ঢাকা ০৮:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
এলাকার প্রভাবশালী নেতার কারণে বলি হতে যাচ্ছে নবদম্পতির নতুন জীবন মাদারগঞ্জে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন বাতিলের দাবীতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল  সাতক্ষীরায় এক নারীকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ, আদালতের নির্দেশে সদর থানায় মামলা জীবননগর থানাধীন শাহাপুর পুলিশ ক্যাম্প কর্তৃক মাদক বিরোধী অভিযানে ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার গ্রেফতার-০১জন চাঞ্চল্যকর অপহরণ পলাতক আসামী গ্রেফতার: ভিকটিম উদ্ধার রাণীশংকৈলে বৈরী আবহাওয়ার কারণে শাপলা রানীর পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে দেরী হয়ায় পরীক্ষা দেওয়া হলো না ঝিনাইদহে বিনামূল্যে পাট বীজ ও সার পেলেন ৮’শত কৃষক জাতীয়তাবাদী তরুণদল রংপুর বিভাগীয় পূর্ব কমিটি বিলুপ্তি ও নতুন কমিটির অনুমোদন সম্প্রীতির কালিগঞ্জ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন কালিগঞ্জবাসী কৃষিগুচ্ছের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন বাকৃবির, পরীক্ষা আগামী শনিবার

বুটেক্সে সিনিয়র-জুনিয়রের কোন্দলের জেড়ে আহত শিক্ষার্থী ও ভাঙচুর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৪:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪ ৫০ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:-

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) সৈয়দ নজরুল ইসলাম হলে ৬০১ নং রুমে ৪৬তম ব্যাচ কর্তৃক ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাকে জড়িয়ে চেয়ার, খাটের মশারীর রড দিয়ে চারজনকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া যায়। আহত শিক্ষার্থীকে তৎক্ষণাৎ তেজগাঁওয়ের শমরিতা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

অভিযোগ অনুযায়ী, সিনিয়র-জুনিয়রদের পূর্বের ক্রোন্দলের জেড়ে বৃহস্পতিবার (২৪ মে) মধ্যরাত ১ ঘটিকায় হলের ৬০১ নং রুমে মারামারির ঘটনা ঘটে। রুমটিতে বৃহত্তর ময়মনসিংহের পাঁচজন শিক্ষার্থী থাকতো। তারা হলেন ৪৭তম ব্যাচের জনি, সাকিব, শাফি, মাহি, শাহেদ। সৈয়দ নজরুল ইসলাম হল ও জিএমএজি ওসমানী হলের ৪৬তম ব্যাচের প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী তাদেরকে ‘গেস্টরুমে’ নেওয়ার জন্য আসে। রুমে শিক্ষার্থীরা গেস্টরুমে যেতে অস্বীকৃতি জানালে ৭/৮ জন রুমের ভেতর এসে তাদেরকে জোরপূর্বক গেস্টরুমে নিতে চাইলে বাকবিতন্ডায় জড়ায়। এতে ৪৬তম ব্যাচের রেদোয়ান, শাকিল, নিয়াজ, ইমন, রাইসুল, ইমরান, আদনান, প্রাণ মারামারি শুরু করে।

উক্ত রুমের আহত শিক্ষার্থীরা বলেন, চলমান সেমিস্টার ফাইনালের প্রস্তুতির জন্য আমরা পড়ালেখা করছিলাম। রাত ১ ঘটিকার দিকে ৪৬তম ব্যাচের রেদয়ানুল হকসহ অনেকজন সিনিয়র রুমের দরজায় এসে ধাক্কা দেয়। তারা আমাদের গেস্টরুমের জন্য তৈরি হয়ে রুম থেকে বের হতে বলে। হলে গেস্টরুম জাতীয় যেকোনো ধরনের র‍্যাগিং কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় আমরা গেস্টরুমে যেতে অস্বীকৃতি জানাই ৷ এতে সিনিয়ররা আমাদের রুমের ভেতরে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা আমাদের কাপড় ধরে টেনে আমাদের রুম থেকে বের করার চেষ্টা করে। আমরা বাধা দিলে এক পর্যায়ে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা শুরু করে। আমাদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হয়, রুমে থাকা বেডের লোহার স্ট্যান্ড খুলে রুমমেট মাহির পায়ে আঘাত করে। ফলে তার একটি পা কেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। অন্য একজন রুমমেট জনির বুকে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করায় সেখানে কেটে যায়। রুমে অবস্থানকারী বাকী দুজন সাকিব ও শাফীকে চেয়ার দিয়ে আঘাত করা হয়। অমানবিক নির্যাতনের পর সিনিয়ররা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন।

