বাহরুল মাহীত বারমুডা ট্রায়াঙ্গল:- নিঃশব্দ স্রোতে হারিয়ে যাওয়া এক গোলকধাঁধা

- আপডেট সময় : ১০:২৯:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫ ৪৬ বার পড়া হয়েছে

গালিব খাঁন, নিজস্ব সংবাদদাতা:-
আকাশ থেকে সমুদ্রের দিকে তাকালে যে নীল গভীরতা চোখে পড়ে, সেখানে কী শুধু জলই আছে?না।কিছু নিঃশ্বাস, কিছু না-ফেরা প্রস্থান, একটি অদৃশ্য অবস্থান আর অস্পষ্ট কান্না সেখানে অদৃশ্য ঢেউয়ের মত বয়ে চলে। এই ঢেউয়ের নাম—বারমুডা ট্রায়াঙ্গল।
ফ্লোরিডা, বারমুডা, আর পুয়ের্তো রিকোর মাঝখানে আঁকা সেই অদৃশ্য ত্রিভুজটিকে স্থানীয় নাবিকেরা এক নামে ডাকেন: বাহরুল মাহীত—অর্থাৎ “সমুদ্রের গভীরতা।”
কিন্তু এই গভীরতা কি কেবল ভূগোলের? নাকি এই গভীরতা সময়, স্মৃতি আর রহস্যে আরও গভীর?
১৯১৮ সাল।
ইউএসএস সাইক্লোপস।
৩০৯ জন মানুষ, বিশাল এক লোহার দানবের পেটে চেপে সমুদ্র পাড়ি দিচ্ছিল। তারপর—কিছুই না। না কোনো সংকেত, না কোনো ধ্বংসাবশেষ।
গেল কোথায় তারা?
নাসার উপগ্রহচিত্র আর ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে—এই নিখোঁজ হওয়ার পেছনে থাকতে পারে প্রকৃতিরই হাত।
বিশাল ঢেউ, হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তন, এমনকি সমুদ্রতলের মিথেন গ্যাসের হঠাৎ বিস্ফোরণ—সবই বাস্তব।
লন্ডনের ন্যাশনাল ওশেনিক সেন্টার জানায়, বারমুডা অঞ্চলে এমন বিশাল ঢেউ সৃষ্টি হতে পারে যার উচ্চতা ৩০ মিটার—একটি দশতলা ভবনের সমান।
এমন ঢেউ আসতে পারে কোনো পূর্ব সংকেত ছাড়াই।
এদিকে “গাল্ফ স্ট্রিম” নামক প্রবল স্রোত এখানে আবহাওয়ার আচরণকে করে তোলে চূড়ান্ত অনিশ্চিত।
তাহলে কি সবটাই ব্যাখ্যায় মিলে যায়?
না, সবটা নয়।
অনেক কাহিনী এখনো অমীমাংসিত।
কোনো পাইলটের শেষ কথাগুলো, কোনো জাহাজের শেষ সিগন্যাল—সবই যেন এক নিঃশব্দ করুণ গীত।
আর এই করুণ গীতেই বারবার ফিরে আসে প্রশ্ন—“সবটাই কি কাকতালীয়?”
আমাদের ভেতরের বারমুডা।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল শুধু একটা জায়গা নয়।
এটা এক প্রতীক।
আমাদের অজানা ভয়, হারানোর শঙ্কা আর রহস্যকে জানতে চাওয়ার সেই চিরন্তন তৃষ্ণা।
আমরা যারা নিরাপদ ভূখণ্ডে দাঁড়িয়ে আছি, তারা হয়তো কখনো বুঝবো না সেসব মানুষদের আতঙ্ক যারা ‘ভেসে যাওয়া’র আগে মুহূর্তে মায়ের মুখ মনে করে, অথবা ছোট্ট ছেলের হাতের উষ্ণতা।
পরিশেষে বলা যায়,বাহরুল মাহীত আজো গিলছে সময়, মানুষ, আর মস্ত বড়ো প্রশ্ন।
তবে তার গভীরতা আমাদের শেখায়—রহস্যে ডুবে যাওয়ার আগেই, জ্ঞান আর অনুসন্ধান দিয়ে তাকে আলোকিত করতে হয়।
কারণ, প্রতিটি হারিয়ে যাওয়া নামের পেছনে থাকে একটি জীবন, একটি গল্প।
আর গল্পগুলো হারিয়ে গেলে ইতিহাস কাঁদে—নিঃশব্দে।
US Navy Archive on USS Cyclops disappearance (1918):
2. NASA Satellite Analysis & Ocean Mapping:
বারমুডা অঞ্চলের আবহাওয়া ও সমুদ্রস্রোত বিশ্লেষণ সংক্রান্ত উপগ্রহচিত্র গবেষণা।
🔗 NASA Earth Observatory
3. Florida International University (FIU) – গবেষণা ও বিশ্লেষণ:
বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের গ্যাস বিস্ফোরণ ও সমুদ্রতলের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ।
🔗 FIU News – Bermuda Triangle Mystery
4. BBC Science Focus Magazine:
বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের ভৌগোলিক এবং আবহাওয়াজনিত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার প্রতিবেদন।
🔗 BBC Science Focus
5. National Oceanography Centre, UK:
সমুদ্রের বিশাল ঢেউ (rogue waves) সম্পর্কিত গবেষণা ও তথ্য।
🔗 National Oceanography Centre, UK
6. Medium Science Essay – “How Science Unravels the Bermuda Triangle Mystery”
একটি সহজবোধ্য বিশ্লেষণ যা রহস্যের বিপরীতে যুক্তির আলো ফেলে।
🔗 Medium Article
7. Fox Weather (2023)
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল সংক্রান্ত আধুনিক আবহাওয়া বিশ্লেষণ ও জনসমর্থনপ্রাপ্ত ব্যাখ্যা।
🔗 Fox Weather