ঢাকা ০৭:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দুমকীতে পূজা মন্ডপে এনসিপির শুভেচ্ছা বিনিময় বিদায়ের সুরে শ্যামনগরের পূজা মণ্ডপগুলো পটুয়াখালীতে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ‎ ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক আসিফ কাজলের আজ জন্মদিন বিজয়া দশমী, আজ শেষ দিন দেবী দুর্গার বিসর্জনের বিএনপি বিশ্বাস করে ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার: তারেক রহমান হরিপুরে পূজামন্ডপ পরিদর্শনে  বিএনপির সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম চেয়ারম্যান শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৫খ্রিঃ মহানবমীতে ফেনী জেলা পুলিশের নিরাপত্তা তদারকি ভারতের ষড়যন্ত্রে পাহাড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে : রাশেদ খান ফেনিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার আলোচনা সভা

শিং মাছের জীবন রহস্য উন্মোচন করলেন বাকৃবি গবেষক

নিজেস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৬:১৯:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪ ১১৬ বার পড়া হয়েছে

জাহিদ হাসান, বাকৃবি প্রতিনিধি:

দেশে প্রথমবারের মতো দেশীয় শিং মাছের জীবন রহস্য উন্মোচন এবং স্ত্রী-পুরুষ শিং মাছের লিঙ্গ নির্ধারণকারী সম্ভাব্য জিন সনাক্তকরণে সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফিশারিজ বায়োলজি ও জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসলিমা খানম ও তার গবেষক দল।

বুধবার (১৫ মে) বেলা ১১ টায় বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

অধ্যাপক তাসলিমা খানম বলেন, জাপান সোসাইটি ফর দি প্রমোশন অফ সায়েন্সের অর্থায়নে ২০২২-২০২৪ সালে জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে সিকোয়েন্সিং কাজটি সম্পন্ন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তৈরিকৃত ড্রাফট জিনোম ব্যবহার করে সম্ভাব্য লিঙ্গ নির্ধারণকারী জিন সনাক্তকরণ সম্ভব হয়েছে যা যেকোনো দেশীয় মাছের ক্ষেত্রে প্রথম। এছাড়া গবেষণা প্রকল্পটির ফলাফল জাপানিজ সোসাইটি অফ ফিশারিজ সায়েন্স আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, কিছু কিছু মাছের ক্ষেত্রে লিঙ্গভেদে স্ত্রী ও পুরুষ মাছের দৈহিক বৃদ্ধির পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। শিং মাছ এর অন্যতম উদাহরণ। যেখানে স্ত্রী শিং মাছের বৃদ্ধি পুরুষ মাছ অপেক্ষা ৪০-৬০% বেশি হয়ে থাকে। এই মাছের বাণিজ্যিক উৎপাদন বাড়ানোর জন্য তেলাপিয়ার মত মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদনকে অন্যতম উপায় হিসেবে মনে করা হয়। সফলভাবে মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদনের জন্য লিঙ্গ নির্ধারণকারী জিন সনাক্তকরণ অত্যন্ত জরুরী। পাশাপাশি শিং মাছ প্রজননক্ষম হওয়ার অনেক আগেই স্ত্রী ও পুরুষ মাছ সনাক্তকরণ সম্ভবপর হবে যা প্রচলিত সিলেকটিভ ব্রিডিং প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে। শিং মাছের জিনোম থেকে শুধুমাত্র লিঙ্গ নির্ধারণকারী জিনই নয়, অন্যান্য বৈশিষ্ট্য যেমন বৃদ্ধি, রোগপ্রতিরোধ ও প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার জন্য দায়ী জিন সনাক্তকরনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মনোসেক্স শিং মাছ উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ড. তাসলিমা বলেন, বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা ও খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষায় মৎস্য উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই। বিশ্বে মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয় শীর্ষ প্রজাতি হল তেলাপিয়া যার সিংহভাগ আসে মনোসেক্স তিলাপিয়া থেকে। তেমনিভাবে গবেষণালব্দ ফলাফল ব্যবহার করে মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদন করা সম্ভব যা শিং মাছের বাণিজ্যিক চাষে বিপ্লব ঘটাবে বলে মনে করি।