অভিযুক্তদের মধ্যে রেদোয়ানুল হক বলেন, আগের দিন জুনিয়র আমার গায়ে হাত তুলে। এতে অলমোস্ট হলের যারা জুনিয়র আছে তারা আমার সাথে মজা নেয় যে আমি জুনিয়রের হাতে মার খেয়েছি। আমরা রুমে গেছিলাম তাদের সাথে কথা বলতে। ৪৬তম ব্যাচের সবাই আসছিলো সাথে। রুমে যারা ছিল তাদেরকে ডাকার পরে আসতেছিলো না। তখন রুমে থাকা শাহেদ ছুরি বের করে। জুনিয়রের হাতে ছুরি দেখে চিল্লাচিল্লি শুরু হয়। পরে আমরা রুমে ঢোকায় তারা ধাকাধাক্কি করে। এতে দুইপক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তারাও আমাদেরকে খাটের লোহা দিয়ে মারার চেষ্টা করে। ইন্ডিভিজুয়াল কাউকে টার্গেট করে মারা হয় নাই।

তিনি আরও বলেন, ঘটনায় আমাকে প্রধান আসামী করা হইছে। জুনিয়রের হাতে আমি মার খেয়েছি। মার খেয়ে চুপ থাকলে এমন কিছু আর হইতো না। আর ঘটনায় শাহেদ যদি ছুরি বের না করতো এমন কিছুই হইতো না।

ছুরি বের করা নিয়ে শাহেদ বলেন, ছুরি দেখানোর বিষয়টি মিথ্যা। আমি কাউকে ছুরি দেখাই নি। তারা এই হামলার দায় এড়ানোর জন্য বা ঘটনাটি অন্যদিকে নেওয়ার জন্য এরূপ অভিযোগ করে। রুমে আমরা কেবল পাঁচজন ছিলাম অথচ তারা সংঘবদ্ধভাবে আমাদের জোরপূর্বক গেস্টরুমে নেয়ার চেষ্টা করে এবং আমরা যেতে মানা করায় আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি এবং মারামারি শুরু করে।

ঘটনার আলোকে সকাল থেকে সৈয়দ নজরুল ইসলাম হলে হল প্রশাসন অভিযুক্ত ও আহত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে। এ নিয়ে হল প্রভোস্ট ড. মো. মাহবুবুর রহমান ঘটনা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন হবে জানান এবং তদন্ত কমিটির রিপোর্টের আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

বুটেক্সে সিনিয়র-জুনিয়রের কোন্দলের জেড়ে আহত শিক্ষার্থী ও ভাঙচুর

আপডেট সময় : ০৫:৪৪:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার:-

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) সৈয়দ নজরুল ইসলাম হলে ৬০১ নং রুমে ৪৬তম ব্যাচ কর্তৃক ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাকে জড়িয়ে চেয়ার, খাটের মশারীর রড দিয়ে চারজনকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া যায়। আহত শিক্ষার্থীকে তৎক্ষণাৎ তেজগাঁওয়ের শমরিতা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

অভিযোগ অনুযায়ী, সিনিয়র-জুনিয়রদের পূর্বের ক্রোন্দলের জেড়ে বৃহস্পতিবার (২৪ মে) মধ্যরাত ১ ঘটিকায় হলের ৬০১ নং রুমে মারামারির ঘটনা ঘটে। রুমটিতে বৃহত্তর ময়মনসিংহের পাঁচজন শিক্ষার্থী থাকতো। তারা হলেন ৪৭তম ব্যাচের জনি, সাকিব, শাফি, মাহি, শাহেদ। সৈয়দ নজরুল ইসলাম হল ও জিএমএজি ওসমানী হলের ৪৬তম ব্যাচের প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী তাদেরকে ‘গেস্টরুমে’ নেওয়ার জন্য আসে। রুমে শিক্ষার্থীরা গেস্টরুমে যেতে অস্বীকৃতি জানালে ৭/৮ জন রুমের ভেতর এসে তাদেরকে জোরপূর্বক গেস্টরুমে নিতে চাইলে বাকবিতন্ডায় জড়ায়। এতে ৪৬তম ব্যাচের রেদোয়ান, শাকিল, নিয়াজ, ইমন, রাইসুল, ইমরান, আদনান, প্রাণ মারামারি শুরু করে।

