ঢাকা ০৫:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বিএনপির ১১৩ আসনে প্রার্থী বদলে রেকর্ড: শীর্ষ আলোচিত সর্ব মহলে আগৈলঝাড়ায় সুজন সুশাসনের জন্য নাগরিক সভা অনুষ্ঠিত রাণীশংকৈলে ৬ বছরেরও উদ্বোধন হয়নি মডেল মসজিদ মনিরামপুরে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী ইফতেখার সেলিম অগ্নি — জনগণের আস্থার প্রতীক তৃণমূলে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ঝিনাইদহ-২ আসন শরীকদের ছেড়ে দিলে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে বিএনপি কাঠালিয়ায় বিএনপির নির্বাচনী প্রস্তুতি সভায় গোলাম আজম সৈকত নীলফামারীর ৪টি আসনের মধ্যে ২টিতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ঘোষণা রংপুরের গঙ্গাচড়ায় 18 মাস বয়সের শিশুকন্যা আনহা বলাৎকারের শিকার সোনাগাজীর মুন্সি খুরশিদ আলম বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালনা ও উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত এনামুল হক এনাম সভাপতি ফেনীতে বিএনপি’র তিন আসনের প্রার্থী ঘোষণা

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন হাতের কবজির সাহায্যে লিখা চিলমারীর মিনারা

নিজেস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১২:১৪:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪ ৮৮ বার পড়া হয়েছে

সেলিম চৌধুরী,জেলা প্রতিনিধি,রংপুর:-
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার হাতের কবজির সাহায্যে লিখা মিনারা। ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঐ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনাব মোহাম্মদ রাউফুল আজম খান।

জানা যায়, মিনারার ভর্তির আশংকায় থাকার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী’র নজরে আসলে তিনি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভর্তির ব্যবস্হা নেন। তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি গতকালই শুনেছেন। শুনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার (মিনারা) ভর্তির ব্যবস্হা করতে বলি এবং গতকাল (২১ অক্টোবর) ভর্তি সম্পন্ন হয়েছে।

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার কাঁচকোল গ্রামের দক্ষিণ বাঁধ এলাকার বাসিন্দা দিন মজুর মোঃ রফিকুল ইসলামের মেয়ে মিনারা’র জন্ম থেকেই দুই হাতের কোনো আঙুল নেই। তবুও প্রবল ইচ্ছা শক্তি ও মনোবল নিয়ে হাতের কবজির সাহায্যে লিখে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেন তিনি। মায়ের মৃত্যুর পর নিদারুণ কষ্টে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয় মিনারাকে। দুই বোনের মধ্যে মিনারা ছোট। দুই হাতের আঙুল না থাকলেও তিনি কবজির সাহায্যে লিখে সব ধাপ পেরিয়ে গত ২০২২ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন। এইচএসসি পাশ করার পর কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে অনার্সে ভর্তি হন তিনি। তবে মিনারার স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে দ্বিতীয় বার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে এবার ভর্তির সুযোগ পেলেন মিনারা।

জানা যায়, মায়ের মৃত্যুর পর তার খালাকে বিয়ে করেন বাবা রফিকুল ইসলাম। সবসময় সংসারে অভাব লেগেই থাকে মিনারাদের। একে একে ৭ বার নদী ভাঙ্গনের শিকার হতে হয় তাদের। বাবা দিনমজুর, দিনে আনে দিনে খায় অবস্থা।
আর শারীরিক ভাবে মিনারা স্বাভাবিক থাকলেও দুই হাতে কোনো আঙুল নেই মিনারা’র। কবজির সাহায্যে লিখে এখন পর্যন্ত পড়াশোনা চালিয়ে আসছেন তিনি। এদিকে বার বার নদী ভাঙ্গনের ফলে পাউবো’র বাঁধে আশ্রয় নিয়েছিলেন মিনারার পরিবার। কিন্তু হঠাৎ পাউবোর বাঁধে আশ্রিতদের বাড়ি ভেঙে দিয়েছে পাউবো কর্তৃপক্ষ। ফলে দিশাহারা হয়ে পড়েছে দিনমজুর বাবা রফিকুল ইসলাম। অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়ে পরিবারসহ কোনরকমে দিনকাল যাচ্ছে তাদের। এখন ছোট মেয়ে মিনারার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া নিয়েও টেনশনে আছেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন হাতের কবজির সাহায্যে লিখা চিলমারীর মিনারা

আপডেট সময় : ১২:১৪:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

সেলিম চৌধুরী,জেলা প্রতিনিধি,রংপুর:-
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার হাতের কবজির সাহায্যে লিখা মিনারা। ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঐ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনাব মোহাম্মদ রাউফুল আজম খান।

জানা যায়, মিনারার ভর্তির আশংকায় থাকার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী’র নজরে আসলে তিনি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভর্তির ব্যবস্হা নেন। তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি গতকালই শুনেছেন। শুনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার (মিনারা) ভর্তির ব্যবস্হা করতে বলি এবং গতকাল (২১ অক্টোবর) ভর্তি সম্পন্ন হয়েছে।

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার কাঁচকোল গ্রামের দক্ষিণ বাঁধ এলাকার বাসিন্দা দিন মজুর মোঃ রফিকুল ইসলামের মেয়ে মিনারা’র জন্ম থেকেই দুই হাতের কোনো আঙুল নেই। তবুও প্রবল ইচ্ছা শক্তি ও মনোবল নিয়ে হাতের কবজির সাহায্যে লিখে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেন তিনি। মায়ের মৃত্যুর পর নিদারুণ কষ্টে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয় মিনারাকে। দুই বোনের মধ্যে মিনারা ছোট। দুই হাতের আঙুল না থাকলেও তিনি কবজির সাহায্যে লিখে সব ধাপ পেরিয়ে গত ২০২২ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন। এইচএসসি পাশ করার পর কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে অনার্সে ভর্তি হন তিনি। তবে মিনারার স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে দ্বিতীয় বার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে এবার ভর্তির সুযোগ পেলেন মিনারা।

জানা যায়, মায়ের মৃত্যুর পর তার খালাকে বিয়ে করেন বাবা রফিকুল ইসলাম। সবসময় সংসারে অভাব লেগেই থাকে মিনারাদের। একে একে ৭ বার নদী ভাঙ্গনের শিকার হতে হয় তাদের। বাবা দিনমজুর, দিনে আনে দিনে খায় অবস্থা।
আর শারীরিক ভাবে মিনারা স্বাভাবিক থাকলেও দুই হাতে কোনো আঙুল নেই মিনারা’র। কবজির সাহায্যে লিখে এখন পর্যন্ত পড়াশোনা চালিয়ে আসছেন তিনি। এদিকে বার বার নদী ভাঙ্গনের ফলে পাউবো’র বাঁধে আশ্রয় নিয়েছিলেন মিনারার পরিবার। কিন্তু হঠাৎ পাউবোর বাঁধে আশ্রিতদের বাড়ি ভেঙে দিয়েছে পাউবো কর্তৃপক্ষ। ফলে দিশাহারা হয়ে পড়েছে দিনমজুর বাবা রফিকুল ইসলাম। অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়ে পরিবারসহ কোনরকমে দিনকাল যাচ্ছে তাদের। এখন ছোট মেয়ে মিনারার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া নিয়েও টেনশনে আছেন তিনি।