ঢাকা ০৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কালীগঞ্জে শিশু গনধর্ষণে কিশোর গ্যাংয়ের ৩ সদস্য আটক শায়েস্তাগন্জ উপজেলায় সংসদ সদস্য প্রার্থী কাজী মহসিন আহমেদে গণসংযোগ সাতক্ষীরা দেবহাটায় শিক্ষক ও আয়া অনৈতিক কাজে লিপ্ত অবস্থায় আটক শ্যামনগরে যুবদলের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত রাউজানে সনাতনী ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিদ্যার্থী বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত ১১০ জন সদস্য এক কণ্ঠে শপথ নিলেন পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়ার জন্য সাপলেজার কৃতি সন্তান জেরিন তাসনিম অদিতী মেডিকেল পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ন সরকার উৎখাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলকারী গ্রেপ্তার-৮ আনসার-সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে গাজা,নগদ অর্থ উদ্ধার, আটক-১ পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ১১ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ

মনিরামপুরে পুলিশের দ্রুত ও সাহসী অভিযানে ধরা পড়লো বিকৃত মানসিকতার উত্ত্যক্তকারী আশিষ রায়

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০১:৫৬:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫ ৫৮ বার পড়া হয়েছে

ক্রাইম রিপোর্টার মনিরামপুর:

মনিরামপুরে সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে যৌন হয়রানি ও কুরুচিপূর্ণ আচরণের অভিযোগে অবশেষে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সুবলকাটি গ্রামের চা দোকানি আশিষ রায়কে।
মনিরামপুর থানা পুলিশের তৎপরতা ও কঠোর অবস্থানের ফলে শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত আশিষ রায়ের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুবলকাটি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী পায়েল হালদার প্রতিদিন আশিষ রায়ের দোকানের পাশ দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করত। সেই সুযোগকে কু-উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে আশিষ রায় প্রতিনিয়ত পায়েলকে অশালীন কথা বলত, কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত করত এবং নানা সময় চা-বিস্কুট খাওয়ানোর নাম করে দোকানে ডেকে নিত। আশিষ রায় প্রায়ই মেয়েটিকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েও বিব্রত করত। প্রতিবেশী হওয়ায় মেয়েটি বিষয়টি এতদিন সহ্য করলেও, ঘটনার মাত্রা ছাড়িয়ে যায় ১৮ জুলাই ২০২৫ তারিখে।

সে দিন আশিষ রায় কৌশলে পায়েলকে দোকানে ডেকে চা বিস্কুট খাওয়ানোর পর বলে—তার মাথার পাকা চুল তুলে দিতে। মেয়েটি সরল বিশ্বাসে রাজি হলেও, সেই সুযোগে আশিষ রায় তার গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে। সঙ্গে সঙ্গে পায়েল দৌড়ে বাড়ি ফিরে যায় এবং দাদা স্বপন হালদারকে বিস্তারিত জানায়।
পরিবার তাৎক্ষণিকভাবে মনিরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।

থানায় অভিযোগ দায়েরের পর থেকেই অভিযুক্ত আশিষ রায় এলাকা ছেড়ে গা-ঢাকা দেয়। তবে মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বাবলুর রহমানের নির্দেশে শুরু হয় তৎপর অভিযান।
গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৬ জুলাই দুপুর ২টার দিকে আশিষ রায়কে সুবলকাটি এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় মনিরামপুর থানা পুলিশের একটি টিম।

ওসি বাবলুর রহমান বলেন,
স্কুলগামী ছাত্রীরা আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের অগ্রাধিকার। এই ধরনের লম্পট, বিকৃত ও নৈতিকতা বিবর্জিত মানুষেরা সমাজের জন্য হুমকি। আমরা কাউকে ছাড় দেব না। আশিষ রায়ের মতো অপরাধীরা যতই শক্তিশালী হোক, পুলিশের হাত থেকে রেহাই পাবে না।

স্থানীয়রা জানান, আশিষ রায় এর আগেও অনেক মেয়েকে উত্ত্যক্ত করলেও মুখ খুলতে ভয় পেতো পরিবারগুলো। এবার তার মুখোশ খুলে যাওয়ায় এলাকায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে সকলে।

থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলার পর আশিষ রায়কে কোর্টে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনীয় সকল আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

মনিরামপুরে পুলিশের দ্রুত ও সাহসী অভিযানে ধরা পড়লো বিকৃত মানসিকতার উত্ত্যক্তকারী আশিষ রায়

আপডেট সময় : ০১:৫৬:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

ক্রাইম রিপোর্টার মনিরামপুর:

মনিরামপুরে সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে যৌন হয়রানি ও কুরুচিপূর্ণ আচরণের অভিযোগে অবশেষে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সুবলকাটি গ্রামের চা দোকানি আশিষ রায়কে।
মনিরামপুর থানা পুলিশের তৎপরতা ও কঠোর অবস্থানের ফলে শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত আশিষ রায়ের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুবলকাটি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী পায়েল হালদার প্রতিদিন আশিষ রায়ের দোকানের পাশ দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করত। সেই সুযোগকে কু-উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে আশিষ রায় প্রতিনিয়ত পায়েলকে অশালীন কথা বলত, কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত করত এবং নানা সময় চা-বিস্কুট খাওয়ানোর নাম করে দোকানে ডেকে নিত। আশিষ রায় প্রায়ই মেয়েটিকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েও বিব্রত করত। প্রতিবেশী হওয়ায় মেয়েটি বিষয়টি এতদিন সহ্য করলেও, ঘটনার মাত্রা ছাড়িয়ে যায় ১৮ জুলাই ২০২৫ তারিখে।

সে দিন আশিষ রায় কৌশলে পায়েলকে দোকানে ডেকে চা বিস্কুট খাওয়ানোর পর বলে—তার মাথার পাকা চুল তুলে দিতে। মেয়েটি সরল বিশ্বাসে রাজি হলেও, সেই সুযোগে আশিষ রায় তার গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে। সঙ্গে সঙ্গে পায়েল দৌড়ে বাড়ি ফিরে যায় এবং দাদা স্বপন হালদারকে বিস্তারিত জানায়।
পরিবার তাৎক্ষণিকভাবে মনিরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।

থানায় অভিযোগ দায়েরের পর থেকেই অভিযুক্ত আশিষ রায় এলাকা ছেড়ে গা-ঢাকা দেয়। তবে মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বাবলুর রহমানের নির্দেশে শুরু হয় তৎপর অভিযান।
গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৬ জুলাই দুপুর ২টার দিকে আশিষ রায়কে সুবলকাটি এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় মনিরামপুর থানা পুলিশের একটি টিম।

ওসি বাবলুর রহমান বলেন,
স্কুলগামী ছাত্রীরা আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের অগ্রাধিকার। এই ধরনের লম্পট, বিকৃত ও নৈতিকতা বিবর্জিত মানুষেরা সমাজের জন্য হুমকি। আমরা কাউকে ছাড় দেব না। আশিষ রায়ের মতো অপরাধীরা যতই শক্তিশালী হোক, পুলিশের হাত থেকে রেহাই পাবে না।

স্থানীয়রা জানান, আশিষ রায় এর আগেও অনেক মেয়েকে উত্ত্যক্ত করলেও মুখ খুলতে ভয় পেতো পরিবারগুলো। এবার তার মুখোশ খুলে যাওয়ায় এলাকায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে সকলে।

থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলার পর আশিষ রায়কে কোর্টে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনীয় সকল আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।