ঢাকা ০১:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আলমডাঙ্গায় পূজামণ্ডপে শামসুজ্জামান দুদু দুমকিতে মা ইলিশ সংরক্ষণে প্রস্তুতিমূলক সভা  নিবন্ধন ব্যতীত সার মজুদ রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা গাজীরহাট পূজা মন্ডপ পরিদর্শক ও মতবিনিময় করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ চুরির অভিযোগে কিশোরকে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল বাকৃবিতে ‘দেশে খাদ্য পুষ্টি সমৃদ্ধকরণের গুরুত্ব’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মৃত্যুর চেয়েও মারাত্মক সময় অপচয়: সফল জীবনের পথে সতর্কবার্তা ১৩ বছরে কোন পুঁজোয় একটা সিঁদুরের কৌটাও ভাগ্যে জোটেনি নীলফামারীর সমিতার: তবুও ফিরতে চান স্বামীর সংসারে শ্যামনগর কৈখালীতে বিশুদ্ধ পানির প্লান্ট উদ্বোধন করলেন বিজিবি মহাপরিচালক ফেনীতে স্বামীকে হ’ত্যার অভিযোগে স্ত্রী আটক

সাতক্ষীরায় মাথা ফাটানোর পর ভাইয়ের পা-ও গুড়িয়ে দিল ৬ সহোদর

নিজেস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০১:৫২:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪ ৯৬ বার পড়া হয়েছে

জিএমআবু জাফর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : পৈত্রিক জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ফিল্মি স্টাইলে হামলা চালিয়ে জিল্লুর রহমান (৪৮) এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মাথা ফাটানোর পর একটি পা-ও ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে ৬ সহোদর ভাই। শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা গ্রামে সংঘবদ্ধ এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে। সেসময় জিল্লুর রহমানের পাশাপাশি তার স্ত্রী বিলকিস নাহার (৩৮) কে-ও মারপিট করেন হামলাকারীরা। আহত জিল্লুর রহমান ঘোনা গ্রামের মৃত খোদাবক্সের ছেলে।

রক্তাক্ত অবস্থায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জিল্লুর রহমানকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নেন স্বজনরা। এসময় উপুর্যপুরি পিটুনিতে ভেঙে গুড়িয়ে যাওয়া জিল্লুরের বাম পায়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জরুরী ভিত্তিতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা ঢাকায় অন্য কোন বিশেষজ্ঞ অর্থপেডিক সার্জনের কাছে নেয়ার পরামর্শ দেন। তবে তাৎক্ষনিক জিল্লুর রহমানের মাথায় একাধিক সেলাই দিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধ করেন চিকিৎসকরা।

আহতের স্ত্রী দেবহাটা উপজেলার সুবর্ণাবাদ গ্রামের জাকাত বিশ্বাসের মেয়ে বিলকিস নাহার বলেন, তাদের দাম্পত্য জীবনে কোন পুত্র সন্তান হয়নি। দুটি কন্যা সন্তান নিয়েই তারা সুখে সংসার করছিলেন। তার শ্বশুরের রেখে যাওয়া বিপুল সম্পত্তির স্বত্ত¡ মোতাবেক স্বামী জিল্লুর রহমান ও তার অপর ৬ ভাই এবং ৬ বোন অংশীদার।

কিন্তু তার স্বামী জিল্লুর রহমানের অংশের জমি বারবার বলা স্বত্তেও বুঝিয়ে না দিয়ে অপর ৬ ভাই কামরুজ্জামান, খায়রুল ইসলাম, আব্দুর রফিক, বদরুজ্জামান, রবিউল ইসলাম ও এনামুল হোসেন জবরদখল ও আত্মসাতের পায়তারা করে আসছেন। কয়েক মাস আগে আর্থিক অনটনের কারনে তার স্বামী বন্টননামা মোতাবেক নিজের অংশের থেকে ৩ শতক জমি প্রতিবেশি আফসার উদ্দীনের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুর কাছে বিক্রি করেন।এখানেই বাঁধে বিপত্তি। তারপর থেকে স্বামী জিল্লুরকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল অপরাপর ৬ ভাই।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ৬ ভাই কামরুজ্জামান, খায়রুল ইসলাম, আব্দুর রফিক, বদরুজ্জামান, রবিউল ইসলাম, এনামুল হোসেন ও ভাতিজা আইজুল ইসলাম জোরপূর্বক তাদের বাড়িতে ঢুকে স্বামী জিল্লুর রহমানকে টেনে হিচড়ে রাস্তার ওপর নিয়ে লোহার রড এবং বাঁশ ও কাঠের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে।

