ঢাকা ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
তুরস্কে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিএসপি চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের কৃষিগুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত কালিগঞ্জে প্লাস্টিক পলিথিন দূষণ প্রতিরোধে রূপান্তরের গনশুনানি অনুষ্ঠিত বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় মহানবীকে নিয়ে কটূক্তিকারি মিলন খান কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কালীগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নববর্ষকে বরণ রাউজানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন ঝিনাইদহে ৮ দফা দাবি আদায়ে এটিআই শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ফটিকছড়ি দাঁতমারার ইউ.পি চেয়ারম্যান আদালত হতে কারাগারে নীলফামারীতে স্ত্রীর মামলায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা স্বামী শ্রীঘরে বরিশালে স্বামী-স্ত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার

বাংলাদেশে কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছে অস্ট্রেলিয়ান অধ্যাপক

রিসালত আলিফ
  • আপডেট সময় : ১১:৩১:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৪২ বার পড়া হয়েছে

বাকৃবি প্রতিনিধি:বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ও অস্ট্রেলিয়ার মারডক বিশ্ববিদ্যালয়ের (এমইউ) ড. রিচার্ড ডব্লিউ বেল ও ড. ডাভিনা বয়েড প্রজেক্ট লিডার হিসেবে যৌথভাবে বাংলাদেশের মাটি ও মানুষকে পানি সম্পদের উপর কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতির দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে গবেষণা করছে। বাকৃবির কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসনীন জাহান এই প্রকল্পে কৃষি অর্থনীতি বিষয়ক পিআই হিসেবে কাজ করছেন।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) গবেষণাটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রধান গবেষক (পিআই) বাকৃবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান জাহাঙ্গীর বলেন, মাটি এবং পানি সম্পদের উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবসহ কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি গ্রহণের মূল সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাব্য ঝুঁকি পরীক্ষা করা এই গবেষণার উদ্দেশ্য। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি চর্চার সাথে সম্পর্কিত সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করা এবং এর অন্তর্ভুক্তিমূলক সম্প্রসারণের জন্য কী পূর্বশর্ত পূরণ করা প্রয়োজন ও কোন পদ্ধতিগুলো কার্যকর হতে পারে সেটিও নির্ধারণ করা।

কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে অধ্যাপক জাহাঙ্গীর বলেন, কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি হলো টেকসই চাষাবাদের একটি পদ্ধতি যা মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা, উৎপাদন বৃদ্ধি ও পরিবেশ সংরক্ষণে সহায়ক। এতে প্রধানত তিনটি মূলনীতি অনুসরণ করা হয়- ন্যূনতম জমি চাষ, ফসল আবরণের ব্যবহার এবং ফসল বৈচিত্র্য বজায় রাখা। এ পদ্ধতিতে মাটির জৈব উপাদান বৃদ্ধি পায়, মাটির ক্ষয় কমে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব হ্রাস পায়। বাংলাদেশে কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে, যা কৃষকদের উৎপাদন ব্যয় কমাতে ও দীর্ঘমেয়াদে জমির উর্বরতা ধরে রাখতে সহায়তা করে। তাই টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার জন্য এই পদ্ধতির গুরুত্ব অপরিসীম।

ড. রিচার্ড ডব্লিউ বেল বলেন, বাংলাদেশের মাটি খুবই উর্বর কিন্তু এই উর্বরতা দ্রুত কমে যাচ্ছে। ২০১২ সাল থেকে মারডক বিশ্ববিদ্যালয় এদেশের প্রায় ১০টিরও বেশি বিভিন্ন সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ উদ্যোগে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমান প্রকল্পটি বাংলাদেশে কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি গ্রহণে সহায়তা এবং মাটি ও পানির গতিশীলতার পরিবর্তন বিষয়ক। এই প্রকল্পের সফলতার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। এছাড়া “বাংলাদেশে বৈচিত্র্যময় ফসল উৎপাদনের জন্য পুষ্টি ব্যবস্থাপনা” শীর্ষক প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে সম্পন্ন হয়েছে।

“বাংলাদেশে সংরক্ষণমূলক কৃষি গ্রহণে সহায়তা এবং মাটি ও পানির গতিশীলতার পরিবর্তন (সাকা)” শীর্ষক চার বছর মেয়াদী প্রকল্পটি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (এসিআইএআর) এবং কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ) প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করেছে।

দেশের অন্যান্য কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান যেমন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি), সংরক্ষণমূলক কৃষি সেবা প্রদানকারী সংস্থা (ক্যাসপা) এবং পিআইও কনসাল্টিং লিমিটেডের এই প্রকল্পে অংশদারিত্ব রয়েছে।

