ঢাকা ০১:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
রাণীশংকৈলে সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রেখে শারদীয় দূর্গা পূজা পালন করা হবে সহকারী পুলিশ সুপার পুলিশ অপকর্ম অপরাধে জড়িয়েছেন -ডিসি মাসুদ রাউজান ডাবুয়ায় শ্রীশ্রী লোকনাথ বাবার আবির্ভাব দিবস উদযাপিত ফেনীর শহীদ মিনার হকার মাদক ব্যবসায়ী কিশোর গ্যাং এর দখলে দুর্নীতি ও অনলাইন জুয়ায় আসক্ত শ্যামনগর থানার কনস্টেবল সানি নির্বাচনে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে ঘুষ বাণিজ্য: কালিগঞ্জ থানার কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের বিকাশ নাম্বারে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ রাণীশংকৈলে বিএনপি ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত বকশীগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সাবেক নৌ সদস্যের মৃত্যু বকশীগঞ্জ নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ জহুরুল হোসেন

অভাবের কারনেই স্ত্রী ও ২ সন্তানকে হত্যা করে একাই মাটি চাপা দেয় আলী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৪১:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪ ৯০ বার পড়া হয়েছে

 

নিজেস্ব প্রতিবেদক:-
ময়মনসিংহের ত্রিশালে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার অভিযোগে আলী হোসেনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। বুধবার (২২ মে) রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. শামীম হোসেন। পরে অভিযুক্তকে ১৬৪ ধরায় জবানবন্দির জন্য আদালতে সোপর্দ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, আলী হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দেন। তার কোনো জমিজমা ছিল না। তিনি ছিলেন দিনমজুর। অভাবের সংসারে স্ত্রী আমেনা খাতুন (২৫) এবং দুই ছেলে ছিল। বড় ছেলের নাম আবু বক্কর সিদ্দিক (৪) ও ছোট ছেলে আনাছ (২ বছর ৬ মাস)। আলী হোসেন তার চাচার দেওয়া জমিতে ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন। সংসারে সারা বছর অভাব অনটন লেগেই থাকত। ঠিকমতো তার সংসার চালাতে পারত না। তাই সে বিভিন্ন সময় তার স্ত্রী আমেনার নামে এনজিও থেকে টাকা তুলতেন। বেশ কিছুদিন আগে তিনি এনজিও থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার ঋণ নেন। সেই টাকার কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় তাকে এবং তার স্ত্রীকে অপমান করতেন এনজিওকর্মীরা।
প্রায়ই হোসেনের স্ত্রী ও দুই ছেলে না খেয়ে দিন কাটাতেন। ঋণের বোঝা, মানুষের অপমান, সংসারের অভাব অনটন থেকে মুক্তি পেতে ২-৩ মাস আগে আলী হোসেন সিদ্ধান্ত নেন তার স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করবেন। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক আলী হোসেন ১৬ মে রাতে ঘুমন্ত স্ত্রীকে ডেকে তোলেন এবং ওড়না দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে হত্যা করেন। এরপর একইভাবে দুই সন্তানকে হত্যা করেন তিনি। পরে আলী হোসেন তার স্ত্রীর মরদেহ বাড়ির কাছে জমিতে পুঁতে রেখে বাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়েন। শুক্রবার সকালে জিনিসপত্র গুছিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করেন। পরে পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় শ্রীপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

এর আগে ২১ মে দুপুরে ত্রিশাল থানাধীন রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নয়াপাড়া গ্রামের চাষের জমি থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই, সিআইডি প্রযুক্তির সহায়তায় মরদেহের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করে। কিন্তু মরদেহগুলো অর্ধগলিত হওয়ায় এবং শিশু দুটির মরদেহ মস্তক বিহীন হওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরে মরদেহের সঙ্গের কাপড় দেখে পরিচয় শনাক্ত করেন নিহত আমেনার মা। এ ঘটনায় নিহত আমেনা খাতুনের মা হাসিনা খাতুন বাদী হয়ে বুধবার আলী হোসেনসহ অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. শামীম হোসেন বলেন, আলী হোসেনের বিরুদ্ধে ত্রিশাল থানায় ২০১২ সালে ধর্ষণ এবং শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়। এ মামলায় ৫ বছর কারাভোগ করেন তিনি। ২০১৭ সালে আগস্ট মাসে জামিন পান তিনি। মামলাটি বিচারাধীন। ওই মামলায় জামিনে বের হয় ফুফাতো বোনকে বিয়ে করেছিলেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

