ঢাকা ০১:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বাগেরহাটে সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা হরিপুরে সরাসরি গোখরা সাপ দিয়ে ঐতিহ্যবাহী পাতা খেলা দক্ষিণ রাউজানে মহানবমী পূজা উদযাপন ফেনী পৌরসভার উদ্যোগে ১৯টি পূজা মন্ডপে অনুদানের চেক বিতরণ বিজয়া দশমী অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান এবং জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম পশ্চিম গুজরায় জ্বালা কুমারী তরুণ সংঘে উগ্যােগে দুর্গোৎসব উদযাপন না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক গাজীপুরে হাইওয়ে রোডে দেহ ব্যবসার আড়ালে চাঁদাবাজি, এলাকাবাসীর প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি ঝিনাইদহে বাসচাপায় শিশুসহ ২ জন নিহত রাণীশংকৈলে সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

মেডিকেল শিক্ষার্থীর নেতৃত্বে যৌন ব্যবসা, ৭ বছরে আয় শতকোটি

নিজেস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৭:৪০:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪ ৮০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া
ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠতি বয়সী তরুণীদের টার্গেট করে আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি, ট্যালেন্ট হান্টিং ও মডেলিংয়ের নামে বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো। আগ্রহীরা যোগাযোগ করলে কৌশলে তোলা হতো নগ্ন ছবি। এরপর শুরু হতো ব্লাকমেইল। শুধু তাই নয়, নগ্ন ভিডিও কলেও যৌন সম্পর্কে বাধ্য করা হতো। সেগুলোর ভিডিও ধারণ করে অনলাইনে চালানো হচ্ছিল যৌন ব্যবসা।

এসব অসামাজিক কাজের নেতৃত্বে ছিলেন দুই বেসরকারি মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান (২৫) ও তার খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন (২৬)।
দীর্ঘদিন ধরে অতি কৌশলে শতশত তরুণীকে ফাঁদে ফেলে আধুনিক যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করছিল তারা। তাদের কাছ থেকে যেমন টাকা হাতিয়ে নেওয়া হতো, তেমনি তাদের ভিডিও টেলিগ্রাম গ্রুপে শেয়ার করা হতো। সেখানে থাকা থাকা লাখ লাখ দেশি-বিদেশি সাবস্ক্রাইবারদের কাছ থেকেও নেওয়া হতো টাকা। এভাবে চক্রটি গত সাত বছরে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় শতকোটি টাকা।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর চক্রটিকে শনাক্ত করে প্রধানসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার।

গ্রেপ্তাররা হলেন- চক্রের প্রধান ও মেডিকেল শিক্ষার্থী মো. মেহেদী হাসান (২৫) ও তার প্রধান সহযোগী খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন (২৬), মো. জাহিদ হাসান কাঁকন (২৮), তানভীর আহমেদ ওরফে দীপ্ত (২৬), সৈয়দ হাসিবুর রহমান (২৭), শাদাত আল মুইজ (২৯), সুস্মিতা আক্তার ওরফে পপি (২৭) ও নায়না ইসলাম (২৪)।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাজধানী ঢাকা, সাতক্ষীরা, চাঁদপুর ও যশোরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের কাছ থেকে পর্নোগ্রাফি তৈরি ও তরুণীদের ব্ল্যাকমেইলে ব্যবহৃত ১২টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিম কার্ড, ১টি ল্যাপটপ এবং আয়ের টাকা লেনদেনে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও চেক বই জব্দ করা হয়েছে।

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া নামে ফেসবুক আইডি ও পেইজ খুলে ফ্রিল্যান্সিং কাজ, লোভনীয় চাকরি, মডেল বানানো, মেধা অন্বেষণের নামে অল্প বয়সী তরুণীদের কাছ থেকে কৌশলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নিয়ে তা দিয়ে ব্ল‍্যাকমেইলের মাধ্যমে জোরপূর্বক তাদেরকে দেহব্যবসায় নামানোর ভয়ংকর এক চক্রের সন্ধান পায় সিআইডি।
চক্রটি মূলত উঠতি বয়সী তরুণীসহ যেসব তরুণীরা পারিবারিক ভাঙনের শিকার ও আর্থিক সমস্যা রয়েছে তাদের টার্গেট করত। চক্রটি কাজের সুযোগ দেওয়ার নামে ইন্টারভিউতে ডাকত। এরপর তাদের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে সুযোগ দেওয়ার কথা বলে আপত্তিকর ছবি নিতো। প্রাথমিকভাবে কাজে আগ্রহী তরুণীদের চাহিদা মতো টাকা ও প্রয়োজন মেটাতো তারা। এরপর ধীরে ধীরে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করতো তারা।
এই চক্রের প্রধান মেহেদী হাসান। তিনি টঙ্গীর ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। তারই তার খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন মিলে এই চক্রটি গড়ে তুলেছিল তারা। শেখ জাহিদ কল্যাণপুর ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী।
তারা চিকিৎসাবিদ্যার আড়ালে অল্প বয়সী তরুণীদের ফাঁদে ফেলে যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট তৈরি ও টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করতো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

