নীলফামারী প্রতিনিধি: দীর্ঘ ১৩ বছরেও কোন পুঁজোয় স্বামীর কাছ থেকে একটা সিঁদুরের কৌটাও ভাগ্যে জোটেনি সমিতার। মাত্র কয়েক মাসের সংসার জীবনে মিলেছে তুচ্ছ-তাচ্ছিলতা আর নানান শারিরীক ও মানসিক যন্ত্রণা। স্বামীর সংসার থেকে বিতারিত হয়ে খেয়ে না খেয়ে স্বামীর সংসারের আশায় বুক বেঁধেই রয়েছেন তিনি।
বলছি, নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার বামনা-বামনী হরিসভাপাড়া গ্রামের শ্রী রতন চন্দ্র রায়ের স্ত্রীর কথা। ১৩ বছর আগে হিন্দু ধর্মীয় অনুশাসন মেনে সমিতার বিয়ে হলেও, মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই স্বামীর সংসার থেকে বিতারিত হয়ে বয়স্ক বাবার বাড়ীতে অসহায় দিন যাপন করছেন সমিতা।
জানতে চাইলে, ভুক্তভোগী সমিতা রানী বলেন, “জেলার জলঢাকা উপজেলার বামনা-বামনী হরিসভাপাড়া এলাকার অতুল চন্দ্র রায়ের ছেলে রতনের সাথে হিন্দুধর্মীয় রীতিনীতি মেয়েই আমার বিয়ে হয়েছে। আমার বাবা গরীব, বিয়ের সময় রতনকে যথাসাধ্য উপঢৌকন দিয়েছে। কয়েকটা মাস যেতে না যেতেই যৌতুক লোভী স্বামী ও তার পরিবারের অন্যান্যরা যৌতুকের কারণে কারণে আমাকে প্রায় সময় অমানসিক নির্যাতন করতো। আমি স্বামীর সংসার করার মানসে সকল অন্যায় অত্যাচার নীরবে সহ্য করতাম। এক পর্যায়ে যৌতুকের কারণে আমাকে বেধরক মারধর করে আমার বাড়ীর পার্শ্বে ফেলে চলে যায় তারা। আমার বয়স্ক বাবা মা আমাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা করান। পরে আমি আবারও আমার স্বামীর বাড়ীতে গেলে, তারা আমাকে তাদের বাড়ী থেকে বের করে দেয়।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে স্বামীর অপেক্ষায় বয়স্ক বাবার বাড়ীতে অসহায় জীবন যাপন করছি, এই ১৩ বছরেও সে আমার কোন খোঁজ নেয়নি। ১৩ বছরের কোন পুঁজোয় একটা সিঁদুরের কৌটাও এনে দেয়নি, কিন্তু সে (রতন) নতুন বিয়ে করে বউকে নিয়ে উচ্ছাসিত রয়েছে। হিন্দু ধর্মের নারীদের বিয়ে এক বারেই হয়”।
রতনের সাথে নিজের হাতেই সমিতার বিয়ে দিয়েছেন এমন দাবী করে খুটামারা ইউনিয়নের সাবেক ইউ,পি সদস্য দেলোয়ার রহমান বলেন, “বিয়ের সময় সমিতার স্বামী রতনের বাবাকে দেড় লক্ষ টাকা উপঢৌকণ দিয়েছে। পরবর্তীতে যৌতুকের দাবীতে সমিতাকে বেধরক মারপিট করে। সমিতার বাবা টাকা দিতে অপারগ হওয়ায় সমিতাকে তারা (রতন ও তার পরিবার) তাদের বাড়ী থেকে বের করে দিয়ে, নতুন বিয়ে করে সংসার করছে। সমিতা দীর্ঘ ১৩বছর ধরে তার বয়স্ক বাবার টানা পোড়ানের সংসারে রয়েছে”।
বিষয়টি নিয়ে অতুল চন্দ্র রায়ের ছেলে রতনের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করবেন না বলে সাংবাদিকদের সাফ জানিয়ে দেন।
দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে বাবার বাড়ীতে অসহায় পড়ে রয়েছেন সমিতা। দিন গুনছেন, কবে ফিরতে পারবেন স্বামীর সংসারে। কবে শেষ হবে সমিতার অপেক্ষার পোহর, আদৌ কি ফিরতে পারবেন স্বামীর সংসারে? এমন গুঞ্জনই চলছে এলাকা জুড়ে স্থানীয়দের মাঝে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ রায়হান সুলতান।
যোগাযোগঃ ৭২/৭-৮ মানিকনগর, মুগদা,ঢাকা-১২০৩
মোবাইলঃ +৮৮০৯৬৩৮০৮৯০১৪
Copyright © 2025 দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র. All rights reserved.