ঢাকা ১২:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বলুর মেলা থেকে ভুয়া হিজড়া আটক ৪ বৃহৎ জনস্বার্থে চট্টগ্রাম জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত ফেনীতে মাদ্রাসা বোর্ড প্রধানের সাথে মাদ্রাসা প্রধানদের মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল, সোনাগাজী পৌর শাখার উদ্যোগে কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত জুলাই সনদ নিয়ে সমঝোতায় আসতেই হবে : প্রধান উপদেষ্টা সূফীকথা’র ব্যবস্থাপনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ভূমিকম্পে কাঁপল বাংলাদেশসহ ৬ দেশ রাণীশংকৈলে নারী ও কন্যাশিশুদের মানবাধিকার রক্ষার্থে গণ শুনানি শ্যামনগরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনি খাতুনের বদলি প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন আগৈলঝাড়ায় ৭শ পিচ ইয়াবা ও ১ কেজি ৮শ গ্রাম গাঁজা ব্যবসায়ীসহ ৩ জন আটক

বহিরাগতদের অসামাজিক কার্যকলাপে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৩:১৪:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫ ৭৪ বার পড়া হয়েছে

বাকৃবি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ক্রমাগত বাড়ছে বহিরাগতদের অশ্লীলতা। দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ডের কারণে নিজ ক্যাম্পাসেই শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়, নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ। প্রশাসনের নজরদারি নেই বলে ক্ষোভ জানান শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন, বৈশাখী চত্বর, আমবাগান, টিএসসি লেকের পাড়, নদীর পাড়, মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের মাঠ বহিরাগতদের বিচরণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। এসব স্থানে ক্যাম্পাসের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই চলছে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা। বিভিন্ন জায়গায় সন্ধ্যার পর বসে মাদকের আসর। বিভিন্ন জায়গায় হরহামেশাই পরিত্যক্ত ফেনসিডিলের শিশি ও জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী পড়ে থাকতে দেখা যায়।

ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পোশাক পরিহিত শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাসে এসে অবাধে জড়াচ্ছে অশ্লীলতায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে প্রায়ই অপ্রীতিকর ছবি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।

জানা যায়, প্রতিদিন কয়েকশত দর্শনার্থী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসে। ছুটির দিনগুলোতে সংখ্যাটি ছাড়ায় সহস্রাধিক। অনেক দর্শনার্থী অশ্লীলতার অভয়ারণ্য হিসেবে বেছে নেয় ক্যাম্পাসকে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পড়ছেন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে, অন্যদিকে কেউ হচ্ছেন ইভটিজিংয়ের শিকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী তাদের ভীতি ও অস্বস্তির কথা জানিয়েছেন।

কৃষি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জয় মন্ডল বলেন, ‘ক্যাম্পাসে দিনে দুপুরে যে অশ্লীলতা শুরু হয়েছে তাতে আমরা বিব্রত। অনেক সময় আমাদের অবিভাবকরা ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসেন। তাদেরকে নিয়ে যখন ক্যাম্পাসটা ঘুরে দেখাই, তখন ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে এমন অশ্লীলতার সম্মুখীন হয়ে অবিভাবকের সামনে লজ্জিত হয়ে পড়ি। প্রশাসনের যথাযথ নজরদারি থাকলে এমনটা কখনই হতো না।’

প্যারাসাইটোলজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফারাহ তাসফিয়া বলেন, ‘বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য এটি খুবই বিব্রতকর। এগুলো শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে। আমার অনেক বান্ধবী বহিরাগতদের ইভটিজিংয়ের শিকারও হয়েছে। নিজ ক্যাম্পাসে এগুলো কিভাবে মেনে নেওয়া যায়? প্রশাসনের নজরদারি বলতে তেমন কিছুই দেখা যায় না।’