সেসময় বিলকিস নাহার তার স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাকেও পেটায় হামলাকারীরা। একপর্যায়ে স্থানীয়রা তাদেরকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তার স্বামীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়।

এদিকে এ ঘটনার দু’দিন আগেই জিল্লুর রহমানের কাছ থেকে জমি ক্রেতা প্রতিবেশি আফসার উদ্দীনের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু (৬০) কে পিটিয়ে তারও একটি পা ভেঙে গুড়িয়ে দেয় এসব হামলাকারীরা। বর্তমানে ওই মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন।

সেঘটনায় ভিকটিমের ভাই ইমরান হোসেন সবুজ বাদি হয়ে জিল্লুরের ৬ ভাইকে আসামি করে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা (নং-৪১) দায়ের করলেও অদ্যবধি মামলার আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় হামলাকারীরা দ্বিতীয় দফায় আবারও এ সন্ত্রাসী হামলার সুযোগ পেয়েছে বলে অভিযোগ ভিকটিম পরিবার দু’টির।

এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আহত জিল্লুর রহমানের পরিবারের পক্ষ থেকে হামলাকারী অপর ৬ ভাই সহ অন্যান্যদের আসামি করে সাতক্ষীরা সদর মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল বলে ভিকটিমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

সাতক্ষীরা সদর থানার সাব ইন্সপেক্টর ও দু’দিন আগে দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা মো. হাসান বলেন, জমিজমি নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধ চলে আসছিল। দু’দিন আগেই সেখানে জমির ক্রেতাকে মারপিটের ঘটনায় একটি মামলা রূজু করা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে।

পাশাপাশি নতুন করে এক ভাইকে অপর ৬ ভাই মিলে পেটানোর ঘটনায় ভিকটিম পরিবারকে থানায় এজাহার দিতে বলা হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানান তিনি। পরবর্তীতে আইনি প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে ওসি মো. মহিদুল ইসলামকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

সাতক্ষীরায় মাথা ফাটানোর পর ভাইয়ের পা-ও গুড়িয়ে দিল ৬ সহোদর

আপডেট সময় : ০১:৫২:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

জিএমআবু জাফর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : পৈত্রিক জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ফিল্মি স্টাইলে হামলা চালিয়ে জিল্লুর রহমান (৪৮) এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মাথা ফাটানোর পর একটি পা-ও ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে ৬ সহোদর ভাই। শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা গ্রামে সংঘবদ্ধ এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে। সেসময় জিল্লুর রহমানের পাশাপাশি তার স্ত্রী বিলকিস নাহার (৩৮) কে-ও মারপিট করেন হামলাকারীরা। আহত জিল্লুর রহমান ঘোনা গ্রামের মৃত খোদাবক্সের ছেলে।

রক্তাক্ত অবস্থায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জিল্লুর রহমানকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নেন স্বজনরা। এসময় উপুর্যপুরি পিটুনিতে ভেঙে গুড়িয়ে যাওয়া জিল্লুরের বাম পায়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জরুরী ভিত্তিতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা ঢাকায় অন্য কোন বিশেষজ্ঞ অর্থপেডিক সার্জনের কাছে নেয়ার পরামর্শ দেন। তবে তাৎক্ষনিক জিল্লুর রহমানের মাথায় একাধিক সেলাই দিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধ করেন চিকিৎসকরা।

