মনিরামপুরে দুই দিনব্যাপী সনাতনী কবি গানের উৎসব; কবিতলায় ঢল দর্শনার্থীদের
- আপডেট সময় : ০৮:১০:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫ ৫০ বার পড়া হয়েছে

এমদাদুল হক,ক্রাইম রিপোর্টার মনিরামপুর:
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার চাঁপাকোনা গ্রামে সনাতন ধর্মালম্বীদের ঐতিহ্যবাহী কবি গানকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব। প্রতিবছর নিয়মিত আয়োজিত এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে বুধবার সকাল থেকেই কবিতলা এলাকায় হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে। দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধরে রাখা এই কবি গান এখন এলাকাবাসীর প্রাণের উৎসব হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কবি গানের মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন জনপ্রিয় বেশ কয়েকজন কবিয়াল। সুরের টানে, তালের ছন্দে এবং তাৎক্ষণিক বাকপটুতায় সমৃদ্ধ এ পরিবেশনা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করছে। শুধু সনাতন ধর্মালম্বী নয়, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর মানুষও দলবেঁধে এসে উপভোগ করছেন এই প্রাচীন লোকজ সংস্কৃতি।
গ্রাম্য মঞ্চে তৈরি করা হয়েছে আলোকসজ্জা, সাউন্ড সিস্টেম ও খোলা আকাশের নিচে বসার সুব্যবস্থা। চারদিক জুড়ে উৎসবের আমেজ, মানুষের ভিড়, হকারদের ডাক, শিশুদের কোলাহল—সব মিলিয়ে কবিতলা যেন পরিণত হয়েছে এক বিশাল সাংস্কৃতিক মিলনমেলায়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মনিরামপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সুবলকাটি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন। তিনি বলেন, কবি গান বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতির এক জীবন্ত ধারক। এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এমন উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য হাজ্জাজ বিন সোলাইমান। তিনি বলেন, “ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের মিলনস্থল হয়ে উঠেছে এই আয়োজন। এটি আমাদের সমাজে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে।
স্থানীয় প্রবীণদের মতে, অর্ধশতাধিক বছর ধরে কবিতলা এলাকায় এই কবি গানের আয়োজন হয়ে আসছে। সময় বদলালেও মানুষের আগ্রহ বরং আরও বেড়েছে। গ্রামীণ ইতিহাস, মানবিক মূল্যবোধ, সমাজের নানা চিত্র ও হাস্যরস—সবই উঠে আসে কবিয়ালদের তাৎক্ষণিক বাণীতে।
আয়োজক কমিটি জানায়, দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটির নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্বেচ্ছাসেবক এবং স্থানীয় পরিষদের সদস্যরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। দর্শনার্থীদের ভিড় সামাল দিতে বিশেষ পথনির্দেশক ও আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গ্রামীণ সুর, লোকজ গল্প, কবিয়ালদের মুখরোচক উপস্থাপনা এবং মানুষের আন্তরিক অংশগ্রহণে মনিরামপুরের কবিতলা এখন রূপ নিয়েছে এক প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক অভয়ারণ্যে।




