শিক্ষার্থীরা আরো অভিযোগ করে বলেন, নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হলেও তা তেমন কার্যকর না। বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে ফটকে জোরালো কোনো তল্লাশি ব্যবস্থা নেই, যা নিরাপত্তার ঘাটতিকে আরও প্রকট করে তুলছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে বাকৃবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘পরিদর্শনের সময় নিরাপত্তা কর্মীরা এমন কোন ঘটনা দেখলে তাদের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নিদের্শ দেওয়া আছে’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম বলেন, ‘বিষয়টা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্বিগ্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সকলের জন্য খুবই বিব্রতকর। কিন্তু নিরাপত্তাকর্মী সংকট থাকা সত্ত্বেও আমরা ওই সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি। সামনে প্রক্টরিয়াল বডি আরও নিরাপত্তা জোরদার করবে।’

**************

রিসালাত আলিফ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

বহিরাগতদের অসামাজিক কার্যকলাপে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ

আপডেট সময় : ০৩:১৪:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫

বাকৃবি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ক্রমাগত বাড়ছে বহিরাগতদের অশ্লীলতা। দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ডের কারণে নিজ ক্যাম্পাসেই শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়, নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ। প্রশাসনের নজরদারি নেই বলে ক্ষোভ জানান শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন, বৈশাখী চত্বর, আমবাগান, টিএসসি লেকের পাড়, নদীর পাড়, মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের মাঠ বহিরাগতদের বিচরণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। এসব স্থানে ক্যাম্পাসের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই চলছে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা। বিভিন্ন জায়গায় সন্ধ্যার পর বসে মাদকের আসর। বিভিন্ন জায়গায় হরহামেশাই পরিত্যক্ত ফেনসিডিলের শিশি ও জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী পড়ে থাকতে দেখা যায়।

ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পোশাক পরিহিত শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাসে এসে অবাধে জড়াচ্ছে অশ্লীলতায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে প্রায়ই অপ্রীতিকর ছবি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।

জানা যায়, প্রতিদিন কয়েকশত দর্শনার্থী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসে। ছুটির দিনগুলোতে সংখ্যাটি ছাড়ায় সহস্রাধিক। অনেক দর্শনার্থী অশ্লীলতার অভয়ারণ্য হিসেবে বেছে নেয় ক্যাম্পাসকে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পড়ছেন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে, অন্যদিকে কেউ হচ্ছেন ইভটিজিংয়ের শিকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী তাদের ভীতি ও অস্বস্তির কথা জানিয়েছেন।

কৃষি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জয় মন্ডল বলেন, ‘ক্যাম্পাসে দিনে দুপুরে যে অশ্লীলতা শুরু হয়েছে তাতে আমরা বিব্রত। অনেক সময় আমাদের অবিভাবকরা ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসেন। তাদেরকে নিয়ে যখন ক্যাম্পাসটা ঘুরে দেখাই, তখন ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে এমন অশ্লীলতার সম্মুখীন হয়ে অবিভাবকের সামনে লজ্জিত হয়ে পড়ি। প্রশাসনের যথাযথ নজরদারি থাকলে এমনটা কখনই হতো না।’

প্যারাসাইটোলজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফারাহ তাসফিয়া বলেন, ‘বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য এটি খুবই বিব্রতকর। এগুলো শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে। আমার অনেক বান্ধবী বহিরাগতদের ইভটিজিংয়ের শিকারও হয়েছে। নিজ ক্যাম্পাসে এগুলো কিভাবে মেনে নেওয়া যায়? প্রশাসনের নজরদারি বলতে তেমন কিছুই দেখা যায় না।’

শিক্ষার্থীরা আরো অভিযোগ করে বলেন, নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হলেও তা তেমন কার্যকর না। বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে ফটকে জোরালো কোনো তল্লাশি ব্যবস্থা নেই, যা নিরাপত্তার ঘাটতিকে আরও প্রকট করে তুলছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে বাকৃবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘পরিদর্শনের সময় নিরাপত্তা কর্মীরা এমন কোন ঘটনা দেখলে তাদের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নিদের্শ দেওয়া আছে’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম বলেন, ‘বিষয়টা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্বিগ্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সকলের জন্য খুবই বিব্রতকর। কিন্তু নিরাপত্তাকর্মী সংকট থাকা সত্ত্বেও আমরা ওই সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি। সামনে প্রক্টরিয়াল বডি আরও নিরাপত্তা জোরদার করবে।’

**************

রিসালাত আলিফ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