মোঃতৌহিদুর রহমান,ক্রাইম রিপোর্টার,যশোর :-
খাজুরা বাজার এবং পার্শবর্তী এলাকায় কয়েক দিন ধরে লোডশেডিং বেড়েছে। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং বাড়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ। ইফতার ও সাহ্রির সময়ও অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ থাকছে না।
প্রচণ্ড গরম আর লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ গ্রামের মানুষ। একদিকে এডিস মশার উৎপাত, অপরদিকে মশারির ভেতর অসহ্য গরম। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কারণে ফ্যান ঘুরছে না। সন্ধ্যা পার হলেই অন্ধকারে ডুবছে গ্রাম।
হাটবাজারগুলোয় নেই আলোর ঝলকানি। সহ্য করতে না পেরে শিশু ও বয়স্কদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। রাতভর না ঘুমিয়ে ছটফট করছেন প্রায় সবাই। গ্রামের হাসপাতালগুলোয়ও লোডশেডিং হচ্ছে ঘণ্টায় ঘণ্টায়। শহরে বিদ্যুৎ না থাকলে আন্দোলনের ভয় থাকে। কিন্তু গ্রামের নিরীহ মানুষ কষ্ট সহ্য করে যাচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে শুধু গ্রাহকই নন, লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ সংশ্লিষ্ট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।
গ্রাহকদের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত তারাও টেলিফোন করে লোডশেডিং নিয়ে কষ্টের কথা পত্রিকায় তুলে ধরার অনুরোধ করছেন। তাদের অভিযোগ-অনেক স্থানে চাহিদার তিনভাগের একভাগ বিদ্যুৎও পাচ্ছেন না। যা পাচ্ছেন, তা দিয়ে শহরের ভিআইপি এবং প্রভাবশালীদের সামাল দিতেই হিমশিম খাচ্ছেন।
দেশের প্রায় সব গ্রামে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) দিনে চাহিদার তুলনায় ৬০ শতাংশ কম বিদ্যুৎ পাচ্ছে। রাত ১০টার পর পরিমাণ আরও কমে। তখন লোডশেডিং পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। কোথাও কোথাও লোডশেডিং হচ্ছে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা। উৎপাদন ও চাহিদা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
সরকারি হিসাবে উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে গড়ে ফারাক মাত্র ৭০ থেকে ১০০ মেগাওয়াট। প্রশ্ন উঠেছে তাহলে এত লোডশেডিং কেন? বিদ্যুৎ তো আর জমা করে রাখা সম্ভব নয়। বিতরণ কোম্পানিগুলোর তথ্য অনুযায়ী, সিস্টেম লসও আগের মতো বেশি নয়। তাহলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে কেন? বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে চরম লুকোচুরি হচ্ছে। যে পরিমাণ উৎপাদন দেখানো হচ্ছে, বাস্তবে সে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
কিংবা যে চাহিদা ধরা হচ্ছে, সেটা বাস্তব নয়। তাদের মতে, উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে নিশ্চয় বড় ধরনের কোনো ঘাপলা আছে। না হলে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য কোনো চক্র বিদ্যুৎ বিতরণ নিয়ে কারসাজি কিংবা ষড়যন্ত্র করছে। অথবা উৎপাদন বেশি দেখিয়ে সিন্ডিকেট কৌশলে ভাগবাঁটোয়ারা করে নিয়ে যাচ্ছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে গ্রামের নিরীহ মানুষকে।
কিন্তু, অসহায় গরিব মানুষগুলোর ঘরে চলছে লোডশেডিং। বিদ্যুতে অভ্যস্ত হওয়া এই মানুষগুলোর বিকল্প না থাকায় পড়ছেন দুর্দশায়। তাই এই দুর্ভোগকে মেনে নিয়ে, সয়ে নিয়ে দিনযাপন করছেন গ্রামাঞ্চলের নিম্নআয়ের মানুষগুলো। তাদের অভিযোগ করার জায়গা নেই, প্রতিবাদ করারও সাহস নেই। লোডশেডিং গ্রামের মানুষের জন্য প্রায় অসহনীয় হয়ে পড়লেও তাদের কথা কেউ ভাবছে না? তারা শুধু অপেক্ষায় থাকেন, বিদ্যুৎ কখন আসবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ রায়হান সুলতান।
যোগাযোগঃ ৭২/৭-৮ মানিকনগর, মুগদা,ঢাকা-১২০৩
মোবাইলঃ +৮৮০৯৬৩৮০৮৯০১৪
Copyright © 2025 দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র. All rights reserved.