ঢাকা ০২:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বাগেরহাটে সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা হরিপুরে সরাসরি গোখরা সাপ দিয়ে ঐতিহ্যবাহী পাতা খেলা দক্ষিণ রাউজানে মহানবমী পূজা উদযাপন ফেনী পৌরসভার উদ্যোগে ১৯টি পূজা মন্ডপে অনুদানের চেক বিতরণ বিজয়া দশমী অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান এবং জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম পশ্চিম গুজরায় জ্বালা কুমারী তরুণ সংঘে উগ্যােগে দুর্গোৎসব উদযাপন না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক গাজীপুরে হাইওয়ে রোডে দেহ ব্যবসার আড়ালে চাঁদাবাজি, এলাকাবাসীর প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি ঝিনাইদহে বাসচাপায় শিশুসহ ২ জন নিহত রাণীশংকৈলে সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

স্ত্রীর প্রেমিককে ফাঁসাতে গিয়ে নিজের বন্ধুকে হত্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৭:২০:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৭১ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:-সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশ কর্তৃক স্ত্রীর প্রেমিককে ফাঁসাতে গিয়ে নিজের বন্ধুকে হত্যা করার চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস মার্ডার মামলার রহস্য উৎঘাটন এবং ঘটনার সাথে জড়িত আসামী গ্রেফতার ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার।

গতকাল ২১ এপ্রিল ২০২৫ খ্রিঃ ভিকটিম রাশেদুল ইসলাম(৪০), পিতা-মৃত মজিবর, সাং-উলিপুর, জেলা-কুড়িগ্রাম বর্তমানে তাড়াশ পশ্চিম ওয়াবদা বাঁধ, থানা-তাড়াশ, জেলা-সিরাজগঞ্জে বসবাস করেন এবং পেশায় একজন গাড়ী চালক। গত ১৮/০৪/২০২৫ খ্রিঃ সন্ধ্যা অনুমান ০৬.৩০ ঘটিকার সময় ভিকটিম রাশেদুল বাড়ী হতে বের হয়ে রাতে আর বাড়ীতে ফিরে আসে নাই। পরদিন অর্থাৎ ১৯/০৪/২০২৫ খ্রিঃ সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় তাড়াশ থানাধীন আসানবাড়ী মৌজাস্থ জনৈক সঞ্জিত কর্মকার এর পরিত্যক্ত স্টোর রুমসহ ভিটার পশ্চিম প্রান্তে এবং শুকুর ঘোষ এর ধানক্ষেতের পূর্ব কিনারে ভিকটিম রাশেদুল ইসলামের গলা কাটা অবস্থায় মৃত দেহ পড়ে আছে। ভিকটিমের পরিবারের লোকজন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিম রাশেদুল ইসলাম এর গলা কাটা অবস্থায় মৃত দেহ দেখে সনাক্ত করেন। ভিকটিম রাশেদুল ইসলামকে গত ১৮/০৪/২০২৫ খ্রিঃ সন্ধ্যা অনুমান ০৬.৩০ ঘটিকা হতে ১৯/০৪/২০২৫ খ্রিঃ সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকার মধ্যে যেকোন সময় অজ্ঞাতনামা আসামী বা আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দ্বারা গলা কেটে খুন করে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে চলে যায়। এ সংক্রান্তে ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে তাড়াশ থানায় ০১টি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন এবং আসামী গ্রেফতারে সিরাজগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ ফারুক হোসেন এর নিবিড় তত্ত্বাবধানে এবং নির্দেশনায় সিরাজগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, শাহজাদপুর সার্কেল অতিরিক্ত দায়িত্বে উল্লাপাড়া সার্কেল জনাব মোঃ কামরুজ্জামান, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্বে জনাব মোঃ একরামুল হোসাইন, অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখা, সিরাজগঞ্জ, জনাব রুপু কর, ইন্সপেক্টর (তদন্ত), তাড়াশ থানা, সিরাজগঞ্জ, এসআই(নিঃ)/মোঃ শারফুল ইসলাম, এসআই(নিঃ)/মোঃ জাকারিয়া আল জারজীস, জেলা গোয়েন্দা শাখা, সিরাজগঞ্জগণদের সমন্বয়ে একটি চৌকস টিম গঠন করেন। চৌকস এই টিম তথ্য প্রযুক্তি ও নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং নিরলস পরিশ্রম ও আন্তরিকতার কারণে হত্যাকান্ড সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনসহ ঘটনার সাথে জড়িত আসামীকে সনাক্তপূর্বক আসামী মোঃ সেলিম হোসেন, পিতা-মৃত সামছুল হোসেন, স্ত্রী-শেরজা, সাং-আসানবাড়ী, থানা-তাড়াশ, জেলা-সিরাজগঞ্জকে গ্রেফতার ও হত্যায় ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

