বিশ্বের সেরা জুলুসে জনস্রোতে চট্টগ্রাম পৌনে ১কোটি জনতার রেকর্ড

- আপডেট সময় : ১০:৪১:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৮ বার পড়া হয়েছে

মোহাম্মদ মাসুদ:চট্টগ্রামের শীর্ষ আলোচিত দেশ বিশ্বে সারা জাগানো বর্ণাঢ্য জমকানো নানা আনুষ্ঠানিকতা আয়োজনে বিশ্বের সেরা জুলুস পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন পৌনে ১কোটির জনস্রোতের জনতার ঢলে লোকে লোকারণ্য সারা শহর জুড়ে। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হলো বিশ্বের বৃহত্তম মিলাদ শোভাযাত্রা ‘জশনে জুলুস’। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে লাখো মানুষ নগরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুরাদপুর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সমবেত হন। তবে এই প্রথম ইউট্রানের সময় নিয়ন্ত্রণহীন জুলুসের র্যালীর প্রচন্ড ভিড়ে হিটস্ট্রোকে পদতলিত হয়ে দুইজনের লোমহর্ষক মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। যা অনাকাঙ্ক্ষিত নজিরবিহীন রেকর্ড।
সকাল ৯টায় আলমগীর খানকাহ থেকে যাত্রা শুরু করে জুলুসটি নগরের বিবিরহাট, মুরাদপুর, ষোলোশহর দুই নম্বর গেট, জিইসি এলাকা প্রদক্ষিণ করে একই পথে ফিরে আসে মাদরাসা মাঠে। সেখানে মাহফিল, জোহর নামাজ ও দেশ-জাতির সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
শোভাযাত্রা চলাকালে নারায়ে তাকবির ‘আল্লাহু আকবর’, নারায়ে রেসালত ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ (সা.)’সহ নানা স্লোগান, হামদ, নাতে রাসূল ও দরুদ পাঠে প্রকম্পিত হয় নগরীর আকাশ-বাতাস।
আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের উদ্যোগে এবং গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের সহযোগিতায় আয়োজিত এ জুলুসে নেতৃত্ব দেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ)। বিশেষ অতিথি ছিলেন শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ (মা.জি.আ) ও সৈয়্যদ মুহাম্মদ মেহমুদ আহমদ শাহ্ (মা.জি.আ)।
শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ প্রশাসন ও নির্ধারিত স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করেন। আয়োজকরা জানান, শরিয়ত সম্মত পরিবেশ বজায় রাখতে ড্রাম বাজানো, নারীর অংশগ্রহণ ও খাবার নিক্ষেপ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আনজুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, রাসুলের (সা.) আগমনের পনেরশ’ বছর পূর্তি এ বছর। একই সঙ্গে আনজুমান ট্রাস্ট শতবর্ষে পদার্পণ করেছে। বিশ্বের বৃহত্তম মিলাদ শোভাযাত্রা হিসেবে খ্যাত এ জুলুস এখন চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার জানান, ১৯৭৪ সালের ১২ রবিউল আউয়াল চট্টগ্রামে প্রথম জশনে জুলুসের সূচনা হয়। গাউসে জামান আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহের (রহ.) দিকনির্দেশনায় বলুয়ারদীঘি পাড় খানকাহ শরিফ থেকে আনজুমান সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে এসে শেষ হয়েছিল প্রথম আয়োজন।
উল্লেখ্য : জুলুসের ভিড়ের চাপে দুপুরে প্রচন্ড গরমের কারণে হিটস্ট্রকে পদতলিত পৃষ্ঠ হয়ে প্রথমে পটিয়া নিবাসী এয়াকুব (৫৫) পরে আর একজন কিশোর নগরীর কালামিয়া বাজার নিবাসী সাইফুল ইসলাম (১৩) দুজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে গভীর মর্মাহত শোকাহত সমবেদনা প্রকাশ করেন জুলুস ময়দানে অংশগ্রহণকারী জনতা, আয়োজনকারী,নিহতের পরিবার স্বজন সর্বস্তরের জনতা দেশবাসী সকল। বর্তমানে আহত একজন চসিক হাসপাতালে আইসিওতে ও দশজন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। যার দুঃসংবাদে সোশ্যাল মিডিয়া গণমাধ্যমে সংবাদে মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সমালোচিত হয় সকল মানুষের মুখে মুখে। জুলুসে অংশ নেওয়া সর্বস্তরের জনতার মাঝে। অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু নেতিবাচক আলোচনায় শীর্ষ সম্মেলচিত হয় সারা দেশজুড়ে।
আর কোন সন্তান বাবা ভাইয়ের কারো মৃত্যু নয়। সাবধান সতর্কতায় নিজ দায়িত্বে নিরাপত্তায় হোক প্রতিটি মানুষের জীবন ও ভুবন। পূর্ণশৃঙ্খলায় হোক জুলুস রেলি সকল আনুষ্ষানিকতা। নিরাপদ সুন্দর শান্তিময় হোক সকল ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠান সকল আয়োজন।