মোঃ তৌহিদ ইসলাম বাপ্পি
খুলনা দৌলতপুর ক্রাইম রিপোর্টার
মিলার ও রিফাইনারি কোম্পানিগুলোর কারসাজিতে বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে বলে দাবি করেছে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ক্যাব সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন সময় সংবাদকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, বাজারে মিলার ও রিফাইনারি কোম্পানিগুলোর একটি চক্র সয়াবিন তেলের সংকট সৃষ্টিতে পাঁয়তারা করছে। বিশেষ করে ১ লিটার ও ২ লিটারের বোতলজাত তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে এ সংকট সৃষ্টি করতে চাইছেন তারা।
কী কারণে মিলাররা এ ধরনের কারসাজি করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে নাজের বলেন, ঈদের আগেই মিলাররা চেয়েছিলেন লিটার প্রতি সয়াবিন তেলের দাম ১০ টাকা বাড়াতে। তাদের কথা না শুনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সয়াবিন তেলের দাম ৪ টাকা বাড়ানোয় স্বার্থে আঘাত লেগেছে এসব প্রতিষ্ঠানের। সরকারকে চাপ দিতে এবার বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে চাইছেন তারা।
নিজেদের পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করে ক্যাব জানায়, ট্যারিফ কমিশনকে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েই মিলাররা বাড়তি দামে বোতলজাত সয়াবিন তেলে ট্যাগ লাগানো শুরু করে। পরে নিজেদের দাবি অনুযায়ী দাম না বাড়ায়, নাখোশ হয়ে এখন অন্য পথ ধরেছেন তারা। যখনই দাম বাড়ানোর প্রশ্ন ওঠে, তখনই মিলাররা বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দেয়। এবারও সরবরাহ কমিয়ে আরেক দফা দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা।
সরবরাহ কমায় বাজারে কতখানি সংকট সৃষ্টি হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ক্যাব সহ-সভাপতি বলেন, এখনও বাজারে সংকট এতটা তীব্র হয়ে ওঠেনি। তবে যে ধরনের অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ব্যবসায়ীরা আগাচ্ছেন, তাতে করে যে কোনো সময়ে সংকট প্রকট আকার ধারণ করতে পারে বলে শঙ্কা করা যাচ্ছে।
১৮ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাজারে সয়াবিন তেলের খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। বেঁধে দেয়া নতুন দাম অনুযায়ী, বর্তমানে বাজারে লিটার প্রতি খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৪৯ টাকায় এবং বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৭ টাকায়।
সরকার দাম বেঁধে দেয়ার ২ দিন আগে থেকেই তেলের দাম নিয়ে বাজারে ঘোলাটে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ১৬ এপ্রিল বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ১০ টাকা বাড়িয়ে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ১৭৩ টাকায়। এছাড়া বোতলজাত ৫ লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ৮৪৫ টাকায়। আর প্রতি লিটার খোলা পাম তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩২ টাকা।
সেদিন এ ব্যাপারে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত কিছু জানে না। এর দুইদিন পর বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম সমন্বয় করে লিটারপ্রতি ১০ টাকার বদলে ৪ টাকা বাড়ানো হয়।
লিটারে ৬ টাকা দামের হেরফেরের জন্যই মিলার ও রিফাইনারি কোম্পানিগুলো বাজারে চাপ সৃষ্টির জন্য ছক কষছে বলে শঙ্কা করছে ক্যাব। এই কারসাজির অংশ হিসেবেই বাজারে তেলের সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলে ভোক্তা সংগঠনটি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ রায়হান সুলতান।
যোগাযোগঃ ৭২/৭-৮ মানিকনগর, মুগদা,ঢাকা-১২০৩
মোবাইলঃ +৮৮০৯৬৩৮০৮৯০১৪
Copyright © 2025 দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র. All rights reserved.