উদ্ধারকৃত আলামতঃ

১) হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ০১টি ছুরি।
২) হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ০১টি মোবাইল।
৩) বাংলা মদের (চুয়ানি) গদ্ধযুক্ত সফ্ট ড্রিংকস স্পিডের বোতল।
৪) হত্যার পূর্বে অচেতন করার কাজে ব্যবহৃত কাশির সিরাপ।
৫) লাশের পাশে থাকা ০১টি মানিব্যাগ।
৬) ০১টি ৮ জিবি মেমোরি কার্ড।
৭) ০১টি জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
৮) হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ০১টি ড্রিংকস ক্লেমনের বোতল।

ঘটনার বিবরণঃ গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ সেলিম হোসেনকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করানো হয় এবং বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, সিরাজগঞ্জ মহোদয়ের নিকট ফৌঃ দাঃ কাঃ আইনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন ও নিজের সম্পৃক্ততাসহ ঘটনার বিষয়ে লোমহর্ষক বর্ণনা উল্লেখ করেন।

আসামী মোঃ সেলিম হোসেন তার স্ত্রী শেরজা জনৈক আউয়াল নামের এক ব্যক্তির সাথে পালিয়ে যায়। কিন্তু আসামী সেলিমের সাথে তার স্ত্রীর তালাক হয়নি। সেকারনে আসামী সেলিম জনৈক আউয়াল এর উপর প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলো। ভিকটিম রাশেদুল এর সাথে আসামী সেলিমের ভালো সম্পর্ক ছিল এবং তাদের মধ্যে সারাদিনে এক/দুইবার দেখা হতো। আসামী সেলিম কাগজপত্র খুঁজতে গিয়ে তার স্ত্রী শেরজার ব্যাগের মধ্যে জনৈক আউয়াল এর একটি মানিব্যাগ পায় এবং তার কাছে রেখে দেয়। সেই মানিব্যাগে একটা সীমের কাগজ, একটা ছবি (যা শেরজা ও আউয়াল এর) এবং আউয়ালের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ছিল। আসামী সেলিম প্রায় এক মাস আগে তার মাথায় চিন্তা আসে যে, যদি ভিকটিম রাশেদুলকে হত্যা করে মানিব্যাগটি মৃত দেহের পাশে রেখে দেয় তাহলে পুলিশ সেই মানিব্যাগের ভিতর থেকে জিনিসপত্র দেখে জনৈক আউয়ালকে সন্দেহ করবে এবং আউয়াল আর শেরজার সাথে সংসার করতে পারবে না। সেকারণে সে গত পহেলা বৈশাখের আগে দোকান থেকে মেমরি কার্ড, ঘুমের ঔষধ কিনে রাখে। পহেলা বৈশাখের দিন ভিকটিম রাশেদুলের কাছ থেকে বাংলা মদ ক্রয় করে। গত ১৮/০৪/২০২৫ খ্রিঃ ক্লেমন কিনে তারপর ভিকটিম রাশেদুলকে বলে যে, “আমরা আজ সন্ধ্যার পর একসাথে মদ খাবো।” রাশেদুলও রাজি হয়। সন্ধ্যার পর ভিকটিম রাশেদুলকে নিয়ে সেলিমের বাড়ীর দিকে যায় এবং রাশেদুলকে বাড়ীর সামনে থাকতে বলে আসামী সেলিম বাড়ীতে গিয়ে স্পিড এর বোতলে মদ ছিল সেখানে ঘুমের ঔষধ মিশায় এবং ক্লেমনের বোতলে শুধু মদ রাখে। আসামী সেলিম স্পিডের বোতল, ক্লেমনের বোতল ও মানিব্যাগটিসহ তার কোমড়ে ছুরি নিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়ে ভিকটিম রাশেদুলসহ দুইজনে জনৈক শুকুর ঘোষের ধানক্ষেতের পূর্ব কিনারে যায়। সেখানে রাশেদুলকে স্পিড এর বোতল খেতে দেয় এবং আসামী সেলিম ক্লেমনের বোতল নিয়ে মদ খায়। ভিকটিম রাশেদুল অজ্ঞান হয়ে পরে তাকে সেখানে রেখে দোকান থেকে বিড়ি কিনে এনে বিড়ি খেতে খেতে আসামী সেলিম তার কোমড়ে থাকা ছুরি বের করে ভিকটিম রাশেদুলকে জবাই করে। আসামী সেলিম প্রায়ই এক মিনিট যাবৎ তার গলায় ফেসানি দিয়েছিল এবং মৃত নিশ্চিত করে ছুরি ধুয়ে নিজ বাড়ীতে চলে যায়।

