ঢাকা ০১:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দক্ষিণ রাউজানে মহানবমী পূজা উদযাপন ফেনী পৌরসভার উদ্যোগে ১৯টি পূজা মন্ডপে অনুদানের চেক বিতরণ বিজয়া দশমী অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান এবং জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম পশ্চিম গুজরায় জ্বালা কুমারী তরুণ সংঘে উগ্যােগে দুর্গোৎসব উদযাপন না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক গাজীপুরে হাইওয়ে রোডে দেহ ব্যবসার আড়ালে চাঁদাবাজি, এলাকাবাসীর প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি ঝিনাইদহে বাসচাপায় শিশুসহ ২ জন নিহত রাণীশংকৈলে সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব দুমকীতে পূজা মন্ডপে এনসিপির শুভেচ্ছা বিনিময় বিদায়ের সুরে শ্যামনগরের পূজা মণ্ডপগুলো

রৌমারী সীমান্তে বজ্রপাত—প্রকৃতির বজ্রাঘাতে বিজিবি সদস্য নিহত, আহত পাঁচ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:০৮:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫ ৪৯ বার পড়া হয়েছে

গালিব খাঁন

ভয়াবহ এক দুপুর। ঘড়ির কাঁটা তখন দুপুর ১টা ছুঁই ছুঁই। রৌমারী সীমান্তে আকাশটা আচমকাই বদলে যায়।
কালো মেঘের নিচে থমকে যায় বাতাস, নিঃশব্দ আতঙ্ক জমে ওঠে সবুজ পোষাকে দাঁড়িয়ে থাকা ছয়জন সৈনিকের বুকের ভেতর।
তারা জানে না, এই মেঘের গর্জন শুধু শব্দ নয়—
এ এক মৃত্যুবার্তা, যার ঠিকানা লেখা ছিল তাদেরই কারও নামে।

হঠাৎ বজ্রপাত।
আকাশ যেন ছিঁড়ে পড়ে এক সেকেন্ডের গর্জনে।
মাটিতে কাঁপন লাগে।
এক বিজিবি সদস্য ঝলসে পড়েন মাটিতে—
নিঃশ্বাসহীন, নিস্তব্ধ, নিথর।
তার শরীরটা তখন আর শুধু শরীর নয়,
এ এক জাতীয় পোশাকে মোড়ানো আত্মত্যাগ।

পাঁচজন আহত।
দেহের কোথাও পুড়ে গেছে চামড়া,
কোনো চোখে ধোঁয়াশা, কোথাও রক্ত আর আর্তনাদ।
সঙ্গীরা ছুটে আসে, ডাক পড়ে এম্বুলেন্সে।
চিৎকার আর সাইরেনের ভেতর দিয়ে ছুটে চলে আহতদের জীবন।
তাদের চোখে ভয়, আর হাতে হাত ধরে থাকা একে অপরের প্রতি সহানুভূতির কম্পন।

সীমান্ত তখন থেমে গেছে।
বন্দুক থেমে গেছে, জিপ থেমে গেছে—
শুধু বাতাস চলছে, আর চলছে স্মৃতির রক্তপাত।

স্থানীয়রা জানায়, বজ্রপাতের সময় মেঘের গর্জন এতটাই তীব্র ছিল যে মনে হচ্ছিল,
আকাশ যেন ক্ষুব্ধ হয়ে আগুন ছুড়ে মারছে মাটির বুকে।
আর সেই আগুনে পুড়ে গেল এক জন সৈনিকের জীবন।

বিজিবি কর্তৃপক্ষের বিবৃতি এসেছে।
শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে নিহত বীরকে।
আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে রংপুর সিএমএইচ-এ।
প্রশ্ন নেই কারও মুখে—
শুধু নীরবতা, আর দেশের প্রতি এই নিঃশব্দ আত্মদান।

এই মৃত্যু কোনো যুদ্ধক্ষেত্রের নয়, তবু যুদ্ধের চেয়ে কমও নয়।
কারণ সীমান্তে দাঁড়ানো মানেই,
প্রতিদিন মৃত্যুর সম্ভাবনাকে পকেটে নিয়ে হেঁটে চলা।