অভাবের কারনেই স্ত্রী ও ২ সন্তানকে হত্যা করে একাই মাটি চাপা দেয় আলী

আপডেট সময় : ০৭:৪১:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪

 

নিজেস্ব প্রতিবেদক:-
ময়মনসিংহের ত্রিশালে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার অভিযোগে আলী হোসেনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। বুধবার (২২ মে) রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. শামীম হোসেন। পরে অভিযুক্তকে ১৬৪ ধরায় জবানবন্দির জন্য আদালতে সোপর্দ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, আলী হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দেন। তার কোনো জমিজমা ছিল না। তিনি ছিলেন দিনমজুর। অভাবের সংসারে স্ত্রী আমেনা খাতুন (২৫) এবং দুই ছেলে ছিল। বড় ছেলের নাম আবু বক্কর সিদ্দিক (৪) ও ছোট ছেলে আনাছ (২ বছর ৬ মাস)। আলী হোসেন তার চাচার দেওয়া জমিতে ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন। সংসারে সারা বছর অভাব অনটন লেগেই থাকত। ঠিকমতো তার সংসার চালাতে পারত না। তাই সে বিভিন্ন সময় তার স্ত্রী আমেনার নামে এনজিও থেকে টাকা তুলতেন। বেশ কিছুদিন আগে তিনি এনজিও থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার ঋণ নেন। সেই টাকার কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় তাকে এবং তার স্ত্রীকে অপমান করতেন এনজিওকর্মীরা।
প্রায়ই হোসেনের স্ত্রী ও দুই ছেলে না খেয়ে দিন কাটাতেন। ঋণের বোঝা, মানুষের অপমান, সংসারের অভাব অনটন থেকে মুক্তি পেতে ২-৩ মাস আগে আলী হোসেন সিদ্ধান্ত নেন তার স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করবেন। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক আলী হোসেন ১৬ মে রাতে ঘুমন্ত স্ত্রীকে ডেকে তোলেন এবং ওড়না দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে হত্যা করেন। এরপর একইভাবে দুই সন্তানকে হত্যা করেন তিনি। পরে আলী হোসেন তার স্ত্রীর মরদেহ বাড়ির কাছে জমিতে পুঁতে রেখে বাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়েন। শুক্রবার সকালে জিনিসপত্র গুছিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করেন। পরে পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় শ্রীপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

এর আগে ২১ মে দুপুরে ত্রিশাল থানাধীন রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নয়াপাড়া গ্রামের চাষের জমি থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই, সিআইডি প্রযুক্তির সহায়তায় মরদেহের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করে। কিন্তু মরদেহগুলো অর্ধগলিত হওয়ায় এবং শিশু দুটির মরদেহ মস্তক বিহীন হওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরে মরদেহের সঙ্গের কাপড় দেখে পরিচয় শনাক্ত করেন নিহত আমেনার মা। এ ঘটনায় নিহত আমেনা খাতুনের মা হাসিনা খাতুন বাদী হয়ে বুধবার আলী হোসেনসহ অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. শামীম হোসেন বলেন, আলী হোসেনের বিরুদ্ধে ত্রিশাল থানায় ২০১২ সালে ধর্ষণ এবং শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়। এ মামলায় ৫ বছর কারাভোগ করেন তিনি। ২০১৭ সালে আগস্ট মাসে জামিন পান তিনি। মামলাটি বিচারাধীন। ওই মামলায় জামিনে বের হয় ফুফাতো বোনকে বিয়ে করেছিলেন তিনি।