মেডিকেল শিক্ষার্থীর নেতৃত্বে যৌন ব্যবসা, ৭ বছরে আয় শতকোটি

আপডেট সময় : ০৭:৪০:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া
ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠতি বয়সী তরুণীদের টার্গেট করে আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি, ট্যালেন্ট হান্টিং ও মডেলিংয়ের নামে বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো। আগ্রহীরা যোগাযোগ করলে কৌশলে তোলা হতো নগ্ন ছবি। এরপর শুরু হতো ব্লাকমেইল। শুধু তাই নয়, নগ্ন ভিডিও কলেও যৌন সম্পর্কে বাধ্য করা হতো। সেগুলোর ভিডিও ধারণ করে অনলাইনে চালানো হচ্ছিল যৌন ব্যবসা।

এসব অসামাজিক কাজের নেতৃত্বে ছিলেন দুই বেসরকারি মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান (২৫) ও তার খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন (২৬)।
দীর্ঘদিন ধরে অতি কৌশলে শতশত তরুণীকে ফাঁদে ফেলে আধুনিক যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করছিল তারা। তাদের কাছ থেকে যেমন টাকা হাতিয়ে নেওয়া হতো, তেমনি তাদের ভিডিও টেলিগ্রাম গ্রুপে শেয়ার করা হতো। সেখানে থাকা থাকা লাখ লাখ দেশি-বিদেশি সাবস্ক্রাইবারদের কাছ থেকেও নেওয়া হতো টাকা। এভাবে চক্রটি গত সাত বছরে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় শতকোটি টাকা।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর চক্রটিকে শনাক্ত করে প্রধানসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার।

গ্রেপ্তাররা হলেন- চক্রের প্রধান ও মেডিকেল শিক্ষার্থী মো. মেহেদী হাসান (২৫) ও তার প্রধান সহযোগী খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন (২৬), মো. জাহিদ হাসান কাঁকন (২৮), তানভীর আহমেদ ওরফে দীপ্ত (২৬), সৈয়দ হাসিবুর রহমান (২৭), শাদাত আল মুইজ (২৯), সুস্মিতা আক্তার ওরফে পপি (২৭) ও নায়না ইসলাম (২৪)।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাজধানী ঢাকা, সাতক্ষীরা, চাঁদপুর ও যশোরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের কাছ থেকে পর্নোগ্রাফি তৈরি ও তরুণীদের ব্ল্যাকমেইলে ব্যবহৃত ১২টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিম কার্ড, ১টি ল্যাপটপ এবং আয়ের টাকা লেনদেনে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও চেক বই জব্দ করা হয়েছে।

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া নামে ফেসবুক আইডি ও পেইজ খুলে ফ্রিল্যান্সিং কাজ, লোভনীয় চাকরি, মডেল বানানো, মেধা অন্বেষণের নামে অল্প বয়সী তরুণীদের কাছ থেকে কৌশলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নিয়ে তা দিয়ে ব্ল‍্যাকমেইলের মাধ্যমে জোরপূর্বক তাদেরকে দেহব্যবসায় নামানোর ভয়ংকর এক চক্রের সন্ধান পায় সিআইডি।
চক্রটি মূলত উঠতি বয়সী তরুণীসহ যেসব তরুণীরা পারিবারিক ভাঙনের শিকার ও আর্থিক সমস্যা রয়েছে তাদের টার্গেট করত। চক্রটি কাজের সুযোগ দেওয়ার নামে ইন্টারভিউতে ডাকত। এরপর তাদের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে সুযোগ দেওয়ার কথা বলে আপত্তিকর ছবি নিতো। প্রাথমিকভাবে কাজে আগ্রহী তরুণীদের চাহিদা মতো টাকা ও প্রয়োজন মেটাতো তারা। এরপর ধীরে ধীরে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করতো তারা।
এই চক্রের প্রধান মেহেদী হাসান। তিনি টঙ্গীর ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। তারই তার খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন মিলে এই চক্রটি গড়ে তুলেছিল তারা। শেখ জাহিদ কল্যাণপুর ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী।
তারা চিকিৎসাবিদ্যার আড়ালে অল্প বয়সী তরুণীদের ফাঁদে ফেলে যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট তৈরি ও টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করতো।