স্টাফ রিপোটার :
গরমে পুড়ছে বরিশাল নগরসহ্ জেলার বিভিন্ন উপজেলা,পুড়ছে জনপদ।বসন্তের দিন ফুরিয়ে রুক্ষ প্রকৃতিতে এখন কেবলই সূর্যের সীমাহীন উত্তাপ। বৈশাখের পূর্ব থেকেই খরতাপে পুড়ছে দেশ। বরিশালে তীব্র গরমে বিপর্যস্থ জনজীবন। তীব্র অসহনীয় গরমে সবচেয়ে কষ্টে আছেন দিন-মজুর খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। রৌদ্র ও গরমের তীব্রতা এতটাই বেশি যে বাইরে কাজে বের হয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। একটু স্বস্তি পেতে অনেকে আশ্রয় নিচ্ছেন রাস্তার পাশে গাছের ছায়ায়।
জীবিকার তাগিদে উপায়ান্ত না পেয়ে তীব্র রোদেই কাজে বের হতে হয় খেটে খাওয়া মানুষদের। দিনমজুর থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে অন্য সবার চেয়ে বেশি।
বরিশালে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন আবুল কাশেম। রবিবার বিকেল বেলা পরিবার নিয়ে বঙ্গবন্ধু উদ্দানে ঘুরতে এসেছেন। তিনি বলেন, খুব খারাপ অবস্থা। পরিবার নিয়ে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু গরমে আর থাকতে পারছি না।ছোট মেয়েটা বাসায় যাওয়ার জন্য কাঁদছে। ওর আর ভালো লাগছে না।
একই অবস্থা অনেকের অন্য এক পথচারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম কিন্তু গরম সহ্য করতে পারছি না তাই বাসায় রওনা দিয়েছি।
নগরীর এক রিকশাচালক কালাম বলেন, মামা আমাদের মতো গরিবদের আর গরম,মরলেও কি? বাঁচলেইবা কি?দেহার কেউ নাই।
নগরীসহ্ জেলার বিভিন্ন উপজেলার রিকশাচালক,ভ্যান চালক,দিন মজুরসহ্ নিম্নআয়ের মানুষদের মন্তব্য প্রায় একই।
বৈশাখের ২য় ও ৩য় দিনে সোমবার-মঙ্গলবার তীব্র গরমে নাজেহাল নগরবাসী। গত এক সপ্তাহ ধরে পুড়ছে নগর জীবন। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। দিনে তীব্র গরমের পর রাতেও নেই স্বস্তি। রাতেও একদিকে মশার উৎপাত ও প্রচন্ড গরম অনুভূত হচ্ছে।
এর মধ্যে কোনো ভালো খবর দিতে পারছে না আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বরিশালে সহসাই বৃষ্টির দেখা মিলবে না। বাড়বে আরো তাপের তীব্রতা।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মাজহারুল ইসলাম বলেন- রোববার সকাল থেকে সোমবার বেলা ১টা পর্যন্ত তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস অবস্থান করছে।।
উল্লেখ্য- গত বছর পরে আবারও বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে শুক্রবার বিকেলে। শুক্রবার বরিশালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১২ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে এবার বরিশালে সর্বচ্চ ৩৭ দশমিক ৬ সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা বেড়েছিল
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক সদস্যরা আরো বলেন- জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটে। নগরীতে আগের মতো বড় বড় গাছ নেই, পুকুর নেই, খাল নেই, এসব কারণে বাতাসের সঙ্গে ময়েশ্চার বহন করে না, সবকিছু শুষ্ক হয়ে যাওয়ায় গরমের তীব্রতা বাড়চ্ছে।
এমতাবস্থায় প্রচন্ড গরমে কাজ করতে না পেরে বিপাকে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। গরমে পানিশূন্যতাসহ নানান রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। হঠাৎ গরম বেড়ে যাওয়ায় পেশাজীবী, শ্রমজীবী মানুষ, বিশেষ করে রিকশা-ভ্যানচালকদের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তীব্র গরমে পানিশূন্যতা কিংবা হিটস্ট্রোক হতে পারে।
তীব্র গরমে পানিশূন্যতা কিংবা হিটস্ট্রোক এড়াতে একটানা কাজ না করে বিশ্রাম নিয়ে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ রায়হান সুলতান।
যোগাযোগঃ ৭২/৭-৮ মানিকনগর, মুগদা,ঢাকা-১২০৩
মোবাইলঃ +৮৮০৯৬৩৮০৮৯০১৪
Copyright © 2025 দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র. All rights reserved.