গবেষণার বিষয়ে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, শিং মাছ রোগীর পথ্য হিসেবে পরিচিত। আমরা জানি পুরুষ মাছ সচারচর বেশি শক্তিশালী হয় মেয়ে মাছের তুলনায়। কিন্তু শিং মাছে তার বিপরীত। শিং মাছের ক্ষেত্রে মেয়ে মাছ বেশি শক্তিশালী হয়। মেয়ে মাছগুলো বেশি নির্বাচন করা গেলে বেশি উৎপাদন করানো যাবে। লিঙ্গ নির্ধারণ করার মাধ্যমে সহজেই তা করা সম্ভব হবে।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার, সহযোগী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আফরিনা মুস্তারি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

শিং মাছের জীবন রহস্য উন্মোচন করলেন বাকৃবি গবেষক

আপডেট সময় : ০৬:১৯:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪

জাহিদ হাসান, বাকৃবি প্রতিনিধি:

দেশে প্রথমবারের মতো দেশীয় শিং মাছের জীবন রহস্য উন্মোচন এবং স্ত্রী-পুরুষ শিং মাছের লিঙ্গ নির্ধারণকারী সম্ভাব্য জিন সনাক্তকরণে সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফিশারিজ বায়োলজি ও জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসলিমা খানম ও তার গবেষক দল।

বুধবার (১৫ মে) বেলা ১১ টায় বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

অধ্যাপক তাসলিমা খানম বলেন, জাপান সোসাইটি ফর দি প্রমোশন অফ সায়েন্সের অর্থায়নে ২০২২-২০২৪ সালে জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে সিকোয়েন্সিং কাজটি সম্পন্ন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তৈরিকৃত ড্রাফট জিনোম ব্যবহার করে সম্ভাব্য লিঙ্গ নির্ধারণকারী জিন সনাক্তকরণ সম্ভব হয়েছে যা যেকোনো দেশীয় মাছের ক্ষেত্রে প্রথম। এছাড়া গবেষণা প্রকল্পটির ফলাফল জাপানিজ সোসাইটি অফ ফিশারিজ সায়েন্স আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, কিছু কিছু মাছের ক্ষেত্রে লিঙ্গভেদে স্ত্রী ও পুরুষ মাছের দৈহিক বৃদ্ধির পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। শিং মাছ এর অন্যতম উদাহরণ। যেখানে স্ত্রী শিং মাছের বৃদ্ধি পুরুষ মাছ অপেক্ষা ৪০-৬০% বেশি হয়ে থাকে। এই মাছের বাণিজ্যিক উৎপাদন বাড়ানোর জন্য তেলাপিয়ার মত মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদনকে অন্যতম উপায় হিসেবে মনে করা হয়। সফলভাবে মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদনের জন্য লিঙ্গ নির্ধারণকারী জিন সনাক্তকরণ অত্যন্ত জরুরী। পাশাপাশি শিং মাছ প্রজননক্ষম হওয়ার অনেক আগেই স্ত্রী ও পুরুষ মাছ সনাক্তকরণ সম্ভবপর হবে যা প্রচলিত সিলেকটিভ ব্রিডিং প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে। শিং মাছের জিনোম থেকে শুধুমাত্র লিঙ্গ নির্ধারণকারী জিনই নয়, অন্যান্য বৈশিষ্ট্য যেমন বৃদ্ধি, রোগপ্রতিরোধ ও প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার জন্য দায়ী জিন সনাক্তকরনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মনোসেক্স শিং মাছ উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ড. তাসলিমা বলেন, বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা ও খাদ্য নিরাপত্তা সুরক্ষায় মৎস্য উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই। বিশ্বে মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয় শীর্ষ প্রজাতি হল তেলাপিয়া যার সিংহভাগ আসে মনোসেক্স তিলাপিয়া থেকে। তেমনিভাবে গবেষণালব্দ ফলাফল ব্যবহার করে মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদন করা সম্ভব যা শিং মাছের বাণিজ্যিক চাষে বিপ্লব ঘটাবে বলে মনে করি।

গবেষণার বিষয়ে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, শিং মাছ রোগীর পথ্য হিসেবে পরিচিত। আমরা জানি পুরুষ মাছ সচারচর বেশি শক্তিশালী হয় মেয়ে মাছের তুলনায়। কিন্তু শিং মাছে তার বিপরীত। শিং মাছের ক্ষেত্রে মেয়ে মাছ বেশি শক্তিশালী হয়। মেয়ে মাছগুলো বেশি নির্বাচন করা গেলে বেশি উৎপাদন করানো যাবে। লিঙ্গ নির্ধারণ করার মাধ্যমে সহজেই তা করা সম্ভব হবে।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার, সহযোগী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আফরিনা মুস্তারি।