বাংলাদেশ পুলিশ জনগনের জান ও মালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বদা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। হত্যাকান্ডসহ চাঞ্চল্যকর যেকোন ঘটনায় দ্রুত সাড়া দিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচার নিশ্চিতে বাংলাদেশ পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

One thought on “স্ত্রীর প্রেমিককে ফাঁসাতে গিয়ে নিজের বন্ধুকে হত্যা

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

স্ত্রীর প্রেমিককে ফাঁসাতে গিয়ে নিজের বন্ধুকে হত্যা

আপডেট সময় : ০৭:২০:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার:-সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশ কর্তৃক স্ত্রীর প্রেমিককে ফাঁসাতে গিয়ে নিজের বন্ধুকে হত্যা করার চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস মার্ডার মামলার রহস্য উৎঘাটন এবং ঘটনার সাথে জড়িত আসামী গ্রেফতার ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার।

গতকাল ২১ এপ্রিল ২০২৫ খ্রিঃ ভিকটিম রাশেদুল ইসলাম(৪০), পিতা-মৃত মজিবর, সাং-উলিপুর, জেলা-কুড়িগ্রাম বর্তমানে তাড়াশ পশ্চিম ওয়াবদা বাঁধ, থানা-তাড়াশ, জেলা-সিরাজগঞ্জে বসবাস করেন এবং পেশায় একজন গাড়ী চালক। গত ১৮/০৪/২০২৫ খ্রিঃ সন্ধ্যা অনুমান ০৬.৩০ ঘটিকার সময় ভিকটিম রাশেদুল বাড়ী হতে বের হয়ে রাতে আর বাড়ীতে ফিরে আসে নাই। পরদিন অর্থাৎ ১৯/০৪/২০২৫ খ্রিঃ সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় তাড়াশ থানাধীন আসানবাড়ী মৌজাস্থ জনৈক সঞ্জিত কর্মকার এর পরিত্যক্ত স্টোর রুমসহ ভিটার পশ্চিম প্রান্তে এবং শুকুর ঘোষ এর ধানক্ষেতের পূর্ব কিনারে ভিকটিম রাশেদুল ইসলামের গলা কাটা অবস্থায় মৃত দেহ পড়ে আছে। ভিকটিমের পরিবারের লোকজন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিম রাশেদুল ইসলাম এর গলা কাটা অবস্থায় মৃত দেহ দেখে সনাক্ত করেন। ভিকটিম রাশেদুল ইসলামকে গত ১৮/০৪/২০২৫ খ্রিঃ সন্ধ্যা অনুমান ০৬.৩০ ঘটিকা হতে ১৯/০৪/২০২৫ খ্রিঃ সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকার মধ্যে যেকোন সময় অজ্ঞাতনামা আসামী বা আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দ্বারা গলা কেটে খুন করে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে চলে যায়। এ সংক্রান্তে ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে তাড়াশ থানায় ০১টি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন এবং আসামী গ্রেফতারে সিরাজগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ ফারুক হোসেন এর নিবিড় তত্ত্বাবধানে এবং নির্দেশনায় সিরাজগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, শাহজাদপুর সার্কেল অতিরিক্ত দায়িত্বে উল্লাপাড়া সার্কেল জনাব মোঃ কামরুজ্জামান, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্বে জনাব মোঃ একরামুল হোসাইন, অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখা, সিরাজগঞ্জ, জনাব রুপু কর, ইন্সপেক্টর (তদন্ত), তাড়াশ থানা, সিরাজগঞ্জ, এসআই(নিঃ)/মোঃ শারফুল ইসলাম, এসআই(নিঃ)/মোঃ জাকারিয়া আল জারজীস, জেলা গোয়েন্দা শাখা, সিরাজগঞ্জগণদের সমন্বয়ে একটি চৌকস টিম গঠন করেন। চৌকস এই টিম তথ্য প্রযুক্তি ও নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং নিরলস পরিশ্রম ও আন্তরিকতার কারণে হত্যাকান্ড সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনসহ ঘটনার সাথে জড়িত আসামীকে সনাক্তপূর্বক আসামী মোঃ সেলিম হোসেন, পিতা-মৃত সামছুল হোসেন, স্ত্রী-শেরজা, সাং-আসানবাড়ী, থানা-তাড়াশ, জেলা-সিরাজগঞ্জকে গ্রেফতার ও হত্যায় ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

