ঢাকা ০২:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ঝালকাঠতে জেলা জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত ৯দিনের ছুটি শেষে প্রাণচাঞ্চল্যে মুখরিত পবিপ্রবি ক্যাম্পাস দেবহাটা বহেরা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট হেলাল উদ্দিন ও সাদিয়া অনৈতিক অবস্থায় জনগণের হাতে আটক স্বামীর লোভের কারনে আত্মহত্যার পথ বেচে নিল চট্টগ্রামের মেয়ে আবিদা তাসমিন আগৈলঝাড়ায় গৃহবধূ ধর্ষণ মামলার আসামি আব্দুল্লাহ সরদার গ্রেপ্তার রাণীশংকৈলে জাল টাকা সহ আটক ১ রাউজানে শ্যামা সংঘের উদ্যোগে সর্বজনীন কালিপূজা ও ৪৩ তম বার্ষিক মহোৎসব রাণীশংকৈলে বিএনপি ও শিক্ষার্থীদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম রাণীশংকৈলে গলা টিপে হত্যা করতে না পেরে দা দিয়ে কোপ দিয়ে হত্যা করার চেষ্টা শ্যামনগরে বিএনপি নেতা সোলাইমান কবীরের বহিষ্কারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে

বাকৃবিতে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের ইফতারে আওয়ামীপন্থীদের উপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৬:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫ ৯৩ বার পড়া হয়েছে

বাকৃবি প্রতিনিধি:-বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষকদের সংগঠন সোনালী দলের ইফতার মাহফিলে আওয়ামীপন্থী জুনিয়র শিক্ষকদের উপস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি সদস্যরা। সোনালী দলের গুটিকয়েক শিক্ষকের কারণে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনটির অনেক সদস্য।

গত ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হওয়া ইফতার মাহফিলে উপস্থিত বিভিন্ন শিক্ষক সূত্রে জানা যায়, ইফতার মাহফিলে ২০ জনের অধিক বিগত পলাতক ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত জুনিয়র শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ সময় ইফতার অনুষ্ঠানে খাবারের সংকটের বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে।

এই বিষয়ে সোনালী দলের শিক্ষকদের মাঝে নানান প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষকদের দাবি, ৫ আগস্টের আগে অনেকেই স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকারকে সহায়তা করার লক্ষ্যে শান্তি মিছিলে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

সোনালী দলের কৃষি অনুষদীয় কমিটির সভাপতি ও কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমির হোসেন জানান, “আওয়ামীপন্থী জুনিয়র শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানতেন না।”

আওয়ামীপন্থী জুনিয়র শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে জানতে চাইলে পশুপালন অনুষদীয় কমিটির সভাপতি এনিম্যাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. আহসান কবীর বলেন, “আমি শুধু ইফতারে উপস্থিত হয়েছি। এই আয়োজনের সাথে যুক্ত ছিলাম না।”

আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের ওই ইফতারে অংশগ্রহণ করার বিষয়ে সোনালী দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “যারা এই কাজের সাথে জড়িত তাদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। আওয়ামী দোষীদের ছাড় দেওয়ার মতো মানসিকতা সোনালী দলের নেই।”

৪ আগস্টের শান্তি মিছিলে ছিলেন এমন শিক্ষকও ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, “শান্তি মিছিলে ছিলেন এমন শিক্ষকদের অনুষ্ঠানে যারা ডেকেছে, তাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। এই কাজটিও করবে আগামী সোনালী দল।”

সোনালী দলের সাধারণ সম্পাদক ও কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ খায়রুল হাসান জানান, “আমরা তাদের দাওয়াত দেইনি। তারাই আগ্রহ প্রকাশ করেছিল ইফতার মাহফিলে যোগ দিতে। কেউ ইফতারে নিজ ইচ্ছায় যোগ দিলে চাইলে সামাজিকভাবেও না করা যায় না।”

তাদের মধ্যে অনেকেই ৪ আগস্ট শান্তি মিছিলে উপস্থিত ছিলেন- এই বিষয়ে অধ্যাপক খায়রুল বলেন, “এখানে ফ্যাসিস্টদের প্রশ্রয় দেওয়ার মতো কিছু হয়নি। ওরা ইফতার মাহফিলে আসতে চেয়েছে, কিভাবে না করি? ওরা আসা মানেই যে সোনালী দলে তাদের জায়গা করে নিয়েছি, ব্যাপারটা এমন নয়।”

ওই ইফতার মাহফিলের বিষয়ে জানতে চাইলে সোনালী দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও একোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আলী রেজা ফারুক জানান, “এটা সোনালী দলের ইফতার বলা যাবে না, বরং এটা পারিবারিক ইফতার মাহফিল।”

সোনালী দলের ইফতারে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল কি না-এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিকভাবে দেখার সুযোগ নেই। আমাদের সহকর্মী জুনিয়র শিক্ষকরা আগ্রহ দেখানোর কারণেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন। তাদের অংশগ্রহণ মানেই এই না যে অফিসিয়ালি সোনালী দলে তারা যোগ দিয়েছেন। এই অনুষ্ঠানটি সামাজিকভাবে দেখতে হবে।”

ওই ইফতার মাহফিলে উপস্থিত একাধিক জুনিয়র শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, তাদের বিভাগীয় সিনিয়র শিক্ষক, যারা সোনালী দলের সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছেন, তারাই দাওয়াত করেছিলেন।

