ঢাকা ০৬:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ভোমরা স্থলবন্দর প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা হাবিবুর রহমানকে ক্রেস প্রদান সাতক্ষীরায় শহীদ আসিবের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ ও কবর জিয়ারত করে শিবির উঁকি দিচ্ছে ধানের শীষ স্বপ্ন দেখছেন হরিপুরের আমন চাষীরা মানিকগঞ্জে অবৈধ দোকানে দখলদারিত্ব: জনদুর্ভোগ চরমে গাজীপুরে অটো গাড়ি চুরি, স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার জামালপুরে মব সৃষ্টি করে সাংবাদিকের উপর হামলা, হাসপাতালে ভর্তি স্ত্রী কন্যাকে ফিরে পেলেন স্বামী দীপংকর সোনাগাজী উপজেলা পরিষদে ও ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের জামায়াতের প্রার্থীতা ঘোষণা ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার রাউজানে বাবার ২৯৫তম আর্ভির্ভাব উৎসব উপলক্ষে বিশ্বশান্তি গীতাযজ্ঞ অনুষ্ঠিত

যশোরে শাহীন চাকলাদারসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিউজ ডেক্স
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৮:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫ ৬৯ বার পড়া হয়েছে

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারসহ চারজনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। কেশবপুর উপজেলার শহীদ লে. মাসুদ মেমোরিয়াল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মশিয়ার রহমান মঙ্গলবার (৮ জুলাই) যশোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আঞ্জুমান আরা বেগমের আদালতে এই মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, কলেজ ও স্কুলে বিভিন্ন সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে ৮৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা প্রতারণা করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। বিচারক অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী তাহমিদ আকাশ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অপর অভিযুক্তরা হলেন, শাহীন চাকলাদারের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আলমগীর সিদ্দিকী টিটো, আলমগীর সিদ্দিকী টিটোর স্ত্রী শামীমা পারভীন রুমা, রবিউল ইসলাম (মৃত সোবহান গাজীর ছেলে, মাগুরখালী গ্রাম)

মামলার বাদী মশিয়ার রহমান অভিযোগ করেছেন, শাহীন চাকলাদার যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য থাকাকালীন অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। এর মধ্যে নিয়োগ বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য, এবং এমপিওভুক্তকরণসহ বিভিন্ন সুবিধা টাকার বিনিময়ে করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

বাদী জানান, তিনি সেসময় শহীদ লে. মাসুদ মেমোরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ এবং রেজাকাটি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন। এই সুবাদে তিনি দুটি প্রতিষ্ঠানের জন্য বিভিন্ন সুবিধা পেতে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আসামিরা তাকে জানান, কলেজের স্নাতক ও বিএম শাখা এমপিওভুক্তকরণ এবং কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষকদের এমপিও ছাড় করানোর জন্য ৬৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা লাগবে। এছাড়া, স্কুলের মাধ্যমিক শাখার এমপিও আদেশ করিয়ে দেওয়ার জন্য আরও ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়।

শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে বাদী এই প্রস্তাবে রাজি হন এবং তাদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করেন। ২০২০ সালের ২ অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ৩০ আগস্টের মধ্যে কয়েক দফায় আলমগীর সিদ্দিকী টিটোর বাড়িতে বসে শাহীন চাকলাদারসহ আসামিদের হাতে এই টাকা দেওয়া হয়। আসামিরা মেশিন দিয়ে টাকা গুনে গ্রহণ করেন এবং পরে শাহীন চাকলাদারও তা গ্রহণ করেন।

আসামিরা ২০২১ ও ২০২২ সালের মধ্যে কাজগুলো সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ না হওয়ায় বাদী খোঁজখবর নিলে তারা নানা রকম টালবাহানা করেন। একপর্যায়ে তারা জানিয়ে দেন যে, কাজগুলো আর হবে না। এরপর বাদী মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, অভিযুক্ত চারজনই সব টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন। তবে মামলা ও হামলার ভয়ে তিনি আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাননি।

সম্প্রতি ২০ জুন, বাদী টিটো ও তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে টাকা ফেরত চাইলে তারা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন এবং আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসছে বলে বিভিন্ন হুমকি দেন। বাধ্য হয়ে বাদী আদালতে এই মামলা দায়ের করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

যশোরে শাহীন চাকলাদারসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট সময় : ০৮:৫৮:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারসহ চারজনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। কেশবপুর উপজেলার শহীদ লে. মাসুদ মেমোরিয়াল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মশিয়ার রহমান মঙ্গলবার (৮ জুলাই) যশোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আঞ্জুমান আরা বেগমের আদালতে এই মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, কলেজ ও স্কুলে বিভিন্ন সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে ৮৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা প্রতারণা করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। বিচারক অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী তাহমিদ আকাশ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অপর অভিযুক্তরা হলেন, শাহীন চাকলাদারের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আলমগীর সিদ্দিকী টিটো, আলমগীর সিদ্দিকী টিটোর স্ত্রী শামীমা পারভীন রুমা, রবিউল ইসলাম (মৃত সোবহান গাজীর ছেলে, মাগুরখালী গ্রাম)

মামলার বাদী মশিয়ার রহমান অভিযোগ করেছেন, শাহীন চাকলাদার যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য থাকাকালীন অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। এর মধ্যে নিয়োগ বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য, এবং এমপিওভুক্তকরণসহ বিভিন্ন সুবিধা টাকার বিনিময়ে করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

বাদী জানান, তিনি সেসময় শহীদ লে. মাসুদ মেমোরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ এবং রেজাকাটি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন। এই সুবাদে তিনি দুটি প্রতিষ্ঠানের জন্য বিভিন্ন সুবিধা পেতে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আসামিরা তাকে জানান, কলেজের স্নাতক ও বিএম শাখা এমপিওভুক্তকরণ এবং কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষকদের এমপিও ছাড় করানোর জন্য ৬৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা লাগবে। এছাড়া, স্কুলের মাধ্যমিক শাখার এমপিও আদেশ করিয়ে দেওয়ার জন্য আরও ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়।

শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে বাদী এই প্রস্তাবে রাজি হন এবং তাদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করেন। ২০২০ সালের ২ অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ৩০ আগস্টের মধ্যে কয়েক দফায় আলমগীর সিদ্দিকী টিটোর বাড়িতে বসে শাহীন চাকলাদারসহ আসামিদের হাতে এই টাকা দেওয়া হয়। আসামিরা মেশিন দিয়ে টাকা গুনে গ্রহণ করেন এবং পরে শাহীন চাকলাদারও তা গ্রহণ করেন।

আসামিরা ২০২১ ও ২০২২ সালের মধ্যে কাজগুলো সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ না হওয়ায় বাদী খোঁজখবর নিলে তারা নানা রকম টালবাহানা করেন। একপর্যায়ে তারা জানিয়ে দেন যে, কাজগুলো আর হবে না। এরপর বাদী মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, অভিযুক্ত চারজনই সব টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন। তবে মামলা ও হামলার ভয়ে তিনি আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাননি।

সম্প্রতি ২০ জুন, বাদী টিটো ও তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে টাকা ফেরত চাইলে তারা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন এবং আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসছে বলে বিভিন্ন হুমকি দেন। বাধ্য হয়ে বাদী আদালতে এই মামলা দায়ের করেছেন।