আহতের স্ত্রী দেবহাটা উপজেলার সুবর্ণাবাদ গ্রামের জাকাত বিশ্বাসের মেয়ে বিলকিস নাহার বলেন, তাদের দাম্পত্য জীবনে কোন পুত্র সন্তান হয়নি। দুটি কন্যা সন্তান নিয়েই তারা সুখে সংসার করছিলেন। তার শ্বশুরের রেখে যাওয়া বিপুল সম্পত্তির স্বত্ত¡ মোতাবেক স্বামী জিল্লুর রহমান ও তার অপর ৬ ভাই এবং ৬ বোন অংশীদার।

কিন্তু তার স্বামী জিল্লুর রহমানের অংশের জমি বারবার বলা স্বত্তেও বুঝিয়ে না দিয়ে অপর ৬ ভাই কামরুজ্জামান, খায়রুল ইসলাম, আব্দুর রফিক, বদরুজ্জামান, রবিউল ইসলাম ও এনামুল হোসেন জবরদখল ও আত্মসাতের পায়তারা করে আসছেন। কয়েক মাস আগে আর্থিক অনটনের কারনে তার স্বামী বন্টননামা মোতাবেক নিজের অংশের থেকে ৩ শতক জমি প্রতিবেশি আফসার উদ্দীনের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুর কাছে বিক্রি করেন।এখানেই বাঁধে বিপত্তি। তারপর থেকে স্বামী জিল্লুরকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল অপরাপর ৬ ভাই।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ৬ ভাই কামরুজ্জামান, খায়রুল ইসলাম, আব্দুর রফিক, বদরুজ্জামান, রবিউল ইসলাম, এনামুল হোসেন ও ভাতিজা আইজুল ইসলাম জোরপূর্বক তাদের বাড়িতে ঢুকে স্বামী জিল্লুর রহমানকে টেনে হিচড়ে রাস্তার ওপর নিয়ে লোহার রড এবং বাঁশ ও কাঠের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে।

সেসময় বিলকিস নাহার তার স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাকেও পেটায় হামলাকারীরা। একপর্যায়ে স্থানীয়রা তাদেরকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তার স্বামীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়।

এদিকে এ ঘটনার দু’দিন আগেই জিল্লুর রহমানের কাছ থেকে জমি ক্রেতা প্রতিবেশি আফসার উদ্দীনের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু (৬০) কে পিটিয়ে তারও একটি পা ভেঙে গুড়িয়ে দেয় এসব হামলাকারীরা। বর্তমানে ওই মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন।

সেঘটনায় ভিকটিমের ভাই ইমরান হোসেন সবুজ বাদি হয়ে জিল্লুরের ৬ ভাইকে আসামি করে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা (নং-৪১) দায়ের করলেও অদ্যবধি মামলার আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় হামলাকারীরা দ্বিতীয় দফায় আবারও এ সন্ত্রাসী হামলার সুযোগ পেয়েছে বলে অভিযোগ ভিকটিম পরিবার দু’টির।

এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আহত জিল্লুর রহমানের পরিবারের পক্ষ থেকে হামলাকারী অপর ৬ ভাই সহ অন্যান্যদের আসামি করে সাতক্ষীরা সদর মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল বলে ভিকটিমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

সাতক্ষীরা সদর থানার সাব ইন্সপেক্টর ও দু’দিন আগে দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা মো. হাসান বলেন, জমিজমি নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধ চলে আসছিল। দু’দিন আগেই সেখানে জমির ক্রেতাকে মারপিটের ঘটনায় একটি মামলা রূজু করা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে।

পাশাপাশি নতুন করে এক ভাইকে অপর ৬ ভাই মিলে পেটানোর ঘটনায় ভিকটিম পরিবারকে থানায় এজাহার দিতে বলা হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানান তিনি। পরবর্তীতে আইনি প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে ওসি মো. মহিদুল ইসলামকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।