নিজস্ব প্রতিনিধি:-
*ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় হাতিয়ার মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সোমবার (২৭ মে) সকাল পর্যন্ত হাতিয়াসহ উপকূলজুড়ে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বইতে দেখা গেছে। গতকাল রাতভর চলেছে ঝড়ের তাণ্ডব।*
জানা যায়, বৈরী আবহাওয়ার কারণে হাতিয়া উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। মোবাইলফোনের চার্জ না থাকায় অনেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।
নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা ও স্বেচ্ছাসেবী মো. মাহি ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতে মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে ছিল। সেখানে যা খাবার ছিল তা রাতেই শেষ। সকালে নিজের ভিটেমাটি ও খাবারের জন্য সবাই নিজ বাড়িতে চলে গেছে। অনেকের ঘর বাড়ি ভেসে গেছে। অনেকেই পানিবন্দী হয়ে আছেন।
স্থানীয় মামুনুর রশীদ বলেন, রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলাম। সকালে বাড়ি ফিরে দেখি সব ভেসে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রেও খাবার শেষ।
চানন্দী ইউনিয়নের বাসিন্দা আকবর ছাদেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, রেমালের আঘাতে ও জলোচ্ছ্বাসে চানন্দী ইউনিয়নের থানার হাটসহ নদী তীরবর্তী এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। মানুষের ঘর-বাড়ি আসবাবপত্র জোয়ারে ভেসে গেছে। আমরা স্বেচ্ছাসেবীরা সহযোগিতা করছি। আল্লাহর রক্ষা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই।
হাতিয়ার বাসিন্দা মো. মুজিব বলেন, জোয়ারে ও বাতাসে অধিকাংশ কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হওয়ায় হাতিয়াজুড়ে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এছাড়া হাতিয়ার জনবসতিপূর্ণ চরাঞ্চল চর ঘাসিয়া, ঢালচর, বয়ারচর, সুখচর, নলচিরা, সোনাদিয়া, চর ঈশ্বর ও কেরিং চরের বিস্তৃর্ণ এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে সমগ্র হাতিয়ার প্রায় লক্ষাধিক বাসিন্দা পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বিস্তীর্ণ জনপদে এখন ধ্বংসের চিহ্ন ভেসে উঠেছে।
নোয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল দুর্বল হয়ে পড়েছে। এটি বৃষ্টিপাতের পর স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে আগামীকাল সকাল (২৮ মে) পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে এবং সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশীষ চাকমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোমবার সকাল থেকে নিঝুম দ্বীপসহ অন্যান্য এলাকার পানি কমতে শুরু করলেও এখনো বাতাসের বেগ বৃদ্ধি এবং ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় ঘর-বাড়ি, গাছপালা, ফসলাদি, পুকুর, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্যাদি সংগ্রহ করা যায়নি। হাতিয়ার সঙ্গে বাইরের সব নৌ-যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে এবং গতকাল থেকে হাতিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ রায়হান সুলতান।
যোগাযোগঃ ৭২/৭-৮ মানিকনগর, মুগদা,ঢাকা-১২০৩
মোবাইলঃ +৮৮০৯৬৩৮০৮৯০১৪
Copyright © 2025 দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র. All rights reserved.