হরিদাসকাটি ইউনিয়ন পরিষদে চরম ভোগান্তি চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতি, ঘন্টার কাজের জন্য অপেক্ষা পাঁচ দিন

- আপডেট সময় : ০৮:০৯:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ ৯২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধি মনিরামপুর:-
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ৫ নম্বর হরিদাসকাটি ইউনিয়ন পরিষদে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির যেন কোনো শেষ নেই। পরিষদ চত্বরে গেলেই প্রতিদিনের চিত্র—চেয়ারম্যান নেই, সেবা নেই।
গত ২৫ জুন ২০২৫ তারিখে জরুরি একটি অরেশ (জমি কেনা-বেচার নথি) নামায় স্বাক্ষরের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে আসেন এক ভুক্তভোগী। সকাল থেকে ঘুরে ঘুরে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে অবস্থান করলেও দেখা মেলেনি চেয়ারম্যান আলমগীর কবির লিটনের। পরিষদে মাত্র তিন-চারজন গ্রাম পুলিশ বসে সময় কাটাচ্ছিলেন। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, চেয়ারম্যান অনেক দিন হলো অফিসে আসেন না।
পরে সচিবের খোঁজ নিলে জানানো হয়, সচিব উপজেলা মিটিংয়ে রয়েছেন। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জরুরি ভিত্তিতে কম্পিউটার রাইটারের কাছে নিয়ে গেলে তিনি জানান, এই কাগজ পাবেন অন্তত পাঁচ দিন পর। কারণ জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ছাড়া কিছু হবে না। কবে আসবেন সেটাও আমরা বলতে পারি না। আপনার এক ঘণ্টার কাজের জন্য অপেক্ষা করতে হবে অন্তত পাঁচ দিন।”
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগী ওই কাগজপত্র জরুরি ভিত্তিতে জমা না দিতে পারলে আগামী পাঁচ বছর তাকে নতুন করে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। অথচ মাত্র এক ঘণ্টার কাজ—একটি স্বাক্ষর—এইটুকুর জন্য তাকে দিনের পর দিন ধর্না দিতে হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান আলমগীর কবির লিটন দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়মিত উপস্থিত হন না। ফলে কোনো কাজই সঠিক সময়ে সম্পন্ন হচ্ছে না। চেয়ারম্যানের প্রাধান্য শুধুমাত্র জমি কেনা-বেচার কাগজপত্রে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে বলেও অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ও অন্যান্য সেবা প্রত্যাশীরা বলেন, “মানুষ ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করে আমাদের সেবা করার জন্য। অথচ এখানে সাধারণ মানুষের চেয়ে জমির কাগজপত্র আর দলিলপত্রই বেশি গুরুত্ব পায়। যে পরিষদে ঘন্টার কাজের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়, সেখানে জনগণের ভোগান্তির কোনো সীমানা নেই।”
এদিকে সচিব ও ইউনিয়ন পরিষদের অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়মিত উপস্থিতি ও সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ।