সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলার পথেই হাঁটছে বকশীগঞ্জের সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলা

- আপডেট সময় : ১১:০৩:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ১১ বার পড়া হয়েছে

জামালপুর (বকশিগঞ্জ) ক্রাইম প্রতিনিধি:সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলার পথেই হাঁটছে বাংলা নিউজ ডটকমের সাবেক জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ও একাত্তর টিভির সাবেক উপজেলা সংবাদদাতা গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যা মামলা। দুই বছর গড়ালেও অগ্রগতি নেই বিচারের। তার প্রকৃত হত্যাকারীদের আড়াল করার অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ পরিবারের। শনিবার (১৮ অক্টোবর) সাংবাদিক নাদিমের বাড়িতে সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম ও তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্য আব্দুল করিম সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশ –এর চেয়ারম্যান/সেল প্রধান মোঃ খায়রুল আলম রফিক ও তার টিমের নিকট এ অভিযোগ করেন। মনিরা বেগম বলেন, আমার স্বামী হত্যায় সাধুরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুল আলম ওরফে বাবু চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ২৭ জন খুনের সাথে জড়িত থাকলেও চার্জশিটে আনা হয়েছে মাত্র ৯ জনের নাম।
এতে প্রকৃত হত্যাকারীরা আড়ালে থেকে যাচ্ছে। যা আমাদের জন্য হুমকির কারণ।
এজন্য প্রকৃত আসামিদের নাম উল্লেখ করে নারাজি দিয়েছি। এখন আদালতে শুনানির অপেক্ষায় আছে। তিনি আরও বলেন, আমরা অসহায়। আমাদের পাশে কেউ নেই। বকশীগঞ্জের সাংবাদিক সমাজ আমাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করছেন এবং খোঁজ খবর রাখছেন। তাদের সাহসেই এগিয়ে যাচ্ছি আমি। আমি আমার স্বামী হত্যার আসামিদের সর্বোচ্চ বিচার চাই।
এসময় সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোঃ খায়রুল আলম রফিক বলেন, ১৯৯২ সন থেকে এ পর্যন্ত ৬৯ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ বিচার না হওয়ায় দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুর স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করার সাহস পেয়েছে। শুধু তুহিনকে হত্যা করার পরই সারা সাংবাদিক সমাজ কেঁদেছেন। কেঁদেছেন দেশের মানুষও। বকশীগঞ্জের সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডটি একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড। হত্যাকারীরা সবাই পেশাদার কিলার। এদেরকে রক্ষা ও আড়াল করতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা বার বারই নাটক তৈরি করছেন।
যেমনটা সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে তদন্তের নামে ১২৫ বার পিছিয়েছে। এমনটা যেন নাদিম হত্যাকাণ্ডে না ঘটে। এরকম হলে সারাদেশব্যাপী কঠোর কর্মসূচি দেবেন সাংবাদিক সমাজ।
এ ব্যাপারে তদারকি করার জন্য সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশ ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটির প্রধান সিনিয়র সাংবাদিক সেলের সহকারী পরিচালক (আইন) মোহাম্মদ আলী আবির। এছাড়া তার সাথে রয়েছেন সেলের ময়মনসিংহ জেলা শাখার প্রধান (অনুসন্ধান) মোঃ আব্দুল মান্নান, বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি, উপজেলা প্রেসক্লাব, বকশীগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু ও একজন মানবাধিকার কর্মী। এসময় সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশ –এর পরিচালক (জেলা ইউনিট প্রধান) রেজাউল করিম রেজা, সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান রুবেল, সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) আবুল কাশেম ও সহকারী পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) সেলিম সরকার। এছাড়াও বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ উল হাসান, এমদাদুল হক লালন, আল মোজাহিদ বাবু, সাংবাদিক মনিরুজ্জামান লিমন, সাংবাদিক রকিবুল হাসান বিদ্রোহী, সাংবাদিক নাদিমের কন্যা রাব্বিলাতুল জান্নাত, রিফাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশ -এর নেতৃবৃন্দ সাংবাদিক নাদিমের বাড়িতে যান ও তার পরিবারের খোঁজ খবর নেন।
দেখা যায়, নাদিমের বাড়িঘরের অবস্থা খুবই করুণ। তারা আর্থিক সংকটে ভুগছেন। নাদিম হত্যার পর আয় ইনকামের কেউ না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন নাদিমের পরিবার। সেখান থেকে নেতৃবৃন্দ বকশীগঞ্জ থানায় যান। সেখানে ওসি খন্দকার শাকের আহমেদের সাথে কথা বলেন তারা। তারপর সাংবাদিক নাদিমের কবর জিয়ারত করা হয় এবং তার গ্রামের বাড়িতে নাদিমের বাবার সাথে কথা বলেন তারা। সবশেষে বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাব পরিদর্শন করেন সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশ-এর নেতৃবৃন্দ। এসময় সেলের চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রফিকসহ নেতৃবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়।