উদ্ধারকৃত আলামতঃ

১) হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ০১টি ছুরি।
২) হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ০১টি মোবাইল।
৩) বাংলা মদের (চুয়ানি) গদ্ধযুক্ত সফ্ট ড্রিংকস স্পিডের বোতল।
৪) হত্যার পূর্বে অচেতন করার কাজে ব্যবহৃত কাশির সিরাপ।
৫) লাশের পাশে থাকা ০১টি মানিব্যাগ।
৬) ০১টি ৮ জিবি মেমোরি কার্ড।
৭) ০১টি জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
৮) হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ০১টি ড্রিংকস ক্লেমনের বোতল।

ঘটনার বিবরণঃ গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ সেলিম হোসেনকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করানো হয় এবং বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, সিরাজগঞ্জ মহোদয়ের নিকট ফৌঃ দাঃ কাঃ আইনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন ও নিজের সম্পৃক্ততাসহ ঘটনার বিষয়ে লোমহর্ষক বর্ণনা উল্লেখ করেন।

আসামী মোঃ সেলিম হোসেন তার স্ত্রী শেরজা জনৈক আউয়াল নামের এক ব্যক্তির সাথে পালিয়ে যায়। কিন্তু আসামী সেলিমের সাথে তার স্ত্রীর তালাক হয়নি। সেকারনে আসামী সেলিম জনৈক আউয়াল এর উপর প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলো। ভিকটিম রাশেদুল এর সাথে আসামী সেলিমের ভালো সম্পর্ক ছিল এবং তাদের মধ্যে সারাদিনে এক/দুইবার দেখা হতো। আসামী সেলিম কাগজপত্র খুঁজতে গিয়ে তার স্ত্রী শেরজার ব্যাগের মধ্যে জনৈক আউয়াল এর একটি মানিব্যাগ পায় এবং তার কাছে রেখে দেয়। সেই মানিব্যাগে একটা সীমের কাগজ, একটা ছবি (যা শেরজা ও আউয়াল এর) এবং আউয়ালের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ছিল। আসামী সেলিম প্রায় এক মাস আগে তার মাথায় চিন্তা আসে যে, যদি ভিকটিম রাশেদুলকে হত্যা করে মানিব্যাগটি মৃত দেহের পাশে রেখে দেয় তাহলে পুলিশ সেই মানিব্যাগের ভিতর থেকে জিনিসপত্র দেখে জনৈক আউয়ালকে সন্দেহ করবে এবং আউয়াল আর শেরজার সাথে সংসার করতে পারবে না। সেকারণে সে গত পহেলা বৈশাখের আগে দোকান থেকে মেমরি কার্ড, ঘুমের ঔষধ কিনে রাখে। পহেলা বৈশাখের দিন ভিকটিম রাশেদুলের কাছ থেকে বাংলা মদ ক্রয় করে। গত ১৮/০৪/২০২৫ খ্রিঃ ক্লেমন কিনে তারপর ভিকটিম রাশেদুলকে বলে যে, “আমরা আজ সন্ধ্যার পর একসাথে মদ খাবো।” রাশেদুলও রাজি হয়। সন্ধ্যার পর ভিকটিম রাশেদুলকে নিয়ে সেলিমের বাড়ীর দিকে যায় এবং রাশেদুলকে বাড়ীর সামনে থাকতে বলে আসামী সেলিম বাড়ীতে গিয়ে স্পিড এর বোতলে মদ ছিল সেখানে ঘুমের ঔষধ মিশায় এবং ক্লেমনের বোতলে শুধু মদ রাখে। আসামী সেলিম স্পিডের বোতল, ক্লেমনের বোতল ও মানিব্যাগটিসহ তার কোমড়ে ছুরি নিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়ে ভিকটিম রাশেদুলসহ দুইজনে জনৈক শুকুর ঘোষের ধানক্ষেতের পূর্ব কিনারে যায়। সেখানে রাশেদুলকে স্পিড এর বোতল খেতে দেয় এবং আসামী সেলিম ক্লেমনের বোতল নিয়ে মদ খায়। ভিকটিম রাশেদুল অজ্ঞান হয়ে পরে তাকে সেখানে রেখে দোকান থেকে বিড়ি কিনে এনে বিড়ি খেতে খেতে আসামী সেলিম তার কোমড়ে থাকা ছুরি বের করে ভিকটিম রাশেদুলকে জবাই করে। আসামী সেলিম প্রায়ই এক মিনিট যাবৎ তার গলায় ফেসানি দিয়েছিল এবং মৃত নিশ্চিত করে ছুরি ধুয়ে নিজ বাড়ীতে চলে যায়।

বাংলাদেশ পুলিশ জনগনের জান ও মালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বদা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। হত্যাকান্ডসহ চাঞ্চল্যকর যেকোন ঘটনায় দ্রুত সাড়া দিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচার নিশ্চিতে বাংলাদেশ পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।