভারত। কিন্তু দেশের অবস্থা ভালো না, তাই এবার মিলনমেলা হবে না। আমরা হতাশ।

প্রতিমা বালা ও রুপসী রাণী পাল নামে কয়েকজন বলেন, আমার বোন ও বোনজামাই ওপার বাংলায় (ভারত) থাকে। প্রতিবছর এই মেলায় আমরা তাদের দেখতে আসি। ভারত বাংলাদেরশের তারকাঁটার বেড়ার পাশে দাঁড়িয়ে শুরু হয় দুই দেশের মানুষের দেখা-সাক্ষাৎ। করি খাবার বিনিময়। দীর্ঘদিন পর স্বজনদের পেয়ে আমরা অনেক আনন্দিত হই। কিন্তু এবার তা হচ্ছে না। মুসলিম উদ্দিন নামে এক বৃদ্ধ বলেন, আমার ছোট ভাই ও মামার বাড়ি ভারতে। দেশ ভাগের পর বিভক্ত হয়ে পড়ি। আমরা তো ভারতে যেতে পারি না। তাই প্রতি বছর নববর্ষের দিনে আমরা কাঁটাতারে দেখা করতাম। কিন্তু এবারো নাকি মিলনমেলা বসবে না। কয়েক বছর ধরে তাদের সঙ্গে আমার দেখা হয় না।

একই কথা বলেন হরিপদ রায়। তিনি বলেন, ভারতে আমার মামার বাড়ি। আমার অনেক আত্মীয়-স্বজন সেখানে রয়েছে। নববর্ষ এলেই আমরা সীমান্তে এসে দেখা করতাম। কয়েক বছর ধর পহেলা বৈশাখে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত অভিমুখে এবারো বসবে না দুই বাংলার মিলনমেলা। ফলে কষ্ট হচ্ছে আমাদের।

এ বিষয়ে রাণীশংকৈল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাফিউল মাজলুবিন রহমান বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তা ও অপ্রীতীকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে মর্মে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী মিলনমেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।