মাসুদুল ইসলাম মাসুদ,চট্টগ্রাম বিশেষ প্রতিনিধি
কথায় আছে একটি দূর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না।নিয়তির নির্মম পরিহাস। ফুফুর জামাইয়ের হাতে মেহেদী দিতে বরের বাড়িতে যাচ্ছে তিন ভাইপো। আপন ভাইপো না হলে পাশাপাশি ঘর বা সবাই পাশাপাশি। রাত নয়টায় ফুফুর নতুন বরের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে মেহেদীর রাঙ্গানোর সরঞ্জাম কিন্তু না নিয়তির নির্মম পরিহাস নিজেরাই তার পর পরেই মেহেদীর লাল রঙ্গে রক্তে শরীর রঞ্জিত হয়ে গেল। বলছিলাম ফটিকছড়ির দক্ষিণ অঞ্চলের আজাদী বাজারে গতকাল রাত ৯ টায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার কথা। যে ঘটনায় ১৪ বছরের এক টগবগে যুবক চলে গেল পরপারে। গিলে খেল সড়ক। কালো রাজপথ রঞ্জিত হল লাল রঙ্গে। ফুল হাতে দাঁড়িয়ে থাকা সেই ফুলের মত কে কেড়ে নিল একটি বাইক এক্সিডেন্ট। সময় তখন রাত ৯ টা। আজাদী বাজার ক্রস করে দক্ষিণ দিকে হক স্কয়ার ক্লাব পেরিয়ে একটু সামনে গেলে মেহেদী দিয়ে ফেরার পথে তিন বন্ধুর পালসার বাইকের সামনে বাইসাইকেল এসে যায়। বাইকের পিছন হতে দুজন ছিটকে পরে যায় রাস্তায়। মাথায় প্রচন্ড আঘাত লাগে দু জনের। ঘটনাস্থল হতে জে কে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চেকআপ করার পর ডাক্তার বলে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে যেতে। হাসপাতালে পৌঁছে একজন কে মৃত ঘোষণা করে। অপর জন আহত রাহাত গুরুতর অবস্থায় এখনো আছে। হাসপাতালের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে নাজিব এর লাশ নিয়ে রাত ১১ টার দিকে গ্রামের দিকে রওনা হয় স্বজনরা। বাড়ির আঙ্গিনায় সাজানো আছে মেহেদীর প্যান্ডেল। আর সেই ডেকোরশন করা প্যান্ডেলে ফ্রীজবাহী গাড়িতে শুয়ে আছে নাজিবের নিথর দেহ। নাজিব ধর্মপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডস্থ আলহাজ্ব কুব্বাত আলী মিয়া মাষ্টারের বাড়ির নিবাসী প্রবাসী কুতুবউদ্দিনের ছেলে। নাজিবের বয়স ছিল ১৫ বছর। সেই একটি মাদ্রাসার ৯ শ্রেণির ছাত্র। সেই হোস্টেলেই থাকত। ফুফুর বিয় উপলক্ষ্যে ২ দিন ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছে। আর ঐ দিকে ছেলের মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংবাদ শুনে মধ্যপ্রাচ্য হতে রাতের একটি ফ্লাইটে করে দেশে ফিরেন নাজিব এর বাবা আহত দুইজনের মধ্যে একজন জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র ধর্মপুর জুনাহির বাপের বাড়ির মোহাম্মদ আলীর পুত্র মোহাম্মদ রাহাত (১৫)। আরেক জন হলো জুনাহির বাপের বাড়ির আইয়ুব আলীর ছেলে হাফেজ মোহাম্মদ মাহিদুল ইসলাম। আজ দুপুর ২.৩০ মিনিটে নাজিবের বাবার উপস্থিতিতে শত মানুষের উপস্থিতিতে নাজিবের জানাজার নামাজ ও দাফন সম্পন্ন হয়। পুরো এলাকা, আত্মীয় স্বজন, শিক্ষক, পাড়া প্রতিবেশীসহ সকলে শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে। কি হতে কি হয়েছে শুধু এটাই একটি কথা। শোকের সাগরে ভাসছে নাজিবের পুরো পরিবার। নির্বাক, বাকরুদ্ধ হয়ে ছেলের কবরের পাশে বসে আছেন প্রবাস ফেরত বাবা কুতুবউদ্দিন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ রায়হান সুলতান।
যোগাযোগঃ ৭২/৭-৮ মানিকনগর, মুগদা,ঢাকা-১২০৩
মোবাইলঃ +৮৮০৯৬৩৮০৮৯০১৪
Copyright © 2025 দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র. All rights reserved.