সভাপতি বলেন অধ্যক্ষের শাস্তি হবে, অধ্যক্ষ স্বীকার করেন বরখাস্ত হব

- আপডেট সময় : ০৮:২৩:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ৯৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধি:
নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলাধীন ১৯৭০ সালের ঐতিহ্যবাহী “বালাতৈড় সিদ্দিক হোসেন ডিগ্রি কলেজ” এর আওয়ামী লীগের দোসর ও দাপট ধারী অর্থ লোভী অধ্যক্ষ ড. মো: আমাজাদ হোসেনের নানাবিধ অনিয়মের যেন শেষ নাই। জানা যায় যে তিনি অত্র কলেজে ২০১৪ সালের শেষের দিকে আওয়ামী লীগের দোসর ও দাপট ধারী সাবেক অবৈধ খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের হাত ধরে মোটা অংকের বিনিময়ে অধ্যক্ষের পদ দখল করেন। তারপর থেকেই ইচ্ছা মত শুরু করেন নানাবিধ অনিয়ম। আজ তিনি জিরো থেকে হিরো হয়েছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায় যে অধ্যক্ষ অর্থ লোভে গোপনে কলেজে
শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে জালিয়াতি এবং কলেজের অর্থ আত্মাসাৎ এবং নানাবিধ অনিয়ম করেছেন। অধ্যক্ষের এমন অনিয়মের একাধিকবার পূর্বে তদন্ত হয়েছে এবং পলাতক ছিলেন জবাব দেওয়ার ভয়ে।
অত্র কলেজের সাবেক সভাপতি আওয়ামী লীগের দোসর যতীন্দ্র মোহন প্রামাণিক পূর্বে এক তদন্তে কলেজে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ ছিল না। সেই তদন্তের পরেই যতীন্দ্র মোহন বলেন অধ্যক্ষ জবাব দেওয়ার ভয়ে পলাতক ছিলেন। অধ্যক্ষের অনিয়ম প্রমাণিত হয়েছে এবং অধ্যক্ষের শাস্তি হবেই। পরবর্তীতে অধ্যক্ষ নিজের মুখে গত ১৭/০৫/২০২১ তারিখে জালিয়াতি স্বীকার করেন এবং তিনি গত ২০/০৫/২০২১ তারিখে স্বীকার করেন যে আমি (অধ্যক্ষ) বরখাস্ত হব।
সর্বশেষ তদন্তে আবারও অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দূর্নীতির প্রমাণ উঠে আসল।
গত ২২ এপ্রিল ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ তারিখ সকাল ১০:৩০ ঘটিকায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, রাজশাহী অঞ্চল রাজশাহী এর পরিচালক মহোদয় ও সহকারী পরিচালক মহোদয় কলেজে সরেজমিন তদন্তে উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায় যে কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো: আমজাদ হোসেন পূর্বে বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক মো: এরশাদ আলীর গত ৩১/০৭/ ২০১৫ নিয়োগ বোর্ডের সকল নথি ও কাগজপত্র ব্যবহার করে জালিয়াতি করেন এবং কলেজ গভর্ণিং বডির গত ২২/০৮/২০১৫ তারিখের রেজুলেশন টেম্পারিং করে বিপুল অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে কলেজে ডিগ্রী শাখায় বাংলা ( মানিক), ইংরেজি ( রাজীব), দর্শন ( কামাল), রাষ্ট্রবিজ্ঞান ( জাকির) ও ভূগোল ( রায়হান) এই পাঁচটি বিষয়ের ভুয়া নিয়োগ প্রদান করেন। আরো জানা যায় যে দর্শন বিভাগের ভুয়া শিক্ষক মো: কামাল হোসেনের বেতন করে দিয়েছেন যা খতিয়ে দেখা জরুরী। জানা যায় তদন্ত কর্মকর্তা দল কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে এসব নিয়োগ জালিয়াতির প্রমাণ পান।
এছাড়া কলেজের বার্ষিক আর্থিক লেনদেনে ব্যাপক অনিয়মের বিষয়ও তদন্তে উঠে আসে। কলেজের বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের কোনো সুনির্দিষ্ট হিসাব বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ভাউচার কোন কিছুই উপস্থাপন করতে পারেননি অধ্যক্ষ। ইচ্ছামত অধ্যক্ষ মোটা অংক বিভিন্ন জায়গায় লিখে খরচ দেখিয়েছেন যা সম্পূর্ণ অবৈধ। উল্লেখ্য যে ২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের কোনো আয়-ব্যয়ের খাতা বা নথিপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। তদন্ত পরবর্তী সময়ে রাতারাতি অধ্যক্ষ ইচ্ছামত গোপনে ব্যয়ের খাত তৈরি ঠিক করতে পারেন এবং তা করলেও সেই ব্যয় গ্রহনযোগ্য হবে না এমন দাবি করেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট শিক্ষক ও জনসাধারণ।
তাঁর এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), ঢাকা থেকে অধ্যক্ষ ড. মো: আমজাদ হোসেনের বেতন-ভাতা অনেক আগেই স্থগিত করেছেন, যা এখনো বলবৎ রয়েছে। বলা যায় যে অধ্যক্ষের বেতন ভাতা বন্ধ থাকায় তিনি কলেজ পর্যাপ্ত অর্থ লোটপাট করে চলছেন।
আরো জানা যায় যে কলেজ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য মো: আবদুল হাকিম ও কলেজ এলাকার জনসাধারণ এবং কলেজ মার্কেটের ব্যবসায়ী গণ কিছু পূর্বে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজর অর্থ আত্মাসাৎ এর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন দুদক চেয়ারম্যান মহোদয়, সেগুন বাগিচা, ঢাকা বরাবর। সেই প্রেক্ষিতে তদন্তও হয়েছে।
বর্তমানে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী, অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রী, প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য মো: আ: হাকিম এবং স্থানীয় জনগণ কলেজের স্বার্থে দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ ড. মো: আমজাদ হোসেনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছেন। সেই সাথে ভুক্তভোগী শিক্ষক মো: এরশাদ আলীর বকেয়া সহ বেতন ভাতা চালু করার অনুরোধ জানিয়েছেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট।