ঢাকা ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বৃহৎ জনস্বার্থে চট্টগ্রাম জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত ফেনীতে মাদ্রাসা বোর্ড প্রধানের সাথে মাদ্রাসা প্রধানদের মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল, সোনাগাজী পৌর শাখার উদ্যোগে কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত জুলাই সনদ নিয়ে সমঝোতায় আসতেই হবে : প্রধান উপদেষ্টা সূফীকথা’র ব্যবস্থাপনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ভূমিকম্পে কাঁপল বাংলাদেশসহ ৬ দেশ রাণীশংকৈলে নারী ও কন্যাশিশুদের মানবাধিকার রক্ষার্থে গণ শুনানি শ্যামনগরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনি খাতুনের বদলি প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন আগৈলঝাড়ায় ৭শ পিচ ইয়াবা ও ১ কেজি ৮শ গ্রাম গাঁজা ব্যবসায়ীসহ ৩ জন আটক বরিশালের গৌরনদীতে ৮ মাসে কোরআনে হাফেজ ১০ বছরের শিশু আবদুল্লাহ

উচ্চশিক্ষায় বাংলা: ভাষা আন্দোলনের চেতনা ও বাস্তবতা

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৯:০০:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৯৮ বার পড়া হয়েছে

মোঃ শফিউল্লাহ্, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:

‘একুশে ফেব্রুয়ারিতে’ লাল গোলাপের যে চারাটি রোপিত হয়েছিল১৯৫২ সালে, একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরে তা হয়ে উঠেছিল রক্তরঞ্জিত পতাকা হিসেবে। মাতৃভাষা বাংলার প্রতি মমত্ববোধ, সংস্কৃতিক মূল্যবোধ, অর্থনৈতিক মুক্তি, সামাজিক ঐতিহ্য রক্ষার্থে বীর বাঙালি জাতি কে দেশভাগের সূচনালগ্নেই সচেতন হয়ে যেতে হয়েছিল ভাষার প্রশ্নে।এখান থেকেই জন্ম হয় ভাষা আন্দোলনের ;যা চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পরপরই বাংলা ভাষাকে পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষার বাহন ও আইন-আদালতের ভাষা করার দাবি উঠেছিল। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, এতো বছর পরও আমরা তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে পারিনি। তখনের তরুণরা ভাষার জন্য বেছে নিয়েছিল রক্তের পথ।এ প্রজন্ম তো সে আবেগ হারিয়েছেই, সাথে ২৫ বছর আগে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত ভাষাটিকে সর্বাঙ্গীণ করার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যার্থ হয়েছে রাষ্ট্র ব্যবস্থাও । পূর্ব-পুরুষেরা রক্তের আলপনা এঁকে যে ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে, সেই ভাষার শুদ্ধ প্রয়োগ ও বিশুদ্ধ উচ্চারণে আমাদের এখনো অনিহা।

ইতিহাস থেকে জানা যায় মাতৃভাষার গুরুত্ব যাদের কাছে যত বেশি সে জাতি উন্নয়নের ধারায় তত বেশি অগ্রশীল। উচ্চশিক্ষার জন্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নতমানের ভাষা প্রয়োগের ক্ষেত্রেও আমাদের দৈন্যের শেষ নেই। বাংলাদেশের সংবিধানে, ৩নং অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলার’ কথা বলা থাকলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ না আছে উচ্চ শিক্ষায় না আছে উচ্চ আদালতে।বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়াশোনার মাধ্যম বাংলা করার উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ইউজিসির ২০ বছর মেয়াদি কৌশলপত্রে শিক্ষার মাধ্যমের কথা একেবারেই আনা হয়নি। তার কারণ-এরা ধরে নিয়েছে, মাধ্যমটা ইংরেজি হয়েই আছে।