উল্লেখ্য, ৪ আগস্ট “শেখ হাসিনাতেই আস্থা” স্লোগানকে সামনে রেখে কেআইবি ও বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের যৌথ উদ্যোগের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ, বাকৃবি শাখার নেতৃত্বে “শান্তি সমাবেশ ও মিছিলে” অংশগ্রহণ করেছিল এমন অনেক জুনিয়র শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অরাজনৈতিক ব্যক্তি কিংবা অন্য কোনো দলের কাউকে বিএনপিতে যোগদান করানো যাবে না বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছিলেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এই নিয়েই আলোচনার ঝড় উঠেছে সোনালী দলের শিক্ষকদের মাঝে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

বাকৃবিতে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের ইফতারে আওয়ামীপন্থীদের উপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৯:৩৬:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

বাকৃবি প্রতিনিধি:-বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষকদের সংগঠন সোনালী দলের ইফতার মাহফিলে আওয়ামীপন্থী জুনিয়র শিক্ষকদের উপস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি সদস্যরা। সোনালী দলের গুটিকয়েক শিক্ষকের কারণে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনটির অনেক সদস্য।

গত ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হওয়া ইফতার মাহফিলে উপস্থিত বিভিন্ন শিক্ষক সূত্রে জানা যায়, ইফতার মাহফিলে ২০ জনের অধিক বিগত পলাতক ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত জুনিয়র শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ সময় ইফতার অনুষ্ঠানে খাবারের সংকটের বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে।

এই বিষয়ে সোনালী দলের শিক্ষকদের মাঝে নানান প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষকদের দাবি, ৫ আগস্টের আগে অনেকেই স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকারকে সহায়তা করার লক্ষ্যে শান্তি মিছিলে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

সোনালী দলের কৃষি অনুষদীয় কমিটির সভাপতি ও কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমির হোসেন জানান, “আওয়ামীপন্থী জুনিয়র শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানতেন না।”

আওয়ামীপন্থী জুনিয়র শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে জানতে চাইলে পশুপালন অনুষদীয় কমিটির সভাপতি এনিম্যাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. আহসান কবীর বলেন, “আমি শুধু ইফতারে উপস্থিত হয়েছি। এই আয়োজনের সাথে যুক্ত ছিলাম না।”

আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের ওই ইফতারে অংশগ্রহণ করার বিষয়ে সোনালী দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “যারা এই কাজের সাথে জড়িত তাদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। আওয়ামী দোষীদের ছাড় দেওয়ার মতো মানসিকতা সোনালী দলের নেই।”

৪ আগস্টের শান্তি মিছিলে ছিলেন এমন শিক্ষকও ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, “শান্তি মিছিলে ছিলেন এমন শিক্ষকদের অনুষ্ঠানে যারা ডেকেছে, তাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। এই কাজটিও করবে আগামী সোনালী দল।”

সোনালী দলের সাধারণ সম্পাদক ও কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ খায়রুল হাসান জানান, “আমরা তাদের দাওয়াত দেইনি। তারাই আগ্রহ প্রকাশ করেছিল ইফতার মাহফিলে যোগ দিতে। কেউ ইফতারে নিজ ইচ্ছায় যোগ দিলে চাইলে সামাজিকভাবেও না করা যায় না।”

তাদের মধ্যে অনেকেই ৪ আগস্ট শান্তি মিছিলে উপস্থিত ছিলেন- এই বিষয়ে অধ্যাপক খায়রুল বলেন, “এখানে ফ্যাসিস্টদের প্রশ্রয় দেওয়ার মতো কিছু হয়নি। ওরা ইফতার মাহফিলে আসতে চেয়েছে, কিভাবে না করি? ওরা আসা মানেই যে সোনালী দলে তাদের জায়গা করে নিয়েছি, ব্যাপারটা এমন নয়।”

ওই ইফতার মাহফিলের বিষয়ে জানতে চাইলে সোনালী দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও একোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আলী রেজা ফারুক জানান, “এটা সোনালী দলের ইফতার বলা যাবে না, বরং এটা পারিবারিক ইফতার মাহফিল।”

সোনালী দলের ইফতারে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল কি না-এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিকভাবে দেখার সুযোগ নেই। আমাদের সহকর্মী জুনিয়র শিক্ষকরা আগ্রহ দেখানোর কারণেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন। তাদের অংশগ্রহণ মানেই এই না যে অফিসিয়ালি সোনালী দলে তারা যোগ দিয়েছেন। এই অনুষ্ঠানটি সামাজিকভাবে দেখতে হবে।”

ওই ইফতার মাহফিলে উপস্থিত একাধিক জুনিয়র শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, তাদের বিভাগীয় সিনিয়র শিক্ষক, যারা সোনালী দলের সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছেন, তারাই দাওয়াত করেছিলেন।

উল্লেখ্য, ৪ আগস্ট “শেখ হাসিনাতেই আস্থা” স্লোগানকে সামনে রেখে কেআইবি ও বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের যৌথ উদ্যোগের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ, বাকৃবি শাখার নেতৃত্বে “শান্তি সমাবেশ ও মিছিলে” অংশগ্রহণ করেছিল এমন অনেক জুনিয়র শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অরাজনৈতিক ব্যক্তি কিংবা অন্য কোনো দলের কাউকে বিএনপিতে যোগদান করানো যাবে না বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছিলেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এই নিয়েই আলোচনার ঝড় উঠেছে সোনালী দলের শিক্ষকদের মাঝে।