শিশু মাইশাকে শাসরোধে হত্যা করে মা

- আপডেট সময় : ১১:৪৮:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ মে ২০২৪ ৭২ বার পড়া হয়েছে

মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি:-১৬৪ ধারায় আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নিজের শিশুকন্যাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পৈশাচিক বর্ণনা দিয়েছেন আলমডাঙ্গার ভোগাইল বগাদী গ্রামের পপি খাতুন। নিজের ৭ বছরের শিশুকন্যা মাইশাকে হত্যার পর মোবাইলফোন সেটের চার্জার গলায় জড়িয়ে রাখেন।
যাতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাইশা মারা গিয়েছে এমন নাটক সাজানো যায়।আলমডাঙ্গার ভোগাইল বগাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ৭ বছরের শিশুকন্য মাইশার মৃত্যু বিদ্যুতস্পৃষ্টে হয়নি।
তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে- ময়নাতদন্ত রিপোর্টে এমন তথ্য উল্লেখ করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সাদিয়া ওই রিপোর্ট প্রদান করেন। এরই ভিত্তিতে গত ৪ মে মাইশার নানা শহিদুল ইসলাম আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত মাইশার নানা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে গত ৩ মে তিনি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর মাইশা হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন তার মা পপি খাতুনকে গত শনিবার রাতেই আটক করে পুলিশ।
করা হয় জিজ্ঞাসাবাদ। এক পর্যায়ে তিনি নিজের মেয়ে মাইশাকে হত্যা করে নাটক সাজানোর বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে রবিবার তাকে সংশ্লিষ্ট মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
সে সময় তিনি বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নিজের শিশুকন্যা হত্যার ঘটনায় নিজেকে সম্পৃক্ত করে জবানবন্দী দেন।প্রসঙ্গত, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সকালে আলমডাঙ্গা উপজেলার ভোগাইল বগাদী গ্রামের মাইশা খাতুন (৭) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়।
মোবাইল চার্জার নিয়ে খেলতে গিয়ে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় বলে ধারনা করা হয়। তার মায়ের চিৎকারে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মাইশা খাতুন ভোগাইল বগাদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
একই গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে পপি খাতুনের মেয়ে। মা-বাবার বিয়ে বিচ্ছেদ হলে মায়ের সাথে মাইশা নানা বাড়িতেই থাকতো।
মাইশা খাতুন মিরপুর উপজেলার আসাননগর গ্রামের সাইফুল ইসলামের মেয়ে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে থানায় একটা অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়।
পরিবার ও প্রতিবেশিদের নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১ মার্চ উপরোক্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এদিকে, হত্যা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২৯ ফেব্রুয়ারি সকালে মাইশার নানা, নানি ও মামা পানবরজে কাজ করতে যান।সকালে তার মা রান্না করতে ছিলেন। এক সময় ঘরে গিয়ে দেখতে পান যে মাইশা মেঝেতে পড়ে আছে। তার গলায় মোবাইল চার্জারের তার জড়ানো। এটা দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় যে বিদ্যুৎ স্পষ্ট হয়ে হয়তো শিশুকন্যা মাইশার মৃত্যু হয়েছে।
এই হত্যা মামলার রাতেই পপি খাতুনকে আটক করে পুলিশ।কিন্তু কেন পপি খাতুন নিজের শিশুকন্যাকে হত্যা করেছে? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর জানা সম্ভব হয়নি। আজ ৬ মে দুপুরে জেলা পুলিশের পক্ষে পুলিশ সুপার এ সংক্রান্ত প্রেস ব্রিফিং করবেন বলে জানা গেছে।