যদি আমরা গুণসম্পন্ন শিক্ষা চাই, যদি জ্ঞান-উৎপাদক শিক্ষা চাই, যদি এমন শিক্ষা চাই যেখানে আমাদের উচ্চশিক্ষায় উৎপাদিত স্নাতকেরা কার্যকরভাবে বাংলাদেশ রাষ্ট্র চালাবেন, তাহলে বাংলাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ও বাংলা ভাষাকে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে প্রচলনের মধ্যেই নিহিত রয়েছে আমাদের অহংকার ও ঐতিহ্য। একুশে ফেব্রুয়ারি কে শুধু উদযাপনের ,প্রভাত ফেরীর গানের আর বড় বড় বক্তৃতার মাধ্যম না বানিয়ে বুদ্ধিজীবী মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সহ সবার সদিচ্ছা ও সচেতনতা ই পারে বাংলা কে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যম বানাতে।

শিক্ষার্থী,
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

উচ্চশিক্ষায় বাংলা: ভাষা আন্দোলনের চেতনা ও বাস্তবতা

আপডেট সময় : ০৯:০০:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মোঃ শফিউল্লাহ্, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:

‘একুশে ফেব্রুয়ারিতে’ লাল গোলাপের যে চারাটি রোপিত হয়েছিল১৯৫২ সালে, একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরে তা হয়ে উঠেছিল রক্তরঞ্জিত পতাকা হিসেবে। মাতৃভাষা বাংলার প্রতি মমত্ববোধ, সংস্কৃতিক মূল্যবোধ, অর্থনৈতিক মুক্তি, সামাজিক ঐতিহ্য রক্ষার্থে বীর বাঙালি জাতি কে দেশভাগের সূচনালগ্নেই সচেতন হয়ে যেতে হয়েছিল ভাষার প্রশ্নে।এখান থেকেই জন্ম হয় ভাষা আন্দোলনের ;যা চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পরপরই বাংলা ভাষাকে পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষার বাহন ও আইন-আদালতের ভাষা করার দাবি উঠেছিল। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, এতো বছর পরও আমরা তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে পারিনি। তখনের তরুণরা ভাষার জন্য বেছে নিয়েছিল রক্তের পথ।এ প্রজন্ম তো সে আবেগ হারিয়েছেই, সাথে ২৫ বছর আগে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত ভাষাটিকে সর্বাঙ্গীণ করার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যার্থ হয়েছে রাষ্ট্র ব্যবস্থাও । পূর্ব-পুরুষেরা রক্তের আলপনা এঁকে যে ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে, সেই ভাষার শুদ্ধ প্রয়োগ ও বিশুদ্ধ উচ্চারণে আমাদের এখনো অনিহা।

ইতিহাস থেকে জানা যায় মাতৃভাষার গুরুত্ব যাদের কাছে যত বেশি সে জাতি উন্নয়নের ধারায় তত বেশি অগ্রশীল। উচ্চশিক্ষার জন্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নতমানের ভাষা প্রয়োগের ক্ষেত্রেও আমাদের দৈন্যের শেষ নেই। বাংলাদেশের সংবিধানে, ৩নং অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলার’ কথা বলা থাকলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ না আছে উচ্চ শিক্ষায় না আছে উচ্চ আদালতে।বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়াশোনার মাধ্যম বাংলা করার উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ইউজিসির ২০ বছর মেয়াদি কৌশলপত্রে শিক্ষার মাধ্যমের কথা একেবারেই আনা হয়নি। তার কারণ-এরা ধরে নিয়েছে, মাধ্যমটা ইংরেজি হয়েই আছে।

যদি আমরা গুণসম্পন্ন শিক্ষা চাই, যদি জ্ঞান-উৎপাদক শিক্ষা চাই, যদি এমন শিক্ষা চাই যেখানে আমাদের উচ্চশিক্ষায় উৎপাদিত স্নাতকেরা কার্যকরভাবে বাংলাদেশ রাষ্ট্র চালাবেন, তাহলে বাংলাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ও বাংলা ভাষাকে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে প্রচলনের মধ্যেই নিহিত রয়েছে আমাদের অহংকার ও ঐতিহ্য। একুশে ফেব্রুয়ারি কে শুধু উদযাপনের ,প্রভাত ফেরীর গানের আর বড় বড় বক্তৃতার মাধ্যম না বানিয়ে বুদ্ধিজীবী মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সহ সবার সদিচ্ছা ও সচেতনতা ই পারে বাংলা কে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যম বানাতে।

শিক্ষার্থী,
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়