এছাড়া এই প্রকল্পের আওতায় ৮টি পিএইডি ফেলোশিপ ও ৪টি মাস্টার্স ফেলোশিপের ব্যবস্থা রয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ উভয়দেশের শিক্ষার্থীরা এতে সুযোগ পাবে। এটি দেশের বিজ্ঞানীদের দক্ষতা, শিক্ষা ও গবেষণায় ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে বলে জানান অধ্যাপক জাহাঙ্গীর।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

বাংলাদেশে কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছে অস্ট্রেলিয়ান অধ্যাপক

আপডেট সময় : ১১:৩১:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাকৃবি প্রতিনিধি:বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ও অস্ট্রেলিয়ার মারডক বিশ্ববিদ্যালয়ের (এমইউ) ড. রিচার্ড ডব্লিউ বেল ও ড. ডাভিনা বয়েড প্রজেক্ট লিডার হিসেবে যৌথভাবে বাংলাদেশের মাটি ও মানুষকে পানি সম্পদের উপর কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতির দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে গবেষণা করছে। বাকৃবির কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসনীন জাহান এই প্রকল্পে কৃষি অর্থনীতি বিষয়ক পিআই হিসেবে কাজ করছেন।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) গবেষণাটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রধান গবেষক (পিআই) বাকৃবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান জাহাঙ্গীর বলেন, মাটি এবং পানি সম্পদের উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবসহ কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি গ্রহণের মূল সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাব্য ঝুঁকি পরীক্ষা করা এই গবেষণার উদ্দেশ্য। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি চর্চার সাথে সম্পর্কিত সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করা এবং এর অন্তর্ভুক্তিমূলক সম্প্রসারণের জন্য কী পূর্বশর্ত পূরণ করা প্রয়োজন ও কোন পদ্ধতিগুলো কার্যকর হতে পারে সেটিও নির্ধারণ করা।

কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে অধ্যাপক জাহাঙ্গীর বলেন, কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি হলো টেকসই চাষাবাদের একটি পদ্ধতি যা মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা, উৎপাদন বৃদ্ধি ও পরিবেশ সংরক্ষণে সহায়ক। এতে প্রধানত তিনটি মূলনীতি অনুসরণ করা হয়- ন্যূনতম জমি চাষ, ফসল আবরণের ব্যবহার এবং ফসল বৈচিত্র্য বজায় রাখা। এ পদ্ধতিতে মাটির জৈব উপাদান বৃদ্ধি পায়, মাটির ক্ষয় কমে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব হ্রাস পায়। বাংলাদেশে কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে, যা কৃষকদের উৎপাদন ব্যয় কমাতে ও দীর্ঘমেয়াদে জমির উর্বরতা ধরে রাখতে সহায়তা করে। তাই টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার জন্য এই পদ্ধতির গুরুত্ব অপরিসীম।

ড. রিচার্ড ডব্লিউ বেল বলেন, বাংলাদেশের মাটি খুবই উর্বর কিন্তু এই উর্বরতা দ্রুত কমে যাচ্ছে। ২০১২ সাল থেকে মারডক বিশ্ববিদ্যালয় এদেশের প্রায় ১০টিরও বেশি বিভিন্ন সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ উদ্যোগে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমান প্রকল্পটি বাংলাদেশে কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি গ্রহণে সহায়তা এবং মাটি ও পানির গতিশীলতার পরিবর্তন বিষয়ক। এই প্রকল্পের সফলতার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। এছাড়া “বাংলাদেশে বৈচিত্র্যময় ফসল উৎপাদনের জন্য পুষ্টি ব্যবস্থাপনা” শীর্ষক প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে সম্পন্ন হয়েছে।

“বাংলাদেশে সংরক্ষণমূলক কৃষি গ্রহণে সহায়তা এবং মাটি ও পানির গতিশীলতার পরিবর্তন (সাকা)” শীর্ষক চার বছর মেয়াদী প্রকল্পটি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (এসিআইএআর) এবং কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ) প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করেছে।

দেশের অন্যান্য কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান যেমন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি), সংরক্ষণমূলক কৃষি সেবা প্রদানকারী সংস্থা (ক্যাসপা) এবং পিআইও কনসাল্টিং লিমিটেডের এই প্রকল্পে অংশদারিত্ব রয়েছে।

এছাড়া এই প্রকল্পের আওতায় ৮টি পিএইডি ফেলোশিপ ও ৪টি মাস্টার্স ফেলোশিপের ব্যবস্থা রয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ উভয়দেশের শিক্ষার্থীরা এতে সুযোগ পাবে। এটি দেশের বিজ্ঞানীদের দক্ষতা, শিক্ষা ও গবেষণায় ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে বলে জানান অধ্যাপক জাহাঙ্গীর।