আজ রৌমারী কাঁদে।
দেশের উত্তর সীমান্তে বৃষ্টির শব্দ যেন কানে কানে বলে—
“এই বীরেরা চুপচাপ মরে যায়,
আমরা শুধু কাগজে লিখে রাখি— বজ্রপাতে মৃত্যু।”

তথ্যসূত্র:
প্রথম আলো,
বাংলা ট্রিবিউন,
চ্যানেল ২৪ নিউজ প্রতিবেদন

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

রৌমারী সীমান্তে বজ্রপাত—প্রকৃতির বজ্রাঘাতে বিজিবি সদস্য নিহত, আহত পাঁচ

আপডেট সময় : ০৪:০৮:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

গালিব খাঁন

ভয়াবহ এক দুপুর। ঘড়ির কাঁটা তখন দুপুর ১টা ছুঁই ছুঁই। রৌমারী সীমান্তে আকাশটা আচমকাই বদলে যায়।
কালো মেঘের নিচে থমকে যায় বাতাস, নিঃশব্দ আতঙ্ক জমে ওঠে সবুজ পোষাকে দাঁড়িয়ে থাকা ছয়জন সৈনিকের বুকের ভেতর।
তারা জানে না, এই মেঘের গর্জন শুধু শব্দ নয়—
এ এক মৃত্যুবার্তা, যার ঠিকানা লেখা ছিল তাদেরই কারও নামে।

হঠাৎ বজ্রপাত।
আকাশ যেন ছিঁড়ে পড়ে এক সেকেন্ডের গর্জনে।
মাটিতে কাঁপন লাগে।
এক বিজিবি সদস্য ঝলসে পড়েন মাটিতে—
নিঃশ্বাসহীন, নিস্তব্ধ, নিথর।
তার শরীরটা তখন আর শুধু শরীর নয়,
এ এক জাতীয় পোশাকে মোড়ানো আত্মত্যাগ।

পাঁচজন আহত।
দেহের কোথাও পুড়ে গেছে চামড়া,
কোনো চোখে ধোঁয়াশা, কোথাও রক্ত আর আর্তনাদ।
সঙ্গীরা ছুটে আসে, ডাক পড়ে এম্বুলেন্সে।
চিৎকার আর সাইরেনের ভেতর দিয়ে ছুটে চলে আহতদের জীবন।
তাদের চোখে ভয়, আর হাতে হাত ধরে থাকা একে অপরের প্রতি সহানুভূতির কম্পন।

সীমান্ত তখন থেমে গেছে।
বন্দুক থেমে গেছে, জিপ থেমে গেছে—
শুধু বাতাস চলছে, আর চলছে স্মৃতির রক্তপাত।

স্থানীয়রা জানায়, বজ্রপাতের সময় মেঘের গর্জন এতটাই তীব্র ছিল যে মনে হচ্ছিল,
আকাশ যেন ক্ষুব্ধ হয়ে আগুন ছুড়ে মারছে মাটির বুকে।
আর সেই আগুনে পুড়ে গেল এক জন সৈনিকের জীবন।

বিজিবি কর্তৃপক্ষের বিবৃতি এসেছে।
শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে নিহত বীরকে।
আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে রংপুর সিএমএইচ-এ।
প্রশ্ন নেই কারও মুখে—
শুধু নীরবতা, আর দেশের প্রতি এই নিঃশব্দ আত্মদান।

এই মৃত্যু কোনো যুদ্ধক্ষেত্রের নয়, তবু যুদ্ধের চেয়ে কমও নয়।
কারণ সীমান্তে দাঁড়ানো মানেই,
প্রতিদিন মৃত্যুর সম্ভাবনাকে পকেটে নিয়ে হেঁটে চলা।

আজ রৌমারী কাঁদে।
দেশের উত্তর সীমান্তে বৃষ্টির শব্দ যেন কানে কানে বলে—
“এই বীরেরা চুপচাপ মরে যায়,
আমরা শুধু কাগজে লিখে রাখি— বজ্রপাতে মৃত্যু।”

তথ্যসূত্র:
প্রথম আলো,
বাংলা ট্রিবিউন,
চ্যানেল ২৪ নিউজ প্রতিবেদন