উক্ত রুমের আহত শিক্ষার্থীরা বলেন, চলমান সেমিস্টার ফাইনালের প্রস্তুতির জন্য আমরা পড়ালেখা করছিলাম। রাত ১ ঘটিকার দিকে ৪৬তম ব্যাচের রেদয়ানুল হকসহ অনেকজন সিনিয়র রুমের দরজায় এসে ধাক্কা দেয়। তারা আমাদের গেস্টরুমের জন্য তৈরি হয়ে রুম থেকে বের হতে বলে। হলে গেস্টরুম জাতীয় যেকোনো ধরনের র‍্যাগিং কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় আমরা গেস্টরুমে যেতে অস্বীকৃতি জানাই ৷ এতে সিনিয়ররা আমাদের রুমের ভেতরে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা আমাদের কাপড় ধরে টেনে আমাদের রুম থেকে বের করার চেষ্টা করে। আমরা বাধা দিলে এক পর্যায়ে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা শুরু করে। আমাদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হয়, রুমে থাকা বেডের লোহার স্ট্যান্ড খুলে রুমমেট মাহির পায়ে আঘাত করে। ফলে তার একটি পা কেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। অন্য একজন রুমমেট জনির বুকে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করায় সেখানে কেটে যায়। রুমে অবস্থানকারী বাকী দুজন সাকিব ও শাফীকে চেয়ার দিয়ে আঘাত করা হয়। অমানবিক নির্যাতনের পর সিনিয়ররা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন।

অভিযুক্তদের মধ্যে রেদোয়ানুল হক বলেন, আগের দিন জুনিয়র আমার গায়ে হাত তুলে। এতে অলমোস্ট হলের যারা জুনিয়র আছে তারা আমার সাথে মজা নেয় যে আমি জুনিয়রের হাতে মার খেয়েছি। আমরা রুমে গেছিলাম তাদের সাথে কথা বলতে। ৪৬তম ব্যাচের সবাই আসছিলো সাথে। রুমে যারা ছিল তাদেরকে ডাকার পরে আসতেছিলো না। তখন রুমে থাকা শাহেদ ছুরি বের করে। জুনিয়রের হাতে ছুরি দেখে চিল্লাচিল্লি শুরু হয়। পরে আমরা রুমে ঢোকায় তারা ধাকাধাক্কি করে। এতে দুইপক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তারাও আমাদেরকে খাটের লোহা দিয়ে মারার চেষ্টা করে। ইন্ডিভিজুয়াল কাউকে টার্গেট করে মারা হয় নাই।

তিনি আরও বলেন, ঘটনায় আমাকে প্রধান আসামী করা হইছে। জুনিয়রের হাতে আমি মার খেয়েছি। মার খেয়ে চুপ থাকলে এমন কিছু আর হইতো না। আর ঘটনায় শাহেদ যদি ছুরি বের না করতো এমন কিছুই হইতো না।

ছুরি বের করা নিয়ে শাহেদ বলেন, ছুরি দেখানোর বিষয়টি মিথ্যা। আমি কাউকে ছুরি দেখাই নি। তারা এই হামলার দায় এড়ানোর জন্য বা ঘটনাটি অন্যদিকে নেওয়ার জন্য এরূপ অভিযোগ করে। রুমে আমরা কেবল পাঁচজন ছিলাম অথচ তারা সংঘবদ্ধভাবে আমাদের জোরপূর্বক গেস্টরুমে নেয়ার চেষ্টা করে এবং আমরা যেতে মানা করায় আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি এবং মারামারি শুরু করে।

ঘটনার আলোকে সকাল থেকে সৈয়দ নজরুল ইসলাম হলে হল প্রশাসন অভিযুক্ত ও আহত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে। এ নিয়ে হল প্রভোস্ট ড. মো. মাহবুবুর রহমান ঘটনা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন হবে জানান এবং তদন্ত কমিটির রিপোর্টের আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।