ঢাকা ০৫:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মনিরামপুরে হতদরিদ্র কৃষকের পোষা গরু চুরি: গরু আনতে গিয়ে খালি রশি হাতে ফিরলেন স্ত্রী, কান্নায় ভেঙে পড়লো পরিবার

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৯:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫ ৮৩ বার পড়া হয়েছে

এমদাদুল হক,ক্রাইম রিপোর্টার মনিরামপুর:-

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ৫ নম্বর হরিদাসকাটি ইউনিয়নের হাজরাইল গ্রামে এক হতদরিদ্র কৃষকের পোষা গরু চুরি হয়েছে। এই চুরির ঘটনায় গোটা পরিবারে নেমে এসেছে চরম হতাশা ও কান্না। শনিবার, ১৮ মে ২০২৫ ইং তারিখে দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে কাটাখালী ব্রিজের পশ্চিম মাথায়।

জানা গেছে, ওই গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম (৫০) একজন হতদরিদ্র কৃষক। সংসারে অর্থনৈতিক অভাব অনটনের মাঝেও খুব যত্ন করে পালন করছিলেন একটি সাদাকালো বাছুর। পরিবারে এই একটি গরুই ছিল একমাত্র সম্বল। গরুটি প্রায় দেড় থেকে দুই বছর বয়সী, সুস্থ সবল এবং বিক্রিযোগ্য হয়ে উঠছিল। সামনে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সেটি বিক্রি করে কিছুটা স্বস্তি ফিরবে—এমন আশায় বুক বেঁধেছিল পরিবারটি।

শনিবার দুপুরে রবিউল ইসলাম তার পোষা গরুটি বাড়ির পাশে কাটাখালী ব্রিজের পশ্চিম পাশে রাস্তার ধারে একটি গাছে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন। এরপর তিনি কিছুক্ষণের জন্য বাড়িতে আসেন। কিছু সময় পর গরুটি বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য তার স্ত্রী সেখানে গেলে দেখতে পান, গরু নেই—শুধু পড়ে আছে খালি রশি। এ দৃশ্য দেখে হতভম্ব হয়ে যান তিনি। খালি হাতে ফিরে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তার চিৎকারে ছুটে আসে আশপাশের মানুষ। এ সময় এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কিছুক্ষণ আগে একটি ইজিবাইকে করে কাউকে ওই জায়গা থেকে গরু নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

রবিউল ইসলামের স্ত্রী চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, “আমরা গরুটা অনেক কষ্টে পালন করছিলাম। বাচ্চাদের মুখে একটু হাসি ফোটাতে চেয়েছিলাম। এখন তো সব শেষ হয়ে গেল। আর কিছুই নেই আমাদের।”

এই ঘটনায় এলাকায় গভীর সমবেদনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবেশীরা জানান, রবিউল ইসলাম একজন সৎ, পরিশ্রমী মানুষ। দিনমজুরির পাশাপাশি গরুটি লালন-পালন করছিলেন একটু স্বচ্ছলতার আশায়। কিন্তু চুরির এই ঘটনায় তাদের সেই স্বপ্ন আজ ভেঙে চুরমার।

এ পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি, তবে পরিবারটি প্রশাসনের কাছে গরুটি ফিরে পেতে সাহায্য কামনা করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

মনিরামপুরে হতদরিদ্র কৃষকের পোষা গরু চুরি: গরু আনতে গিয়ে খালি রশি হাতে ফিরলেন স্ত্রী, কান্নায় ভেঙে পড়লো পরিবার

আপডেট সময় : ০৯:৪৯:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

এমদাদুল হক,ক্রাইম রিপোর্টার মনিরামপুর:-

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ৫ নম্বর হরিদাসকাটি ইউনিয়নের হাজরাইল গ্রামে এক হতদরিদ্র কৃষকের পোষা গরু চুরি হয়েছে। এই চুরির ঘটনায় গোটা পরিবারে নেমে এসেছে চরম হতাশা ও কান্না। শনিবার, ১৮ মে ২০২৫ ইং তারিখে দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে কাটাখালী ব্রিজের পশ্চিম মাথায়।

জানা গেছে, ওই গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম (৫০) একজন হতদরিদ্র কৃষক। সংসারে অর্থনৈতিক অভাব অনটনের মাঝেও খুব যত্ন করে পালন করছিলেন একটি সাদাকালো বাছুর। পরিবারে এই একটি গরুই ছিল একমাত্র সম্বল। গরুটি প্রায় দেড় থেকে দুই বছর বয়সী, সুস্থ সবল এবং বিক্রিযোগ্য হয়ে উঠছিল। সামনে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সেটি বিক্রি করে কিছুটা স্বস্তি ফিরবে—এমন আশায় বুক বেঁধেছিল পরিবারটি।

শনিবার দুপুরে রবিউল ইসলাম তার পোষা গরুটি বাড়ির পাশে কাটাখালী ব্রিজের পশ্চিম পাশে রাস্তার ধারে একটি গাছে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন। এরপর তিনি কিছুক্ষণের জন্য বাড়িতে আসেন। কিছু সময় পর গরুটি বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য তার স্ত্রী সেখানে গেলে দেখতে পান, গরু নেই—শুধু পড়ে আছে খালি রশি। এ দৃশ্য দেখে হতভম্ব হয়ে যান তিনি। খালি হাতে ফিরে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তার চিৎকারে ছুটে আসে আশপাশের মানুষ। এ সময় এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কিছুক্ষণ আগে একটি ইজিবাইকে করে কাউকে ওই জায়গা থেকে গরু নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

রবিউল ইসলামের স্ত্রী চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, “আমরা গরুটা অনেক কষ্টে পালন করছিলাম। বাচ্চাদের মুখে একটু হাসি ফোটাতে চেয়েছিলাম। এখন তো সব শেষ হয়ে গেল। আর কিছুই নেই আমাদের।”

এই ঘটনায় এলাকায় গভীর সমবেদনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবেশীরা জানান, রবিউল ইসলাম একজন সৎ, পরিশ্রমী মানুষ। দিনমজুরির পাশাপাশি গরুটি লালন-পালন করছিলেন একটু স্বচ্ছলতার আশায়। কিন্তু চুরির এই ঘটনায় তাদের সেই স্বপ্ন আজ ভেঙে চুরমার।

এ পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি, তবে পরিবারটি প্রশাসনের কাছে গরুটি ফিরে পেতে সাহায্য কামনা করেছে।